নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত পর্বের পর থেকে
রেজোবের শেষ নিঃশ্বাসের সাথে সাথে উজিরের বিষ দৃষ্টি ও মায়ের অভিভাবকত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে সত্যিকারের পথ চলা শুরু করে। সুলতান চতুর্থ মুরাদের শাসনকাল প্রশাসনিক অরাজকতা প্রশমিত করে এরপর সুলতান নজর দেন সামরিক বাহিনীর দিকে। এরপর সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে বসফরাসের তীরে সাধারণ সমাবেশের নির্দেশ দেন তিনি।
দিওয়ানদের সঙ্গে উন্মুক্ত মণ্ডপে সভায় বসেন সুলতান। সিংহাসনে আসীন সুলতান, পার্থে বিশ্বস্ত প্রহরীদল, প্রথম সারির বিচারকেরা উচ্চপদস্থ কর্মচারী এ সময় সুলতানের পাশে ছিল,আর দুজন সামরিক নেতা যারা বিদ্রোহের সমর্থন করেছিল এবং প্রধান মুফতি কে নিয়ে শুরু হয় সভা। সিপাহিদের প্রতিনিধিবর্গকে ডেকে পাঠানো হয়। এরপর সামনে উপস্থিত জানিসারিসদের সাথে কথা বলেন সুলতান। কোরআন থেকে উদ্রুতি দিয়ে জানিসারিসদের বিশ্বস্ত ভৃত্য ও
প্রতি দৃড় ভাবে অনুগত হবার কথা উল্লেখ করে সুলতান তাদের নির্দেশ দেন বিদ্রোহের পথ পরিহার করতে। উত্তরে চিৎকার করে নিজেদের বিশ্বস্ততা ঘোষণা করে।হাতে হাতে কোরআন নিয়ে শপথ করে জানিসারিসরা : "আমরা খলিফার অনুগত, আমরা বিদ্রোহীদের সমর্থন করি না,তার শক্র আমাদেরও শত্রু।”
এরপর সিপাহিদের বয়োবৃদ্ধ প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে সুলতান বলেন, সিপাহিরা তোমাদেরকে ন্যায়বিচার সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া কঠিন। তোমরা চল্লিশ হাজারের প্রত্যেকেই নিজস্ব অফিস চাও, যেখানে পুরো সাম্রাজ্যে আছে প্রায় পাঁচশোর মতো। তোমাদের চাহিদা সাম্রাজ্য ছাড়িয়ে গেছে, একে শূন্য করে দিয়েছে। বাহিনীর বড়দের বা জ্ঞানীদের কথা না শুনে জনগণকে পীড়ন করো তোমরা। ধর্মীয় ভিত্তি নষ্ট করে অরাজকতা আর বিদ্রোহে নাম লিখিয়েছো এর প্রতিবাদে সিপাহিদের প্রতিনিধিরা বলে ওঠে যে ব্যক্তিগতভাবে তারা সুলতানের প্রতি বিশ্বস্ত থাকলেও বাহিনী সকলকে নিয়ন্ত্রণ করা তাদের ক্ষমতার বাইরে।সুলতান তাদেরকে অর্থের বিনিময়ে ন্যায়বিচার বিক্রি করে সাম্রাজ্যের প্রজাদের পীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। উত্তরে সিপাহিরা কর সংগ্রহে ভায়োলেন্সের উল্লেখ করে। এশিয়া থেকে আগত এক বিচারক এ পর্যায়ে নিজের তরবারি বের করে অগ্নিদৃষ্টি হেনে সুলতানকে বলে “আমার সুলতান,এসব পীড়নের বিরুদ্ধে একমাত্র ঔষুধ হল তরবারি"।এবার একটা আইন জারি হয়, যেখানে নিপীড়নের বিরুদ্ধে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সকলে স্বাক্ষর করে।এভাবে মুরাদের নিজস্ব দৃড় শাসনামল সামরিক অরাজকতার অবসান ঘটায়। এরপর মুরাদের নির্দেশে সুদক্ষ গোয়েন্দা ও সৈন্যরা সারা ইস্তাম্বুল চষে ফেলে।
যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে দুশমনিতে লিপ্ত হয় এবং পৃথিবীতে অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টির পাঁয়তারা করে, তাদের শাস্তি কেবল মৃত্যুদন্ড, শূলিবিদ্ধ করে হত্যা কিংবা হাত পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা অথবা নির্বাসিত করা (কারাগারে নিক্ষেপ করা)। এ তো হল তাদের পার্থিব অপমান। আর পরকালেও তাদের জন্য অপেক্ষা করছে মর্মন্তুদ শাস্তি। (মায়েদা ৬ : ৩৩)''।তাই আইন জারি করা হয় বিদ্রোহীরা ধরা পড়লে সেখানেই আইন কার্যকর করা হবে। নেতাদের ঘটনাস্থলেই তরবারি বা ধনুকের ছিলা দিয়ে হত্যা করে বসফরাসে ফেলে দেয় লাশ।এত দ্রুত যেন তা হয়ে যায় যাতে জনসমাগম না হয়।প্রদেশসমূহ জুড়েও একই ভাবে এই আইন কার্যকর করা হয়। নেতাদের হারিয়ে নিচুপ হয়ে যায় বিদ্রোহীরা।তিনি নিজে দিনে রাতে, ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াতেন সৈন্যদের মাঝে।বেআইনি সমাবেশ ভেঙে দিয়ে তার পুলিশি নীতিকে অগ্রাহ্যকারীকে নিজ হাতে শাস্তি দিতেন।আল্লাহ মদ হারাম করেছেন তাই পরবর্তীতে সাম্রাজ্যের সব ক্যাফে আর ওয়াইনের দোকানও বন্ধ করে দেন সুলতান।এতে আরেক টা কাজ হয় যে , জনগণ একত্রিত হতে বা বিদ্রোহের বীজ না ছড়াতে পারত না। এছাড়া টোবাক্যোকেও বেআইনি ঘোষণা করেন। যদি এমন কাউকে পাওয়া যেত যে রাতের বেলা ওয়াইনসহ ধরা পড়ছে তাহলে তাকে তৎক্ষণাৎ ফাঁসি দেয়া হতো আর মৃতদেহ রাস্তায় ছুড়ে যাতে তাদের দেখে বাকিরা শিক্ষা নেই।
চলবে
উল্লেখ্য ওমর ফারুক রাঃ এর মতো খলিফা মুরাদ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং শরিয়া আইন কার্বযকর করেছেন বলে ইউরোপীয়ানরা তাকে নিষ্ঠুর বলেছেন!ভাববার বিষয়!
আগের পর্বঃ
২য় পর্ব
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫৯
আবু তালেব শেখ বলেছেন: ভালো লাগলো