নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাইরাস যখন ব্যাবিলন দখল করে তখন ইহুদীররা ব্যবিলনে নির্বাসিত। তখন সাইরাস ইহুদীদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে জেরুজালেমে ফিরে যাবার অনুমতি দেন।আর সেই সময় উনি পরিচিত হন এক মহান নবীর সাথে।নাম তার দানিয়েল আঃ।বাইবেল কিন্তু দানিয়েল আঃ কে নবী হিসেবে স্বীকৃত দেই নি,বাইবেলের মতে দানিয়েল আঃ ছিল একজন মহান ইহুদী তবে তিনি নবী না(আগ্রহীরা বাইবেল অনুযায়ী নবীদের চার্ট দেখতে পারেন)।এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমি কিভাবে দানিয়েল আঃ কে নবী বললাম? দানিয়েল আঃ যে নবি ছিলেন এটা আমাদের প্রীয় নবী মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন।তিনি আরো বলেছেন যে দানিয়েল আঃ লাশ শনাক্ত করবে সে জান্নাতি।
হযরত ওমর রাঃ এর খিলাফত কালে বিখ্যাত সাহবী আবু মূসা আশয়ারি রাঃ যখনন তুসতুস নগরী জয় করে তখন একজন মুসলিম দানিয়েল আঃ এর লাশ পান আর সেই লাশ অক্ষাত অবস্থায় ছিল এমন কি চুলসহ।দেখে মনে হচ্ছিল উনি ঘুমিয়ে আছেন(আগ্রহীরা এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইবনে কাসীরের আল বেদায়া ওয়ান নেহায়ার ২য় খন্ডে দানিয়েল আঃ এর জীবনী পড়তে পারেন)।
দানিয়েল আঃ এর সাথে পরিচিত হবার পর সাইরাস দানিয়েল আঃ এর খুব ঘনিষ্ঠা বন্ধু হয়ে যান।তো একদিন সাইরাস দানিয়েল আঃ কে প্রশ্ন করলেন "তুমি কেন আমাদের দেবতার সামনে প্রণিপাত করো না?তুমি কেন এমন এক প্রভুর ইবাদত কর যাকে দেখা যাই না?" তখন দানিয়েল আঃ বললেন "আপনি আমাকে বোকা বানাবেন হে মহামান্য!আপনার যাকে দেবতা হিসেবে মানেন না তারা খেতে পারে না তারা আপনার ডাকে সাড়া দিতে পারে?আপনার প্রত্যেকদিন যে খাবার ঐ দেবতাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন তাকি ঐ পাথরের মূর্তি গুলো খাই?"
এবার সাইরাস রেগে গেলেন একটু আবাকও হলেন আর জরুরি তলব করলেন ঐ মন্দিরের পুরোহিতদের।প্রশ্ন করলেন তাদের যে এই উৎসর্গীকৃত খাবার গুলো কে খাই?তারা বলল "আমাদের দেবতা মহারাজ "রাজা বলল তাহলে প্রামাণ কর আর বললেন যদি তোমরা প্রামণ করতে পার যে খাবার দেবতারাই খাই তাহলে তোমাদের পুরুস্কৃত করব আর দানিয়েল এর শিরোচ্ছেদ করব অন্যথায় পরিণাম হবে উল্টো।
তখন তারা রাজাকে সাথে করে সেই মন্দিরে নয়ে গেলেন আর সকল খাবার ঐ মূর্তি গুলোর সামনে রাখল আর বলল মহারাজ আপনার সামনেই তো এগুলো রাখলাম এবার আপনি আপনার আংটি দিয়ে মন্দিরের তালাই মহর মেরে দিন আর আগামীকাল সকালে দেখুন কি হই।মন্দিরের পুরোহীত গুলো ছিল নিরুদ্বেগ এবং ভাবলেশহীন যেন তারা জানত খাবার গুলো ঐ দেবতারাই খাবে।সবাই বের হয়ে যাবার পর রাজাকে নিয়ে দানিয়েল আঃ মন্দিরের মেঝেতে হালকা করে ছাই ছিটিয়ে রাখলেন।এবার রাজা তার আংটি দিয়ে তালাতে মহর মেরে দিলেন।পরদিন সকালে সবাই এসে রাজা দেখলেন খাবার দেবতারা খেয়ে ফেলেছে!তখন রাজা বলে উঠলে আমি জানতাম প্রভু তুমি সত্য!দানিয়েল আঃ তখন বললেন "হুজুর দয়া করে মেঝের দিকে তাকাবেন কি?
তখন রাজা দেখল মেঝেতে ছোট বড় অনেক পায়ের ছাপ!তখন রাজা ঐ পুরোহিত দের বলল ব্যপার কি? তারা সত্য স্বীকার করে বলে দিল মন্দিরের গোপন পথের কথা যা দ্ব্রারা তারা এবং তাদের পরিবার বর্গ এসে প্রত্যেকদিন দেবতা সেজে ঐ খাবার ভক্ষণ কর।এবার রাজা ক্রোধে ফেটে পড়লেন এবং পুরোহিতগনের মৃত্যুদণ্ড দিলেন।এর বেশ কিছুদিন পর...
রাজা এবং সাথে দানিয়েল আঃ যাচ্ছিল পথে তারা এক নাগ কে দেখল যাকে তারা পূজা করত।এবার রাজা দানিয়েল আঃ কে বলল এবার তো তুমি বলতে পারবে না আমাদের দেবতা খেতে পারে না নড়তে পারে না?দানিয়েল বললেন "আমি যদি এটা কে ছুয়ে ফাটিয়ে ফেলতে পারি তাহলে কি আপনি মানবেন আপনার দেবতা মিথ্যা?"
রাজা সম্মতি দিলেন।এবার দানিয়েল আলকাতরা এবং আরো অনেক কিছু মিশিয়ে পিঠা তৈরি করলেন আর ছুড়ে দিলেন সেই নাগের মুখে।ব্যাস সেই পিঠা গিলার সাথে সাথে ফেটে গেল সেই বিশাল নাগ!!
আবার রাজা বুঝলেন তার ধর্ম ভুল।কিন্ত জনগণনা বুঝল না।পুরোহিত তাদের উত্তিজিত করে তুলল দানিয়েল আঃ এর বিরুদ্ধে।তারা দানিয়েল আঃ এর মৃত্যুদন্ডের জন্য আন্দোলন শুরু করল।রাজা পড়ে গেলেন প্রচন্ড চাপের মুখে। আর সাইরাস ছিলেন খুবই প্রজাবৎসল বাদশাহ।তাই রাজা বাধ্য হয়ে সাইরাস কে মৃত্যুদণ্ড দিলেন যদিও তিনি চাচ্ছিলেন তার প্রিয় বন্ধুর জীবন রক্ষা করতে।সেই সময় কাউকে মৃত্যু দন্ড দিলে তাকে সিংহের গর্তে ফেলা হত।আর কয়েদিকে ফেলার আগে কয়েকদিন সিংহ গুলোকে না খাইয়ে রাখা হত।এবার সাইরাস কে সেই সিংহের গুহায় ফেলা হবে।এবার সেই সিংহ গুলোকে ১ সপ্তাহ না খাইয়ে রাখা হল যাতে ফেলার সাথে সাথেই মিথ্যা দেবতা সংহারক কে ছিড়ে ফেলে।
দানিয়েল কে ফেলা হল সেই সিংহের গুহায়।রাজা সারা সপ্তাহব্যাপী ঘুমাতে পারলেন না।মনে চাপা কষ্ট।আর এক সপ্তাহের আগে সেই গর্তের মুখি খোলাও যাবে না।দানিয়েল আঃ ছিলেন নির্ভিক।এক আল্লাহই চরম বিশ্বাসী,আল্লাহর উপর চরম ভরসা ছিল তার।দানিয়েল কে ফেলা হল সেই ক্ষুধার্ত সিংহের গুহায়।কিন্ত সিংহ গুলোকে আল্লাহ শান্ত বানিয়ে দিলেন।
ওরা দানিয়েল আঃ কে খাওয়ার পরিবর্তে তাকে আদরে চাটতে শুরু করলেন(এই প্রতিকৃতি হযরত দানিয়েল আঃ এর আংটিতে আকানো ছিল যা আবু মূসা রাঃ পান এবং পরবর্তী তে তার বংসধরদের কাছেও তা সংরক্ষিত ছিল)।
এসময় তার ক্ষুধা লাগে তাই আল্লাহ তার আরেক নবী যার নাম যোরামিয়া আব আরামিয়া (ইবনে কাসিরের মত অনুযায়ী) বাইবেল অনুযায়ী হাবাকুক আঃ কে আল্লাহ দানিয়েল এর জন্য খাবার বানাতে বললেন তখন উনি বললেন হে প্রভু আমি কিভাবে দানিয়েলের কাছে খাবার পৌছাব আমি আছি জেরুজালেম এ আর উনি আছেন ব্যবিলনে(এটা সম্ভবত পরস্য হবে তবে ইবনে কাসির তাই বর্নণা করেছেন)।আল্লাহ বললেন ওটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না আমি যা চাই তাই হবে।
আল্লাহ উনাকে ফেরেশতা দের মাধ্যমে সেই গুহায় নিয়ে গেলেন।আরামিয়া নবী কে দেখে দানিয়েল আঃ বললেন আপনি এখানে কেন? উনি বললেন প্রভু আপনার জন্য খাবার পাঠিয়েছেন।দানিয়েল আঃ বললেন "তাহলে প্রভু আমাকে স্মরণ করেছেন!সত্যিই প্রভু মহান তাকে যে স্মরণ করে তাকে তিনি ভুলেন না"!
এক সপ্তাহ পর....
বাদশাহ সাইরাস খুব ভোরে ছুটে এসেছেন সেই গর্তের কাছে।খুব কাতর কণ্ঠে বললেন"হে দানিয়েল যে প্রভুর তুমি ইবাদত কর যার উপর তুমি বিশ্বাস কর যার উপর তুমি ভরসা করে আমাদের দেবতা কে আস্বীকার করেছ সেই প্রভু কি তোমাকে রক্ষা করতে পেরেছে? তখন দানিয়েল আঃ বললেন হে রাজা যিনি আপনার আমার এই মহা বিশ্বের প্রভু তিনি আমাকে রক্ষা করেছেন।তিনি সিংহের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন!!!
আল্লাহুকবার!
রাজা তখনই ঘোষণা দিলেন "দানিয়েলেরত প্রভুই সত্য প্রভু তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নাই"।আর সারা দেশে তিনি ঘোষণা করলেন এবং মানুষ কে ইসলাম ধর্ম গ্রহনে উৎসাহিত করলেন।আর সেই সময় বাদশাহ ছিলেনা সাইরাস।বহুদেশ কে তিনি পদানত করেছিল।তাই সেই সব দেশেও তিনি।ইসলামের দাওয়াত দিলেন
বাবিল বিজয়ের পর সাইরাস মূলতঃ সাম্রাজ্য বিস্তারের সমাপ্তি টেনে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে নজর দেন। কিন্তু সুশাসন ও সুনামের মধ্যেও শত্রু ছিল। মধ্য এশিয়ার কস্পিয়ান সাগরের পূর্ব পার্শ্বের দুর্ধর্ষ উপজাতি সেমিনোমাডিকরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসে। তারা কারো অধীনতা স্বীকারে সম্মত ছিল না। রাজ্যের অখন্ডতা রক্ষার্থে এই বিদ্রোহ দমন করা জরুরী হয়ে পড়ে এবং সাইরাস সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করেননি।
৫৩০ খ্রীঃপূঃ সাইরাস ঐ বিদ্রোহ দমনে গিয়ে সেমিনোমাডিকানদের সাথে যুদ্ধে নিহত হন। সেমিনোমাডিক রানী টমিরিস তার মাথা কেটে নিয়ে রক্ত ভর্ত্তি চামড়ার থলিতে তা ফেলে দিয়ে বলেছিলেন: ‘খুব রক্ত চেয়েছিলি, নে, যতক্ষণ আঁশ না মেটে ততক্ষণ খা।’
রানী টমিরিস
প্রকৃতপক্ষে সাইরাসের মৃত্যু নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। প্রচলিত নানান শ্রুতির একেকটিকে গ্রহণ করেছেন একেকজন। আর সত্যি বলতে কি, no one was there to see the aftermath.যাহোক, হেরোডেটাস সাইরাস উপাখ্যানের শেষ অধ্যায় বর্ণনা করেছেন এভাবে-
Cyrus met his fate in a fierce battle with the Massagetae, a tribe from the southern deserts of Khwarezm and Kyzyl Kum in the southernmost portion of the steppe regions of modern-day Kazakhstan and Uzbekistan.
Massagetae resemble the Scythians. They fight both on horseback and on foot, neither method is strange to them: they use bows and lances, but their favourite weapon is the battle-axe. Their arms are all either of gold or brass. For their spear-points, and arrow-heads, and for their battle-axes, they make use of brass; for head-gear, belts, and girdles, of gold. So too with the caparison of their horses, they give them breastplates of brass, but employ gold about the reins, the bit, and the cheek-plates. They use neither iron nor silver, having none in their country; but they have brass and gold in abundance.
তাদের প্রথা ছিল প্রত্যেক পুরুষের কেবল একজন স্ত্রী থাকেবে, yet all the wives are held in common; and this is a custom of the Massagetae not of the Scythians. Human life does not come to its natural close with this people; but when a man grows very old, all his kinsfolk collect together and offer him as sacrifice with other animal and feast on it. আর যারা তাদের জীবন এভাবে সমাপ্ত করে তারা তাদের কাছে পরিপূর্ণ মানব ও সুখী হিসেবে বিবেচিত হত। আর যদি কেউ রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যেত, তবে তাকে তারা কবর দিয়ে দিত, bewailing his ill-fortune that he did not come to be sacrificed. They sow no grain, but live on their herds, and on fish, of which there is great plenty in the Araxes. Milk is what they chiefly drink. The only god they worship is the sun, and to him they offer the horse in sacrifice; under the notion of giving to the swiftest of the gods the swiftest of all mortal creatures.
যা হোক, সাইরাস ম্যাসাগেটের সীমানায় সির দরিয়ার (Syr Darya) তীরে পৌঁছে রানীর নিকট শান্তির প্রস্তাব পাঠান এবং তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। রানী টমিরিস ঐ প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাথ্যান করেন। সাইরাসের উপদেষ্টা ক্রোয়েসাস এসময় তাকে তাদের নিজেদের ভূমিতে গিয়ে দমন করতে উপদেশ দেন। তখন তিনি নদীর ওপারে গিয়ে ম্যাসাগেটীয়দের এলাকা শক্তির জোরে দখলে আনতে তার দিকের নদীর পারে তার যুদ্ধ জাহাজগুলো জড় করেন এবং টাওয়ার তৈরী করে তার সাথে সেগুলো একের পর এক জুড়ে সাঁকো তৈরী করার উদ্যোগ নেন।
রানী টমিরিস এসময় সাইরাসের মনোভাব বুঝতে পেরে তাকে এক সতর্কবার্তা পাঠান। ঐ বার্তায় তিনি জানান যে, তার ভূমিতে প্রবেশ তার জন্যে কখনও ভাল ফলাফর বয়ে আনবে না বরং তা হবে চরম হতাশার এবং অপমানজনক। কিন্তু সাইরাস ঐ সতর্কবাণী উপেক্ষা করায় টমিরিস তাকে সম্মানজনক যুদ্ধরীতিতে তার বাহিনীকে সম্মুখসমরে মোকাবেলায় চ্যালেঞ্জ করেন এবং তার দেশের একটি স্থান নির্দিষ্ট করেন যেখানে দু’বাহিনী পরস্পর পরস্পরের মোকাবেলা করবে। ঐ স্থানটির অবস্থান, যেখানে নদীর তীরে সাইরাস তার বাহিনী নিয়ে ছাউনি ফেলেছেন তা থেকে এক দিনের দূরত্বে ছিল। তার এ প্রস্তাব সাইরাস গ্রহণ করেন এবং ঐ নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে পৌঁছান। কিন্তু সেখানে পৌঁছে যখন তিনি জানতে পারেন যে, মদ ও তার আবিষ্টতার বিষয়টি ম্যাসাগেটীয়দের নিকট অজানা, তখন তিনি তথ্যটি কাজে লাগান। তিনি একটি পরিকল্পণা করেন এবং তার বাহিনী থেকে বাঁছা্ইকৃত এক দক্ষ সেনাদল নিয়ে, অগ্রগামী দল হিসেবে এগিয়ে যাবার নামে আত্মগোপন করেন। প্রকৃত পক্ষে he left the camp with plenty of wine behind,
তারপর টমিরিসের সেনাদল সেনাপতি স্পর্গাপিজেসের নেতৃত্বে সেখানে এসে পৌঁছে এবং সাইরাসের রেখে যাওযা সেনাদলের মুখোমুখি হয়। আগেই বলেছি সাইরাস তার সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলেন দক্ষ সেনাদের এবং রেখে যান তুলনামূলক কম দক্ষদেরকে, ফলে, স্পর্গাপিজেসের বন্য বাহিনী স্বল্পসময়ে তাদেরকেকে নিচিহ্ন করে ফেলে। আর তারপর তারা ক্যাম্পে খুঁজে পায় মদের ভান্ডার ও পর্য়াপ্ত পরিমান খাবার। অত:পর বিজয় উৎযাপনে তারা যখন ভরপুর খেয়ে মত্ত অবস্থায় ছিল, তখন অতর্কিত লুকিয়ে থাকা সাইরাসের বাহিনী তাদেরকে আক্রমণ করে বসে। কিন্তু নেশায় মত্ত স্পর্গাপিজেসের বাহিনীর পক্ষে ঐ আক্রমণ প্রতিহত করার সামর্থ্য ছিল না। এমনকি নিরস্ত্র ঐ যোদ্ধারা শায়িত ও উপবিষ্ট অবস্থায় কখন যে শাণিত তরবারীর তলে পড়ে মারা পড়ল, তাও তারা টের পেল না। সেনাপতি স্পর্গাপিজেস বন্দী হন সাইরাসের হাতে, কিন্তু জ্ঞান ফিরে নিজেকে বন্দী দেখে মাতা, রানী টমিরিসের নিকট কাপুরুষ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার ভয়ে প্রথম সুযোগেই সে আত্মহত্যা করে বসে।
কি ঘটেছে তা জানতে পেরে রানী টমিরিস প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হন। তার বাহিনীকে সম্মুখ সমরে মোকাবেলার পরিবর্তে সাইরাস ফাঁদ পেতে তাদেরকে কাপুরুষের মত নিধন করায় তিনি তাকে একজন রক্তলিপ্সু সম্রাট বিবেচনা করে তাকে তার উপযুক্ত শিক্ষা দেবার সংকল্প করেন এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন। টমিরিসের এমন প্রতিহিংসার আরও কারণ হল সৎকারের জন্য পুত্র স্পর্গাপিজেসের লাশ তার কাছে হস্তান্তর না করায়। লাশ নিতে আসা প্রতিনিধিদের জানানো হয়েছিল যে, সৎকার নিয়ে চিন্তিত হবার কারণ নেই, মহান সাইরাস মাতা পুত্র উভয়কে যথাযত মর্য়াদায় একসাথে সৎকারের ইচ্ছা রাখেন।
রানী টমিরিস অত:পর এ বার্তা পাঠান- "Thou bloodthirsty Cyrus, pride not thyself on this poor success: it was the grape-juice - which, when ye drink it, makes you so mad, and as ye swallow it down brings up to your lips such bold and wicked words - it was this poison wherewith thou didst ensnare my child, and so overcamest him, not in fair open fight. Now hearken what I advise, and be sure I advise thee for thy good. Restore my son to me and get thee from the land unharmed, triumphant over a third part of the host of the Massagetae. Refuse, and I swear by the sun, the sovereign lord of the Massagetae, bloodthirsty as thou art, I will give thee thy fill of blood."
Queen Tomyris denounced Cyrus's tactics as underhanded and swore vengeance, leading a second wave of troops into battle herself. যুদ্ধ শুরুর পূর্বে টমিরিস তার বাহিনীর সামনে এ লড়াইয়ের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন। সাইরাস তার ঘৃণ্য কৌশলের দ্বারা কিভাবে তার বাহিনীকে মদে মত্ত করে তাদেরই ভুমিতে তাদেরকে টুকরো টুকরো তাদের রক্তে ভূমি সিক্ত করেছে তার বিস্তারিত বর্ণণা দেন। তিনি তার বাহিনীকে নিশ্চিত করেন যে, যুদ্ধজয় তার লক্ষ্য নয়, তার লক্ষ্য প্রতিজ্ঞা রক্ষার, প্রতিশোধের। সুতরাং তিনি দেখতে চান তার চেখের সামনে, এ যুদ্ধ ময়দানে যেন পার্স্যিয়ানরা তাদের খন্ডিত টুকরো গুলো চারিদিকে ছড়িয়ে নিয়ে রক্ত স্নাত হয়ে সেভাবেই পড়ে থাকে যেভাবে তারা তাদের ছেলেদেরকে খন্ডিত করেছে। সবশেষে তিনি সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন পরাজয়ের ফলাফল। তিনি জানিয়ে দেন, তাদের পরাজয় কেবল তাদেরকে দাসই করবে না, বরং তাদের পিতৃপুরুষের হাঁড়গুলো আবৃত্ত করে রাখা এ্ই ভূমির উপরে, তাদের চোখের সামনে, তাদেরই মা, বোন, ও স্ত্রীরা দলিত ও মথিত হবে পাস্যিয়ানদের হাতে।’সুতরাং’- টমিরিস বললেন, ‘আগে মার, তারপর মর।”
টমিরিসের সেনাদল গঠিত ছিল বর্বর উপজাতির ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগুলোর হিংস্র ও দুর্ধর্ষ যোদ্ধার সমন্বয়ে। তারা যেমন ছিল অকুতোভয়ী, তেমনি ছিল অশ্ব ও অস্ত্র চালনায় সুদক্ষ।তারা রানীর আদেশ পাওয়া মাত্র ছুঁটে গেল।
টমিরিসের অশ্ববাহিনী তাদের বাঁকানো লম্বা তরবারী দিয়ে এবং পদাতিকেরা দু’হাতে কুঠার নিয়ে উন্মত্ততার সাথে ঝাপিয়ে পড়েছিল সাইরাসের বাহিনীর উপর। খুব অল্প সময়ে পার্স্যিয়ানরা পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। কিন্তু পরাজিতদের বন্দী করার ব্যাপারে কোন আগ্রহ ছিল না টমিরিসের। ফলে যুদ্ধ কিছুটা প্রলম্বিত হয় এবং যখন যুদ্ধ সমাপ্তির ঘোষণা দেয়া হয়, তখন সাইরাসের বাহিনীর কেউই যুদ্ধের ময়দানে দন্ডায়মান ছিল না, তারা ছিল তখন শায়িত বা উপবিষ্ট অবস্থায়, টমিরিসের অবশিষ্ট অশ্ব ও পদাতিক বাহিনীর পদতলে,- খন্ডিত দেহে,- আহত বা নিহত হয়ে।
সাইরাসের খন্ডিত শির হাতে টমিরিস
এ যুদ্ধজয় টমিরিসের কোন প্রাপ্তি আনেনি বরং এ যুদ্ধ তাকে নি;স্ব করেছে, তার সন্তানকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এ যুদ্ধ তো ছিল কেবল আত্মরক্ষার, জাতি হিসেবে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার, নিজ ভূমিতে স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকার জন্মগত অধিকার রক্ষার, প্রতিশোধের, প্রতিজ্ঞা পূরণের।
রানী টমিরিস নির্দেশ দেন সাইরাসকে খুঁজে বের করে আনতে। তখন তার যোদ্ধারা আহত বা মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে কাঁধে করে বয়ে নিয়ে এসে তার পদতলে নামিয়ে রাখে। ইতিমধ্যে টমিরিসের অপর একদল যোদ্ধা নিকটেই আহত যুদ্ধবন্দীদের একের পর এক শিরোচ্ছেদ করে বৃহৎ একটি পাত্রে তাদের রক্ত সঞ্চয় করতে থাকে, যতক্ষণ না তা পূর্ণ হয়।
সবশেষে টমিরিস নিজ হাতে সাইরাসকে শিরোচ্ছেদ করেন। তারপর তিনি বামহাতে চুলের মুঠি ধরে খন্ডিত ঐ শিরকে মুখোমুথি করেন নিজের। সাইরাসের রক্তমাখা মুখের প্রতি তীব্র দৃষ্টি হেনে রোষে ফেঁটে পড়েন তিনি, চিৎকার করে বলেন- ‘খুব রক্তপানের নেশায় মেতেছিলি! নে, এখন খা, যতক্ষণ আঁশ না মেটে ততক্ষণ খা।’ সন্তানের মৃত্যুর প্রতিশোধ আর সাইরাসের রক্ত পিপাসা চিরতরে মিটিয়ে দিতে অত:পর তিনি হাতের ঐ খন্ডিত শির ঘৃণাভরে ছুঁড়ে ফেলে দেন রক্ত ভর্ত্তি সেই পাত্রে। আর এরই মধ্য দিয়ে ’সাইরাস দি গ্রেট’ কাহিনীর যবণিকাপাত হল।
টমিরিসকে সশ্রদ্ধ সালাম তার জাতিকে, তার পবিত্র ভূ-খন্ডকে সভ্যতার মুখোস পরা রক্তপিপাসু এক দানবের দাসত্বের শৃংখল থেকে রক্ষা করতে পারার জন্যে, সশ্রদ্ধ সালাম আগ্রাসী পরাশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার মনোবল প্রদর্শণের জন্যে, সশ্রদ্ধ সালাম সম্মুখ সমরে তার নেতৃত্বদানের দক্ষতার জন্যে, সশ্রদ্ধ সালাম তার সন্তান হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারার সক্ষমতার জন্যে, সশ্রদ্ধ সালাম তার প্রতিজ্ঞা পালনে একনিষ্ঠতার জন্যে এবং তাকে সশ্রদ্ধ সালাম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত প্রতিস্থাপন করে যাবার জন্য।
সাইরাসের সমাধি, পারস্য।
যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সাইরাসের খন্ডিত মৃতদেহ যথাযোগ্য মর্যাদায় সমাহিত করার কাজে ম্যাসাগেটীয়রা কোনরূপ বাঁধা প্রদান করেনি। সুতরাং তার মৃতদেহ পারস্যে এনে সৎকারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাজধানীর উপকন্ঠে সমাহিত করা হয়। রোমান ও গ্রীক সূত্র থেকে আমরা সাইরাসের সমাধি মন্দিরের জ্যামিতিক ও নান্দনিক উভয় শৈলীর সুস্পষ্ট বর্ণনা পাই:
The tomb's geometric shape has changed little over the years, still maintaining a large stone of quadrangular form at the base, followed by a pyramidal succession of smaller rectangular stones, until after a few slabs, the structure is curtailed by an edifice, with an arched roof composed of a pyramidal shaped stone, and a small opening or window on the side, where the slenderst man could barely squeeze through. According to Plutarch, Cyrus epitaph said-
”O man, whoever you are and wherever you come from, for I know you will come, I am Cyrus who won the Persians their empire. Do not therefore begrudge me th
is bit of earth that covers my bones.”
সাইরাসের সময় থেকে পারস্য বিশ্বব্যাপী একটি সাম্রাজ্য হিসেবে বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে। তার মৃত্যুতে সাম্রাজ্য বিস্তার থেমে যায়নি। তার পুত্র দারিয়াবস ১ম পরবর্তীতে মিসরের উপর আক্রমণ চালায় এবং ৫২৫ খ্রী:পূ: তা জয় করে নেয়। ফেরাউনের সেনাবাহিনীর একাংশ বিশ্বাসঘাতকতা করায় পারস্যিকদের আক্রমণে মিসরীয় সেনাবাহিনী ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলে পারস্যিয়ানদের বিজয় ত্বরান্বিত হয়।
মিসর বিজয়ের ফলে পারস্য সাম্রাজ্য আয়তন ও শক্তিতে বৃহৎ আকার ধারণ করে। এ সাম্রাজ্য সেসময় দূরপ্রাচ্যে ভারত, পশ্চিমে ইউরোপের থেসলি এবং উত্তরে ককেশাস থেকে দক্ষিণে মিসর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল।
দারিযাবস ১ম মারা গেলে তার পুত্র শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন বটে, কিন্তু মাত্র সাত মাস রাজ্য পরিচালনার পর মাদীয় দারিয়াবস-২য় এর হাতে তিনি নিহত হন।
পারস্য রাজ ২য় দরিয়াবসের রাজ্য সরকার এবং প্রশাসন ব্যবস্থা ছিল সুসংগঠিত এবং অত্যন্ত উন্নত। দু’শতাব্দী ধরে এই সাম্রাজ্য তখনকার বিশ্বে পরাশক্তি হিসেবে বিরাজ করছিল।
এবার প্রশ্ন হল সাইরাস এক আল্লাহই বিশ্বাসী ছিলেন কি না?
১."আমার দাস ইয়াকুবের ও আমার মনোনীত ইস্রায়েলের নিমিত্ত
আমি তোমার নাম ধরে ডেকেছি;
তুমি আমাকে না জানলেও তোমাকে উপাধি দিয়েছি।
আমিই খোদা, আর কেউ নয়; আমি ব্যতিত অন্য উপাস্য নেই;
তুমি আমাকে না জানলেও আমি তোমার কটিবন্ধ করব।’-(ই‘শাইয়া ৪৫:১-৫) " বাইবেলের এই উদ্ধৃতি দ্বারা বোঝা যাচ্ছে সাইরাসের প্রতি আল্লাহর রহমত ছিল আর তাকে এমন কিছু নিদর্শন দেখাতে চান আল্লাহ যাতে বুঝতে পারে তিনি "আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই"।
২.সাইরাস কে আল্লাহ তার প্রিয় ঘর মসজিদুল আকসা পুনর্নিমাণের এক কৃতিত্ব দিয়েছেন যা আনেক নবী দোয়া করেও পাই নি।যেমন দাউদ আঃ। তিনি এত সম্মানিত নবী হওয়া সত্ত্বেও যখন দুয়া করলেন যে আল্লাহ আমাকে আপনি আপনার প্রিয় ঘর পুনর্নিমানের ক্ষমতা দিন আল্লাহ তখন বললেন তুমি না আমার সন্তান সুলাইমান কে আমি এ কাজের জন্য মনোনীত করেছি!!!চিন্তা করুন যে কাজ নবী হওয়া সত্ত্বেও সুযোগ পাই নি অনেকে সেক্ষেত্রে সাইরাস যদি একজন আমুসলিম মুসরিক হই সেক্ষেত্রে তাকে এত বড় কৃতিত্ব দেওয়া কিভাবে সম্ভব?
৩.সাইরাস অনেক ন্যায়পরায়ণ ছিলেন। প্রাচীন এক সিলিন্ডার আকৃতি একটা টেরাকোটার ফলকে সেই বর্ণানা আছে। সেই সিলিন্ডার এ যে বর্ণনা পাওয়া যাই তা আমাদের মুসলিম শাসকগণ তাদের জয় করা রাজ্য গুলো তে অনেক বারই ঘোষণা করেছে।চিত্রের ঘোষণা গুলো পড়ে দেখতে পারেন।
বিঃদ্রঃআমি এই তথ্য গুলো ইবনে কাসিরের আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া এবং বুক অফ দানিয়েল গ্রন্থ থেকে নিয়েছি।এই দুই গ্রন্থ সম্বনয় করেই দিয়েছি পোস্ট।এই পোস্ট আমি যেসব বিষয় আমার অবাস্তব এবং অসংগতি পূর্ণ মনে হয়েছে সেগুলো আমি বাদ দিয়েছি।যেমন বুক অফ দানিয়েলে হযরত দানিয়েল আআঃ কে সিংহের গর্তে ফেলার কাহীনি দুই বার উল্লাখে প্রথম বারে দারিউস তাকে সিংহের গর্তে নিক্ষেপ করে ২য় বার সাইরাস।কিন্ত আমরা ইতিহাস থেকে জানি দারিউস না সাইরাসই প্রথম ব্যাবিলন জয় করে।তাই সিংহের গর্তে যদি কেউ তাকে ফেলেই সে সাইরাস ছাড়া আর কেউ না।আর একই ঘটনা কখনওই দুবার ঘটতে পারে না।এটা কিতাবীগন গুলিয়ে ফেলেছেন। একই ভাবে ইবনে কাসির তার গ্রন্থে লিখেছে নেবুকান্দেজার সাইরাস এর অধীনে ছিল এবং সে অনুযায়ী দানিয়েল এর ঘটনা তিনি ব্যাবিলনে বর্ণনা করেছে কিন্ত আমরা ইতিহাস থেকে জানি নাবুকান্দেজার কারো অধীনে ছিল না তার মৃত্যুর পরে সাইরাস ব্যবিলন জয় করে।সেক্ষেত্র আমি এটাও বাদ দিয়েছি।
আর এই ঘটনা গুলো আমি বিশ্বাস করি বলে লিখেছি এটা আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস এখানে কাউকে জোর করে বলব না যে তাকে উপরোক্ত ঘটনা বিশ্বাস করতেই হবে।ইহুদি-নাসারাদের কোন ঘটনা শোনার পর তা বিশ্বাস করব কি করব না এসম্বন্ধে রাসূলের কথা হল ইচ্ছে হলে তাদের মত গ্রহন করতে পার না হলে অবিশ্বাসও করো না,এটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দাও।আর কেউ চাইলে তাদের থেকে কোন ঘটনা উল্লেখও করতে পার(এই কথা ভিত্তিতেই আমার এই বর্ণণা)
১ম পর্ব
তথ্য সূত্রেঃবাইবেল-বুক অফ দানিয়েল ,আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া
Dandamayev,Muhammad A.,CYRUS iii. Cyrus II The Great, Encyclopædia Iranica
Schmitt
২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:২৩
আরব বেদুঈন বলেছেন: জাজাকাল্লাহু খাইরান ভাই
২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:৫৯
তাওহিদ হিমু বলেছেন: অনেক ভাল লাগল পড়ে।
২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:২৪
আরব বেদুঈন বলেছেন: জাজাকাল্লাহ।আপনাদের ভাল লাগাই আমার প্রেরণা
৩| ১২ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১০:০৬
মো: ইসলাম বলেছেন: আমার কাছে মনে হয় সাইরাস দি গ্রেটের মৃত্যুর ইতিহাসটা বিতর্ক আছে?
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৯
আহলান বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট .... কষ্ট করে এতো বড় পোষ্টের জন্য আপনি ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য বলে করি।