নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার ছোট বেলা কেটেছে নানা বাড়িতে।আমার নানা বাড়ি কাজিপুর মাঠ পাড়াই।মাঠ পাড়া নামটা শুনেই আন্দাজ করতে পারছেন এলাকা টা কেমন।আমার নানারা ওখানে অন্যদের তুলনাই সম্পদশালী ছিল।স্বভাবতই বাগানও ছিল আনেক আর আমিই ছিলাম সেগুলোর মালিক tongue emoticon দেখাশোনার ট্যাক্স হিসেবে ম কাঠাল আমিই খেতাম কিন্ত চুরি করে আমি ছিলাম সেখানে স্বাধীন মুক্ত ঠিক বন্য টীয়ার মত।যেখানে সেখানে অবাধ যাতায়েত।যখন তখন বৃষ্টিতে ভেজা,মাছ ধরা ঘুড়ি উড়ানো আর তুখড় গালি গালাজ করা একে ওকে- একটা গ্রাম্য ছেলের এমন কোন বৈশিষ্ট ছিল না যা আমার মধ্যে ছিল না।আমি ছিলাম স্বাধীন।সকালে স্কুল থকে ফিরেই সংগ পংগ নিয়ে মাছ ধরা না হই আম চুরি না ডাঙ গুলি খেলা (আমাদের এলাকাই প্রচলিত একধরনের খেলা) ,হাতি গুল্লা,বড় রাজা,খুলাং খেলা যখন যেটা চলে আর কিই...এগুলো ছিল আমার নিত্য নৈমত্ত ব্যাপার। মাছ ধরা ঘুড়ি ওড়ানোর ব্যপার টা ছিল আমার কাছে সবছে মজার।সেই সময় বর্ষার পানি হত একটু বেশি।আর পানি হলেই সারাদিন সেই হলুদ ব্যাং এর ঘাঙ্গুর ঘাং আর ছিপ দিয়ে মাছ ধরা।আর একটা ব্যাপার অদ্ভুত সেটা হল সেই সময় কোথাও একটু পানি হলেই কোথা থেকে জানি না মাছ চলে আসত ছোট পুকুর গুলোতে...ছ্যাং (যাকে টাকি মাছ বলেন আপন্মারা) ,অফল দাইড়কি,পুটী আর কত কি্,...এসব মাছ হত আর আমি খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে( বলতে লজ্জা নেই) সারা দিন কেচো দিয়ে বকের মত বসে মাছ ধরতাম। আহহহহ সে কি অনন্দ...নল। ডুবু ডূবু হলেই বুঝতাম মাছ ধরেছে ছিপে ।তখনডআনন্দ আর ধরে না।আমাকে মাছ ধরা সেখাই আমার নানা...আর এত কিছু করার জন্য কিন্তু প্রতিদিন আমি একটা জিনিস খেতাম রোজ সেটি আবার কি জানেন মায়ের হাতের মার tongue emoticon মা শিক্ষকতা করতেন পাসের একটা স্কুলে ।স্কুল থকে ফিরেই শুরু হত সেই মার কারণ একটাই দুপুরের খাবার না খাওয়া...।
আর আমার রাজ্যে প্রাধান ভিলেন ছিলেন আমার বাবা tongue emoticon tongue emoticon...হাহাহাহা...কারন আব্বু আর্মিত জব করত সে দুই মাসের ছুটিতে বাড়ী আসত আর আমাকে আর মাকে নিতে আসত নানু বাড়ী থেকে...তখন য আমার কি অবস্থা হত তা আমি বলে বোঝাতে পারব না তবে তা অনন্দে হত না কষ্টে হত...।যেহেতু সে আর্মি ছিল সো একবার মন মেজাজ আন্দাজ করেন।বদ মেজাজি আর পান থেকে চুন খসলেই শুরু হত মার (বিরক্তকর)।তো যা বলছিলাম।আব্বু আমাদের নিতে আসত তখন সেই আমার পরিচিত আকাশ বাতাস ছেড়ে যেতে হত জেল খানাই (দাদি বাড়ী)যখন ভ্যান গাড়িতে উঠোতাম তখন আমার কলিজা ছিড়ে যেত আমার নানু বাড়িকে ছেড়ে যেতে।মনে হত থকব কিভাবে ওখানে...হাজার চেষ্টা করেও চোখের জল সংবরণ করতে পারতাম না।আমার মত জংলা আর অবাধ্যা যারা ছিলেন তারাই আমার ব্যাপারটা হ্রদয় দিয়ে বুঝতে পারবেন...।আর আমার সংগ পংগরা আমাকে বিদায় দিতে আসত ।আমি ওদের দিকে তাকাতে পারতাম না ...দুচোখ ছল ছল...তাকাতে গেলেই দুচোখ ঝাপসা হয়ে আসত ওহহহ কি যে কষ্ট বলে বোঝাতে পারব না ওই কথা মনে পড়লে এখোনো চোখ ঝাপসা হয়ে আসে...আমি ছিলাম স্বাধীন বন্য ঠিক মুক্ত আকাশের বন্য পাখির মত।...আর আমাকে পরানো হত শৃংখলের শেকল।সবচেয়ে বেশি কষ্ট হত নানু (নানী আসলে আমরা নানি কে নানু বলতাম ) কে ছেড়ে যেতে।নানু আমাকে আমার সব খালাত ভাইয়ের চাইতে বেশী ভালবাসতেন।এই জংলা কে সেই মায়ের যত্ন টা নিতেন্...সারা দিন খাওয়ার খোজ নেওয়া,কোথাও বেড়াতে গেলে আমাকে নিয়ে যেতেন সাথে সব সময়।যাবার সময় তিনি বার বার আমার মুখে চুমু খেতেন আর বলতেন "ব্যাড়াইতে আইসবা ভাই"।আমার তখন কলিজা ফেটে বের হবার জোগাড় আর শত চেষ্টা করেও চোখের জল সংবরন করতে পারতাম না। না পারতাম তার কথার জবাব দিতে শুধু মাথা নাড়াতাম।আর বন্ধুগনের কথা নাই বললাম।
তো দাদু বাড়ীতে এসে সারা রাত কাদতাম ।চাচাতো বোনের আদর করত ঘুরতে নিয়ে যেত আসলে আমি ওদের সবার ছোট ছিলাম তাই একটু আদরের ও ছিলাম।
এবার আসি বন্যটীয়ার কষ্টের কথা নিয়ে...যেখানে দশটার সময় স্কুল থেকে এসে বর্শি দিয়ে মাছ ধরতাম অথবা ডাং গুল সেখানে আমাকে আব্বু পড়োতে বসত...কি যে সীমাহীন কষ্ট লাগত।পড়ব্বব্বব...পড়া শোনা একদমই ভাল লাগত না তারপর আবার দিনে পড়া!!!আমি জীবনে দিনে পড়ী নাই দিনে ঘুমাইও নাই বাধ্য না হয়ে।ওহ হ্যা আমি ছিলাম রবীন্দ্রনাথের বাস্তব ফটীক।ফটীকের গল্প যখন পড়লাম তখন আজান্তেই পানি গড়ীয়ে পরল ছোখ থেকে।রবীন্দ্রনাথের ... গুরুজির সেই বাস্তত ফটীক যে আমি নিজেই।আমরা দুই ভাই আমি হলাম বড়(ফটীক) আর আমার ভাই তানভীর ওক্কে আমি ফটিকের মতই মারতাম।ছোট বেলাই মা ওরা মাথা টাক করে দিয়েছিল বলে আমি ওর নাম দিয়েছিলাম টাকু।ামি চরম শয়তানও ছিলাম।বলা যাই "আমি একটূ দুষ্টূ"।ফটিকের মত আমারও নতুন জাইগার প্রতি ঝোক ছিল একটা।আমি প্রাইইই স্কুল দিয়ে দাদি বাড়িতে আসতাম।কিন্তু আব্বু আসলেই সব আমার কাছে অপরিচত হয়ে উঠত।আব্বু পড়তে বসাত সারা দিন পড়াত (অসয্য) বিকেলে আল্প একটু সময় দিত ঘুরে আসার জন্য।একে তো এই জাইগার কাওকে চিনিইই না আবার সময় বেধে দিত আজানের আগে বাড়ী আসতে হবে...কি যে কষ্ট লাগত বলে বোঝতে পারব না।তো ছুটির দিন গুলোতে সুযগ পেলেই পাটিপে টীপে খুব সাবধানে গেটের কাছে পৌছাতাম।আর গেটের কাছে পৌছাতে পারলেই দিতাম ঝেড়ে দৌড়।সারাদিন আর বাড়ীতে আসার নাম নেই আমাঢ় আর দুপুরে খাবার গোসলের জন্য তো আসতেই হবে কজ না আসলে আবার মার...তাই দুপুরের খাবার খেয়ায়েই পালানোর ধান্দা।তাইইই দুই মাস ছুটি শেষ হবার প্রহর গুনতাম।এক দিন ,দুই দিন...কবে যে অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে।প্রথম দিন কার দিন গুলো বছর তুল্য লাগত পরে আসতে আস্তে ঠিক হয়ে যাই...আর পড়া না পারলে শুরু হত চরম পিটুনি আর কে মা দিত দোষ অব্বু।মা আমাকে হাজার মারুক বকুক মায়ের মার মিষ্টি।।যখন আব্বু আমার কারন্এ আমকে বকত তখন আরো কশট লাগত।আর আব্বু আসাই ভয় পেতাম আরো একটা কারন সে এসেই পড়া শোনার খোজ নিত আর খোজ নিত রেজল্টের...এমনিতেই তো পড়াশোণা ভাল লাগত না তারপর আবার রেজাল্ট ধ্যাত...আর তারসাথে বকা ঝকা ফ্রি।বন্য টিয়া কে খাচাই ভরে দুদিন দুট বুলি শিখিয়ে দিলেই কি আর সে তার ডাক ভুলে বুলি আওড়াতে শুরু করব?? না কখনওই না ।সব সময় সে পালানোর চেষ্যটাই থাকবে...যখনি সে মুক্তির স্বাদ পাবে তখনই সে তার ডাকে ডাকবে...তো আমিও মাঝে মাজে স্কুল দিয়ে নানু বাড়িতে পালিয়ে যেতাম আর আব্বুজি বিকেলেই হাজির ।নানু বাড়িতে থকে নিয়ে যাবার জন্য...জোর করে নিয়ে যেত আব্বু।আর যাবার সময় সে কি কান্না নানু কে জড়িয়ে ধরে।আব্বু কত কঠোর ছিল তার একটা উদাহরন দিলে বুঝবেন- আমাদের রান্না ঘর থেকে খাবার রান্না করে ঘরে রাখত আর রাতে ওখানেই খেতে হত।তো সকালে আব্বু যখন খেতে বসত তখন আমাকে ঘর থেকে রাতের খাবার গুলো আনতে বলত আমি খুউউব সাবধানে আনতাম যাতে ঝল না পড়ে ঝোল পড়োলেই বুঝতেই পারছে ন কিকিহত,...এবার এত সাবধান থাকার পরও ঝল পড়োট আর শুরু হত চুল ধরে টাণাটাণী...
এত কিছুর পর অব্বুর ছুটি শেষ হবার অপেক্ষা করা ছাড়া আমার আর কোণ উপাই ছিল না।প্রত্যেকদিন দিন গুনতাম দিন যেন ফুরাইইই না।ফাইনালি যখন ছুটী শেষ হত তখন আমার মধ্যে ঈদের আনন্দ আর বাকি সবাই বিস্বাদ।সবাই আমার প্রকৃত অবস্থা বুঝত আর তারা এটাও জানত আমি আব্বুর ছুটি শেষেড় অপেক্ষাই আছি।তাই আমার দাদি আআমাকে নিয়ে ঠাট্টা করত।ঈদ ঈদ ভাব মুকি আবশেষে মুকিইইইইইইইইইই।সেই আকাশ সেই বাতাস পাখির ডাক,বন বাদড় পুকুরে ঝাপিয়ে পড়া মাছ ধরা,নোংরা পুকুরের জলে গোসল করা,আর বৃষ্টীতে ভেজা।আহহহহ অবশেষে বন্য টীয়া বনে ফিরেযাবে।রবীন্দ্রনাথের সেই ফটীক আজ জিবন্ত হয়ে আপন দেশে ফিরবে সেই ফটিক আজ তার ভুবনে ফিরে যাবে।সেইফটিক আবার দশি করবে, আবার সে বর্ষি দিয়ে মাছ ধরবে...আবার সে ছোট ভাইইয়ের সাথে মারামারি করবে পাখির বাসা খুজবে ফাদ পাতবে...আহহহ কি আনন্দ মুক্তিরা সাধ কত মধুর কত তৃপ্তির হই আমি তখন বুঝতাম।পরের দিন আমি মা আর ছোট ভাই কে নিয়ে আমার ভুওবনে ফিরে যেতাম।আর সেই আমার বন্ধুদের নিয়ে...আর আমি হলাম গুরুজি তোমার সেই ফটীক ...আমি তুষার আমি বন্য আমি স্বাধিন (তবে আল্লাহর পরাধীন) আমি রবিন্দ্রনাথের ফটীক।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৫
আরব বেদুঈন বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১১
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল ছোট বেলার ফটিক কাহিনী। ধন্যবাদ
৩| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:০৭
উল্টা দূরবীন বলেছেন: স্মৃতিচারণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ এবং আমার ব্লগে আমন্ত্রণ।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৯
আরব বেদুঈন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১০
কল্লোল পথিক বলেছেন: ।অসাধারণ বাল্য সৃত্মিচারণ