![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীটাকে দর্শন করি, একটু আলাদা ভাবে।
রিহান গল্প লিখবে কিন্তু কোনও টপিক তার মাথায় আসছেনা। বালিশে হেলান দিয়ে হাতে অত্যাধুনিক দশ বাই দশ ইঞ্চির থ্রিডি স্ক্রিন নিয়ে বসে আছে। থটস্ক্রিন নামক এই যন্ত্র টিতে নির্দেশনা দিতে হলে শুধু ভাবতে হয়। যথারীতি রিহান নোটবুক এপস বের করে মনে মনে শব্দ ভাবছে আর বাক্য সাজাচ্ছে কিন্তু মনের মত গল্পের সিকুয়েন্স তৈরি করতে পারছেনা। নাহ এভাবে আর হবেনা কাল থেকে বিকেল বেলা এনটিপ্স এ যেতে হবে ওখানে গিয়ে কোনও নদীর পাড় সিলেক্ট করে গল্প লিখার কাজটা করতে হবে।
পরেরদিন বিকেল বেলা রিহান এনটিপ্স এ আসলো,ওয়েটিং রুমের সোফায় বসলো সে। পাশ থেকে একটা থটস্ক্রিন সামনে চলে আসলো এবং প্রয়োজনীয় তথ্য এন্ট্রি করতে হলো, এখন কিরকম প্রকৃতি সিলেক্ট করবে রিহান সেটাই ভাবছে। আজ থেকে চারশো বছর আগের পদ্মা নদীর পাড় সিলেক্ট করলো সে। সব কিছু হয়ে গেলে চার নাম্বার রুমে রিহান কে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।
এনটিপ্স এর পূর্ন রুপ হলো ন্যাচারাল থ্রিডি প্রজেকটর সিচুয়েশন। এখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্তিম প্রাকৃতিক দৃশ্য তৈরি করা হয় আর এখানে ঢুকার আগে হাতে ঘড়ির মত ছোট একটি ডিভাইস বেধে দেওয়া হয়। এতে করে কৃত্তিম ভাবে তৈরি করা পরিবেশ এর সাথে নিউরন এর কানেকশন ঘটানো হয় যার জন্য যে কেউ নিজের ইচ্ছেমত যেকোনও জায়গা ও পরিবেশে বিচরন করতে পারে। রিহান হাতে ডিভাইস টি পড়ে দরজা পার হওয়ার সাথে সাথে আজ থেকে চারশো বছর আগের পদ্মার পাড়ে চলে আসলো।
হাওয়া বইছে অনেক জোরে জোরে আর নদীর পানি কল কল করছে, কিনারায় স্রোতের ধাক্কা, সূর্য্য পশ্চিম দিকে, আকাশে এক ঝাক পাখি উড়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষন হাটতে হাটতে রিহান সুন্দর একটা জায়গায় ঘাসের উপর বসে পড়লো। গল্প লিখার মত শীতল পরিবেশ রিহান অনুভব করতে পারছে। দেরী না করে ব্যাগ থেকে ডায়েরী আর কলম বের করে গল্প লিখার প্রস্তুতি নিয়ে নিলো। প্রথম লাইনে কলম বসাতে যাবে এমন সময় সে ভাবলো কি লিখবে সে? লিখার মত তো কিছুই মাথায় আসছেনা। প্রাকৃতিক পরিবেশে লেখনীর সম্পুর্ন আনন্দ নিতেই সে থটস্ক্রিন এর জায়গায় ডায়েরিতে হাতে কলমে লিখার ইচ্ছে করেছিলো। কিন্তু মাথায় কোনও টপিক না আসার কারনে সব ভেস্তে গেলো। কিছুক্ষন এনটিপ্স এ থাকার পর এক প্রকার রাগ করেই সেখান থেকে কুইট করলো।
পরের দিন রিহান তার পরিচিত একজন সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে সব খুলে বললো। সাইকিয়াট্রিস্ট ড.ইশা সব বুঝতে পেরে এক ডোজ ট্রিটমেন্ট তৈরি করলেন যেটার মেয়াদ সাতদিন। সাতদিন পর আবার নতুন করে ডোজ টা আপডেট দিতে হবে শুধু। ট্রিটমেন্ট টার নাম রিংনিউরক্সিন, এ ডিভাইসটি ঠিক আংটির মত আঙুলে পড়তে হয়। ডিভাইসটি সংবেদনশীল স্নায়গুলোর মাধ্যমে ব্রেইনে এমন প্রভাব সৃষ্টি করবে যাতে ইউজার এর ক্রিয়েটিভ বিষয় গুলোর উপর ক্ষমতা বেড়ে যায়। আর ড. ইশা এই রিংনিউরক্সিন টি রিহানের পছন্দের হাতের লিখা, সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয়, ভাল চিন্তা ভাবনা ইত্যাদির উপর বেস করে তৈরি করে দিয়েছেন। সাতদিন পর আবার নিজের ইচ্ছে মত বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আপডেট দিতে পারবে রিহান।
ট্রিটমেন্ট নিয়ে রিহান অনেক খুশি সে এখন নিয়মিত এনটিপ্স এ যায় আর ডায়েরীতে সুন্দর সুন্দর সুন্দর গল্প লিখে। আর এতক্ষনের এই গল্পটি রিহানের লিখা প্রথম গল্প সায়েন্স ফিকশনের উপর।
©somewhere in net ltd.