নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমিও একদিন লাশ হব, সেই লাশ মাটির নিচে থেকে রোদ বৃষ্টিতে ভিজে অংগার হবে। বৃষ্টি ভিজা কাদায় শরীর ভিজে যাবে, শুধু অনুভবে নিথর লাশ হয়ে রয়ে যাব শেষ বিচারের অপেক্ষায়.......

ফেনা

মুক্ত ও সাদা মনের মানুষ হতে আগে চাইতাম। এখন আর চাই না। এখন একটু মুক্তি চাই, চাই জীবনটা শেষ হবে এই অপেক্ষার অবসান। [ মৃত্যুটা খুব স্বাভাবিক; বেঁচে থাকাটা অস্বাভাবিক।]

ফেনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ স্রোত ( পর্ব - ৩ )

২৬ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:১৫

স্রোত ( পর্ব – ০১)
স্রোত ( পর্ব – ২)


রাত এগারটা বাজে। সুন্দর একটা পরিপাটি বিছানাতে শুয়ে আছি। আচমকা লাফিয়ে উঠলাম। এইভাবে লাফিয়ে উঠাতে একটা নারী কন্ঠ ধমক দিয়ে বলল-“এই চুপ। একদম নড়াচরা করবা না। চুপচাপ শুয়ে থাক।“ মৌমিতা আপুর গলা। খুব অবাক হলাম। আমি এখানে কিভাবে এলাম জিজ্ঞাস করতেই আপু বলল- “আমার বান্ধবীর বাড়ি থেকে আসার পথে একটা দোকানের পাশে তোমাকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখে আমি আমাদের বাড়িতে এনে তোমাকে ডাক্তার দেখালাম। এখন আমি কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেলাম।

রাত বারটা বাজে। আপু আমার পাশে এসে বসলেন। আমি হালকা একটু কেপে উঠলাম। আপু আমার দিকে তাকাতেই বলল- কি ব্যাপার মৌন তুমি কান্দছ কেন? এই থাম থাম… আরে এত বড় ছেলে কাদে!! আপু আমাকে এখন যেতেই হবে। আম্মু হাসপাতেলে। এখন কি অবস্থায় আছে কে জানে?? বেচে আছে নাকি মরেই গেছে??? আমার ত এই মা ছাড়া আর কেউ নেই। খুব ছোট বেলাতেই বাবা আর একমাত্র ছোট ভাইটাকে ডাকাতদের ছুরির আঘাতে হারালাম। আমার জীবনের সবথেকে বড় দুর্ঘটনা। এর পর আমি আর আমার মা। বাবা মারা যাওয়াতে ঘরের উপার্জনও নাই। বাবা যা কিছু রেখে গেছেন তাই দিয়ে মা আর আমি চলছি। এই টানা পিড়নের জীবনে মা আমাকে বহু কষ্টে বড় করেছেন। আর কিছু আমার গলা দিয়ে বের হতে চাইছে না। কান্নায় গলা ভারি হয়ে গেছে। চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে। মৌমিতা আপুর দিকে তাকাতেই দেখি তার চোখেও পানি… সেও আমার সাথে কাদছে। দরজায় আন্টি দাঁড়িয়ে আছেন। সবাই নিরব। শুধু নিরব কান্নার আওয়াজ।
আমি উঠে দাড়ালাম। শরীরটা আমার এখনো কাপছে। মৌমিতা আপু বলল দাড়া, আমিও তোমার সাথে যাব।
আন্টি কাকে যেন ফোন দিলেন। কিছুক্ষনের ভিতর বাড়ির সামনে একটা সিএনজির আওয়াজ পেলাম। দুইজন পাশাপাশি বসে আছি। আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছেই। কোন ভাবেই থামাতে পারছি না। আপু আমার দিকে তাকিয়ে বললেন মৌন আন্টির কি হয়েছে? আম্মুর দুইটা কিডনিতেই সমস্যা। খুব দ্রুত অপারেশন হলে বাচানো যাবে, না হলে…

হাসপাতালে চলে আসলাম। সিএনজি থেকে নামব। আমি আপুর দিকে তাকালাম। দেখি তার চেহারা একদম ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। বসে আছে যেন পাথরের মত। আমি ডাকলাম। কোন সাড়া নেই। হাত ধরে ঝাকুনি দিতেই – হুম… হুস আসল। জিজ্ঞাস করলাম কি হয়েছে আপনার। না কিছু না বলেই সিএনজি থেকে নামল। রাত তখন প্রায় আড়াইটা।

আমি মার মাথার কাছে বসে আছি। মা নড়া চড়া করতে পাছে না। খালি পিটা পিট করে চোখ দুইটা নাড়ে। কিছু একটা বলতে চায়। পারেনা। মা চেষ্টা করেও কথা বলতে পারছে না এইটা চিন্তা করলেই আমার সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে আসে গলা শুকিয়ে আসে। মৌমিতা আপু সোফায় বিমর্ষ হয়ে বসে আছে।
রাত প্রায় চারটা বাজে। মা ঘুমাচ্ছেন। আমি গিয়ে সোফায় বসলাম। মৌমিতা আপুর পাশে। ঘুমে চোখ দুইটা হালকা লেগে আসছে। হঠাত অনুভব করলাম কেউ আমার কাধে মাথা রেখেছে। হুম মৌমিতা আপু মাথা রেখেছে। অনেক টেনশন আর কষ্টের মাঝে এক চিলতে সান্তনা রোদ।

সকালের রোদের তির্যক আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভেংগে গেল। তাকিয়ে ত একদম অবাক। মৌমিতা আপুর কোলে মা। আমার মাকে পড়ম মমতায় খাইয়ে দিচ্ছে। তার প্রতি অন্য রকম একটা ভাল লাগা অনুভব করলাম।

ডাক্তার আসলেন। সব কিছু চেক করে বললেন আপনি কি টাকা জমা দিয়েছেন। আমার মুখ ভয়ে ফ্যাকাশে হয়ে গেল। মাথা নেড়ে না বললাম। মৌমিতা এসে খুব দ্রুত বলল- জি অপারেশনের ব্যবস্থা করেন আজই টাকা জমা হয়ে যাবে। ডাক্তার চলে গেলেন।

আপু আমার দিকে তাকিয়ে আছে।ভয় এবং বিষণ্য চেহারা নিয়ে কিছু একটা বলতে গেলেই-আম্পু আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন- তুমি চিন্তা করিও না। একজন নার্সকে ডেকে মার খেয়াল রাখতে বলে আমার হাত ধরে বললেন- চল আমার সাথে।

হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রিক্সায় উঠলাম। চাপাচাপি করে বসে আছে। একটু পর পর আমি শুধু মৌমিতার দিকে তাকিয়েই থাকি। অবাক হচ্ছি। একে ত তার প্রতি আমার একটা ভাল লাগা কাজ করে তার উপর আমার এই বিপদের দিনে পাশে থাকা, যেখানে আমার নিজের আপন জনকেই পাইনি। আমার নিজের চাচা তো একবার হাসপাতালে যায়নি। কেন যায়নি সেইটাও আমি বুঝি টাকা দিবার ভয়ে। আপু আমাকে বল সোজা আমাদের বাড়ীতে বাড়িতে যাতে। আমি তাতে কোন আপত্তি না করে বাধ্য ছেলের মত জি আচ্ছা বলে চুপ চাপ বসে রইলাম।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫১

অনুতপ্ত হৃদয় বলেছেন: ভালো লাগলো,

২৬ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬

ফেনা বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন সব সময়।

২| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশ আসমানে স্যাটেলাইট ফিট করার পর থেকেই আসমান ফুটা হইয়া বৃষ্টির স্পিড বাইড়া গেছে

২৭ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

ফেনা বলেছেন: অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য।

৩| ২৬ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:০৯

মোঃ ফখরুল ইসলাম ফখরুল বলেছেন: বেশ ভাল =D

২৭ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

ফেনা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

ভাল থাকবেন সব সময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.