![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জগদ্ধাত্রীর অপরিশোধ্য ঋণে বাঁধাজীবনের তটিনী আজ পড়ে আছে তটে,ঘুম ভাঙানি গান সে কবেই থেমে গেছেএখন আর বাজে না মর্চে ধরা গ্রামোফোন।।ওষ্ঠ-শীর্ষে আকড়ে থাকা পিতৃপ্রদত্ত প্রাণটি সত্যি কেমন এক মূর্তিমান অভিশাপ,এখানে কেবলি বেজে ওঠে ,শ্মশানের সেই খট্টাঙ্গ পুরাণের বিলাপ,মুর্তিমান বিভীষিকায় আচ্ছন্ন এ এক অপলাপ। তবুও স্বপ্ন দেখি আকাশ ভরা জোছনায়,বৈশাখী পূর্ণিমায় এখনো বুক বাধিঁ আশায়। কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম খামে মন আজ চিঠি পাঠায়কোনো অর্বাচীন ঠিকানায়। তাই দৃষ্টি আমার প্রসারিত ঐ নীলিমায়।
শক্ত খোলস বিশিষ্ট সামুদ্রিক প্রাণি শঙ্খ (Turbinella pyrum) এর শুভ্রতা আর বিশেষ গাঠনিক বৈশিষ্ট্যের কারণে হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে আছে। বাংলার লোক শিল্পের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের অনন্য সাক্ষ্য এই শাঁখা শিল্প একদিকে যেমন ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে জড়িত অন্যদিকে অনুপম এক শিল্পমানের পরিচয়ও বহন করে। হাতে পরিধেয় শঙ্খবলয় যেমনি প্রত্যেক বিবাহিত হিন্দু রমণীর সতীত্ব আর গৌরবের প্রতীক, শঙ্খধ্বনি তেমনি শুভকাজের সূচনায় মঙ্গল বার্তা বয়ে আনে বলে তাদের বিশ্বাস।
হাতের বালা হিসেবে বহুল পরিচিত এই শঙ্খ কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার হওয়ার পাশাপাশি পবিত্র গঙ্গাজলের আধার এমনকি শঙ্খচূর্ণ রমণীদের রূপচর্চায়ও ব্যবহৃত হতো। হিন্দু ধর্মের পাশাপাশি বৌদ্ধ ধর্মের আটটি পবিত্র চিহ্নের একটি এই শঙ্খ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাতেও বেশ গুরুত্বের সাথে ব্যবহৃত হয়েছে। মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসস্তূপ, মায়া-ইনকা সভ্যতার পাশাপাশি বাংলাদেশের পাহাড়পুর প্রত্নস্থানে প্রাপ্ত পোড়ামাটির ফলকে শঙ্খ উৎকীর্ণ থাকা মানব সংস্কৃতির সাথে শঙ্খের প্রাচীনত্য সহজেই বোঝা যায়।
প্রাচীন বাংলা পুঁথি ও সাহিত্য থেকে বাংলাদেশে শঙ্খ শিল্প বিকাশের প্রমাণ পাওয়া যায় যা এর কেন্দ্র ঢাকার বাইরেও নানা স্থানে বিস্তৃত হয়েছিল। সূচনাপর্ব হতে বিকাশকাল পরবর্তী পর্যায়ে বিলুপ্তির কারণগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব হলে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে। এই প্রবন্ধে শঙ্খ শামুকের প্রজাতিগত বিশেষণ করার পাশাপাশি জাতিতাত্ত্বিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষার মাধ্যমে ওই বিশেষ প্রজাতির শঙ্খ ব্যবহারের কারণ, প্রাপ্তিস্থান ও তার আনয়ন পথ বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে।
আভিধানিকভাবে বিশ্লেষণ করতে গেলে শঙ্খ বা এর সমার্থক যেসব শব্দের পরিচয় মেলে সেগুলোও অনেক বৈচিত্র্যময়। বস্তুত এই বিষয়গুলো জাতিতাত্ত্বিক গবেষণার মতো অধ্যয়নে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। একটি জাতির আচার আচরণে প্রচলিত বিষয়াদি থেকে প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনকে তার স্থির ও স্থবির প্রেক্ষিত হতে গতিশীল অবস্থায় আনার জন্য জাতি প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা করা হয়ে থাকে।
সেই দিক বিচারের শঙ্খ শিল্পের উদ্ভব বিকাশ ও স্বরূপ উদ্ঘাটনের জন্য শাব্দিক বিশ্লেষণ ও বুৎপত্তি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে অধ্যয়ন করা উচিত। বিশেষ করে মূল শব্দের বিকৃত রূপ বা অপভ্রংশের মাঝে অনেক ঐতিহাসিক তথ্য লুকানো থাকে। এই দিক বিচারে বাংলাদেশের শাঁখাশিল্পের উপর জাতি প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা পরিচালনার ক্ষেত্রে শঙ্খ ও সংশ্লিষ্ট নানা শব্দের বুৎপত্তি ও অর্থবিন্যাস বিশ্লেষণ করাটা জরুরি।
প্রকৃতি ও প্রত্যয়নগত বিশ্লেষণ করতে গেলে দেখা যায় শঙ্খ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে [্রশম্+খ] থেকে। বৈষ্ণব মতাবলম্বীদের উপাস্য দেবতা বিষ্ণুর যে সকল আয়ুধ পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শঙ্খ। বিষ্ণুর চর্তুআয়ুধ এর মধ্যে রয়েছে শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম। তাই অনেক সূত্রে বিষ্ণুকে শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মধারী দেবতা বলা হয়েছে।
হিন্দু ধর্মীয় বিশ্বাস ও লৌকিক ধর্মাচারে বিশেষ করে নাগ ভক্তি ধর্ম [ঘধমধ ঈধষঃ] এ কালনাগিনী ও গোখরো সাপের মতো বিষধর সাপের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান লক্ষ করা যায়। একটি বিশাল আকৃতির গোখরো [শরহম পড়নৎধ. ঘধলধ হধলধ] এর অনেকগুলো নামের একটি হচ্ছে শঙ্খচূড়। হিন্দু ধর্মবিশ্বাসে নারীদের বিশেষ কুসংস্কারে কাউকে শাঁখচুন্নি বলে মনে করা হয়ে থাকে। এদেরকে সধবা নারীর প্রেত বলে মনে করে শাঁখচুন্নি বা শঙ্খচূণী নাম দেয়া হয়ে থাকে।
শঙ্খ শব্দটি অনেক ক্ষেত্রে সাদার পরিপূরক। যেমন এক ধরনের বুক সাদা চিলের নামকরণ করা হয়েছে শঙ্খ চিল। এর পাশাপাশি শঙ্খনিনাদ বা শঙ্খ ঘোষ থেকে শুরু করে শঙ্খ বিষের নাম পাওয়া যায়। তবে এই গবেষণা প্রবন্ধে প্রত্যেক সধবা হিন্দু রমণীর হাতে ব্যবহৃত শঙ্খ বলয়ের প্রতি অধিক গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ তথা ভারতবর্ষে শঙ্খ শিল্পের বিকাশের ইতিহাস বেশ প্রাচীন। প্রতিযোগিতামূলক বাজার, মানুষের রুচিবোধে পরিবর্তন, কাঁচামালের সহজলভ্যতা না থাকা, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃতির পরিবর্তনসহ নানাবিধ কারণে এই শিল্প ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে প্রবাহিত হয়।
বিভিন্ন লোককাহিনী পৌরাণিক কাহিনী ও ঐতিহাসিক সূত্র বাংলাদেশের শাখা শিল্পের প্রাচীনত্বের প্রমাণ বহন করে। দক্ষিণ ভারতের অনেকগুলো স্থানে খ্রিস্টাব্দ প্রথম শতকের দিকে এই শিল্প উৎপত্তি লাভ করে বিভিন্ন আঙ্গিকে বিকশিত হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণ ভারতের ‘পারওয়া’ জাতির হাত ধরে আজ থেকে অন্তত ২০০০ বছর আগে এই শিল্প বিকশিত হয়। ‘বৃহৎবঙ্গ’ শীর্ষক গ্রন্থ থেকে তামিল রাজধানী কোরকাই এবং কয়েলে হতে শাখা শিল্পের নিদর্শন প্রাপ্তির কথা জানা যায় যেটি বাংলা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে থাকতে পারে।
দক্ষিণ ভারতের মান্নার উপসাগর তীরবর্তী অঞ্চলে খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতকে শঙ্খ শিল্পের ব্যাপক বিস্তৃতির কথা জানা যায়।
পাঠকের বিরক্তির উদ্রেক যেনো না হয় তাই পোস্ট দীর্ঘায়িত করলাম না। আগ্রহীগণ আমার ব্যক্তিগত সাইটের স্টিকি পোস্টটি পড়তে পারেন। ওখানে বিস্তৃত লেখা হয়েছে।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬
অর্ণব আর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
পুরো লেখাটা পড়তে চেষ্টা করেন।..
যদি সময় পাই এটা এবারের মেলাতে পূর্ণ অবয়বে প্রকাশ করার চেষ্টা নেবো..
২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:২৯
সায়েম মুন বলেছেন: শামুকের জিনিসপত্রের আলাদা সৌন্দর্য্য আছে। ভাল লাগলো পোস্টটা।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪
অর্ণব আর্ক বলেছেন: মুন ভাই আমার সাইটে গিয়ে পুরো পোস্টটা পড়েআসেন। আশাকরি ভালো লাগবে। পেজ লোড হতে সময় নেয় বলে ফুল পোস্ট এখানে দিই নাই।
৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৩
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: +++++++
৪| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৮
গোর্কি বলেছেন:
-তথ্য নির্ভরশীল সুন্দর পোস্ট।
-জানা হলো এ শিল্প সম্পর্কে।
৫| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫৭
মুদ্রা সংগ্রাহক বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন। তবে পুরোটা এখানেই দিয়ে দিন না কেন, যার ইচ্ছে হবে পড়বে যার ইচ্ছে হবে না পড়বে না।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:১৫
অর্ণব আর্ক বলেছেন: এই পোস্ট কিছুক্ষণ পর রিমুভ করে দেবো
৬| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৩৬
জুন বলেছেন: শঙ্খ্মালা কাহিনী । ছোটবেলায় এক মেলায় দেখেছিলাম শাখার দোকানে স্বামী নিয়ে এসেছে স্ত্রীকে শাখা পরাতে। হাত কেটে রক্ত পরছে তারপরও সে চুপ করে আছে শাখা সিদুর অক্ষয় থাকুক সেই কামনায়। আর আমার বাসার পাশের এক বড় গাছে দুটো বিশাল শঙ্খচিলের বাস। প্রতিদিন তারা ডানে মেলে আকাশে উড়ে বেড়ায়। ভয়ে ভয়ে থাকি কখন ডেভলাপারের নজরে পরে সেই জমি। উচ্ছেদ হবে গাছ, উড়ে যাবে শংখ চিল অন্য কোথাও অন্য কোনখানে।
ভালোলাগলো শাখা নিয়ে লেখা অর্নব ।
+
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৬
অর্ণব আর্ক বলেছেন: বিভিন্ন লোককাহিনী পৌরাণিক কাহিনী ও ঐতিহাসিক সূত্র বাংলাদেশের শাখা শিল্পের প্রাচীনত্বের প্রমাণ বহন করে। দক্ষিণ ভারতের অনেকগুলো স্থানে খ্রিস্টাব্দ প্রথম শতকের দিকে এই শিল্প উৎপত্তি লাভ করে বিভিন্ন আঙ্গিকে বিকশিত হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণ ভারতের ‘পারওয়া’ জাতির হাত ধরে আজ থেকে অন্তত ২০০০ বছর আগে এই শিল্প বিকশিত হয়। ‘বৃহৎবঙ্গ’ শীর্ষক গ্রন্থ থেকে তামিল রাজধানী কোরকাই এবং কয়েলে হতে শাখা শিল্পের নিদর্শন প্রাপ্তির কথা জানা যায় যেটি বাংলা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে থাকতে পারে।
৭| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩২
শায়মা বলেছেন: প্রিয়তে রেখে দিচ্ছি । এই পোস্ট আমার দরকারে লাগবে।
৮| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৬
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: শঙ্খ শিল্প নিয়ে তথ্যবহুল পোস্ট ।সত্যিই উপভোগ্য
৯| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪১
লেখোয়াড় বলেছেন:
শঙ্খ নিয়ে আমার জীবনে অনেক স্মৃতি আছে।
আপনার পোস্ট দেখে সেটাসব মনে পড়ল।
ধন্যবাদ পোস্টের জন্য ভাল থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
সুন্দর তথ্য নির্ভর পোস্টে ভাল লাগা রইল।