নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যান্ত্রিক সব খোলা চিঠি

অপ্রয়োজনে অনেক কথা বলে যাই, কিন্তু বলা হয়না আরো অনেক বেশী কথা- অনেক আপন মানুষদেরকে। তাইতো, এই খোলা চিঠি। হয়তো কারোর চোখে পরবে কোনদিন, যখন আমি থাকবোনা.....

আনন্দক্ষন

মানুষ হয়ে জন্মে যখন ফেলেছি, তাই নিরুপায় হয়ে মৃত্যুকে বরন করতেই হবে। পৃথিবীতে এসেছিলাম একা, জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে চলতে হয় একা, মরতেও হবে একা। তাই তো নিজের খুশি মতো বাচবার চেষ্টা করে চলেছি, আনন্দের সাথে। জন্ম নেবার সময় মাকে কষ্ট দিয়ে ছিলাম আর কিছু অক্ষমতার জন্য চলার পথে ইচ্ছে না থাকা সত্বেও কষ্ট দিয়েছি ভালোলাগা মানুষগুলোকে। তাই হয়তো পৃথিবীটা ছাড়বার সময় এদেরকেই আবার কষ্ট দিতে হবে ! তাই তো কেবল ভালোলাগার- ভালোবাসার এই মানুষগুলোকে গুরুত্ব দেই। সমাজ নামক জঞ্জালটাকে এড়িয়ে চলি আর প্রতিটা নিঃশ্বাসের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই সৃষ্টিকর্তাকে।

আনন্দক্ষন › বিস্তারিত পোস্টঃ

তুষারের দেশে আনন্দের এক একটা দিন.....ষষ্ঠদশ পর্ব

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:০৬

তুষারের দেশে একটা নতুন বছর আর কিছু শূন্যস্থান...



প্রকৃতিতে দেয়া-নেয়ার হিসাব সমান। ১৯৯৫ এ, সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে হারিয়ে, সেই ডিসাম্বর মাসেই আনন্দ উপহার পায় একটা ডাইরী। তারপর থেকে বন্ধুর শুন্যস্থান আর মনের কথাগুলো বলবার একটা উপলক্ষ্য হয়ে থাকলো সেই ডাইরী। জন্মদিন, কিংবা পরীক্ষার ফলাফলের প্রত্যাশা, হোক না কোন অনিশ্চিয়তা, আনন্দের সবকিছুর সাক্ষী হয়ে থাকে ডাইরীটা। হোষ্টেলে এতো সাবধানতার উপায় ছিলনা বলে কখোনো কখোনো অন্য একটা ছোট ডাইরী কিংবা লেখার পাতায় ধরে রাখতো সময়গুলোকে। পরে জুড়ে দিত ডাইরীর সাথে স্কচটেপ অথবা আঠা দিয়ে। দেশের বাহিরে আসার পরও ডাইরী তার ছায়া সংগী হয়েই থেকেছে। আর রুমমেটরা বাঙ্গালী না বলে কোন ভয়ও নেই, পরেই থাকে টেবিলের উপর। কিন্তু এখন আনন্দ আর মনের সব কথা লেখেনা, ডাইরীর পাতা অনেক কম বলে- জায়গা সংক্ষিপ্ত, তাই মূল্যবানও। হয়তো জীবনটার মতোই, দিন যত যাচ্ছে, সময় তত কমে আসছে, তাই হয়তো এই অল্প সময়টাও খুব মূল্যবান। আবার সেই মনটাও নেই, কিংবা মনটা আছে কিন্তু ব্যপ্তি এতো বেশি যে, গভীরতা কমে গেছে হয়তো।



ডাইরীর পাতায় বছরের শেষদিনটায় লিখতো দেনা-পাওনার হিসাব। কি পেল, কি হারালো। আর আগামীতে কি পাবে তার জন্য খালি জায়গা। বছরের বিভিন্ন সময়ে সেই জায়গাগুলো ভরে উঠতো শব্দের সমারোহে।



থাকতো অনিশ্চয়তা, থাকতো ভয়। প্রতিবারই ভাবতো, হয়তো এই পাতাটা আর শেষ হবেনা, হয়তো আগামী পহেলা জানুয়ারী কিংবা পহেলা বৈশাখে নতুন কোন পাতায় লেখা হবেনা....আরো অনেক কিছু। যেমন যান্ত্রিক লেখার পাতায় ভরেছিল গতবছরের একটা ব্লগের পাতা



কেনজানি, আজ কোন কিছুতেই আগ্রহ হচ্ছেনা, অফিস থেকে ফিরে লেপটপের সামনে কেবলই বসে থাকা আর দীর্ঘ শ্বাস ফেলা ছাড়া আর কোন কাজ করতে মন চাইছেনা। মনটা ভালো নাই, তাই হয়তো কোন কাজেও মন নেই। নিজের আপনজনেরা এখনও ঘুমের দেশে। ভালোবাসার- ভালো লাগার মানুষদের বিরক্ত করতে ইচ্ছে হচ্ছেনা, হয়তো করা যাবেও না।



এই ক্রিসমাসের বন্ধটা আনন্দ কাজ করেই কাটিয়েছে। কারনটা সঞ্চয় বাড়ানোর চাইতেও সময় পার করে দেয়ার উপলক্ষ্যই বড়। ক্রিসমাসের আগে আর পরে মিলিয়ে দুইসপ্তাহে মোট ১২৫ ঘন্টার কাজের সিডিউল। এই সময়টায় কেবল গুটিকতক খাবারের দোকান, হালপাতাল আর বৃদ্ধাশ্রম নিয়মিতভাবে চলে। তাই অফিসের বন্ধের সময়টার জন্য আগে থেকেই কাজের কথা মাথায় রেখে আনন্দ পুরোনো দুইটা কাজের জায়গায় জানিয়ে রেখেছিল।



আনন্দ যখন পাশ করে, প্রথম মাসটা কেবল ভালো জবের জন্য চেষ্টা করছিল। সাধারন বাঙ্গালী সংস্কৃতি আর সমসাময়িক কাছের মানুষদের আচরনের কারনেই হয়তো ফুট সার্ভিস কিংবা ছোটখাট কাজের কথা ভাবতেও পারেনি। দুমাস পার হবার পর যখন সব সঞ্চয় শেষ হবার পথে, তখন একদিন এক প্রফেসর হঠাৎ বলে ফেলে, উনি অনেক ভাগ্যবান ছিলেন যে পাশ করার পরেরদিনই একটা কফিশপে কাজ পেয়ে গিয়েছিলেন। আনন্দের মনে হলো, উনি যেন আনন্দের মানসিকতা বুঝেই ইংগিত দিলেন। পাশ করা একটা স্টুডেন্ট মানেই যে সে অনেক উচুদরের কাজ ছাড়া আর কিছু করতে পারবেনা এটা ঠিক না, এখানে কাজ মানে কেবলই উপার্জন, সম্মান-অসম্মান বলে যে শব্দগুলো আছে তা মানুষের নিজের মাঝে, কাজের উপর না। মনে মনে বললো, একজন প্রফেসর মানে কেবল লেখাপড়ার সুপারভিশান করা না, ছাত্রকে সঠিক সময়ে একটা পথ দেখানোও বটে। ধন্য আমি, যে কিনা পেয়েছি ভক্তি করবার মতো শিক্ষক, পেয়েছি বাবার মতো সম্মান আর ভালোবাসবার মতো পথপ্রদর্শক।



হয়তো আসছে যে বছর, তা নিয়ে আসছে নতুন কোনদিক। খুলে যাবে জীবনের কোন নতুন দরজা, দেখা মিলবে নতুন দিগন্তের। হয়তো পুরোনো

অনেক চেনা মুখ দুরে সরে যাবে, কিংবা আমিই সরে যাবে অনেক দুরে, কোনদিন হয়তো আর দেখা হবেনা অগাধ ভালোবাসার এই সব ভীনদেশী মানুষগুলোর সাথে, যারা সহজ করে দিয়েছিল চলার পথ, কিংবা বাতি হাতে দাড়িয়ে ছিল অন্ধকার পথের ধারে। কখোনবা ভালোবাসায় জড়িয়ে ধরে ছিল আমার আনন্দ উজ্জাপনে, কষ্টের দিনে মাথায় হাত রেখেছিল পরম মমতায়।



জানিনা, কোথায় কি অপেক্ষায় আছে আমার। নাকি অপেক্ষার শেষ সব কিছুর। প্রকৃতি হয়তো হাসছে আমার কথা ভেবে, ভাবছে "বোকা মনুষ্য"- যার পরের মুহূর্তের কোন নিশ্চয়তা নেই, সে কিনা চিন্তা করছে ভবিষ্যতের। না, আমি ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করিনা, চাইছি - না পাওয়ার মাঝে নিজের ভূলগুলো খুজতে আর পাওয়ার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাতে।



হ্যা, ২০১২। ধন্যবাদ তোমায়। তুমি দিয়েছো অনেক। বিচিত্র অভিজ্ঞতার ভান্ডার, অনেক ভালোলাগা আর নতুন কিছুর সাথে পরিচয় হবার সুযোগ, এই তুষারের দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে অনেক ভালোবাসার খোজ পাওয়া, আরো অনেক কিছু। বৈচিত্রে ভরা একটা বছর।



ঠিক যেন, ২০১২এর শেষ চাঁদটার মতোই। সকালে সারে পাঁচটায় বাসা থেকে বের হয়েই চোখে পরলো, তুষারে ডাকা গাছটার ফাকে বিশাল বড় চাঁদটা। রূপে যেন অসাধারন, মেলে ধরেছে নিজেকে সূর্যোদয়ের আগে কেবল প্রভাতের অল্প আলোয় , স্বল্প সময়ের জন্য। কিন্তু আমি তখন ব্যস্ততায় তাকে কেবল সাধুবাদ জানাতে পারলাম, বিদায় জানালাম সংক্ষিপ্তভাবে। সাথে থাকা ক্যামেরাটা বের করে তাকে চিরদিনের জন্য ধরে রাখবার মতো সময়টুকুও আমার ছিলনা। খানিকবাদেই দেখলাম, সে আমার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছে আমারই অগোচরে, আমারই অবহেলায়।



আর সামনে দাড়িয়ে আছে সূর্য, আকাশ লাল করে। দিগন্ত জোড়া আলো নিয়ে ভালো লাগার সাথে সাথে, যা ভীতিকর আগামীর অনিশ্চয়তাকেও স্পষ্ট করে দেবার আশংকা নিয়ে আমার সামনে মেলে ধরেছে বছরের শেষদিনটা ।



বিদায় ২০১১।

----------------------------------------------------------------------------

*হ্যা, বদলে গেছে অনেক কিছু। প্রিয় বন্ধু-সাথী আজ অনেক দুরে। আর * * আমি অনেক কাছে, নিজের পরিবারের। হয়তো পরিবারের কাছাকাছি* *থাকতে চাইবার জন্যই আজ আমার এই জায়গায় দাড়িয়ে থাকা।যদি তাই* * হয় , হোক। আমার কোন অভিযোগ নেই। অভিযোগ নেই, আমার বন্ধুর* * আশা পুরনের আনন্দে। ২০১৩ আমায় অনেক দিয়েছে। সুখ-দুঃখ, মান * * কিংবা অপমান।কষ্ট-ভালোলাগা।বিচ্ছেদ কিংবা আলিংগন।সব পেয়েছি।* * হয়তো ২০১৪, অনেক দেবে, কিংবা কেড়ে নেবে। জানিনা, কি হবে। তবে*

*আশাবাদী, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। উপভোগ করে যেতে চাই, প্রতিটা ক্ষণ।*



******************স্বাগতম ২০১৪*********************** । । ।

। ।

। ।

----------------------------------------------------------------------------

সব সময় জায়গা রাখি ডাইরীর পাতায়, আজ রাখলাম আমার যান্ত্রিক এই লেখার পাতায়। জানিনা কি লিখবো আগামীতে, লিখতে পারবো কিনা।

স্বাগতম, ২০১৩।





লেখাটা শেষ করলাম আজ, ২রা জানুয়ারী, বেলা ১টায়।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৪৬

শূন্য পথিক বলেছেন: বিদায়!

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৩

আনন্দক্ষন বলেছেন: হ্যা, বিদায়.....। সাথে স্বাসতম...।

২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৪৯

রবিউল ৮১ বলেছেন: বিদায় ২০১১। :> :> :> :> :> স্বাগতম, ২০১৩। =p~ =p~ =p~ =p~ ২০১২ গেল কি? :| :| :|

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৪

আনন্দক্ষন বলেছেন: তাহলে বোঝেন, মনটা কত খারাপ ছিল।

৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:২৭

ঝটিকা বলেছেন: আপু ২০১২ সম্পর্কে কিছুই যে লিখলে না? কেমন কাটল বছরটা?

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬

আনন্দক্ষন বলেছেন: আসলে ১২ সম্পর্কেই লেখা, কিন্তু মাথা মনে হয় ঠিক ছিলনা, মনটাও ভালো নাই। তাই এই অবস্থা।

নতুন বছর শুভ হোক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.