নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল

আরাফাত শাহরিয়র

আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস, মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস! আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর, আমি দুর্বার, আমি ভেঙে করি সব চুরমার! আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল, আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল! আমি মানি না কো কোন আইন, আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!

আরাফাত শাহরিয়র › বিস্তারিত পোস্টঃ

কর্মজীবী মা-বাবার সন্তান-সংসার দেখবে কে?

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৪

ভিক্টোরিয়া বেকহাম যখন কাজে বাইরে ব্যস্ত থাকেন, তখন বাচ্চাদের দেখাশোনা সহ ঘরের সমস্ত কাজের দায়িত্ব নেন ডেভিড বেকহাম। বেকহাম রীতিমত উপভোগই করেন ঘরে থাকা! রাষ্ট্রপতি হবার দৌড়ে অবতীর্ণ হিলারি এক সাক্ষাৎকারে সেদিন বলছিলেন- রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হলে স্বামী বিল ক্লিনটনের ভূমিকা শুরু হবে রান্নাঘর থেকে। দত্তক নেয়া ও জন্ম দেয়া নয় নয়টি বাচ্চাকাচ্চার ব্যস্ত সংসারে, এঞ্জেলিনা জোলির বাইরের ব্যস্ততায় ঘরের দায়িত্ব পড়ে ব্র্যাড পিটের উপর।

গৃহ থাকলে, গৃহী-গৃহিণীর দুজনকেই গৃহের প্রয়োজনে দায়িত্ব নিতে হয় সংসারের। তবে ব্যক্তির ইচ্ছা, মানসিকতাই এরকম অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে না। এর জন্য দরকার একটি উপযুক্ত সমাজ-ব্যবস্থা এবং জীবনাচরণ। পশ্চিমের দেশগুলোতে এবং পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত অঞ্চলে ঘরের দায়িত্ব নেয়া পুরুষদের জন্য যতটা সহজ, আমাদের সমাজে ততটা নয়। ঘরের চাপ কমাতে হবে, যাতে তা সুবিধাজনক হয় নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই। যেমন, ঘরে খাওয়াদাওয়া আরামআয়েশের যে লোভী সংস্কৃতি- তা থেকে সরে না আসতে পারলে কখনই কোনো পরিবর্তন স্থায়ী হবে না। ঘরে-বাইরে নারী পুরুষ উভয়ের অংশগ্রহণ সমান করতে চাইলে, ঘরে তৈরি ভর্জিত ইল্লিশ খণ্ড, সন্তলিত চিতল-পেটিকা, নবাম্রসহযোগে মৌরলা, রক্তিম তৈলাক্ত রূপ রসনা মাংস-ব্যঞ্জনের লোভ (এবং ঢেঁকুর তোলার বিলাস) পরিত্যাগ করতে হবে।

বাচ্চাদের দেখাশোনার জন্য ঘরে দাদী-নানী কিংবা অন্যান্য আত্মীয়স্বজন সদা-প্রস্তুত পাওয়া যাবে- এমন চিন্তাধারায় নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ-পুষ্ট সমাজ প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। সবারই স্ব স্ব জীবন ও জীবিকা থাকবে- এটাই হবে স্বাভাবিক। আবার দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ, গার্মেন্টস সেক্টরে ধারাবাহিক উন্নতির সাথে সাথে অনগ্রসর এলাকা থেকে বাচ্চাদের দেখাশোনার জন্য কম-খরচে গৃহকর্মী পাওয়াও কঠিন হবে দিন দিন। এই বাস্তবতায়, বাচ্চাদের জন্য দরকার- নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য কিন্তু ব্যয়বহুল নয়- এমন পর্যাপ্ত সংখ্যক বেবি ডেকেয়ার, স্কুল।

এমন সামাজিক আচার ও অবকাঠামোগত পরিবর্তনই সৃষ্টি করতে পারে সুখী সুখী সমাজ (এক পক্ষের জন্য সুখী নয়। নারীপুরুষ উভয় পক্ষের জন্যই সুখী)। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় গৃহিণীরা অবশ্যই সুখী নয়। তারা সুখী নয় স্রেফ একারণে নয় যে গৃহের জীবন একঘেয়ে, ক্লান্তিকর; বরং এই কারণে যে- ঘরের বিনাবেতনের কাজ ছাড়া তাদের বেশীরভাগের ভিন্ন কোনো কাজ বেছে নেবার কোনো সুযোগই নেই। উন্নত দেশগুলোতেও কী হাউজওয়াইফ নাই? আছে। অসংখ্য। কিন্তু আমাদের সাথে তাদের অবস্থার মূল পার্থক্য হচ্ছে এই যে- তারা ইচ্ছে হলেই গৃহের জীবন ছেড়ে কর্মজীবী হতে পারেন; সহজেই। তেমনি একটি উপযোগী সমাজ আছে, সুবিধাজনক ব্যবস্থা আছে। আমাদের নেই।

আমাদের সে দিকে এগোতে হবে। গৃহ থেকে বের ক'রে গৃহীদের রেস্তোরাঁয় খাবার অভ্যাস 'নিয়মিত' করতে হবে ব্যবসায়ীদের। তেমনি ঘরোয়া পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে রেস্তোরাঁগুলোয় । তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার সহজলভ্য হতে হবে বাজারে। এছাড়াও প্রয়োজন- নির্ভরযোগ্য, সহজসাধ্য, পর্যাপ্ত স্কুল এবং ডে-কেয়ার, যেখানে স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি বাচ্চাদের পড়াশোনাও করানো হবে। যে স্কুলের শিক্ষকশিক্ষিকারাই হবেন-- একেকজন মা-বাবা। সমাজ যদি মা-বাবার দায়িত্ব না নিতে পারে, তবে মা-বাবারা চাকরী করবেন কিভাবে? যে সমাজ শিশুদের জন্য মা-বাবার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে না, সেই সমাজ হয়ে থাকে স্থবির, অনুন্নত।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৯

আমিনুর রহমান বলেছেন:


খুবই গুরুত্বপুর্ন একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। গৃহী আর গৃহিনী পারস্পরিক সমযোতার মধ্য দিয়ে যদি গৃহের কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারে তাহলে সমাজ উন্নয়নে নারীরা একটা বড় ভুমিকা পালন করতে পারবে এবং যা সমাজের উন্নয়ন তরান্বিত হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.