নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোকার হদ্দ

আমার ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/pages/বোকার-হদ্দ/183449901736937

বোকার হদ্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানবজাতীর চাওয়া কি? মতবাদের বাস্তবায়ন না শান্তি?

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৫৩



বর্তমানে সারা দুনিয়ায় চলছে গণতন্ত্রের জয় জয়কার। কিন্তু গণতন্ত্র সম্বন্ধে প্রায় সবাই একপ্রকারে অন্ধ। গণতন্ত্রের বিস্তারিত সংজ্ঞায় যাচ্ছি না। সে সম্বন্ধে আমার জ্ঞানও খুবই কম। কিন্তু সাধারণভাবে যা বুঝি গণতন্ত্র হচ্ছে এমন একটি জীবনব্যবস্থা যা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যা বলে, যা পছন্দ করে তার মুল্যায়ন করা। সম্ভবতঃ যারা গণতন্ত্র জন্ম দিয়েছেন তারা এভাবেই গণতন্ত্রকে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিহাস হচ্ছে এই যে, সেই গণতন্ত্র আজ আমরা চর্ম চক্ষু দিয়ে দেখতে পাচ্ছি না। যা আছে তা হলো গণতন্ত্রের নামে প্রতারণা। ঠিক তেমনি সমাজতন্ত্রের জনক কার্লমার্কস সমাজতন্ত্রকে যেভাবে দেখেছিলেন- বর্তমান সমাজতন্ত্রীরাও সেই আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে গিয়েছেন। সে সমাজতন্ত্র আজ আর কার্লমার্কস এর সমাজতন্ত্র নাই। কার্লমার্কস এর সমাজতন্ত্রে নেতৃত্ব দিবে সেই শ্রমিকশ্রেণি যারা চেতনায় সবচেয়ে অগ্রসর এবং প্রতিজ্ঞায় সবচেয়ে দৃঢ়, তারাই সর্বহারার আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি ঠিক ঠিক বোঝে, তাই তারাই সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। কমিউনিস্ট পার্টি কোনও বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ ভাববে না, সমগ্র সর্বহারা শ্রেণীর কথা ভাববে। কিন্তু আজ কি অবস্থা? সমাজতন্ত্র হয়ে গেছে একটা শ্রেনীর শোষনের হাতিয়ার। তাই সমাজতন্ত্রও আজ পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এককালের দোর্দন্ড প্রতাপ আর হুলস্থুল সৃষ্টি করা সমাজতন্ত্র আজ প্রাচীন শৌখিন পণ্যে রূপ নিচ্ছে। কার্লমার্কসও নিশ্চয় এখন কবরে শুয়ে শুয়ে তার নামে চলা এই অরাজকতা দেখে ফুঁসছেন। এটা বলাবাহুল্য যে গণতন্ত্র বিষয়টাই এমন যে, এর রূপ ও প্রকৃতি সব জায়গায় এক রকম হবে না। স্থান, কাল, পাত্র ভেদে এর কর্মপ্রক্রিয়া ভিন্ন হয়ে থাকে। এটা করতেও বাধ্য। কেননা নির্দ্দিষ্ট স্থানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যা ভালো মনে করে, যা বিশ্বাস করে গণতন্ত্র তাকেই সমর্থন করবে। ইউরোপ আমেরিকায় গণতন্ত্র যেভাবে চলে পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে সেভাবে চলতে পারে না। বৃটেনে গণতন্ত্র রাজতন্ত্রকে স্বীকৃতি দিয়ে সহাবস্থান করছে। সেখানে চলে প্রধানমন্ত্রি শাসিত গণতন্ত্র। আবার আমেরিকায় চলে প্রেসিডেন্ট শাসিত পদ্ধতিতে। জনগণ এটাকেই মেনে নিয়েছে। সেখানে ধর্ম রাজনীতিতে কোন প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। ইউরোপে অতীতেই জাতীয় জীবনে খ্রীষ্ট ধর্র্মের ব্যর্থতার ফলে রাষ্ট্রের সাথে সংঘাতে ধর্মকে ব্যক্তি জীবনে নির্বাসন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষিত শ্রেণী গণতন্ত্রের সবক নিয়েছেন সেই ইউরোপিয়ানদের কাছ থেকেই। ফলে তারাও হুবহু তাদেরকে নকল করে ধর্মকে জাতীয় জীবন থেকে বিতাড়িত করে রাষ্ট্রকে চাইছেন ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের আদলে প্রতিষ্ঠিত করতে। ফলে সংঘাত বাধছে অধিকাংশ জনতার বিশ্বাসের সাথে। আমাদের নেতারা একগুয়েমি দেখিয়ে জোর করে চাইছেন তা চাপিয়ে দিতে। যা রূপ নিচ্ছে প্রকৃতপক্ষে ফ্যাঁসিবাদের। কিন্তু তারা বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছেন যে গণতান্ত্রিক নিয়মেই অধিকাংশ জনতার রায়কে মূল্যায়ন করা উচিৎ। কিন্তু তারা শুধু তাত্বিকভাবে নকল করতে চাইছেন পূর্ব প্রভুদেরকে। তাই করতে গিয়ে তারা সংখ্যালঘু মুক্তমত, তথা ধর্মবিদ্বেষী শ্রেণীটাকে সমর্থন দিতে গিয়ে মুখোমুখি হচ্ছেন অধিকাংশ জনতার সামনে। ফলাফল যা হবার তাই। সংঘাত- সংঘর্ষ, অচলাবস্থা চলে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। যার কোন সমাধান আপাতত খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় যদি আমাদের নেতানেত্রীরা প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্রকেই মানতে চান তাহলেও উচিৎ সংখ্যাগুরু জনতার কথাকে আমলে নেওয়া। নতুবা এই সংঘাত কোনদিন থামবে না। অধিকাংশ জনগণ যদি ধর্মকেই আইন কানুনের উৎস্য মানতে চায় তাহলে ধর্মকেই রাষ্ট্রীয় আইনের ভিত্তি হিসাবে মেনে নিতে হবে। এর অন্যথা হলে দুই পক্ষের লড়াই ততক্ষণ পর্যন্ত চলতে থাকবে যতদিন একটি পক্ষ পুরোপুরি নির্মূল না হবে।

এখন সিদ্ধান্তে আসতে হবে যে আমরা এই সংঘাতকে জিইয়ে রাখবো নাকি এর ইতি টানবো। যদি তত্বকে প্রতিষ্ঠা দিতে যাই তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতাকে নাখোশ করতে হবে- যা আসলে প্রকৃত গণতন্ত্রও স্বীকার করবে না। এবং এই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতাকে কোনভাবে অবদমন করাও সম্ভব নয়। তাদের অন্তর থেকে লালিত বিশ্বাসকে মুছে ফেলাও সম্ভব নয়। স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস, তার হুকুম পালনের বাধ্যবাধকতা, পরকালীন মুক্তি মানুষের অন্তর্গত ও অস্তিত্বগত বিষয়। আরো একটি বিষয় এই যে আমাদের দেশে চর্চা করা গণতন্ত্রের এই রূপ ও অনাচার দেখে অধিকাংশ জনতা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। যার যা খুশি বলা, যা খুশি করতে পারার অধিকার অন্যের অধিকার এবং বিশ্বাসকে ক্রমাগত আঘাত করে যাচ্ছে। ‘সবাই আজ স্বাধীন’ এই ধারণা ক্ষেত্র বিশেষে মানুষকে সৈরাচার করে তুলছে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে হওয়া উচিৎ ছিলো এই যে মানুষ ‘কিছু নিয়মের অধীনের ভেতরে থেকে সবাই স্বাধীন।’ প্রচলিত গণতন্ত্রের আরেকটি দূর্বলতা হচ্ছে এই যে তাতে কোন অন্যায় কাজের পরিণতি ভোগ এবং জবাবদিহিতা ও নৈতিকতা না থাকায় সুযোগ পেলেই এর অনুসারীরা অন্যায় কাজ করে যাচ্ছে। পরকালীন জবাবদিহিতা ও ন্যায় অন্যায়ের মানদণ্ড না থাকাতে রাষ্ট্রযন্ত্রে চলে সীমাহীন অন্যায় ও দূর্ণীতি। ভৌগলিক সীমারেখা ও জাতীয়তাবাদ আরো একটি মাত্রা যোগ করেছে এই অনাচারের সাথে। সুতরাং মানবজাতির জন্য দরকার এমন একটি জীবন ব্যবস্থা যাতে একদিকে থাকবে পার্থিব জবাবদিহিতা, নৈতিক শিক্ষা ও অপরদিকে পরকালীন জবাবদিহিতার ভয়। দরকার এমন এক জীবনব্যবস্থা যাতে সমগ্র মানবজাতিকে একটিমাত্র পরিচয় “তারা মানুষ এবং একই দম্পতি থেকে আগত আদম সন্তান” এই পরিচয়ে পরিচিত করে তুলবে। এটা একমাত্র পারে ধর্ম। সুতরাং ধর্মের বাহিরে গিয়ে কোনভাবেই মানবজাতি থেকে এই অনাচার, সংঘাত, সংঘর্ষ বন্ধ হবে না। শত টকশো, মানববন্ধন, মিছিল মিটিং, কর্মশালা, গোলটেবিল আলোচনা, সভা সমিতি- সংঘ, কোন কিছুই এনে দিতে পারবে না মানবজাতির চির কাঙ্খিত সেই শান্তি। এই সত্য যত তাড়াতাড়ি আমাদের নেতা-নেত্রীদের মধ্যে জাগ্রত হবে- মানব জাতির জন্য তা ততই মঙ্গলজনক। তবে একই সাথে সতর্ক থাকা উচিৎ যেনো আবার ধর্মের নামে অধর্মকেই প্রতিষ্ঠা না দেওয়া হয়, ধর্মকে কোন একটা শ্রেণীর হাতে বন্ধক না দেওয়া হয় কিংবা নতুন আরেকটি পুরোহিত শ্রেণীর জন্ম না দেয়। এক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখতে হবে কোন ধর্মের দৃষ্টি সামগ্রিক দুনিয়ার জন্য প্রযোজ্য। স্থান, কাল ও পাত্র কোন ধর্মের আইন-বিধানকে চ্যালেঞ্জ করে না এবং সমস্ত মানবজাতিকে এক কাতারে দাঁড়ানোর কথা বলে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.