![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্য যে কোনো প্রক্রিয়া বা পদ্ধতির মতো শিক্ষার আবশ্যক কিছু উপাদান রয়েছে। যে কোনো শিক্ষা মূলত এই উপাদানগুলো দ্বারা প্রভাবিত হয়। এ উপাদানগুলো হলো -
ক কর্তা বা শিক্ষার্ত্রী
খ শিক্ষার বিষয়
গ শিক্ষার হাতিয়ার
ঘ সহায়ক
বোঝার সুবিধার্তে শিক্ষার ওপর এদের প্রভাব চিত্র ৫.১ এর মাধ্যমে দেখানো হলো -
ক. কর্তা বা শিক্ষার্ত্রী
কোনো একটি শিক্ষার কর্তা হচ্ছেন তিনি যিনি শিখবেন। কর্তা বা শিক্ষার্ত্রী হলেন যে কোনো শিক্ষার মূল চালিকা শক্তি। কর্তা ব্যতিত শিক্ষা কর্ম-পদ্ধতিটি অচল। সাধারনত, কর্তাকে কেন্দ্র করে পদ্ধতিটির অপর চালিকাশক্তি চারটি আবর্তিত হয়।
খ. শিক্ষার বিষয়
শিক্ষার বিষয় হলো কর্তার ইচ্ছ বা চাহিদাধীন যে কোনো বিষয় যা তিনি শিখবেন বা শিখতে চান। যেমন, কেউ কাপড়ে ফুল তোলা শিখতে পারেন, কেউবা চায়তে পারেন বই বাঁধানো শিখতে।
গ. শিক্ষার হাতিয়ার
শিক্ষার হাতিয়ার কী হবে তা মূলত নির্ভর করে শিক্ষার বিষয়ের ওপর। যেমন, ’কাপড়ে ফুল তোলা’ যদি শিক্ষার বিষয় হয় তবে হাতিয়ার হবে সূচ সূতো কাপড়। আবার, কোনো শিশু যদি বাংলা বর্ণমালা শেখে তাহলে তার ক্ষেত্রে শিক্ষার হাতিয়ার হবে বাংলা বর্ণমালা, প্রয়োজনে ছবিসহ বর্ণমালা বা লেখার জিনিসপত্রও হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে।
ঘ. সহায়ক
যে কোনো শিক্ষার ক্ষেত্রে ’সহায়ক’ ওই শিক্ষার এক ধনাত্মক প্রভাবক হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ, কোনো শিক্ষার ক্ষেত্রে এটির উপস্থিতি টের পাওয়া না গেলেও এটি গোপনে ও নীরবে শিক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়াটাকে প্রভাবিত করে। ’সহায়ক’ ধনাত্মক প্রভাবক হিসাবে কাজ করবে এমনটা কাম্য হলেও কখনও তা রিনাত্মক ভূমিকাও নেয়। সহায়ক সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে -
পরিবেশ
পরিবেশ প্রতিটি ক্ষুদ্র বা বৃহত, স্বল্প বা দীর্ঘ যে কোনো মেয়াদের যে কোনো ধরনের শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়ে। অনেক সময় আমাদের অজান্তে তা গড়ে ওঠে এবং চলমান শিক্ষাকে প্রভাবিত করে। যে কোনো কার্যকর ও ফলপ্রসূ শিক্ষার জন্য তাই অনুকূল পরিবেশ ধনাত্মক ভূমিকা রাখে। শিক্ষার রকম অনুসারে পরিবেশের অনুকূলতার বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন হয়।
শিক্ষক
শিক্ষক সব শিক্ষা-প্রক্রিয়ার আবশ্যক উপাদান নন। যেমন, একজন মানব-শিশু একটা নির্দিষ্ট বয়েসের পর স্বাভাবিকভাবে নিজে নিজে হাঁটতে শেখে। একজন মানুষ লিখতে লিখতে নিজেই এক সময় লেখক হয়ে ওঠেন। জেলে পাড়ার শিশুরা আপনাআপনি সাঁতার দিতে ও নৌকা চালানো শিখে নেয় - হয়ত তাদের শেখার পরিবেশ এত বেশি ধনাত্মক যে আলাদাভাবে শিক্ষকের প্রয়োজনই পড়ে না। তবে বেশিরভাগ শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। যেমন, একজন শিশুর বর্ণমালা শেখার ক্ষেত্রে শিক্ষক হিসাবে মা বাবা বা অন্য কারও ভূমিকা দরকার, তা না হলে কেবল নিজের চেষ্টায় বর্ণমালা অয়ত্ব করা তার জন্য প্রায় অসম্ভব।
সামগ্রিক অর্থে, শিক্ষার্ত্রী সব শিক্ষার আবশ্যক উপাদান, শিক্ষক নন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষা প্রক্রিয়ার মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। সাধারনত শ্রেণিকক্ষ-ভিত্তিক শিক্ষার ক্ষেত্রে এটা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ’শিক্ষক’ এতটা ক্রিয়াশীল হয়ে উঠতে পারেন যে শত শত ছাত্র ছাত্রী তার ছোঁয়ায় সোনার মানুষে পরিণত হয়ে উঠতে পারেন। অন্যদিকে, তার অপশক্তি সমস্ত শিক্ষা প্রক্রিয়াকে বরবাদ করে দিতে পারে। এতে শিক্ষার্ত্রী বা শিক্ষার কর্তা পুরোপুরিভাবে শিক্ষার প্রতি বিমুখ হতে পারেন। এমনকি, অনেক সময়, শিক্ষা প্রক্রিয়া থেকে কর্তার বিচ্যুতিও ঘটে থাকে।
©somewhere in net ltd.