![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নবীর (দ.) কদমতলে আরশে খোদা
মি’রাজে মুস্তাফা (দ.): রহস্যঘেরা এক অনন্য মু’জিযা ( ১ম পর্ব)
-মুহাম্মদ নূরুল আবছার তৈয়বী
অবিশ্বাস্য! অপূর্ব!! অনন্য!!! বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ জাল্লাহ শানুহুর অপার রহস্যের ভেদ উম্মোচনকারী প্রিয়নবী হযরত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া সাল্লামের এক অনন্য মু’জিযা-‘মি’রাজ’। শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহ.) এর ভাষায় ‘ বিশেষ থেকে বিশেষতর, উৎকৃষ্ট থেকে উৎকৃষ্টতর, পূর্ণ থেকে পূর্ণতর এবং বিস্ময়কর মু’জিযা হচ্ছে মি’রাজ।’ (মাদারেজুন নবুওয়ত) কোন নবী বা রাসূলকে এরূপ মুজিযা দান করা হয়নি। আল্লাহ পাক জাল্লা শানুহু এই মি’রাজের মাধ্যমে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া সাল্লামকে এই পৃথিবী থেকে সাত আসমান, আরশ, কুরছি, লওহ কলম পেরিয়ে নিজের সান্নিধ্যে নিয়ে যান। কোরআনের ঘোষনা: ‘সুবহাানাল্লাযী আসরাা বি’আবদিহী লাইলাম্ মিনাল মাসজিদিল হারামি ইলাল মাসজিদিল আক্বসাা, আল্লাযী বাারাকনাা হাওলাহূ লিনুরিয়াহূ মিন আায়াাতিনা ইন্নাহূ হুয়াস সামীউল বাসীর’। অর্থ্যাৎ ‘পবিত্রতা ঐ মহান সত্তার, যিনি তাঁর প্রিয় মাহবুবকে রাতের একাংশে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমন করালেন। যে মসজিদে আকসার চারিদিকে বরকত দান করেছি। এই ভ্রমণের উদ্দেশ্য হচ্ছে- আমি (আল্লাহ) আমার কুদরতের নিদর্শনাবলী তাঁকে দেখাবো। নিশ্চয়ই সেই আল্লাহ্ যিনি প্রকৃত শ্রবণকারী ও প্রত্যক্ষকারী’। ( সূরা বনী ইসরাঈল: ১)
তাফসীর ও হাদীস বিশারদরা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া সাল্লামের এই সফরকে ৩ ভাগে ভাগ করেছেন। ১. ’ইসরা’- মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ২. ‘মি’রাজ’- মসজিদে আকসা থেকে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত ৩. ‘ই’রাজ’- সিদরাতুল মুনতাহা থেকে লা মাকান পর্যন্ত। কিন্তু সাধারণ অর্থে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া সাল্লামের সমগ্র পরিভ্রমনকেই ‘মি’রাজ’ নামে অভিহিত করা হয়। বিশ্বনবীর এ অলৌকিক বিস্ময়কর মু’জিযা প্রকাশের পর থেকে বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলাচলে দুলছে সমগ্র বিশ্ববাসী। বিশ্বাসীরা বলে- এটাতো মহান আল্লাহর কুদরতের একটি নিদর্শন মাত্র। আল্লাহ তায়ালার অসীম শক্তির সামান্য বহিঃপ্রকাশ। মহান আল্লাহ তায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি নূরনবী হযরত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া সাল্লামের এক অনন্য মুজিযা। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া সাল্লাম যে সাধারণ কোন মানুষ নন, তিনি যে সকলের চেয়ে ভিন্ন, সকলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ, সকলের চেয়ে উন্নত এবং তুলনাহীন- এ মি’রাজ তো তারই প্রকৃষ্ট প্রমাণ। একে অবিশ্বাসের কী আছে?! আর এ বিশ্বাসের কারণে মর্ত্যের মানুষ পেল স্বর্গের লকব ‘সিদ্দীক’। অগণিত মানুষ হয়েছেন ‘সিদ্দীকীন’র অন্তর্ভুক্ত।
আর অবিশ্বাসীরা বলে- মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দস দীর্ঘ ৬০০ মাইলের রাস্তা, দুর্গম গিরি, বিস্তীর্ণ বালু প্রান্তর, পাথর ও কঙ্কর মিশ্রিত বন্ধুর পথ রাতের কিয়দংশে যাওয়া আর আসা একি চাট্টিখানি কথা! না, না, এতো অসম্ভব। তাছাড়া আবার বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে নভোমন্ডল পেরিয়ে ১ম আসমান থেকে শুরু করে ৭ম আসমান অতিক্রম করা- এতো নিছক গালগল্প, পাগলের প্রলাপ। কোন সুস্থ ও বিবেকবান মানুষের পক্ষে এমন দাবি করা আর এ দাবিতে বিশ্বাস রাখা কখনোই সম্ভব নয়। কোন যুক্তিতে মেনে নেবো এমন গাঁজাখুরি কথা? ভুল, সবই ভুল! মিথ্যা আর আজগুবি কথা। এও কি সম্ভব? এ অবিশ্বাসের কারণেই তৎকালীন শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী ও যুক্তিবাদীরা লকব পেয়েছিল- ‘যিন্দীক’।
কিন্তু অবিশ্বাসীদের কথার মধ্যেও তো যুক্তি আছে। তাদের এই অবান্তর যুক্তিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন আমার আ’লা হযরত (রহ.)। সুবহানাল্লাহ্! তিনি কত সুন্দর বলেছেন:
‘ওয়হ্ জু না থে তু কুছ না থা/ওয়হ্ জু না হু তু কুছ না হু
জান হ্যায় ওয়হ্ জাহান কী / জান হ্যায় তু জাহান হ্যায়’
‘অর্থাৎ তিনি যখন ছিলেন না, তো খোদার খোদায়ী কিছ্ইু ছিল না। তিনি না হলে কিছুই হতো না। তিনি সমগ্র সৃষ্টিজগতের প্রাণ। আর প্রাণ থাকলেই তো জগত থাকবে।’
(২য় পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন। এই অধম গুনাহ্গারকে আপনার দোয়াতে স্মরণ করুন।)
মুহাম্মদ নূরুল আবছার তৈয়বীঃ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি- প্রবাসী সাংবাদিক সমিতি (প্রসাস)- দুবাই, ইউ.এ.ই।
প্রতিষ্ঠাতা: আদর্শ লিখক ফোরাম (আলিফ) চট্টগ্রাম। ই-মেইলঃ [email protected]
©somewhere in net ltd.