নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভূমিকা: হুতী নামটি বর্তমানে অনেকের কাছে পরিচিত। ইয়েমেনে যাদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে সউদী আরবের নেতৃত্বে ‘আসিফাতুল হাযম’ নামে একটি যুদ্ধ পরিচালিত করেছে। কিন্তু বাংলাভাষী অনেকেই এই হুতী সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখে না। ফলে বিভিন্ন শিয়া প্রভাবিত এবং ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়ার কারণে অনেকে বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছে। অথচ মুসলিম বিশ্বের উপর এই ঘটনা-প্রবাহের সুদূর প্রসারী প্রভাব পড়ছে এবং পড়বে-তাতে কোন সন্দেহ নাই। তাই এ সম্পর্কে মুসলিম যুবকদের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী।
এই প্রেক্ষাপটে সউদী আরবের ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত কিং সউদ ইউনিভার্সিটি’র ‘আকীদা ও সমকালীন মতবাদ’ এর অধ্যাপক প্রফেসর ডক্টর সুলাইমান বিন সালিহ আল গুসন রচিত বক্ষ্যমাণ পুস্তিকাটি অনুবাদ করা হল যেন, বাংলাভাষী মুসলিমগণ এই ফিতনার ব্যাপারে সচেতন হতে পারে।
অত্র পুস্তিকাটিতে শিয়া হুতী সম্প্রদায়ের উৎস, পরিচিতি, ক্রমবিকাশ, কার্যক্রম, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং পরিকল্পনা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে এবং প্রাসঙ্গিক ভাবে রাফেযীয়া-ইমামিয়া-ইসনা আশারিয়া সম্প্রদয়ের মৌলিক আকীদা-বিশ্বাস সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা তার জমিনে সত্যের পতাকা উড্ডীন করুন। বাতিল ও মিথ্যার মুখোশ উন্মোচন করে দিন এবং সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে ফিতনা-ফ্যাসাদ থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
অনুবাদক:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব
তারিখ: ১৯-০৪-২০১৫ইং
হুতিদের উৎস ও পরিচয়:
হুতীরা হল, উত্তর ইয়েমেনের সা’দাহ[1] এলাকার একটি সম্প্রদায়ের নাম। এদের উৎপত্তি জারুদীয়া সম্প্রদায় থেকে। জারুদিয়ারা হল, শিয়া-যায়দিয়াদের একটি গোঁড়া ও উগ্রপন্থী ফিরকা।
হুতীরা রাফেযীয়া-ইসনা আশারিয়া সম্প্রদায়ের মত উগ্রপন্থী আকীদা-বিশ্বাস প্রচার শুরু করে এবং ইরানের সাহায্য-সহযোগিতা ও আশির্বাদ পুষ্ট হয়ে শিয়া বিপ্লবের নায়ক খোমেনীর আদর্শ ও পদ্ধতির আলোকে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত করতে থাকে।
হুতী সম্প্রদায়ের পরিচয়ের আগে জারুদিয়াদের সম্পর্কে আলোকপাত করা প্রয়োজন। যাতে স্পষ্ট হয়, জারুদিয়া সম্প্রদায় ভূক্ত এই হুতী এবং রাফেযী ইসনা আশারিয়াদের মাঝে কতটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে আর কিভাবে তারা ইমামিয়া-ইসনা আশারিয়াদের পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমান পর্যায়ে উপনীত হয়েছে।
জারুদিয়া সম্প্রদায়ের পরিচয়:
প্রতিষ্ঠাতা: জারুদিয়ার সম্প্রদায়টির নাম করণ হয় আবুল জারুদ নামক এক ব্যক্তির নামানুসারে। তার পুরো নাম, যিয়াদ বিন মুনযির আল হামাদানী আল কূফী।
আহলে সুন্নাহ’র পূর্বসূরী ইমামগণ এ ব্যক্তিকে মিথ্যাবাদী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।[2] শুধু তাই নয়, শিয়াদের কিছু বই-পুস্তকেও তার বদনাম করা হয়েছে।[3]
জারুদিয়াদের কিছু মৌলিক আকীদা:
১) তারা বিশ্বাস করে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর পরে খলীফা হিসেবে আলী (রা.) কে নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন। তিনি আলী (রা.) এর নাম না নিলেও বৈশিষ্ট উল্লেখ করার মাধ্যমে তাঁকেই বুঝিয়েছিলেন।
২) তাদের মতে, আলী (রা.) এর মর্যাদা অন্য সকল সাহাবীর চেয়ে বেশী।
৩) আলী (রা.) এর পরে ইমাম হবে কেবল হাসান-হুসাইন ও তাদের বংশধরের মধ্য থেকে।
৪) তারা সাহাবীদেরকে কাফের মনে করে। কারণ, সাহাবীগণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পরে আবু বকর (রা.) কে খলীফা হিসেবে মনোনিত করেছেন। তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বলে যাওয়া গুণ-বৈশিষ্টগুলো বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং সে বৈশিষ্টের আলোকে তারা আলী (রা.) কে খলীফা নিয়োগ করে নি। [4]
৫) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পরে যারা আলী এবং তাঁর বংশধর থেকে ইমাম হওয়াকে আবশ্যক মনে করে না তারা কাফের।
৬) আবু বকর (রা.)ও উমরা (রা.)থেকে সর্ম্পক ছিন্ন করা এবং তাদেরকে গালাগালী করা। অনুরূপভাবে আয়েশা (রা.), মুয়াবিয়া (রা.)এবং আমর ইবনুল আস (রা.)কে গালাগালি করা।
৭) জারুদিয়া সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ মনে করে যে, তাদের যে সব ইমাম মারা গেছে তারা পূণরায় ফিরে আসবেন।
৮) তাদের মধ্যে অনেকে মুতা বিবাহ (চুক্তি ভিত্তিক সাময়িক বিয়ে)কে বৈধ মনে করে।[5]
জারুদিয়াদের এসব আকীদা দেখলে বুঝা যাবে, তারা রাফেযীয়া- জাফরিয়া- ইমামিয়া- ইসনা আশারিয়া সম্প্রদায়ের অনেক কাছাকাছি অবস্থান করে।
হুতীদের ইতিহাস এবং প্রেরণার উৎস:
হুতীদের চরমপন্থী নেতা নাম হুসাইন বিন বদরুদ্দীন হুতী। তার পিতা বদরুদ্দীন বিন আমীরুদ্দীন আল হুতী হলো তাদের ধর্মগুরু এবং রূহানী নেতা।
এই ধর্মগুরু ১৩৪৫ হিজরীতে উত্তর ইয়েমেনের সা’দাহর উপকণ্ঠে জন্ম গ্রহণ করেন এবং সেখানেই বড় হন। তাকে জারুদিয়াদের বড় আলেমদের মধ্যে গণ্য করা হয়।
যায়দিয়া সম্প্রদায়ের কতিপয় আলেমদের সাথে তার মতবিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় তিনি ইরান চলে যান এবং তেহরানে কয়েক বছর বসবাস করেন। পরবর্তীতে সমঝোতার মাধ্যমে তাকে নিজ এলাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। তিনি ১৪৩১ হিজরীর যিলহজ্জ মাসের শেষ দিকে মৃত্যু বরণ করেন।
হুসাইন বিন বদরুদ্দীন হুতী হল বদরুদ্দীনের বড় ছেলে। তিনি সা’দায় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। তারপর সুদান থেকে শরীয়া বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করার পর ডক্টরেট শুরু করেন। কিন্তু পড়ালেখা বাদ দিয়ে দেন এবং মার্স্টাসের সার্টিফিকেট ছিড়ে ফেলেন এই যুক্তিতে যে, একাডেমিক সার্টিফিকেট জ্ঞান-বুদ্ধিকে জমাটবদ্ধ করে দেয়।
১৯৯০ সালে ইয়েমেন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পর যখন রাজনীতির পথ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়ত তখন হুসাইন হুতী শিয়া ‘হিযবুল হক’ নামক একটি দল প্রতিষ্ঠায় অংশ গ্রহণ করেন এবং দলের পক্ষ থেকে তিনি ১৯৯৩-১৯৯৭ইং সেশনের জন্য পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন।
এদিকে দক্ষিণ ইয়েমেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী কম্যুনিস্টরা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলে হুসাইন হুতী তাদের পক্ষাবলম্বন করেন। যার কারণে সরকার তার বসত বাড়িতে সশস্ত্র অভিযান চালায়। ফলে তিনি সুদান পালিয়ে যান এবং সুদান থেকে ইরানে আত্মগোপন করে। অত:পর ইরানের কুম শহরে তার পিতার সাথে কয়েক মাস অবস্থান করেন।
সেখান থেকে লেবানন যান হিযবুল্লাহ গ্রুপের সাথে স্বাক্ষাৎ করার জন্য।
এ দিকে সরকার তার প্রতি ক্ষমা ঘোষণা করলে তিনি পুনরায় ইয়েমেনে ফিরে আসেন।
ইয়েমেনে ফিরে আসার পর তিনি তার ভক্ত ও অনুসারীদের মাঝে বক্তৃতা ও দরস দেয়া শুরু করেন এবং বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন যেগুলোতে শতশত ছাত্র ভর্তি হয়।
আশ শাবাবুল মুমিন (মুমিন যুবক) নামক সংগঠন প্রতিষ্ঠা:
বদরুদ্দীন হুতী হিযবুল হক দলের সহ সভাপতি হিসেব কাজ করতেন। কিন্তু সংগঠনের সভাপতি মাজদুদ্দীন আল মুয়াইদীর সাথে তার মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। মতবিরোধের কারণ ছিল দুটি:
১) ইমামিয়া মাসয়ালায় হুতী এবং তার অনুসারীদের গোঁড়ামিপূর্ণ ধ্যান-ধারণা পোষণ করা।
২) ইরানের খোমেনী বিপ্লবের আদর্শের দিকে প্রচণ্ড ভাবে ঝুঁকে পড়া।
এই মতবিরোধের জের ধরে হুতী এবং তার অনুসারীরা হিযবুল হক থেকে বের হয়ে আশ শাবাবুল মুমিন (মুমিন যুবক) সংগঠনে যোগ দেয়। যে সংগঠন প্রতিষ্ঠায় তারা ইতোপূর্বে ১৯৯৭ সালে অংশ গ্রহণ করেছিল।
ইরান এবং তৎকালীন ইয়েমেন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আশ শাবাব সংগঠনটি তাদের কর্মপরিধি বৃদ্ধি করে উত্তর ইয়েমেনের সাদাহ অঞ্চল সহ কয়েকটি জেলার অনেক যুবক,অল্প বয়সী তরুণ এবং বিভিন্ন গোত্রের সাধারণ জনগণকে তাদের দলে ভিড়াতে সক্ষম হয়।
১৯৯৭ সালে বদরুদ্দীন হুতী সংসদ থেকে পদত্যাগ করে তার সংগঠনের কাজে পরিপূর্ণভাবে আত্মনিয়োগ করে।
এরপর শিয়া রাফেযী, ইমামিয়া, ইসনা আশারিয়া সম্প্রদায়ের সাথে সমন্বয় সাধন করে তাদের সাথে একীভূত হওয়ার প্রচেষ্টা শুরু করে এবং ইরান বিপ্লবের স্তুতি গাইতে থাকে-যাতে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে তারা ইয়েমেনের মাটিতে বিপ্লব সাধন করতে সক্ষম হয়।
তারপর তিনি তার অনুসারীদেরকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিতে আরম্ভ করেন এবং তাদেরকে এমনভাবে গড়ে তোলেন যেন তারা অন্ধভাবে তার নির্দেশ পালন করে।
তারপর ইয়েমেন সরকারের জুলুম-শোষণের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিপ্লবের ডাক দেয় এবং বাস্তবেই তারা সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে নেমে পড়ে। ২০০৪ সালে সরকারী বাহিনীর সাথে হুতী বাহিনীর কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। কিন্তু এ বছরই তিনি সরকারী বাহিনীর হাতে নিহত হন। তার নিহত হওয়ার মাধ্যমে এসব আক্রমণ ও যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।
আব্দুল মালেক হুতী:
হুসাইন হুতী নিহত হওয়ার পর তার ভাই আব্দুল মালেক হুতী আশ শাবাব সংগঠনের নেতৃত্বে আসে। তিনি ছিলেন প্রভাব সৃষ্টিকারী সুবক্তা। তিনি তার ভায়ের পদাঙ্ক অনুসরণে ইয়েমেন সরকারের বিরুদ্ধ বিদ্রোহী আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।
হুতীদের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ আকীদা ও মতবাদ:
কতিপয় গবেষক নিশ্চিতভাবে বলেছেন যে, হুসাইন হুতী শিয়াদের ইমামী ইসনা আশারিয়া মতবাদে দীক্ষিত হয়েছিলেন। তার লিখিত বই-পুস্তক এবং বক্তৃতার বিভিন্ন ক্যাসেট দ্বারা তাই প্রমাণিত হয়।
হুতীদের বিভিন্ন প্রবন্ধ, বক্তৃতা এবং কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে তাদের বেশ কিছু আকীদা ও মতবাদ স্পষ্ট হয়। সেগুলোর সারাংশ নিম্নরূপ:
১) তাদের দাওয়াতের মূল কথা হল,
ক) ইমামিয়া আকীদাকে মজবুত করা।
খ) এই আকীদা পোষণ করা যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পরে আলী (রা.) কে খলীফা হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন।
গ) আলী (রা.) এর পরে ইমাম হবেন হাসান (রা.) এবং হুসাইন (রা.)।
ঘ) ইমাম হওয়ার পরম্পরা হাসান-হুসাইন (রা.) এর বংশধর থেকে কখনো বাইরে যাবে না।
ঙ) কোন ব্যক্তি এর ব্যতিক্রম আকীদা পোষণ করলে সে কাফের।
২) খুলাফায়ে রাশেদীন-বিশেষ করে তিন খলীফা (আবু বকর (রা),উমর (রা.),এবং উসমান (রা.) থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং অন্যান্য সাহাবীদেরকে কাফের মনে করা। কারণ, তাদের আকীদা হল, মুসলিম বিশ্বে আজ পর্যন্ত যত ফেতনা-ফ্যাসাদ আর সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তার মূল কারণ হল, এই তিন খলীফা সহ অন্য সাহাবীগণ।
বদরুদ্দীন হুতী বলেন,“আমি বিশ্বাস করি,তারা (অর্থাৎ সাহাবীরা) কাফের। কারণ,তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে।”
হুসাইন হুতী নিশ্চিত করে বলেন,
“আবু বকর এর বাইয়াত গ্রহণের অনিষ্ট এবং কুপ্রভাব এখন পর্যন্ত বিদ্যমান রয়েছে। এ কারণেই মুসলিম বিশ্বের সকল সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এবং শত্রুরা মুসলিম জাতির উপর চড়াও হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন যে, আবু বকর, উসমান এবং মুয়াবিয়া সকলেই উমরের অন্যায় কার্যক্রমের ফসল।
৩) এ মর্মে দাওয়াত দেয়া যে,কেবল কুরআন অনুসরণ করতে হবে এবং কুরআন ছাড়া ইসলামী শরীয়ার অন্য সকল বিষয় বর্জন করতে হবে। কারণ তাদের মতে, হাদীস সাহাবী ও তাবেঈদের মাধ্যমে বিশ্বস্ততার সাথে বর্ণিত হয় নি। ফলে যে হাদীস মুসলিম বিশ্বের কাছে যুগ পরিক্রমায় পরম নির্ভরতার সাথে গ্রহণীয় হয়ে আসছে তা তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য শরঈ উৎস নয়। এ কারণে, তারা সহীহ বুখারী ও মুসলিমকে সরাসরি কটাক্ষ করে থাকে।
৪) তাদের দাবী হল,তাফসীর এবং উসূলে ফিকহের ক্ষেত্রে হাদীসকে উৎস হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। এর মূল উদ্দেশ্য হল,এই মতবাদে বিশ্বাসীরা যেন অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে থেকে অন্ধভাবে তাদেরকে অনুসরণ করে। এভাবে অনুসারীদেরকে মূল রহস্য সম্পর্কে অন্ধকারে রেখে তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করা যাবে এবং অন্যান্য রাফেযী আকীদা গ্রহণ করানো সহজ হবে।
৫) জনগণকে উত্তেজিত করে সেই জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করার আহবান জানানো যাদের মধ্যে ইমাম হওয়ার শর্তাবলী বিদ্যমান নয়। তাদের মতে ইমাম হওয়ার অন্যতম শর্ত হল,হাসান ও হুসাইন (রা.) এর বংশোদ্ভূত হওয়া।
এ ধরণের শাষকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করাকে তারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম মনে করে। কারণ, প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
সংগঠনের সদস্য ও সহযোগী লোকজনকে নিশ্চিত যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা এবং অস্ত্র-শস্ত্র ক্রয় করে ব্যাপক অস্ত্র ভাণ্ডার গড়ে তোলার আহবান জানানো।
৬) আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের লোকদেরকে এই যুক্তিতে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা যে, তারা তাদের সন্তানদেরকে বাতিল আকীদা শিক্ষা দিচ্ছে। যে কারণে ইতিহাস পরিক্রমায় মুসলিম জাতিকে খেসারত দিতে হচ্ছে।
আহলে সুন্নাহর লোকদেরকে বয়কট করা। কারণ, তারা আবু বকর (রা.), উমর (রা.) ও উসমান (রা.)কে ভালবাসে এবং তাদেরকে আলী এর উপর অগ্রাধিকার দেয়।
৭) ইরানের খোমেনী বিপ্লব এবং লেবাননের হিযবুল্লাহকে অত্যন্ত সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা। কারণ, তারা মনে করে সম্মান, মর্যাদা এবং মুক্তির জন্য এগুলোকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করা কর্তব্য।
৮) মানুষের অনুভূতি ও চেতনায় উত্তেজনা সৃষ্টি করার জন্য ইরান থেকে আমদানি করা কিছু অন্তঃসারশূন্য শ্লোগান দেয়া। যেমন,আমেরিকা ধ্বংস হোক,ইসরাইল ধ্বংস হোক,ইহুদীদের উপর লানত,ইসলামের বিজয়…ইত্যাদি।
৯) তাদের শিয়া যায়দিয়া সম্প্রদায়ের বর্তমান শোচনীয় অবস্থার জন্য সমালোচনা ও কান্নাকাটি করা এবং সব জড়তা ঝেড়ে ফেলে তাদেরকে বিপ্লবের প্রতি উদ্ধুব্ধ করা।
১০) তাদের অনুসারীদেরকে আহলে সুন্নতের তথাকথিত ‘ওয়াহাবী’দের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং হারামাইনের দেশকে তাদের কবল থেকে মুক্ত করার আহ্বান জানানো।
আহলে সুন্নাহর সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চিন্তাকে বোকামি প্রসূত চিন্তা বলে আখ্যায়িত করা।
১১) গাদ্দারী,বিশ্বাস ঘাতকতা এবং অঙ্গীকার ভঙ্গ ইত্যাদি অপকর্মে হুতীদের খ্যাতি রয়েছে।
ইরান এবং শিয়া-ইসনা আশারিয়া মতবাদের সাথে হুতীদের সম্পর্ক:
যায়দিয়া সম্প্রদায়ের কিতাবাদী রাফেজী-ইমামিয়া-ইসনা আশারিয়া সম্প্রদায়ের সমালোচনায় ভরপুর..বরং তাদেরকে সুষ্পষ্টভাবে পথভ্রষ্ট ও কাফির হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। অনুরূপভাবে ইমামিয়াদের কিতাবাদী যায়দিয়াদের সমালোচনা ও কুফুরীর ফতোয়ায় পরিপূর্ণ।[6]
এমন পরষ্পর বিরোধী মতবাদে বিশ্বাসী হওয়ার পরও ইরানী বিপ্লব ‘তাকিয়া’ (তথা চরম গোপনীয়তা রক্ষা) নীতির অন্তরালে যায়দিয়াদের কাতারে ঢুকে পড়তে সক্ষম হয় এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী হুতী জারুদীদের চিন্তা-চেতানার মাঝে তাদের হারানো মানিকের সন্ধান পায়।
তারা দেখল ইয়েমেনের মাটিতে তাদের বিপ্লব ও আকীদা-বিশ্বাস রপ্তানির জন্য হুতীরা সবচেয়ে ভালো প্রতিনিধি, অনুগত ছাত্র বা সৈনিক হওয়ার উপযুক্ত। এদের মাধ্যমেই ইয়েমেনে তাদের আদর্শ,চিন্তা-চেতনা ও মতবাদ প্রচার করার পাশাপাশি তাদের সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
উল্লেখ্য যে,বদরুদ্দীন হুতী এবং তার ছেলে হুসাইন হুতী ইতোপূর্বে ইরানে বসবাস করে রাফেযী আকীদা এবং ব্যাপক-বিস্তর বিপ্লবী ধ্যান-ধারণা গল:ধাকরণ করে এসেছে।
এটাও অজানা নয় যে,এই হুতী ইরানের খোমেনী বিপ্লবের প্রতি মুগ্ধ। তিনি এই বিপ্লবকে অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার চোখে দেখে থাকে। তিনি এটিকে আল্লাহর রহমত ও নিয়ামত মনে করেন। তিনি বলেন, “ইমাম খোমেনী ছিলেন একজন ন্যায়-নিষ্ঠ ইমাম। আল্লাহ ভীরু ইমাম। তিনি এমন ন্যায় পরায়ণ ইমাম ছিলেন যার দুয়া বিফলে যায় না।”
ইয়েমেনের যায়দিয়া সম্প্রদায়ের আলেমগণ এ মর্মে সতর্ক করেছিলেন যে, হুতীরা গোঁড়া ও বিচ্ছিন্নতাবাদী ইসনা আশারিয়া মতবাদ ও কর্মপদ্ধতি বহন করছে। এ ব্যাপারে তারা একটা বিবৃতিও প্রকাশ করেছিল।
বাস্তবেই হুতীদের হাত ধরেই ইসনা আশারিয়া এবং ইরান বিপ্লবের সাথে যায়দিয়াদের ঐকমত্য সৃষ্টি ও কাছাকাছি আসার প্রবণতা বিস্তার লাভ করে।
ইরান এবং শিয়া-ইসনা আশারিয়া মতবাদের সাথে হুতীদের সম্পর্কের প্রমাণ:
ধারাবাহিক ভাবে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে তাদের মাঝে গভীর সম্পর্কের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। সেগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নরূপ:
১) ‘গাদীর খুম’ দিবস পালন করা। এটি ইয়েমেনের মাটিতে একটি নতুন বিষয়। এ দিন তারা বড় বড় মিছিল বের করে। এতে থাকে চমকপ্রদ নানা শ্লোগান আর বক্তৃতা।
হুসাইন হুতী তার এক বক্তৃতায় বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলী বিন আবি তালিব (রা.)কে উম্মতের জন্য পরবর্তী খলীফা ঘোষণা করার আগে দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ করেন নি।
২) হুসাইন (রা.) এর শাহাদাত দিবস পালন এবং এ উপলক্ষে হুসাইনী মাহফিলের আয়োজন করা।
৩) আবু বকর (রা.) এর হাতে বাইয়াত গ্রহণকারী সকল সাহাবী এবং তাদের পথের অনুসারী সকল মানুষকে কাফের মনে করা।
এ প্রসঙ্গে হুসাইন হুতী এক দরসে বলেন, আলী’র ইমামত ও খেলাফত বিষয়ে যাদের কাছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশ পৌঁছার পরও তা অমান্য করে তারা কাফের।
৪) হুতী ও ইরানীদের মাঝে একাধিক দ্বিপাক্ষীক সফর এবং গোপন বৈঠকের আয়োজন করা।
ইরাকে অবস্থিত ইরান দূতাবাসের পক্ষ থেকে ইসনা আশারিয়া আকীদার প্রচার-প্রসারের উদ্দেশ্যে নাজাফে ইয়েমেনী হুতীদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
৫) হুতীদের পক্ষ থেকে ইরানী বিপ্লব ও পদ্ধতির প্রশংসা করা এবং তাদের শ্লোগান ব্যবহার করা। অনুরূপভাবে লেবাননের হিযবুল্লাহর শ্লোগান ব্যবহার করা এবং তাদের কোন কোন সেন্টারে হিযবুল্লাহর পতাকা উত্তোলন করা।
৬) ইরানের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা, বক্তৃতা-বিবৃতি ইত্যাদির মাধ্যমে হুতীদের এবং ইয়েমেনে তাদের বিপ্লবী কার্যক্রমকে মিডিয়া গত সাপোর্ট দেয়।
৭) ইরান এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের রাফেযীদের পক্ষ থেকে ইয়েমেনে হুতীদের দূর্বল অর্থনৈতিক অবস্থার সুযোগে তাদের অনুসারী ও অনুরাগীদের মাঝে বিতরণের উদ্দেশ্যে প্রচুর আর্থিক সাহায্য প্রেরণ করা হয়।
৮)ইরান ও লেবাননের হিযবুল্লাহর পক্ষ থেকে হুতীদেরকে সামরিক সহায়তা প্রদান করা হয়। ইরানী অস্ত্র-শস্ত্র হুতীদের কাছে পৌঁছানো হয় বিভিন্ন পথে। তন্মধ্যে ইয়েমেনের বিভিন্ন দ্বীপ-উপদ্বীপ ও সমুদ্র বন্দর। এগুলো দিয়ে তেহরান থেকে পাঠানো অস্ত্রের চালান চোরাই পথে হুতীদের হাতে এসে পৌঁছে।
তাছাড়া ইরান ও লেবানের অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা হুতী এবং তাদের সাথে যে সব রাফেযী এসে যুক্ত হয় তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের উন্নতমানের অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। যেন ইয়েমেনে হুতীদের একটি ক্ষমতা সম্পন্ন ও প্রভাবশালী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় অথবা সেখানে তাদের আলাদা মজবুত অবস্থান তৈরী হয়। যাদের মাধ্যমে ইয়েমেন ও পার্শবর্তী দেশগুলোতে ইরানী এজেন্ডা বাস্তবায় করা যায়-যেভাবে করা হয় লেবাননের হিযবুল্লাহর মাধ্যমে।
সাম্প্রতি দেখা গেছে,সা’দাহ জেলা প্রশাসনের মদদে হুতীদের শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদেরকে স্বাধীনতা প্রদান করা হয়েছে এবং ইয়েমেনের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি,সরকারের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার দূর্বলতা,সেনাবাহীর অদক্ষতা,উন্নত ও আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্রের সল্পতা ও সর্বোপরি দূর্গম পাহাড়ী অঞ্চল ইত্যাদির সুযোগে অন্যান্য এলাকা দখলের চেষ্টা করা হয়েছে।
হুতীরা আহলুস সুন্নাহর লোকদেরকে সা’দাহ জেলা থেকে বিতাড়নের চেষ্টা করত। এ জন্য তারা তাদেরকে নানা চাপের মুখে রাখত, চেক পয়েন্টে তাদেরকে তল্লাশী করত বরং পরিস্থিত এতদূর গড়িয়েছিল যে, তাদেরকে ঘেরাও করে তাদের সাথে যুদ্ধ বাধিয়ে দিত। যেমনটি ঘটেছে ইয়েমেনের দাম্মাজ এলাকায়। সেখানে উপর্যুপরি বিভিন্ন ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে তারা হত্যা করেছে।
৮) প্রতিক্ষিত ইমাম মাহদীর আগমণের সুসংবাদ প্রদান করা। তারা দাবী করত যে, হুসাইন হুতী হল ইমাম মাহদী। তিনি নিহত হওয়া পর্যন্ত তাদের মাঝে এই বিশ্বাসই জীবিত ছিল। পরবর্তীতে ঘোষণা করা হল, তিনি উধাও হয়ে গেছেন। অবশেষে প্রায় দশ বছর পরে তার নিহত হওয়ার কথা তারা স্বীকার করেছে।
৯) ইসনা আশারিয়া আকীদা-বিশ্বাসের প্রতি আহবান জানিয়ে লিফলেট বিতরণ।
১০) ইরানের পক্ষ থেকে হুতী ও হুতী সমর্থক ছাত্রদেরকে পড়ালেখার জন্য ইরান নিয়ে আসা হয়। তারপর তাদের মাঝে ইমামিয়া রাফেযী আকীদা এবং খোমেনী বিপ্লবের চিন্তাধারার বীজ বপণ করা হত যাতে এরা ইরানী শিয়া মতাদর্শের ধারক-বাহক, প্রচারক ও সৈনিক হিসেবে ফিরে আসে এবং এদের মাধ্যমে ইরানের পরিকল্পনাগুলোকে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।
রাফেযী সম্প্রদায়ের কতিপয় মৌলিক আকীদা ও বিশ্বাস:
ইরান বিপ্লব যে মতাদর্শে বিশ্বাসী তা হল ‘ইমামিয়া ইসনা আশারিয়া’ মতবাদ। এটি একটি গোঁড়া শিয়া-রাফেযী ফিরকা।
এদের মৌলিক কিছু আকীদা নিম্নরূপ:
১) আল্লাহর সাথে শিরক: অর্থাৎ এ মতবাদে বিশ্বাসীরা তাদের ইমামদের নিকট দুয়া করে, তাদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে, তাদের কবরে যায় হজ্জ করার উদ্দেশ্যে, তাদের কবরে তওয়াফ করে, কবর জাপটে ধরে বরকত নেয়। এরা এই সব করবকে কাবা এবং বাইতুল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করে।
২) তারা এ দাবী করে যে, ইমামত হল দীনের একটি রোকন বা স্তম্ভ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ব্যাপারে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করে গেছেন। তিনি ইমাম হওয়ার বিষয়টি বারো জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন।
৩) তারা বলে, ইমামগণ ভুল-ত্রুটির উর্দ্ধে। তারা নিষ্পাপ। তারা অদৃশ্যের সব খবর রাখেন এবং এ বিশ্বজগত পরিচালনায় তাদেরও ক্ষমতা রয়েছে।
৪) তারা মনে করে প্রতিক্ষিত ইমাম মাহদী বর্তমানে ইরাকের সিরডাপ সামুররায় আত্মগোপন করে আছে।
৫) তারা মনে করে কুরআনকে বিকৃত করা হয়েছে এবং তা অপূর্ণ।
৬) চারজন সাহাবী (আলী, ফাতিমা, হাসান ও হুসাইন (রা.) ছাড়া সব সাহাবীকে কাফের মনে করা এবং গালাগালী করা। বিশেষ করে আবু বকর (রা.), উমর (রা.), এবং আয়েশা (রা.),কে।
৭) ‘তাকিয়া’ (চরম গোপনীয়তা রক্ষা) নীতি অবলম্বন করা। এরা আহলে সুন্নাহর প্রতি ভয়ানক শত্রুতা ও বিদ্বেষ পোষণ করে কিন্তু বাহ্যিক আচরণে সেটা প্রকাশ করে না।
৮) তারা বাদাআত মতবাদে বিশ্বাসী। অর্থাৎ তারা বিশ্বাস করে যে, আল্লাহর নিকট এমন কিছু প্রকাশিত হয় যা তিনি আগে জানতেন না। যার কারণে তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
৯) যে সব আহলে সুন্নতের লোকেরা তাদের বিরোধীতা করে তাদেরকে তারা শুধু কাফিরই মনে করে না বরং মনে করে তাদেরকে হত্যা করা এবং সম্পদ লুণ্ঠণ করা তাদের জন্য বৈধ।
১০) মুতা বিবাহ তথা (শরীয়ত সম্মত বিবাহ ছাড়া) নারী সম্ভোগ করা বৈধ।
এই হল হুতী সম্প্রদায় সম্পর্কে এবং তাদের কার্যক্রম, উৎস, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং পরিকল্পনা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা।
আল্লাহর নিকট দুয়া করি, তিনি যেন তাদেরকে হেদায়াত দান করেন এবং মুসলমানদেরকে তাদের অনিষ্ট ও ষড়যন্ত্রের কবল থেকে হেফাজত করেন। নিশ্চয় তিনি এ সব ব্যাপারে ক্ষমতাশীল।
صَلَّى اللهُ عَلى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ وَ عَلَى آلِه وَصِحْبِه وَسَلَّمَ
[1] ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে ২৪২ কি:মি: দূরে অবস্থিত একটি জেলা।
[2] দ্রষ্টব্য: মীযানুল ইতিদাল ২/৯৩, আল কামিল ৩/১০৪৬-১০৪৮
[3] দ্রষ্টব্য: রিজালুল কিশশী, পৃষ্ঠা নং ১৯৯, আল ফিহরিস্ত, ইবনে নাদীম, পৃষ্ঠা নং ২৫৩
[4] দ্রষ্টব্য: আল ফারকু বাইনাল ফিরাক, পৃষ্ঠা নং ৩০-৩২
[5] দ্রষ্টব্য: যিয়াদ ইবনে মুনযেরের জীবনী, মীযানুল ইতিদাল-ইমাম যাহাবী। রাফিযাতুল ইয়ামান, পৃষ্ঠা নং ১২৬-১২৮, মুহাম্মদ ইমাম, যায়দিয়া: পরিচয় ও আকীদা-বিশ্বাস, কাযী ইসমাইল আল আকওয়া, পৃষ্ঠা নং ২৪-২৫
[6] দ্রষ্টব্য:আল ইমামাতুল ইসনা আশারিয়া লিয যায়দিয়া বাইনা আ”দায়িল আমস ওয়া তকিয়াতুল ইয়াওম,মুহাম্মদ আল খুযার।
———————————–
حَقِيْقَةُ الحُوْثِيِّيْنَ
হুতী শিয়াদের আসল চেহারা
মূল: প্রফেসর ডক্টর সুলাইমান বিন সালিহ আল গুসন
অধ্যাপক, কিং সউদ ইউনির্ভাসিটি
অনুবাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার
প্রকাশনায়: ধর্ম মন্ত্রণালয়, সউদী আরব (কালেক্টেড)
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩০
আরব বেদুঈন বলেছেন: প্রথমে শুক্রিয়া আদায় করুন সেই মহান আল্লাহর যিনি আপয়ানার সামনে এই রহস্যজনক সত্য উন্মোচন করে দিয়েছেন।আর দোয়া করবেন।ধন্যবাদ ভাই
২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৩
আল-শাহ্রিয়ার বলেছেন: মূল: প্রফেসর ডক্টর সুলাইমান বিন সালিহ আল গুসন
অধ্যাপক, কিং সউদ ইউনির্ভাসিটি
অনুবাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার
প্রকাশনায়: ধর্ম মন্ত্রণালয়, সউদী আরব (কালেক্টেড)
৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৮
মেহেদী হাসান শীষ বলেছেন: অবশ্যই দোয়া করব
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:০৫
আরব বেদুঈন বলেছেন: আমীন।ভাল থাকবেন
৪| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫১
মেমননীয় বলেছেন: কে যে সৎ আর কি যে সত্য তা একমাত্র আল্লাহই জানেন।
হে আল্লাহ, মুসলিমদের রক্ষা কর!
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৭
আরব বেদুঈন বলেছেন: অবশ্যই আল্লাহ জানেন তিনি তো সবই জানেন কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কি জানেন ?আপনার কি জানার কিছুই নেই?আল্লাহ আপনাকে যদি প্রশন করে কি উওর দেবেন?জানার চেষ্টা করুন
৫| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৪
সাদী ফেরদৌস বলেছেন: যত সম্প্রদায় থাকুক না কেন সব শিয়ারাই একই আকিদা বিশ্বাস করে ।
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০০
আরব বেদুঈন বলেছেন: হ্যা বলা যেতে পারে কিন্ত একটা সম্প্রদায়ের আকিদা একটু ভিন্ন এদের কে আবার শিয়ার শিয়া মনে করে নয়া।
শিয়াদের ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থা
ইতিহাস, ইসলাম লিখেছেন ফাতমী
ভূমিকাঃ ইমাম হোসাইন রাঃ উপর লেখাগুলি প্রকাশিত হবার পর, অবধারিত ভাবেই আমার কিছু পাঠক শিয়া-এবং-সুন্নি বিভাজনের কথা তুলে এনেছেন। এ ব্যাপার গুলিতে অনেকেরই পরিষ্কার ধারনা নেই। সেজন্য, আমি ইতিহাসের প্রক্ষাপটে শিয়াদের অবস্থান এবং বর্তমান কালের শিয়াদের ধর্মিয় অবস্থান ব্যাক্ষা করার চেষ্টা করেছি।
প্রাথমিক যুগের শিয়াঃ রাসূল সাঃ এর মৃত্যুর পর মদীনার কিছু লোক "সাকিফাহ" নামক ঘরে সমাবেত হয় রাজনিতিক শূন্যতা পূরনের লক্ষ্যে। এই খবর আবু বকর সিদ্দীকী রাঃ কাছে পৌছালে তিনি, হযরত উমর রাঃ, এবং হযরত আবু উবায়দাহ রাঃ সেখানে পৌছান যেন মানুষ কোন ভুল সিদ্ধান্তে উপনিত না হয়। তখন হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর দাফন কার্যের দায়িত্বে ছিলেন। "সাকিফাহ"-য় সমেবেত জনতা হযরত আবু বকর সিদ্দিকী রাঃ কে খলিফা হিসাবে বায়াত করে। কিন্তু কিছু লোক হযরত আলী রাঃ কে খলিফা হিসাবে দেখতে চাইতো। কারণ গুলি ক্রমান্নয়েঃ
কেউ কেউ আব্দুল মোত্তালিব কে মক্কার শাষক তথা আরবের শাষক মনে করত। কারণ মক্কা ছিল আরবের কেন্দ্রভূমি। সেই কারণে রাসূল সাঃ আব্দুল মোত্তালিবের বংশ হিসাবে নিজেই শাষকে পরিনত হন এবং এই ধারায় হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর স্থলাভিষিক্ত হওয়া উচিত।
কেউ কেউ হযরত আলী রাঃ কে রাসূল সাঃ এর ছেলের মত মনে করতেন। কারণ, তিনি রাসূল সাঃ এর পালিত ছিলেন, রাসূল সাঃ এর মেয়ের জামাতা ছিলেন এবং রাসূল সাঃ এর সরাসরি বংশ হাসান এবং হোসেনে রাঃ এর পিতা ছিলেন। আবার কোন কোন সময় বড় ভাই এবং ছোট ভাইয়ের (যদিও হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর চাচাতো ভাই) বয়স বেশী পার্থক্য হল, ঐ সম্পর্ককেও পিতা-ছেলের সম্পর্কের মত ধরা হয়।
কেউ কেউ হয়ত ছিলেন এ রকম, তারা জাস্ট মনে করতেন আলী রাঃ শাষক হিসাবে ভাল হবেন।
হযরত আলী রাঃ কে খলিফা দেখতে চান এমন লোকদের বর্নিত প্রথম দুই ধারার ব্যাক্তিদের চিন্তা ধারা এক প্রকার রাজতন্ত্রীক। এবং হযরত আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ কে রাজতন্ত্রীয় চিন্তা ধারার মোকাবেলা করতে হয়েছিল। যাইহোক, তারা সকলেই হযরত আবু বকর রাঃ এবং পরবর্তিতে হযরত উমর রাঃ কে মেনে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থেকে ছিলেন। তারা কখনই আলাদা ধর্মিয় দল নন, এটা শুধু সমর্থন ও মতামতের ব্যাপার।
প্রথম যুগের শিয়াদের সম্পর্কে হযরত ইবনে তাইমিয়া রঃ বর্ননা করেন, "প্রাথমিক যুগের শিয়ারা যারা আলী রাঃ কে সমর্থন করেছিল বা ঐযুগে ছিল তারা হযরত আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ এর উচ্চ মর্যাদা নিয়ে কোন মতবিরোধে ছিলেন না, তবে তাদের মধ্যে মতবিরোধ ছিল আলী রাঃ নাকি উসমান রাঃ বেশী মর্যাদা সম্পন্ন"(মিনহাজ আস-সুন্নাহ,১/১৩; Cited by Dr Sallabi, Ali bin abu talib, v=2)
পরবর্তীতে হযরত আলী রাঃ এর খেলাফত কালে, মুসলিমদের বিশাল অংশ আলী রাঃ এর সমর্থনে ছিল। এর মধ্যে অনেক বদরী সাহাবা, আনসার ছিলেন। এই লিস্ট বিশাল। কিন্তু তারা কখনই আলাদা আকিদাহ বিশিষ্ট দল নন। তারা শধু মাত্র হযরত আলী রাঃ এর জীবিত কালেই ছিলেন। তারা আর বর্তমান সুন্নি একই দল, কারণ বর্তমান সুন্নিরা খেলাফতে রাশিদিন বলতে বুঝায়, হযরত আবু বকর রাঃ, উমর রাঃ, উসমান রাঃ, আলী রাঃ এবং হাসান রাঃ এর শাষনকাল।
বর্তমান যুগের শিয়াঃ বর্তমান যুগের শিয়াদের শিয়া নাম করনের মধ্যেই ভুল আছে। কারণ বর্তমান যুগের শিয়াদের শিয়া ডাকলে প্রথমিক যুগের শিয়ারাও এই নামে পরে যান। মূলত বর্তমান যুগের শিয়া দাবীকৃত দলগুলির সাহিত আদি কালের শিয়ার কোন সম্পর্ক নেই। বর্তমান যুগের শিয়াদের তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
উগ্র-পন্থী শিয়াঃ শিয়াদের মধ্যে মাইনরিটি। ভয়ংকর সব আকিদাহ সম্পন্ন। তাদের অনেকেই আলী রাঃ কে নবী বা ডিভাইন কেউ বলার চেষ্টা করে।
যায়েদিয়া শিয়াঃ তারা অন্যান্য শিয়াদের থেকে অনেকটা আলাদা। তারা জায়েদ বিন আলী বিন হুসাইন আল জয়নাল আবেদীনের অনুসারী। তারা মনে করেন, অত্যাচারী বাদশার বিপক্ষে যুদ্ধ করা ইমামদের দায়িত্ব। তারা আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃকেও ভালবাসে। শুধু মাত্র হযরত আলী রাঃ কে অন্যান্য সাহাবীদের থেকে উপরে স্থান দেয়।
ইমামী শিয়াঃ এরা সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত। (তাদের কেউ কাউকে অনেকে রাফিদি নামে ডাকেন। বলা হয়ে থাকে রাফিদিরাই হযরত আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ এর প্রতি বিদ্দেষ ছড়ায়। রাফিদিদের নাম রাফিদি (রাফাদা-বাতিল) হয়েছে, যখন ১২১ হিজরীতে হিসামের বিপক্ষে যুদ্ধে, তারা যায়েদ বিন আলীর সৈন্যবাহিনীর অংশ হয়েও তাকে ফেলে চলে যায় (Dr Sallabi, Ali bin abu talib, v=2, p 316)। সকল ইমামী শিয়ারাই রাফিদি না, অর্থ্যাত সকল ইমমীরা আবু বকর সিদ্দিকী রাঃ এবং উমর রাঃ এর প্রতি বিদ্দেষ ছড়ায় না।)
১২ ইমামি শিয়াঃ এরা শিয়াদের সর্ব-বৃহত দল। এরা ইরান, ইরাক এবং আজারবাইজানে সংখ্যা গরিষ্ট। ভারত ও পাকিস্থানে এদের সংখ্যা অনেক।
ইসমাঈলি শিয়াঃ এরাও শিয়াদের মধ্যে একটী পড়িচিত দল। এই দলের দুটি নেতৃত্ব আছে। একটি দাওদিয়া বাহরা এবং অন্যটি আগা খান।
সতর্কতাঃ অনেক সুন্নি আলেমের মতে রাফিদিরা আবদুল্লাহ ইবনে সাবাহ এর দ্বারা প্রাতারিত হওয়া দল এবং তারা ফেতনায় আরষ্ট এবং মুসলিমদের ঐক্য বিনষ্টকারী। তবে শিয়াদের একটি গ্রুপ আবদুল্লাহ ইবনে সাবাহ এর অস্থিত্ব অস্বীকার করে এবং শিয়াদের বাকিরা আবদুল্লাহ ইবনে সাবাহ এর সাথে যেকোন প্রকার সম্পর্কহীন বলে দাবী করে।
ইমামী শিয়াদের আকিদাহ গত সমস্যাঃ এখানে যায়েদিইয়াহ শিয়া এর অন্তরভুক্ত নয়। এই সমস্যা ইমামী শিয়াদের। দুইটি সমস্যা রয়েছেঃ
তারা বিশ্বাস করেন, ইমামরা ভুলত্রুটির উর্ধ্বে। এটাকে ইসমাহ শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। কেউ কেউ অভিযোগ করেন এটা শুধু মাত্র আল্লাহ পাকের বৈশিষ্ট। অতএব, শিয়ারা শিরক কারী। কিন্তু সুন্নিদের কেউ কেউ নবীদের এই যোগ্যতা দান করেন এইভাবে যে, মহান আল্লাহ পাক বিশেষ অনুগ্রহহের দ্বারা নবীদের ভুল থেকে মুক্ত রাখেন। শিয়ারাও একইভাবে যদি এই বিশ্বাস রাখে যে সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক বিশেষ অনুগ্রহ করে ইমামদের ভুল থেকে মুক্ত রাখেন। তাহলে তারা (ইমামী শিয়ারা) শিরককারী হয়ে যান না।
তারা আরো বিশ্বাস করেন, ইমামত নবুয়তের চেয়ে উপরে, কিন্তু রাসুল সাঃ একই সাথে নবী এবং ইমাম, এবং তিনি সকলের থেকে সম্মানিত। । "ইমামতের স্ট্যাটাস নবুয়তের উপরে" একটা বিপদজনক বিশ্বাস। কিন্তু এই বিশ্বাস রাসূল সাঃ এর কাছে আশা মেসেইজ কে অস্বীকার করেনা কারণ ইমামদের দায়িত্ব হল নবুয়তের মাধ্যমে পাওয়া অহীর ব্যাক্ষা করা। তাই এতোদসত্তেও তাদেরকে অমুসলিম বলা যায় না। কিন্তু সংদ্দেহজনক। মহান আল্লাহ পাক সর্ব বিষয়ে সব থেকে ভাল জানেন। (লিংকে ক্লিক করলে জানতে পারবেন তারা কোন যুক্তিতে এটা বিশ্বাস করেন)
ইসলামে পার্সিয়ানদের অবস্থানঃ ইবনে খালেদুন বর্ননা করেন,
"Most of the hadith scholars who preserved traditions for the Muslims also were ajams (Persians), or Persian in language and upbringing, because the discipline was widely cultivated in the ‘Iraq and the regions beyond. (Furthermore,) all the scholars who worked in the science of the principles of jurisprudence were ajams (Persians), as is well known. The same applies to speculative theologians and to most Qur’an commentators. Only the ajams (Persians) engaged in the task of preserving knowledge and writing systematic scholarly works. Thus, the truth of the following statement by the Prophet [in Sahih Muslim] becomes apparent: “If scholarship hung suspended at the highest parts of heaven, the Persians would (reach it and) take it.”
সাফাবীদ তুর্কি মিক্স রাজ বংশ যারা উসমানীয়ান তুর্কিদের প্রতিপক্ষ ছিল, তারা রাজনিতিক কারণে অনেকটা জোরপূর্বক ইরান(পার্সিয়ানদের মধ্যমনী) কে ১২ ইমামী শিয়াতে রূপান্তর করে। উল্লেখ্য, পার্সিয়ানরা ছিল ইসলামের চ্যাম্পিয়ন। তারা অন্যান্য মুসলিমদের লজিস্টিক্যাল সাপোর্ট, এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের কারুকাজে সহযোগিতা করত। কিন্তু ইরানীরা শিয়া হয়ে যাওয়ার ফলে, বৃহত্তর পার্সিয়ান জাতি (তাজিক, কিছুটা আফগান, কুর্দি) একে উপর থেকে আলাদা হয়ে যায়। অন্যদিকে তুরান (তুর্কমেনিস্থান, কাজাকিস্থান, উজবেকিস্থান, কিরগিজস্থান ইত্যাদি) দুর্বল ও বন্ধুহীন হয়ে যায় এবং আস্তে আস্তে রাশিয়ার কাছে স্বাধীনতা হারায়। এবং ভারতের মুসলিমরাও আরব এবং তুর্কি মুসলিমদের সাথে সংযোগ হারায় এবং আস্তে আস্তে স্বাধীনতা হারায়। ইরানের শিয়া হয়ে উঠা ছিল, মুসলিম ইউনিটির জন্য ভয়ংকর ক্ষতিকর।
সাধারণ শিয়াঃ "শিয়া আয়াতুল্লাহদের বাহিরে রেখে, সাধারণ জনসাধারণের কথা বলছি, যারা মুসলিমদের দুঃখে দুঃখ পায়, মুসলিমদের কষ্টে কষ্ট পায়। এবং তাত্ত্বিক বিষয় এত গভীর ভাবে জানে না, কিন্তু যা জানে তা কোরানের সহিত সাংঘর্ষিক না হয়ে থাকে, তাহলে তাদের মধ্যেও সঠিক দলীয় ব্যক্তি থাকা অসম্ভব নয়। সকল সাহাবীই সর্ব প্রকার হাদিস জানতেন না, তাই কিছু মানুষ যদি স্বল্প জানা হয়, কিন্তু যা জানে তা সহি ইসলামের বিপক্ষে নয়, ঐ সব নির্দোষ সহজ সরল ব্যক্তিগণ অবশ্যই ইব্রাহীম রাঃ এর ধর্মের উপর থাকা অসম্ভব নয়, আমি ব্যক্তিগত ভাবে সুন্নি ইমামের পিছনে শিয়া ব্যক্তিকে নামাজ আদায় করতে দেখেছি। কিন্তু যারা শিয়া পরিচয়টাকে মুখ্য ঘোষণা করে এর উপর অন্য মুসলিমদের দুঃখের কারণ হয়, তাহলে তারা সুস্পষ্ট রূপে দলাদলিতে লিপ্ত।"-[মুসলিমদের মধ্যে কোন দল সঠিক ?]
‘If loving the Wasi of the Prophet, Ali Murtadha a Rafidi,
then verily amongst all the people I am the greatest Rafidi
From the plain of Mina I will shout to all those standing or sitting,
if loving the family of the Prophet makes you a Rafidi,
then I testify before the mankind and Djinns I am a Rafidi”-Imam Shafi
(Sawaiq al Muhriqah, page 449 & 450 শাফেয়ী মাহযাবের ইমাম শাফি'য় রঃ এর কবিতাটি আগে থেকেই জানা কিন্তু মুখস্থ নেই বলে দুর্বল রেফারেন্স থেকে কপি করা হয়েছে)
সতর্কতাঃ ইমাম শাফেয়ী রাঃ এখানে নবী পরিবারের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করেছেন। তিনি অন্য বর্ননায়, রাফিদিদের থেকে রেওয়াত গ্রহন করতে না বলেছেন। অর্থ্যাত রাফিদিরা গ্রহনযোগ্য নয়। তিনি নিজেও রাফিদি নন, কিন্তু নবী পরিবার ও আলী রাঃ কে ভালবাসেন সেটাই তিনি বুঝিয়েছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৬
মেহেদী হাসান শীষ বলেছেন: আপনাকে স্যালুট গুরুত্তপূর্ন পোস্ট করেছেন