নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অপরাজেয় কলম সৈনিক

আমিনূল চৌধুরী

আমিনূল চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মক্কা মদীনার ইসলাম ও আহলে হাদীস মতবাদ ।

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৩৯

মক্কা-মদিনার ইসলাম ও আহলে হাদীস মতবাদ:
༺ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ༻
আসসালামু আলাইকুম ওরহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু
আহলে হাদীস ভাই বললেন, আমাদের দ্বীন মক্কা-মদীনার।
আপনারা কুফার দ্বীন পালন করেন।

আমি বললাম,
আপনাদের বড় ভাই আহলে কুরআনও একই কথা বলে। তারা বলে, আমাদের ইসলাম হলো মক্কা-মদীনার। কারণ, কুরআনের কিছু সূরা মক্কী (মক্কায় অবতীর্ণ), কিছু সূরা মাদানী (মদিনায় অবতীর্ণ)। কুরআনের বিপরীতে সিহাহ সিত্তার একটি কিতাব মক্কা-মদীনার কেউ লেখেনি। আপনাদের বিরুদ্ধে আহলে কুরআনদের যুক্তিটা বেশ শক্তিশালী মনে হচ্ছে। আমি আরও বললাম, আপনারা তো বিখ্যাত তাবে-তাবেয়ী মদীনার আলেম ইমাম মালেক রহ. এর লেখা হাদিসের কিতাবকেও সিহাহ সিত্তা থেকে বের করে দিয়েছেন, অথচ আমাদের কুফার ইমাম উক্ত কিতাব ইমাম মালেক থেকে বর্ণনা করেছেন। আপনি ইমাম মহাম্মাদ রহ. এর মুয়াত্তা দেখুন। বড় আশ্চর্যের বিষয়, যারা মদীনার ইসলাম বর্ণনা করে, তাদের দ্বীন মদীনার হয় না, অথচ যারা মদীনার কিতাবের কোন গুরুত্বই দেয় না, তাদের ইসলাম মক্কা-মদীনার হয়ে যায়।

#মদিনাবাসীর_বিরোধিতা:
আসুন দেখি, আপনাদের মদীনার ইসলামের কী অবস্থা।

১. আপনাদের নিকট শুধু পাগড়ির উপরও মাসেহ করা জায়েজ। মদীনার ইমাম মালেক রহ. বলেন, শুধু পাগড়ির উপর মাসেহ জায়েজ নয়। এমনকি মালেকী মাযহাব অনুযায়ী শুধু পাগড়ির উপর মাসেহ করলে নামাজ হবে না। দেখুন, মদীনাবাসীরা আপনাদের ওযুও মানে না, আপনাদের নামাযকেও বিশুদ্ধ বলে না।

২. ইমাম মালেক রহ. তায়াম্মুমের পদ্ধতি বর্ণনা করে লিখেছেন, একবার মাটিতে হাত লাগিয়ে মুখ মাসেহ করবে। দ্বিতীয়বার হাত লাগিয়ে উভয় হাত কনুই পর্যন্ত মাসেহ করবে। আপনারা মদিনাবাসীর মাজহাব ছেড়ে বোখারার মাজহাব গ্রহণ করেছেন। আপনাদের নিকট হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসেহ করা যথেষ্ট এবং একবার মাটিতে হাত লাগিয়ে একই সঙ্গে মুখ ও হাত মাসেহ করতে হবে।

৩. ইমাম মালেক রহ. এর মাজহাব হলো, নামাজে হাত ছেড়ে রাখবে। অথচ আপনাদের দাবি হলো, রাসূল স. সর্বদা কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠিয়ে ডান হাত দ্বারা বাম হাতের কনুই ধরে বুকের উপর রাখেন। এই মাযহবটি কোন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। মদীনাবসীর কারও আমল দ্বারাও প্রমাণিত নয়।

৪. আপনারা বলে থাকেন, উচ্চ আওয়াজ বিশিষ্ট নামাজে মুসল্লী ইমামের পিছে সূরা ফাতিহা না পড়লে নামাজ হবে না। অথচ ইমাম মালেক রহ. বলেন, উচ্চ আওয়াজ বিশিষ্ট নামাজে মুক্তাদী সূরা ফাতিহা পড়বে না।

৫. ইমাম মালেক রহ. বলেন, মুক্তাদী আমীন আস্তে বলবে। ইমাম আমীন বলবে না। একাকী নামাজে আমীন বলার অনুমতি রয়েছে। অথচ আপনাদের নিকট ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে উঁচু আওয়াজে আমীন বলবে। গুরাবায়ে আহলে হাদিসদের ইমাম মুফতী আব্দুস সাত্তার লিখেছে, যে অপরিণামদর্শী ও ফেতনাবাজ উঁচু আওয়াজে আমীন এর প্রতি বিরূপ মনোভাব রাখে এবং যারা উঁচু আওয়াজে আমীন বলে, তাদের প্রতি হিংসা রাখে, সে নি:সন্দেহে একজন ইহুদী।

৬. ইমাম মালেক রহ. এর মাজহাব হলো, মহিলারা নামাজে সঙ্কুচিত হয়ে দাঁড়াবে। রান ও বাহু মিলিয়ে রাখবে। সুতরাং মহিলারা রুকু ও সিজদায় খুবই সঙ্কুচিত হয়ে নামাজ আদায় করবে। অথচ আপনাদের বক্তব্য হলো মহিলা-পুরুষের নামাজে কোন পার্থক্য নেই। এরপরও কোন মুখে দাবি করেন যে, আমাদের ইসললাম মক্কা-মদীনার?

৭. মুয়াত্তায়ে ইমাম মালেক, পৃ.৭ ও পৃ.১৪৯ আছে, যে ব্যক্তি জামাতের নামাজে ইমামের সঙ্গে রুকুতে শরীক হবে সে ঐ রাকাত পাবে। অথচ আপনারা বলেন, সে রাকাত পাবে না।

৮. ইমাম মালেক রহ. এর মাজহাব হলো, ইমাম ফজরের নামাজ শুরু করলে আগন্তুক বিতর নামাজ পড়তে পারবে। অথচ আহলে-হাদিসরা মদিনাবাসীর এই মাসআলাকে ভুল বলে থাকে।

৯. ইমাম মালেক রহ. বলেন, তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া নামাজে হাত উঠানোর বিষয়ট দুর্বল। তিনি আরও বলেন, আমি নামাজে রফয়ে ইয়াদাইন করে এমন কাউকে চিনি না। অথচ আহলে হাদিসরা এই মাসআলায় কী পরিমাণ চ্যালেঞ্জবাজী করে থাকে, তা কারও অজানা নয়।

১০. ইমাম মালেক রহ. এর বিশিষ্ট ছাত্র আব্দুর রহমান ইবনুল কাসেম বলেন, জানাযার নামাজে প্রথম তাকবীর ছাড়া অন্যান্য তাকবীরে হাত উঠানো বৈধ নয়। অথচ আপনাদের মাওলানা সানাউল্লাহ অমৃতসরী বলেন, জানাযার নামাজে প্রত্যেক তাকবীরে হাত উঠানো মুস্তাহাব।

১১. ইমাম মালেক রহ. বলেন, জানাযার নামাজে কুরআন পাঠের কোন রীতি আমাদের শহরে নেই। জানাযার নামাজ শুধু দোয়া। আমার শহরের আলেমগণকে এ মতের উপরই পেয়েছি। অথচ আহলে হাদিসদের বক্তব্য হলো, ইমাম অথবা মুক্তাদী যদি জানাযার নামাজে সূরা ফাতিহা না পড়ে, তবে নাময বাতিল হয়ে যাবে।

১২. জানাযার নামাজ অনুচ্চ স্বরে কিরাত পাঠের সমগ্র মুসলিম উম্মাহ একমত। এ ব্যাপারে কোন মতানৈক্য নেই। অথচ সমগ্র মুসলিম উম্মাহের বিরোধিতা করে আহলে হাদিসরা বলে জানাযার নামাজে উচ্চ স্বরে কেরাত পড়া সুন্নত।

১৩. ইমাম মালেক রহ. বলেন, আমি মসজিদে জানাযা রাখা মাকরুহ মনে করি। অথচ আহলে হাদিসদের বক্তব্য হলো, মসজিদে জানাযা রাখা সুন্নত এবং এর অস্বীকার একটি সুন্নতের বিরোধিতা ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.