নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক রাতে টমসম ব্রিজে

০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:৫৭


কুমিল্লা টমসম ব্রিজের কাছের সড়কে ছবিটি তোলা। রাত তখন আনুমানিক আটটা। টমসম ব্রিজ নিয়ে মজার একটা অভিজ্ঞতা সবার সাথে শেয়ার করছি, কুমিল্লায় যাবার কিছুদিন আগে আমি সিলেটে ছিলাম। সিলেটে সুরমা নদীর ওপর একটা বেশ বড়সর ব্রিজ আছে, কীন ব্রিজ। অনেক পুরনো ব্রিজ, ব্রিটিশ আমলে তৈরী। আমি ওই ব্রিজের কাছেই ছিলাম সিলেটে। সেখানে প্রতিদিন একবার হলেও ব্রিজে যেতাম। ব্রিজের ওপর দিয়ে একা একা হাটতে খুব ভাল লাগত। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ব্রিজের সাথে সাথে নদী তীরেও খুব সুন্দর, মনোমুগ্ধকর আলোকসজ্জা হতো। দারুণ লাগত! দু' তিন দিনেই কীন ব্রিজটা আমার খুব আপন হয়ে উঠেছিল। হয়তো কোনদিন কীন ব্রিজের স্মৃতি নিয়েও কিছু লিখবো এখানে।
যা হোক যেখানে ছিলাম, কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে দেখলাম 'টমসম ব্রিজ, টমসম ব্রিজ' বলে টেম্পো ড্রাইভাররা যাত্রী তুলছে। তা দেখে ভেবেছিলাম বোধহয় সিলেটের কীন ব্রিজের মতোই বিরাট দর্শনীয় কোনও ঐতিহাসিক ব্রিজ হয়ে থাকবে। সেই লোভে আমিও টেম্পোতে চরে বসলাম টমসম ব্রিজ'র উদ্দেশ্যে।
একটি রাস্তার মোড়ে টমসম ব্রিজ বলে ড্রাইভার টেম্পো দাঁড় করালে সকলের সাথে সাথে আমিও নামলাম। চারপাশে তাকাতে লাগলাম মুগ্ধ চোখে। ভাবছিলাম কাছেপিঠেই কেথাও হবে ঐতিহাসিক দৈত্যাকার ব্রিজটা! রাস্তার এদিক ওদিক হাটলাম কিছুক্ষণ, চারপাশে হন্যে হয়ে খুঁজতে লাগলাম টমসম ব্রিজ। কিন্ত কোথাও কোনও ব্রিজের ছায়াও চোখে পড়ল না! বেশ কিছুক্ষণ এদিক ওদিক হাটাহাটির পর শেষে নিরুপায় হয়ে রাস্তার পাশের একজন কাপরের দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলাম, 'ভাই এখানে টমসম ব্রিজ কোথায়?' আমার কথা শুনে দোকানদারকে খুব অবাক মনে হলো, কয়েক সেকেন্ড কেবল বোকার মতো হা করে তাকিয়েই থাকল আমার দিকে। তার সেই হতবিহ্বল, শুকনো মুখভঙ্গি দেখে আমি কিঞ্চিত লজ্জিত বোধ করলাম। বুঝতে পারছিলাম না এমন অবাক হবার মতো কি বললাম, শুধু তো জিজ্ঞেস করেছি, টমসম ব্রিজ কোথায়? তারপর দোকানদার তর্জনী উঁচিয়ে পাশে দিক নির্দেশনা করলে, আমি রাতের আলো আঁধারীভরা সড়কটিতে কয়েক কদম হেটে অবাক বিস্ময়ে দেখলাম খুব ছোট্ট একটা ব্রিজ সেখানে। কিছুক্ষণের জন্য কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়লাম। ডোবার ওপর ছোট ব্রিজটা দাঁড়িয়ে আছে। ছোট্ট একটা ব্রিজ, একেবারে ছোট; দৈর্ঘে শ' ফুটের ওপর হবে না কিছুতেই। ফ্যালফ্যাল করে বোকার মতো কিছুক্ষণ শুধু তাকিয়েই থাকলাম সেদিকে। নিজের অজান্তেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো দুটি শব্দ 'এতো ছোট!'
ঘটনাটা এটুকুই। টমসম ব্রিজ নামটাও কিছুটা বিভ্রান্তিকর। শুরুতে টমসন ভেবেছিলাম, তারপর বেশ কয়েকবার শুনে বিভ্রম কেটেছে। টমসম-ই নাম। বোধকরি টমসন নামেরই কেউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে থাকবে ব্রিজ নির্মানের পিছনে। হয়তো ব্রিটিশ আমলেই এর নির্মাণ হয়েছিল। লোকমুখে টমসন কালক্রমে টমসম বলে বিকৃত হয়েছে! এসবই আমার অনুমান। কুমিল্লার স্থানীয়রাই কেবল জেনে থাকবে প্রকৃত ঘটনা। কুমিল্লার কেউ যদি লেখাটি পড়েন আর তার কাছে ব্রিজটির সম্পর্কিত কোনও তথ্য জানা থাকে, তা জানানোর জন্য অনুরোধ করছি। যাই হোক উপস্থিত মুহূর্তে ঘটানাটা খানিকটা বিরক্তির উদ্রেক করলেও, এখন মনে পড়লে নির্মল আনন্দ পাই। এক মিষ্টি সুখানুভূতিতে ভরে ওঠে মন।#

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:৫০

শোভ বলেছেন: আপনার মত আমার হয়েছেিল সেদিন থেকে এই টমছম ব্রিজের নাম আমি দিয়েছি টমছম কালবার্ড , এটার উপর দশ মিনিট দাড়িয়ে ছিলাম আর হাসছিলাম নিজে কে বোকা বোকা লাগছিল ।

০৬ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৫:০৬

অর্ক বলেছেন: হা হা হায়রে টমসম ব্রিজ! বিশ্বরোডে টেম্পো আলাদের টমসম ব্রিজ টমসম ব্রিজ' হাকডাক শুনে ভেবেছিলাম এটা সেই রকম জিনিস হবে, যেয়ে বোকা বনে গেলাম। সেদিন শুধু টমসম ব্রিজ দেখার জন্যই গিয়েছিলাম সেখানে। অনেক ধন্যবাদ আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য। ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.