নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল

আরাফাত শাহরিয়র

আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস, মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস! আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর, আমি দুর্বার, আমি ভেঙে করি সব চুরমার! আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল, আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল! আমি মানি না কো কোন আইন, আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!

আরাফাত শাহরিয়র › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেমন লাগে তখন?

০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৫২

ব্যস্ত বহুতল হাসপাতাল, রেস্টুরেন্ট, বিভিন্ন কমার্শিয়াল বিল্ডিং’এর লিফটের সামনে কিংবা ব্যস্ত রাস্তায় বাসের বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। এইসময় খেয়াল করলেন এক লোক লাইনে না দাঁড়িয়ে আকাশ বাতাস দেখতে দেখতে লাইনের শুরুর দিকটার আশেপাশে ঘুর ঘুর করছে। আর যেই লিফট কিংবা বাস এলো, মুহূর্তেই চোর চোর চেহারা নিয়ে সুড়ুত করে উঠে পড়ল, আর সেটা আপনি ছাড়া আর কেউই যেন লক্ষ্য করল না। তখন কেমন লাগে?



ফ্যামিলি নিয়ে নিজের ও কুলির মাথায় বহন করা ক্রিকেট পিচ-রোলারের মত ওজনদার, বিভিন্ন সাইজের বাক্স-পেটরা টেনে নিয়ে হাচরে-পাঁচরে ট্রেনে উঠে দেখেন, মাথার উপরে ব্যাগ রাখার তাকটা ইতিমধ্যেই আপনার ব্যাগ গুলোর চেয়েও বড় বড় ব্যাগে ঠাসা। আদনান সামির মত দেখতে আপনার ব্যাগ গুলো তো বহু দূরের কথা, মোবাইল কভারটা রাখতে চাইলেও পারবেন না। সেটা না হয় পকেটে রাখলেন, আদনান সামিদের কই রাখবেন? কেমন লাগে?



দোকানে ঈদের কেনা কাটা করতে গেছেন। সবখানেই ঐ একই জিনিষ পত্রে বোঝাই। কোনটাই পছন্দ হয় না। দামে হলে চেহারায় হয় না। চেহারায় হলে দামে হয় না। বিরস বদনে ঘুরছেন; এই সময়, হঠাৎ আপনার নিষ্প্রভ চোখ জোড়াকে দপ করে জ্বালিয়ে দিয়ে সুন্দর কোনও জামা হাজারো সমাহারের ভেতর থেকে হাসি মুখে উঁকি দিল। "ওটা একটু দেখি" বলতে মুখ মাত্র হা করেছেন আর এক মোটাসোটা মহিলা তাঁর মাংসল হাত গুলো বাড়িয়ে ক্ষিপ্র ঈগলের মত ছো মেরে নিয়ে গেল জামাটা। আপনাকে অবাক করে দিয়ে অকর্মণ্য বিক্রয়িক যত দাম বলল, তাতেই রাজি হয়ে কিনে নিয়ে আপনাকে নিরুপায় ইয়াসমিন করে চলে গেল মহিলা। কেমন লাগল?



সিএনজি ট্যাক্সি খুঁজছেন অনেকক্ষণ ধরে। মাঝে মধ্যে যেটা আসছে সেটার ভেতরে কেউ না কেউ গা জ্বলা হাসি দিয়ে বসে আছে। হেলে-দুলে লাফাতে লাফাতে যেই খালি একটা এলো, ওমনি মুহূর্তেই আপনার মুখের সদ্য ফুটে উঠা মৃদু হাসিটা যেন রাবার দিয়ে মুছে দিয়ে কোত্থেকে আরেকজন লাফ দিয়ে এসে সিএনজি ট্যাক্সিটা নিয়ে রঙ্গ করে চলে গেল আপনার সামনে দিয়ে? কেমন লাগে?



মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গেছেন। পরিষ্কার পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে, মাথায় একটা সাদা টুপি চড়িয়ে বেশ একটা পবিত্র, শুদ্ধ শুদ্ধ অনুভূতি নিয়ে বসে আছেন মেঝেতে। এই সময় এক চেঙরা এসে মসজিদের ভেতরে টাইলসের মেঝেতেও জায়নামাজ বিছিয়ে বসল আপনার পাশে। কিছুক্ষণ পর আপনি অবাক-বিস্ময়ে লক্ষ্য করলেন যে ছোকরা নাক খোটা, কান চুলকানো শুরু করেছে। আর ক্ষণে ক্ষণে বলদ-বিমনা চেহারায় নিজের জায়নামাজটি ঠিক বাঁচিয়ে আশেপাশের মেঝের দিকে সই করে কিছুক্ষণ আগেও নাক-কানের ভেতর থাকা আঙ্গুলটা টোকা দিচ্ছে। কেমন লাগে?



ভ্যালেন্টাইন্স ডে। গার্ল-ফ্রেন্ড কিংবা বউ (বয়-ফ্রেন্ড কিংবা জামাই) নিয়ে বের হয়েছেন ভালমন্দ খাবেন বলে। রেস্টুরেন্ট গুলোয় এমন ভিড় যে ফ্লাই ট্র্যাপ, মশার স্প্রে কিংবা বিদ্যুতায়িত মারণাস্ত্র ব্যাটের ভয় জয় করা মশা-মাছিরাও ভেতরে ঢুকতে পারছে না। রেস্তোরাঁর সামনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় এমন ছোট্ট অংশটিতে তীর্থের কাকের মত অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত ওয়েটার বেটাকে ম্যানেজ করে একটা সিট খালি হওয়ার খবর নিলেন। গিয়ে দেখেন পাশের এক দম্পতি এখন নিজেদের টেবিল ফেলে দুজনার জন্য বরাদ্দকৃত সুন্দর টেবিলটিতে বসে পড়েছেন। এটি তাদের বেশি ভাল লেগেছে। অনেক বলে-কয়েও ওয়েটার ছোকরাটা তাদের সরাতে পারছেন না। কেমন লাগে?



জানি; কেমন লাগে সেটা বর্ণনা করতে চাইলে গোঙানোর মত কিছু আপাত অর্থহীন শব্দ বেরবে আপনার মুখ দিয়ে শুধু, যা কিনা উপরোক্ত পরিস্থিতিতে আপনার অনুভূতি যথেষ্ট পরিষ্কার রূপে প্রকাশ করবে। কিন্তু লুকায়িত বক্তব্যটি হল এদের এবং এসব সহ্য করতে শেখাই আসলে হাসতে শেখা, ভালবাসতে শেখা । তবে ইউ ডু হ্যাভ এ্যা চয়েস।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:১৫

মদন বলেছেন: +

০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৭

আরাফাত শাহরিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ! :)

২| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩

রাহুল বলেছেন: +++++

৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২০

রিয়ান৯১১ বলেছেন: +++++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.