![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবাইকে একদিন এই মায়া ছেড়ে হতে হবে অদৃশ্য।স্বাগতম অদৃশ্যের এই রহস্যময় ব্লগে্।জাতিকে লেখনীর মাধ্যমে সঠিক পথ দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস আমার এই ব্লগ।
(১)
-কি বলেছে ও তোকে?
-ও বলেছিল আমার দেশ নাকি ফকিরের দেশ।
-তাই বলে তুই ওকে মারবি?
-কেন মারবো না? আমার দেশ
নিয়ে বাজে কথা বলবে কেন ও?
-বাজে কথা কি? ও কি ভুল কিছু
বলেছে নাকি?
-মানে?
-মানে বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ ই
তো গরীব।
মন খারাপ হয়ে যায় সীমার। নিজের মায়ের
কাছে নিজ দেশ সম্বন্ধে এমন
উক্তি আশা করে নি সে। লি কে মারা উচিত
হয়নি ওর। সে তো এই দেশের মানুষ হয়ে ওয়
কথা বলেছে, অথচ তার মা ই যখন
-আচ্ছা বাবা, আমরা কেন এ দেশে এসেছি?
-তোমাদের ফিউচার এর কথা ভেবে মা।
বাংলাদেশ এ থাকলে তোমরা মানুষ
হতে পারতে না।!!
-কিন্তু বাবা, আমার তো এখানে ভাল
লাগে না।
-উফ, বেশি কথা বলো না তো। যাও এখান
থেকে। পরশু ফাংশন আছে,
আমাকে রিহার্সাল করতে দা ও।ই
-কিসের ফাংশন?
-বাঙ্গালী কালচারাল নাইট।
-তোমরা তো বাংলাদেশ কে ফকির মনে কর
তাহলে ফাংশন করো কেন?
(নিশ্চুপ)
(২)
পড়াশোনা শেষ হলো রাকিবের। এবার
এখানে একটা চাকরী নিতে চায় সে। ভাগ্যিস
বাবা কে রাজী করিয়ে ইউ এস এ
তে আসতে পেরেছিল সে! তাই
তো গ্র্যাজুয়েশন টা কমপ্লীট
করতে পারলো। দেশের
কোনো ইউনিভার্সিটি তো তাকে ভর্তি নেয়
নি!
কেন যাবে সে দেশে? দেশ তো তাকে কিছুই
দেয় নি। তার বাবা মুক্তি যোদ্ধা।
ছেলে কে ইউ এস এ আসতে দিতে চান
নি প্রথমে। পরে ছেলের
জবর্দস্তি তে আসতে দিয়েছেন। কিন্তু শর্ত
ছিলো পড়া শেষে আবার দেশে ফিরতে হবে।
কিন্তু রাকিব কি এখন দেশে ফিরতে পারে?
তার তো একটা ফিউচার আছে! এই সব
সেন্টিমেন্ট দিয়ে হবে টা কি?
(৩)
সাগর ফেসবুক এ চ্যাট করছে ওর প্রবাসী বন্ধু
নীল এর সাথে।
-দোস্ত, কেমন আছিস?
-এই তো, ভালোয়। তুই কেমন?
-আছি একরকম।
-আংকেল আন্টি কেমন আছে?
-ভালো ই।
-দোস্ত, তোদের যা ওয়া তো ২ বছর
হয়ে গেল। আসবি না নাকি আর দেশে?
-যাবো রে দোস্ত, কিছুদিন পর ঘুরতে।
-বাকি জীবন টা কি ওখানেই কাটাবি? কেন
রে?
-আরে দোস্ত ফিউচার এর কথা ও
তো ভাবতে হবে না! আমার কথা ভেবে আব্বু
আম্মু এখানে এসেছে আমাকে ও
থাকতে হবে আমার ছেলে মেয়ের ভবিষ্যত এর
কথা ভেবে।
-ও আচ্ছা।
সাগর বুঝে গেল, দেশে থাকে বলে ওর ভবিষ্যত
হয়ত অন্ধকার।
ওপরের তিনটি লেখায় উদ্দেশ্যহীন।
প্রতি বছর ই আমাদের দেশ থেকে অনেক
মানুষ যান বিদেশে। তাদের এক দল যান
শ্রমিক হিসেবে, যাদের পাঠানো টাকায় সচল
থাকে আমাদের অর্থনীতি।
আরেক দল মানুষ যান নিজেদের বা তাদের
সন্তানের ব্রাইট ফিউচার এর আশায়।
দেশে তাদের থাকে না কোন যোগাযোগ।
তাদের সকলের প্রতি আমার রাগ নেই। কিন্তু
তারা অনেকেই উঁচু পর্যায়ে গিয়ে ভুলে যান
অতীতের কথা। যেই দেশে তার জন্ম, যেই
দেশ তাকে জন্ম থেকে ধারণ
করেছে তা হয়ে যায় ফকিন্নীর দেশ। দেশের
মাটিতে, মায়ের
কোলে বসে শিক্ষা নিয়ে তারা অন্যের দেশ
কে সমৃদ্ধ করেন, আর মনে বাজান এক ই
তানপুরা, আলাদা আলাদা সুরে। "আমার
তো একটা ফিউচার আছে" বা "এ দেশ
আমাকে কি দিয়েছে!"
©somewhere in net ltd.