![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জানার শেষ নেই, শেখার সীমাও অপরিসীম। আমরা যতই জানি চিরদিন জানতে বাকী থাকে আরও অনেক কিছু। যত কিছু আমরা শিখি না কেন আরও অনন্ত পড়ে থাকে আমাদের শেখার অপেক্ষায়। জানার তুলনায় না-জানার এই ব্যাপকতা অনুধাবন করে অনেকে বলেছেন, জানার কোনো শেষ নাই জানার চেষ্টা বৃথা তাই!
এ কথা ঠিক যে সমস্ত বিশ্বচরাচর আর এর মাঝে বিরাজমান বস্তুলোককে জানা কখনো শেষ হবে না। তবুও জানার ও শেখার যে কোনো প্রচেষ্টা এক ধরনের স্বার্থকতা। যদি পড়তে শিখি তাহলে হাজার জিনিস জানার দুয়ার খুলে যায়। যদি লিখতে শিখি তাহলে নিজের জানা অনেক কিছু অন্যকে জানাতে পারি। কৃষি কাজ শিখে ফসল ফলাতে পারি। পশুপালন শিখে আয়-উপার্জন করতে পারি, প্রোটিনের চাহিদা পুরন করতে পারি অনেকের।
যেহেতু আমাদের জীবন সংক্ষিপ্ত এবং এই অল্প সময়ে একজন মানুষ সব কিছু শিখতে ও জানতে পারেন না। অবশ্য তার দরকারও নেই। নিঃসন্দেহে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কোনো কোনটা জানা অন্য কিছু জানার চাইতে বেশি প্রয়োজনীয়। এই প্রয়োজন নির্ভর করে আমাদের পরিবেশ, পরিস্থিতি ও অবস্থানের ওপর। হয়ত আমার প্রয়োজন কৃষিকাজ শেখা আর আপনার প্রয়োজন গাড়ি চালানো শেখা। এরকম শত শত কাজ আমাদের শিখতে হয় জীবন ধারন ও যাপন করার জন্য। আমাদের এই শেখা, জানা ও কাজে যত ভিন্নতা থাক না কেন মানুষ হিসাবে আমাদের প্রয়োজন ও দূর্বলতা একই ধরনের।
হয়ত কয়েক ক্লাস স্কুলে গিয়ে কারও কারও পড়তে ভালো লাগে না। কেও হয়ত আনন্দ পান ব্যবসা করে। কেউ করেন শিক্ষকতা। কারও বা আবার মন কাড়ে উদ্ভিদ তৃণলতা আর পশুপাখির সান্নিধ্য। কিন্তু কোনো একজন মানুষ এর সব কিছুতে নিয়োজিত হতে পারেন না। অর্থাৎ, আমাদেরকে শেখার ও জানার বিষয়বস্তু অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হয়। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ নিজেই ঠিক করতে পারেন তার জানার বিষয়বস্তু, শেখার ক্ষেত্র। অন্যদিকে, শিশুরা নির্ভরশীল তাদের অভিভাবক, রাষ্ট্র ও সমাজের ওপর। অভিভাবক, রাষ্ট্র ও সমাজ নির্ধারণ করে শিশুদের শিক্ষণীয় বিষয়, জানার বিষয়বস্তু।
ইংরেজি ২০১৫ সালে বাংলাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে গেলে দেখা যাবে যে অগণিত শিক্ষনীয় বিষয়ের নিচে চাঁপা পড়ে যাচ্ছে শিশুদের প্রাণ। স্কুল, কোচিং আর জিপিএ-র যাতাকলে কী নির্মম পিষ্ট হচ্ছে তাদের জীবন! মানব সন্তান হয়েও তারা মানব-শিশুর জীবন যাপন করতে পারছে না। জানার প্রতি তাদের স্বতঃস্ফূর্ত মানব-প্রবৃত্তি ব্যাহত হতে হতে মরে যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে। সৃজনশীলতার দেখা তাই খুব কমই মিলছে; এমনকি শিল্প-সাহিত্য বা বিজ্ঞানেও তা দুর্লভ হয়ে উঠেছে।
সব কিছু দেখে মনে হয় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যেন এক অবিবেচনাপ্রসূত লাগামহীন ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছে। এ শিক্ষার লক্ষ্য কী গন্তব্যই বা কোথায় তা কে জানে? তবে তা যে আজও ’মাছিমারা কেরানী’ তৈরির থেকে বেশি দূর এগিয়েছে এরকম ভাববার যথেষ্ট কারন নেই। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার এই ভার বইতে বইতে বেহাল শিশুদের দিকে তাকিয়ে মহামান্য বিচার বিভাগ স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের বইয়ের ভারী ব্যাগের ব্যাপারে বক্তব্য দিয়েছেন। শিক্ষা অধিদপ্তর বা শিক্ষাবিদরা কী করছেন বা কী ভাবছেন বা আদৌ কিছু ভাবছেন কিনা তা এখনও অজানা।
শিক্ষাবিদ না হয়েও একজন সাধারন মানুষ হিসাবে বলা যায়, প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাপ কেন শিশুর মেধা ও মগজের ওপর চাপানো? প্রাইমারি স্কুল শেষে একজন শিশুর কাছ থেকে কী আমাদের আশা করা উচিত? সে যদি বাংলায় বুঝে পড়তে ও লিখতে পারে, যোগ-বিয়েগে-গুণ-ভাগ করতে পারে তবে তার বেশি আর কি দরকার?
মাধ্যমিক পর্বের প্রথম দিকে খুব বেশি বিষয় যোগ না করে কিছু স্বাস্থ্য ও পরিবেশ জ্ঞান, সামাজিক বোধ (Civic Sense) বা যা-কিছুর বাস্তব প্রয়োজন রয়েছে এসব রাখা যেতে পারে। আমাদের চারদিকে বাস্তব জীবনের জ্ঞান বা সামাজিক বোধের জ্ঞানের ক্ষরা যে কোনো মহা-ক্ষরার থেকেও প্রবল।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সব থেকে বড় ত্রুটি এর উদ্দেশ্যহীনতা। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা কী শিখছেন কেন শিখছেন তা জানেন না। লাখ লাখ ছাত্র-ছাত্রী বা তাদের অভিভাবকদের জানা নেই যে বছর বছর লক্ষ মানবের কোটি কোটি ঘন্টা অমূল্য সময় কোন কারনে অপচয় হচ্ছে অকাতরে। এর উত্তর যে শিক্ষা ব্যবস্থার কর্তা ব্যক্তিদের জানা আছে এমনও মনে হয় না। মানব জীবনের সময়ের এ শোচনীয় অপচয় হয়ত তাদের চোখেও পড়েনি! তবে এটা অনস্বীকার্য যে অনেকের কাছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার এ নেতিবাচক দিক সুস্পষ্ট। কিন্তু প্রথাগত এই শিক্ষা ব্যবস্থার জোয়াল আমাদের কাঁধ থেকে কবে নামবে বা আদৌ নামবে কিনা তা এখনও অজানা।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪০
চাঁদগাজী বলেছেন:
" সে যদি বাংলায় বুঝে পড়তে ও লিখতে পারে, যোগ-বিয়েগে-গুণ-ভাগ করতে পারে তবে তার বেশি আর কি দরকার? "
-চাচ্ছেন, সবাই আপনার মতো হোক?
৫ম শ্রেণী অবধি শিশুরা কম্প্যুটার অবধি জানা দরকার।