![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একঘেয়েমি আমাকে তাড়া করছে নাকি আমি একঘেয়েমিকে তাড়া করে বেড়াচ্ছি, বোঝা দায়। http://aisjournal.com http://www.androidkothon.com
দু'দিন অসুস্থ থাকার পর অবশেষে চলে গেল সুন্দর হলুদ রঙের মায়াবী পাখিটা; যে সঙ্গীর সঙ্গে আমাদের বারান্দার ঝুলন্ত বাসায় বসবাস করতো ।
ঢাকার পশুপাখির সবচাইতে বড় মার্কেট কাঁটাবন। সেখান থেকেই খাঁচাসহ পাখি দু'টো কেনা হয় গত বিশ্ব মা দিবসে। বাসায় অধিকাংশ সময়ই আম্মু একা থাকে। মূলত তার জন্যই পাখি দু'টো কেনা হয় যে এগুলো নিয়ে কিছুটা সময় কাটবে।
বড় করে দেখতে এখানে ক্লিক করুন ।
পাখিগুলোর যত্ন করা, গোসল করিয়ে দেয়া, সময়মতো খাবার দেয়া ইত্যাদি সব কাজ আম্মুই করতো। পাখিগুলো ছিল খুবই চঞ্চল প্রকৃতির। সারাদিনই লাফালাফি, ঝগড়াঝাটি, ভেতরের কাগজ ছেঁড়াছেঁড়ি ইত্যাদি করে সময় কাটাতো। খাবার দিতে একটু দেরি হলে চিৎকার করে সারা বাড়ি মাথায় তুলতো। খাবার দেয়ার আগে খাবারের ছোট্ট পটটাতে উঠে বসে থাকতো। যেন ডাইনিং টেবিলে নাস্তার জন্য বসে আছে। খাবার দিলে আবার শুরু হতো দু'টোর মধ্যে ঝগড়া। কে আগে খাবে সেই ঝগড়া। মাঝে মাঝে আলাদা পাত্রে খাবার দিতাম। তবুও ঝগড়া করত। তখন বুঝলাম, এই ঝগড়া সেই ঝগড়া না।
এছাড়াও সারাক্ষণ মুখোমুখি বসে বকবক করার দারুণ দৃশ্যের বর্ণনা নাহয় না-ই দিলাম। আর খাঁচার নিচে বিছানো কাগজ ঠোঁট দিয়ে ছেঁড়া, এক টুকরো ঝুলন্ত সুতা ধরে লাফালাফি করা তো লাভবার্ডের কমন বৈশিষ্ট্য ।
দুটো পাখির মধ্যে হলুদটাই মেয়ে। দেখতে দারুণ সুন্দর। যেই দেখত, তাকিয়ে থাকতো। সেজন্য বাহিরের দিকে কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছিলাম। মানুষের নজরে পড়ে কয়েক সপ্তাহ আগে পাখিগুলো শুকিয়ে অর্ধেক হয়ে গিয়েছিল। কী ভেবে বাহিরের দিকটা ঢেকে দেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই আবার আগের সৌন্দর্য ফিরে পায় পাখিগুলো। বুঝতে পারি, এগুলো অত্যন্ত ভীতু। বাহিরের দিকে সারাদিন মানুষের যাতায়াত দেখে ভয়ে অস্থির হয়ে থাকে। তাই সবদিক খোলা রেখে শুধু বাহিরের দিকটা ঢেকে দেয়ার পর সব ঠিক হয়ে গেল। নিজের ঘরের মতোই বসবাস শুরু করলো পাখি দু'টো।
কিন্তু হঠাৎই গত পরশুদিন অসুস্থ হয়ে পড়লো খাঁচার সবচাইতে সুন্দর পাখিটা, যেটা মেয়ে। কেমন যেন সারাদিন ঝিম মেরে পড়ে থাকতে শুরু করলো। অস্থির হয়ে গেল আম্মুও। ওষুধের জন্য আমি আর আব্বু আশেপাশের সবক'টা ফার্মেসি দৌড়াদৌড়ি করলাম। ওষুধের নাম জানতাম, কিন্তু সেই ওষুধ কোথাও পেলাম না।
গত দু'দিন ধরে খাঁচার সেই চঞ্চলতা আর নেই। কেমন যেন মুষড়ে পড়েছে খাঁচার পরিবেশ। ছেলে পাখিটা সারাক্ষণ চোখা ঠোঁট দিয়ে অসুস্থ পাখিটার শরীর আঁচড়ে দেয়। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল মেয়ে পাখিটার এভাবে ঝিম মেরে পড়ে থাকাটা ছেলে পাখিটার খুব খারাপ লাগছিল। বিশেষ করে গতকাল সারাটা দিন মেয়েটার জন্য ছেলেটার সে কি দুশ্চিন্তা! অবলা একটা প্রাণীর মধ্যে এমন মমতাবোধ বাকরুদ্ধ করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল।
অথচ আজ.. সেই হলুদ পাখিটা আর নেই। সকালেই পাখিটাকে খাঁচার ভেতরে বসার স্টিকটাতে মৃত পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আম্মু পাখিটা সামনে নিয়ে অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে ছিল। গত ক'টা মাস তার হাতের দেয়া খাবার খেয়েছে পাঁখিটা। চিৎকার করে তাকে ডেকেছে। খাবারের জন্য ডাকা মানে তো তাকেই ডাকা, তাই না? আর আজ সেই পাখিটা সুন্দর একটি স্যুভনিরের মতো পড়ে আছে মাটিতে।
একটি অবলা প্রাণীও মানুষের মনে স্থান করে নিতে পারে।
পাখির খাঁচাটা আজ প্রায় খালি। সবুজ পাখিটার মধ্যে নেই কোনো চঞ্চলতা। নেই কথা বলার জন্য কেউ। ওষুধের জন্যই বোধহয় মারা গেল সুন্দর পাখিটা। এটা ভেবে নিজেকে আরো বেশি অপরাধী মনে হচ্ছে। হয়তো ওষুধের খোঁজে আরো দূরে যাওয়া উচিৎ ছিল। তাহলেই হয়তো খাঁচার প্রাণ-চাঞ্চল্য আজ থেমে যেত না।
এখনো সবুজ পাখিটাকে হলুদ পাখিটার খোঁজে খাচাময় ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।
দ্রষ্টব্যঃ যারা পাখিকে খাঁচার মধ্যে আটকে রাখা পছন্দ করেন না, তাদের অবগতির জন্য বলছি, লাভবার্ড এমন এক প্রজাতির পাখি যারা প্রকৃতিতে মুক্তভাবে বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারে না। খাঁচার মধ্যেই এদের জীবন সবচেয়ে ভালো কাটে। তথ্য সূত্রঃ ইন্টারনেট (সঠিক সাইটটার ঠিকানা মনে নেই)।
ছবি তোলা হয়েছে নকিয়া ৫১৩০ এক্সপ্রেস মিউজিক-এর ক্যামেরা ব্যবহার করে। নিম্ন কোয়ালিটির জন্য দুঃখিত। ছবি অন্যত্র ব্যবহার না করার বিনীত অনুরোধ রইল।
২৭ শে অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৪:১৫
আমিনুল ইসলাম বলেছেন: প্রাণীর জন্যও।
২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৫
তামজি বলেছেন: সুন্দর!!!
আমার ও পাখি পোষতে ইচ্ছা করে
কিন্তু মনে হয় যত্নআত্তি ঠিকভাবে নিতে পারব না
তাই আর ইচ্ছা করিনা
২৭ শে অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৪:৪০
আমিনুল ইসলাম বলেছেন: যত্ন ঠিকভাবে নিতে না পারলে না পোষাই ভালো।
৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৮
সিরাজ বলেছেন: এতবড় সময় নাই
৪| ২৮ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:৪৩
রজনী বলেছেন: খুব কষ্ট লাগলো। আমারও ২ টা পাখি আছে। খুব ভালোবাসি ওদের, কিন্তু ৪ বছর ওদের থেকে দুরে আছি। খুব দেখতে ইচ্ছা করে।
২৮ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:৫৪
আমিনুল ইসলাম বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৪:১১
রেহনুবানিজাম ইভা বলেছেন: প্রাণের জন্য ভালোবাসা