নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অঞ্জন

আবছায়া আলো-অন্ধকারময় নীল

অঞ্জন আচার্য

অঞ্জন আচার্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

আওয়ামী লীগের শাসনে আমি ও আমরা উদ্বাস্তু হই

১০ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:৫২

আওয়ামী লীগের শাসন আমলে আমরা আমাদের জন্মভিটা থেকে উচ্ছেদ হই। সালটা ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস। ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্র গাঙ্গিনারপাড় লালা লজ (স্থানীয়ভাবে যা লাইলি পট্টি নামে পরিচিত ছিল)। প্রায় ২০ একর জমির ওপর হিন্দু অধ্যুষিত সেই পাড়াটিতে ছিল ৩৬টি হিন্দু পরিবারের বসবাস। স্থানীয় ব্যবসায়ী (ভূমিদস্যু) সুরুজ্জামান মিয়া তার অর্থ ও গুন্ডা-বাহিনী দিয়ে সেখানে বসবাসরত নিম্নবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত হিন্দুদের তাদের বাপ-দাদার ভিটাবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে। সুরুজ্জামানের দাবি, সে নাকি বৈধভাবে জমিটি কিনেছে মূল মালিকের কাছ থেকে। অথচ, জমির মালিক লাইলির (লালাশঙ্কর রায়ের স্ত্রী বলে তাকে লাইলি নামে ডাকা হতো) মৃত্যুকালে সুরুজ্জামানের বয়স ছিল মাত্র দুই বছর। দুই বছরের শিশুর পক্ষে এত বড় একটি সম্পত্তির মালিক হওয়া কীভাবে সম্ভব- আমার জানা নেই।



পাড়াটির পাশেই ছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়। অসহায় পরিবারগুলো সাহায্য-সহযেগিতা চেয়ে বিভিন্ন সময় সেখানে ধরনা দেয়। সহায়তা চেয়ে আবেদন করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতি সংগঠনের কাছে। কিন্তু সুরুজ্জামানের পেশীশক্তির বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি। স্থানীয় সাংবাদিকসহ সুধীসমাজের মানুষদের পাশে চায়। তাদের কেউ কেউ টাকা খেয়ে নিশ্চুপ থাকে। আর স্থানীয় প্রশাসন?- সে তো ছিল সুরুজ্জামানের পকেটে।

অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে, জোর করে সুরুজ্জামান যে পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করেছে তারা আজ ময়মনসিংহের বিভিন্ন জায়গায় কোনো একরকম বেঁচে আছে। সুরুজ্জামানের ভাই খালেক সরকার হলেন আরেক ভূমিদস্যু। ময়মনসিংহের অধিকাংশ হিন্দুদের জমি আজ এই দুই ভাইয়ের পেটে। সবার কাছে বিষয়টি সূর্যালোকের মতো স্পষ্ট হলেও এ ব্যাপারে কেউ কথা বলতে রাজি হয় না। ঢাকায় আসার পর এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করতে গিয়েও স্থানীয় ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। তারা সবাই প্রাণ-ভয়ে ভীত। জানি, ঢাকা থেকে তাদেরকে নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। কিন্তু এমন একটি বৃহত্তর অন্যায়কেও মন থেকে মেনে নিতে পারিনি না- পারবো না কোনোদিন। আমৃত্যু এ ক্ষত বুকে বয়ে বেড়াতে হবে আমায়।



আমার একটা সরল প্রশ্ন হলো, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দুদের ভোট-ব্যাংক হিসেবে গণনা করে। আর বিএনপি-জামায়াত হিন্দুদের মনে করে ভোটের যুদ্ধে বাধা। কিন্তু জমি দখলের ক্ষেত্রে সবাই এক। জমি দখলের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাঠে নামে একসাথে। যেমনটা দেখা গেছে, লাইলি পট্টির ব্যাপারে। তবে উচ্ছেদের ক্ষত নিয়ে হিন্দু পরিবারগুলো এখনো কেন আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করে তা আমার কাছে এখনো অজানা।



বি.দ্র. লাইলি পট্টি ওরফে লালা লজের বর্তমান নাম নাকি রাখা হয়েছে সুরুজ্জামান লজ। ওখানে এখন গড়ে তোলা হয়েছে সুরুজ্জামান মার্কেট।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:০৪

কষ্টবিলাসী বলেছেন: হিন্দুদের বেশির ভাগ জায়গা-জমি আওয়ামী লীগাররাই দখল করেছে। গবেষণায় এসেছে।

১১ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:০৮

অঞ্জন আচার্য বলেছেন: সেটাই...

২| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:১৬

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: আসলেই, এই একটি জায়গাতে তাদের ভিতর গলায় গলায় মিল।

তবে উচ্ছেদের ক্ষত নিয়ে হিন্দু পরিবারগুলো এখনো কেন আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করে তা আমার কাছে এখনো অজানা।

আমার কাছেও এ জিনিসটা অজানা রয়ে গেছে। কেন আমরা এই দস্যুদের বিরুদ্ধে দাড়াবার সাহস করতে পারি না???

৩| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৭

ওলকচু বলেছেন: জয় বাংলা
জয় ......

৪| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এইই হল আওয়ামী লীগ!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

৫| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২

মদন বলেছেন: জয়বাংলা

৬| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হিন্দু’জ ল্যান্ড গ্র্যাবড বাই এএল লিডার’ শিরোনামে গত ২ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে মনজিল মোরসেদ গত মঙ্গলবার এই রিট আবেদন জমা দেন। রিটে বাদি হিসাবে রয়েছেন সংগঠটির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পাটগ্রাম উপজেলার রসুলপুর গ্রামের বউরা ইনিয়নের বাসিন্দা ভবানীকান্ত সিংহ ও তার দুই ছেলেকে জোর করে ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলামের বাসায় নিয়ে গিয়ে দলিলে সই নেয়া হয়। !!!!

X( X((

৭| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫১

মৃত মানব বলেছেন: নিম্ন আদালতে মামলা করেন।গনমাধ্যমের কর্মিদের জানান।দখল যেহেতু হয়ে গেছে সুতরাং হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোন মানে হয়না

৮| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫১

মৃত মানব বলেছেন: নিম্ন আদালতে মামলা করেন।গনমাধ্যমের কর্মিদের জানান।দখল যেহেতু হয়ে গেছে সুতরাং হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোন মানে হয়না

১১ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:১১

অঞ্জন আচার্য বলেছেন: মামলা হয়েছিল। দীর্ঘদিন আইনি প্রক্রিয়াতেও ছিল বিষয়টি। তবে নিম্নবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্তদের পক্ষে জমি-সংক্রান্ত জটিল বিষয়-আশয় নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চালিয়ে যাওয়া যে দুষ্কর তা তো অনুধাবন করতে পারছেন। তাছাড়া সুরুজ্জামানের অর্থ বা ক্ষমতার কাছে আমরা ছিলাম নস্যি মাত্র। ভুয়া দলিল বা সাক্ষী হাজির করতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছে সুরুজ্জামান মিয়া। এক পর্যায়ে ঢাকার হাইকোর্ট থেকে সে তার পক্ষে রায় নিয়ে আসে।

আর সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান সেসময় আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। তাছাড়া আইনজীবীরা অল্প পয়সায় কাজ করতে রাজি হয়নি।
জনমত তৈরি করতে ভীত ছিল অধিকাংশ অধিবাসী।

এমনিতে তারা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়, তার ওপর দরিদ্র জনগোষ্ঠী- যাকে বলে ‘সংখ্যালঘুর সংখ্যালঘু’।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.