নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপরের প্রশ্নটি নিজেকে করার জন্য দেয়া হয়েছে হয়তো অনেকে অবাক হবেন, এ আবার কেমন প্রশ্ন! আমি শিক্ষিত, আইন মানি, সুন্দর পোষাক পরি, যেখানে সেখানে পানের পিক ফেলিনা, ইভটিজিং করিনা অতএব আমি একজন সভ্য মানুষ এতে আর সন্দেহ কি! ধৈর্য ধরে লেখাটা পড়ুন, তারপর আবার নিজেকে প্রশ্ন করুন ইংরেজিতে একটি কথা আছে “Know Thyself” লালন সাঁই এর ভাষায় “আপন ঘরের খবর নে না“ আসুন আজ আমরা একটু আপন ঘরের খবর নেয়ার চেষ্টা করি
একটা প্রশ্ন আছে, “মানুষ কেন আইন মানে?“ এখানে আইন বলতে রাষ্ট্রীয় আইন, পারিবারিক আইন, সামাজিক আইন সবই বোঝানো হয়েছে জুরিসপ্রুডেন্স এর দৃষ্টিতে মানুষের আইন মানার কারণ গুলো হচ্ছে-
১) শাস্তির ভয়ে
২) সামাজিক এবং ধর্মীয় করণে
৩) অভ্যাসের কারণে
৪) বিবেকের তাড়নায়
এখন ধরুন ক এবং খ দুটি দেশের নাগরিকরাই আইন মেনে চলে ক দেশের নাগরিকরা আইন মানে ১ নং কারণে অর্থাৎ শাস্তির ভয়ে আর খ দেশের নাগরিকরা আইন মানে ৪ নং কারনে অর্থাৎ বিবেকের তাড়নায় বাহ্যিকভাবে দু দেশে একই অবস্থা বিরাজমান থাকলেও ক দেশের তুলনায় খ দেশের আইন শৃঙখলা পরিস্থিতি অধিক টেকসই এবং এদেশের নাগরিকরা অধিক সভ্য
অর্থাৎ যে ব্যক্তি ঐ তালিকার যত নিচের দিকের কারণে আইন মানে সে তত সভ্য ধরুন এ সমাজে আপনি চরিত্রবান হিসাবে পরিচিত, ঘুষ খান না, অন্যের সম্পদ আত্বসাৎ করেন না আতএব সবার মনে হতে পারে আপনি একজন সভ্য ব্যক্তি তবে শুধু এ থেকেই আপনি একজন পরিপূর্ণ সভ্য ব্যাক্তি এ সিদ্ধান্তে আসা যায় না, শুধু বলা যায় আপনি একজন সু নাগরিক প্রশ্ন উঠতে পারে কেন আপনার সভ্যতার নিশ্চয়তা দেয়া যাচ্ছে না, কারণ হয়তো আপনি সুযোগের অভাবে চরিত্রবান,পান না তায় ঘুষ খাননা বা আপনার জোর নাই দেখে মুলুক আপনার বলে দাবী করেন না। পরিবেশ পরিস্থতির কারণেই আপনি সভ্য। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে আপনার থলের ম্যাঁউ হয়তো ঠিকই বের হয়ে আসবে। আপনাকে পরিপূরর্ণ ভাবে তখনই সভ্য বলা যাবে যখন আপনি শুধু বিবেকের কারণে একাজ গুলো করা থেকে বিরত থাকবেন।
যে শাস্তির ভয়ে অন্যায় করেনা তার রাষ্ট্র বা সমাজকে ফাকি দিয়ে অন্যায় করার সুযোগ থাকে, যে ধর্মের ভয়ে অন্যায় করেনা তার তওবা করে ক্ষমা পাবো এই আশা থেকে অন্যায় করার সুযোগ থাকে কিন্তু যে বিবেকের তাড়নায় অন্যায় করেনা তার সে রকম কোন সুযোগ থাকে না, সে নিজের কাছে দায়বদ্ধ, কোন অন্যায় করলে তার শাস্তিটা তখনই শুরু হয়ে যায় ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ থাকেনা
ছোট বেলায় পড়া এ ব্যপারে শেখ ফজলর করিমের একটা সুন্দর কবিতা মনে পড়ছে,
কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক, কে বলে তা বহুদূর?
মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক, মানুষেতে সুরাসুর।
রিপুর তাড়নে যখন মোদের বিবেক পায়-গো লয়,
আত্মগ্লানির নরক-অনলে তখনি পুড়িতে হয়।
প্রীতি ও প্রেমের পূণ্য বাঁধনে যবে মিলি পরস্পরে
স্বর্গ আসিয়া দাঁড়ায় তখন আমাদেরই কুঁড়েঘরে।
তাই নিজেকে প্রশ্ন করুন “যেখানে শাস্তির ভয় নাই, যেখানে সমাজকে ফাঁকি দেওয়া যায়, যেখানে অন্যায় করে তাওবা করার সুযোগ আছে সেখানে আমি কেমন?“ সেটাই আপনার সভ্যতার মানদণ্ড।
ছবিসূত্রঃ ইন্টারনেট
©somewhere in net ltd.