নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁধার রাত

আঁধার রাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

“বম ভুসি, পাগলা খাইলে পাগলী খুশি"(১৮+ রম্য গল্প)

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:১৫


সুযোগের অভাবে ভাল থাকা শহুরে বাইচান্স সাধুর সর্বনাশ হইয়া গেল সামান্য একটু ভুলে। বান্ধবী(স্কুল-কলেজ)প্রেমিকা(ইউনিভার্সিটি) স্ত্রী(কর্মজীবন) লোকের ঘ্রান শক্তির দূর্বলতা কে পুঁজি করিয়া সুদীর্ঘ ১৮টি বছর কি নির্বিঘ্নে সাধু সেবা গ্রহণ শেষে বান্ধবীপ্রেমিকা স্ত্রী সেবা চলিতে ছিল। ঘুনাক্ষরেও কোনদিন সন্দেহ পোষণ করিতে পারে নাই। শুধু জানিত মাঝে মাঝেই মুখে খৈ ফোটে, এ সময়ে কৃপন লোকটার হৃদয় আর্দ্র হইয়া ওঠে, সাধ্যের মধ্যে বা সামান্য সাধ্যাতীত যা চাওয়া যায় তাই পাওয়া যায়। গৃহস্থলি কর্মাদি দ্রুত শেষ করিবার নিমিত্তে শ্রম বিনিয়োগ করিয়া কখনও কোলে মাথা দিয়া কখনও হাত দুখানি দখল করিয়া মিষ্টি মধুর কথামালায় সময় চলিয়া যায়তো, কখনও মজার কোন খাবার রান্না করিত কখনও বা মজার কোন খাবার কিনিয়া আনিত। স্ত্রী লোকটিও বুঝিয়া গিয়াছিল যে এই মুডে থাকিলে গভীর রাতে ভাল স্প্রা করিয়া নেওয়া যায় বৈকি!
ইহার পূর্বে কতকবার প্যান্টের পকেটে, শার্টের গোটানো হাতায়, মোজার ভেতর থেকে কিছু ঘাস লতাপাতার মত বস্তু আবিস্কার করিয়াছে বটে কিন্তু তাহা কবিরাজী ঔষুধ বলিয়া ঘুষ দিয়া আবার ফেরত নিয়াছে। গভীর রাতে বারান্দায় তাহার পাশে বসিয়াই সাধু সেবা গ্রহন করিয়াছে কিন্তু নাকের ঘ্রান শক্তির দূর্বলতা আর ইহা যে সাধু সেবার গন্ধ তাহা কেহ বলিয়া না দেওয়ায় চিহিৃত করিতে পারে নাই।
সুদীর্ঘকালের বান্ধবী- প্রেমিকা ও স্ত্রী হওয়ায় সাধু সেবা গ্রহণ করিবার সত্যটা আঠারো বছর আগেই কিঞ্চিত জানিত বটে কিন্তু ইহাও বিশ্বাস করিত যে জ্ঞানীদের এমন অভ্যাস মন্দ না। দুই চোখ বন্ধ না করিলে তৃতীয় নয়ন খুলিবে কেমনে?
তারপর এই পৃথিবীর বুকে করোনা ভাইরাস নামক একটা মহামারীর উদ্ভব ঘটিল। লকডাউনে মানুষ সকল গৃহ বন্দি হইয়া গেল। এক মাস পার না হইতে মুখের ভাষা, চেহারা, ব্যবহার, আচরন সবকিছু রুক্ষ হইয়া গেল। স্ত্রী লোকটি ঠিকই অনুধাবন করিতে পারিল যে কিছু একটার ঘাটতির কারনে এখন আর তার পাশে বসে গল্পের তাল ওঠে না, পছন্দের টেংরা মাছ গুলো কাটিবার অবসর না পাওয়ায় ওভাবেই পড়িয়া রয়, নিজ হাতে খাওয়ায়ে দেওয়া মানুষটা খাবার দিতে দেরী হওয়ায় বলিয়া ওঠে “সারা দিন কার বালটা ফালাও?”।
সমস্যা চিহিৃতকল্পে চিরাচরিত সিলেবাস অনুযায়ী “আসো আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করি” স্ত্রী লোকের এমন আহবানে একদা গভীর রাতে আলোচনা শুরু হইল।
কি হয়েছে তোমার? তুমি কি বুঝতে পারছো তোমার ব্যবহার খারাপ হয়ে গেছে, আমার সংসারিক কাজে আর একটু হাত লাগাও না, রেগে যাও, তুমি তো এমন ছিলা না, হঠাৎ কি হইয়াছে তোমার? সাধু কহিল- সাধুর সেবা নাই যে, সাধন সঙ্গিনী কহিল- কি কবিরাজী ঔষুধ? ঠিক আছে বাহিরে যেতে পারছো না, ঘরেই ব্যবস্থা করো তবে পরিবেশ দূষণ করা যাবে না, কেউ যেন গন্ধ না পাই আমার কাছে যেন প্রতিবেশীরা গাঁজাখোর খুজতে না আসে আর যে কয়টাকার কিনবা তার দ্বিগুন পরিমান শান্তিকর ধার্য করা হইল।
তাহার পরদিন হোম ডিলিভারী পাওয়া গেল তবে শান্তিকর বাবদ পাঁচ হাজার টাকা চলিয়া গেল।
আহ! এক বয়াম কবিরাজী ঔষুধ-সাধু সেবা সাথে মোমবাতি, আগরবাতি, ইয়ার ফ্রেসনার। এমন দিন কখনও আসে নাই জীবনে। শান্তিও কর পরিশোধ করা হইয়াছে বলে অশান্তির আশংকা মুক্ত।
কিন্তু স্ত্রী লোককে নাকি স্বয়ং দেবতাও বুঝিতে পারে নাই শহুরে বাইচান্স সাধুর সাধ্য কি তারে ফ্রেমবন্ধী করে, দুরভিসন্ধি বুঝিতে পারে! পারে নাই।
মাঠ ঘাট ভাসানো বন্যার পানিও একদিন শেষ হয়, বৈয়ামও একদিন খালি হয়। লকডাউন না উঠিতেই বৈয়াম খালি হইয়া গেল।
তাহার পর একদিন লকডাউন উঠিয়া গেল। খাতায় স্বাক্ষর করিতে অফিসে যাওয়া শুরু হইল, আস্তে আস্তে অনেক কিছুই স্বাভাবিক হইতে থাকিল সেই সাথে সাধুও বুঝিতে পারিল যে ঐ সাধু সেবা গ্রহনের পর স্ত্রী লোকটি শহুরে বাইচান্স সাধুর শারিরিক মানসিক ও আচরনগত প্রতিটি পরিবর্তন মনের খাতায় লিপিবদ্ধ করিয়াছে। ফাঁকি দেওয়ার সকল পথ বন্ধ হইয়া গিয়াছে। উপরন্তু শান্তিকরের পরিমান এত বেশী করিয়াছে যে তাহা বহন করা সম্ভবপর নহে, শান্তিকর পরিশোধে ব্যর্থতার শাস্তি হিসাবে “তোর মা ক কয়ে দেব” হুমকি উপেক্ষা করার সাধ্য কি!
তবে হ্যাঁ বৃহ:বার রাতের কথা ভিন্ন, এ রাতের জন্য কোন শান্তিকর নির্ধারিত নাই কারন “বম ভুসি, পাগলা খাইলে পাগলী খুশি”।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৪

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: গল্প পড়িয়া চমৎকৃত হইলাম।

২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:০১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আহাঃ চমতকার রম্য।

"বম ভূষি,পাগলা খাইলে :P পাগলী খুশী"।তাও বৃহস্পতিবার রাতে । আহা মজা হবে ,ব্যপোক মজা। শুধু খেলা হবে আর কমসে কম চার বার B-)) গোল হবে।

সাধুর সাধুত্ব গংগায় বিসর্জন হবে।আর সাধুনী সুখের সাগরে অবগাহন করবে।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:১৪

আঁধার রাত বলেছেন: চার বার কেন? বার দিয়ে হিসাবই বা করার কি দরকার? রাত পার করে দিতে হবে। অটল থাকতে হবে। অটল থাকার সাধনা করতে হবে।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:১৬

আঁধার রাত বলেছেন: বিন্দু ধারনে প্রেম সাধন

৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সাধু সাধু !পাগলা খাইলে পাগলী খুশী। খাও খাও B-)

৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: জয় গুরু ভোলা নাথ।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:২৫

আঁধার রাত বলেছেন: ভোলানাথের কথা জানি না তবে শিব ঠাকুর নিজ হাতে এ গাছ নিয়ে স্বর্গে আরোহন করেছেন বলে শুনেছিলুম

৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১০

অজ্ঞ বালক বলেছেন: হা হা হা। ভালা লেখসেন। আর বিষ্যুদবার রাত যে কিমুন চাইন রাত, চাকরি করা চাকর-বাকররা ভালোই জানে।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:২৬

আঁধার রাত বলেছেন: মহান বৃহ:বার। এই রাতে দম্পতিরা বাচ্চাদের দ্রুত ঘুম পাড়ানোর চেস্টা করে নিজেরা দেরীতে ঘুমায়।

৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৪

ফয়সাল রকি বলেছেন: পাগলা খাইলে পাগলী খুশি, পাগলাও খুশি!!!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.