নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু সিদ

আবু সিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষের বিশ্বাস পর্ব-২ঃ নষ্ট বিশ্বাসের পুনরুদ্ধার

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৩

বিশ্বাস বিনষ্ট হয় বা হারিয়ে যায় দুটি প্রধান কারণে। তার একটি অন্যকে বিশ্বাস না করা, এবং দ্বিতীয়টি অন্যদেরকে বিশ্বাস করার সুযোগ না দেয়া। ঠিক বিপরীতভাবে আমরা যদি অন্যকে বিশ্বাস করি এবং অন্যেরা যেন আমাদেরকে বিশ্বাস করতে পারেন সে সুযোগ করে দিই তাহলে বিশ্বাস যদি আমাদের সমাজ থেকে হারিয়ে সপ্তম আসমানেও উঠে যায় তবু তা ফিরে আসবে।

বিশ্বাস প্রতিষ্ঠার জন্য অন্য মানুষকে বিশ্বাস করাটা খুব প্রয়োজনীয়। কখনও কখনও এমন হয় যে কেবল বিশ্বাস না করার কারণে একজন মানুষ খারাপ পথ বেছে নিচ্ছেন। যেমন, ধরা যাক আপনার সাথী খুব ভালো একজন মানুষ কিন্তু আপনি তাকে সব সময় সন্দেহের চোখে দেখেন, ভাবেন যে সে হয়ত অন্য নারী/পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট। যখনই সে বাইরে যায় আপনার মনে একথাই শুধু বাজতে থাকে। আপনি তাই সব সময় ঘ্যান ঘ্যান করেন, অযথা তাকে জেরা করেন। যখন তিনি দেখছেন বিশ্বাস ভঙ্গের কোন কাজ না করেও আপনার কাছে তিনি সন্দেহের পাত্র, তখন তার মনে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে তা তাকে বিশ্বাস ভঙ্গ করতে কু-প্ররোচনা দিতে পারে। তা না হলেও কমপক্ষে তিনি তো আহত হবেন মানসিকভাবে! অন্যদিকে তিনি বিশ্বাস ভঙ্গের কাজে জড়িত থাকলেও যদি আচার-আচরণে এটা প্রকাশ করা যায় যে তিনি আসলে একজন বিশ্বাসের যোগ্য মানুষ তাহলে তিনি বিশ্বাসভঙ্গের কাজগুলো এড়াতে অনুপ্রাণিত হতে পারেন,এবং সেটা সম্ভব।

এবার দ্বিতীয় বিষয়টাতে আসা যেতে পারে। ধরা যাক, আপনি বা আমি সেই মানুষ যাকে বিশ্বাস করে অনেকে। আমাদের অফিসে আমাকে কেউ বিশ্বাস করে কিন্তু আমি যদি আমার কাজ ঠিকমতো না করি, ফাঁকি দিই বা অন্যের নিন্দা করে বেড়াই তাহলে যারা আমাকে বিশ্বাস করতেন তারা হয়ত আফসোস করে বলবেন, ওকে বিশ্বাস করাই ভুল হয়েছে; আসলে মানুষকে বিশ্বাস করতে নেই। অর্থাৎ, তারা যেন আমাকে বা অন্য অনেককে বিশ্বাস করতে পারেন সে সম্ভাবনা আমার দ্বারা বিনষ্ট হচ্ছে। অপরপক্ষে, আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যদি আমি যথাযথ পালন করি এবং তাদের বিশ্বাসের মর্যাদা রাখি তাহলে অন্য অনেক মানুষকে বিশ্বাস করতে তারা আগ্রহী হবেন।

আবার পথে একজন বিপদগ্রস্তকে সাহায্য করতে গিয়ে যদি দেখি সে আসলে ছিনতাইকারী তখন পথে অন্য বিপদগ্রস্থকে দেখলেও আর সাহায্য করতে এগিয়ে যাব না আমরা। অভাবী কাউকে টাকা ধার দিয়ে যদি আর ফেরত না পাই, তখনও আমাদের বিশ্বাস আহত হয়, এবং ভবিষ্যতে একই ধরণের ক্ষেত্রে কাউকে সাহায্য করতে আমরা উদ্যোগী হব না।

এসব হলো উদাহরণ মাত্র। আমরা প্রত্যেকে যদি আমাদের গত হয়ে যাওয়া জীবনের কথা মনে করার চেষ্টা করি তবে দেখব যে কত অসংখ্যবার কত অজস্র কারণে বিশ্বাস ভঙ্গ হয়েছে আমাদের! এবং পরিণতিতে পরস্পরের প্রতি প্রেম শ্রদ্ধা শুভকামনা বিনষ্ট হতে হতে আমরা একে অন্যের শক্র প্রায় হয়ে উঠেছি। একথা ঠিক যে সবাইকে বিশ্বাস করতে শুরু করলে কিছু ক্ষতি হয়ত ঘটবে আমাদের কিন্তু যে লাভ হবে তা অপরিসীম। পারস্পরিক বিশ্বাস যদি রোপিত হয় আমাদের মনে তবে তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বয়ে আনবে সুখ সমৃদ্ধি সফলতা! অর্থাৎ, বিশ্বাসের বিকল্প নেই। পরিশেষে বহু বছর আগেকার একটা দেয়াল-লেখনীর কথা মনে পড়ছে, আপনি যদি মানুষকে বিশ্বাস করেন তাহলে কখনও কখনও ঠকবেন, কিন্তু যদি অবিশ্বাস করেন তাহলে সব সময় ঠকবেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৯

সকাল হাসান বলেছেন: বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে দারুন কিছু কথা বলেছেন!

আসলে ব্যাপারটা একটু অন্যরকমই! বিশ্বাস করলে দেখা যায় লোকটাকে অবিশ্বাস করলেই ভাল ছিল, আবার অবিশ্বাস বা সন্দেহ করলে দেখা যায় মানুষ বিশ্বস্তই! আমাদের সবারই চিনতে ভুল হয় বেশির ভাগ সময়ই!

সাইকোলোজিকাল ব্যাপার! উত্তরনের কোন পথ নেই এ থেকে!

১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৫

আবু সিদ বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতা জেনে ভালো লাগল। মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.