নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যবাক

অাবছার তৈয়বী

আবছার তৈয়বী

অাবছার তৈয়বী › বিস্তারিত পোস্টঃ

তোমাদের তাওহীদের ওপর লা’নত পড়ুক

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১৫

তোমাদের তাওহীদের ওপর লা’নত পড়ুক
-আবছার তৈয়বী

আইএসআইএস। ওরা সালাফী। ওদের দাবী- পৃথিবীতে ওরাই একমাত্র তাওহীদবাদী মুসলিম! হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী, হাম্বলী কিংবা শিয়া- ওরা সব মুশরিক। কাদেরিয়া, চিশতীয়া, নকশেবন্দীয়া, মুজাদ্দেদীয়া, শাজালিয়া, তাইফুরিয়া, ভান্ডারীয়া- সব মাজার পুঁজারী। 'শিরক' আর 'মাজার পুঁজা' খতম করতে কতো পেট্রো-ডলার খরচ করা হলো! কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কিছু দালাল সৃষ্টি করা হয়েছে বটে, কিছু মানুষের ব্রেইন ওয়াশ করা হয়েছে বটে- কিন্তু ফারুকীর মতো একজন মাজার পুঁজারীর (ওদের ভাষায়) সামনে ওই ঘোমটাওয়ালা দালালগুলো টিকতে পারেনা। শিরকের ধোঁয়া তুলে ‘ব্রেইন ওয়াশ’ করা তাওহীদবাদী মানুষগুলো 'মাজারপুজারী মুশরিকদের' (ওদের ভাষায়) যুক্তির সামনে দু’দণ্ড দাঁড়াতে পারে না। তাই ওই ‘সালাফী খবিস’গুলো, ওই চেঙ্গিস খান আর হালাকু খানের প্রেতাত্মাগুলো, ওই ইহুদীদের কেনা গোলামগুলো- এবার বোমা মেরে, ছুরি মেরে, জবাই করে, গুলি করে, ভয় দেখিয়ে, জোর খাটিয়ে মানুষকে তাওহীদবাদী বানাবে।

ওরা নতুন নয়, ওরা হযরত আলী রাদ্বিআল্লাহু আনহুর আমলের 'খারিজী' সম্প্রদায়ের আধুনিক সংস্করণ। ওরা প্রিয়নবী হযরত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া সাল্লামের পবিত্র 'রওজা শরীফ'কে ভেঙে চুরমার করার প্রতিজ্ঞা করেছে! অজুহাত- নবী প্রেমিক মুসলমানদেরকে ‘শিরক’ থেকে বাঁচানো। ওরা পবিত্র কা’বা শরীফ ভেঙে ফেলার জন্য প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছে! অজুহাত- আপামর মুসলমানরা পবিত্র ‘হাজরে আসওয়াদে’ চুমু খেয়ে যে ‘শিরক’ করে, ‘মুলতাজাম’ ধরে দোয়া করে যে ‘শিরক’ করে, ‘মাক্বামে ইব্রাহীমে’ নামায পড়ে কান্নাকাটি করে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে যে দোয়া করে- সেই ‘শিরক’ থেকে বাঁচানো। হায়রে! তাওহীদবাদী মুসলমান! আমার দয়াল নবীর (দ.), প্রেম, তাজিম ও সুন্নাত ছাড়া তোমাদের স্বেচ্ছাচারী বানানো তাওহীদের ওপর আল্লাহ্, রাসূল (দ.) ফেরেশতা ও মুমিনের লা’নত পড়ুক।

ওরা পবিত্র কলেমা শরীফের লিখন পরিবর্তনকারী। ওরা পবিত্র কলেমা খচিত বালিশে ঘুমায়। ওদের বেডশীটে পবিত্র কলেমা লেখা থাকে। যার ওপর শুয়ে ওরা ‘গণীমতের মাল’ (ইরাক সিরিয়ার সুন্দরী যুবতী মুসলিম বোনগুলোকে) ভোগ করে। ওদের দাবি- ওরাই পৃথিবীতে একমাত্র তাওহীদবাদী মুসলিম! খবরদার! ওদেরকে কিছু বলবেন না!

ওরা শিয়া ও সুন্নী মুসলমান নারীদের ঘর থেকে ধরে এনে প্রথমে যৌন নির্যাতন করে। তারপর বুকের কাপড় খুলে হাত দু’টো পেছনে নিয়ে বেঁধে ফেলে সেই কাপড় দিয়ে। তারপর খুব কাছ থেকে- হ্যাঁ খুব কাছ থেকে তাদের মাথা লক্ষ্য করে গুলি করে মারে। ওরাই পৃথিবীতে একমাত্র তাওহীদবাদী মুসলিম! খবরদার! ওদেরকে কিছু বলবেন না!

ওরা ওদের বিরুদ্ধবাদীদের ধরে এনে প্রথমে অমানুষিক নির্যাতন করে। পরে তাদেরকে পিঠমোড়া বেঁধে এই প্রখর রোধে উদোম গায়ে ইরাক-সিরিয়ার তপ্ত মরু আর পাথুরে জমিনে শুইয়ে দেয়া হয়। তারপর রাইফেলের বেয়নেট দিয়ে ওদের পুরো পিঠে খোঁচা মেরে চামড়া আর মাংসকে ফালা ফালা করা হয়। তারপর সেখানে লবন ঢেলে দেয়া হয়। আহা! কী কষ্ট! যখন সেই হতভাগা মুসলিম ভাইটি মৃত্যু যন্ত্রনায় তড়পাতে থাকে, তখন তারা অট্টহাসি ফেটে পড়ে। ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দেয়। যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে একসময় মুসলিম ভাইগুলো গুঙিয়ে গুঙিয়ে বলতে থাকে- আমাকে গুলি করে মারো, আমার ওপর দয়া করো। না, ওরা এতো নিষ্ঠুর নয় যে, মৃত্যুপথ যাত্রীর শেষ আবদার রক্ষা করবে না। একপর্যায়ে ওই তাওহীদবাদী মুসলমানগুলোর কালাশকনিভ বা এম-১৬ রাইফেলের ট্রিগারে একসাথে চাপ পড়ে। গর্জে ওঠে পুরো এলাকা। শেষ চিৎকার দিয়ে হতভাগা মুসলমানদের 'প্রাণপাখি' একসাথে দলবেঁধে উড়ে যায় এক অজানা গন্তব্যে। ওরাই পৃথিবীতে একমাত্র তাওহীদবাদী মুসলিম! খবরদার! ওদেরকে কিছু বলবেন না!

ওরা ইরাক ও সিরিয়া থেকে ‘শিরক’ প্রায় নির্মূল করেছে। শিরকের ঘাঁটিগুলো- নবী, সাহাবী, তাবেয়ী ও ইতিহাসখ্যাত, পৃথিবী বিখ্যাত আল্লাহর ওলীদের মাজার শরীফগুলো ধ্বংস করেছে। শিরকের ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করার সাথে সাথে এরসাথে লাগানো মনোরম সুদৃশ্য মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন খোদার ঘর ‘মসজিদগুলো’কে এমন ভাবে ধুলিস্যাত করেছে- মনে হবে ওইখানে সগর্বে দাঁড়িয়ে থাকা উঁচু মিনারওয়ালা কোন মসজিদ নয়, সেখানে বরং একেকটা বড় বড় পুকুরই ছিলো। যা অযত্ম আর অবহেলায় সেখানে পড়ে আছে।

কিন্তু ওদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই মাজার শরীফের ভেতর মনা-মনি টনা-টনী মাটির নিচে রক্ষিত নবী, সাহাবী ও অলীদের জীবন্ত দেহগুলো। এতোকাল পরেও এই দেহগুলো অক্ষত থাকে কী করে! তাদের বোমার আঘাতে ইস্পাতের বড় বড় ফটকগুলো উড়ে যায়, লোহার লম্বা পাতগুলো ধ্বসে পড়ে, উঁচু উঁচু 'স্টেইনলেস স্টীল’র ইয়া বড়ো পিলারগুলো ধুলিস্যাত হয়, ইরাক সিরিয়ার পাথুরে জমিনে শত ফুট গভীর পুকুর হয়, কিন্তু এই দেহগুলোর কিচ্ছু হয় না। ওরে বাপরে বাপ! এতো দেখছি ‘বুলেটপ্রুফ দেহ’। এই দেহগুলো কাঁটা যায় না, ছেড়া যায় না, বোমার আঘাতেও ধ্বংস হয় না। কী করি? রাতের আঁধারে বন-বাঁদাড়ে বা জনমানুষের চিহ্ন নাই- এমন ধু ধু মরুভুমির মাঝখানে নিয়ে এই পবিত্র দেহগুলোকে মাটিচাপা দাও। ব্যস্ ল্যাঠা চুকে গেল- ‘শিরক’ খতম। ওরাই পৃথিবীতে একমাত্র তাওহীদবাদী মুসলিম! খবরদার! ওদেরকে কিছু বলবেন না!

ওরা ইরাক ধ্বংস করছে। সিরিয়া ধ্বংস করেছে। লিবিয়া ধ্বংস করেছে। এখন ওদের টার্গেট কাছের সৌদি আরব আর দূরের বাংলাদেশ। শিরকের মূল আছে পবিত্র মদিনায়। শিরকের বড়ো নিদর্শন খোদ কা’বা ঘরের দেয়ালের সাথে লেপ্টে আছে। সুতরাং কা’বা ভাঙতে হবে। 'সবুজ গম্বুজ' উড়িয়ে দিতে হবে। আর শিরকের ডাল-পালা যেই দেশে বিস্তার করেছে- সে দেশের নাম 'বাংলাদেশ'। ভয়ের কিছু নেই- সেই তাওহীদবাদী মুসলিমরা (?) শস্য-শ্যামলা, সুজলা-সুফলা বাংলাদেশে আসার ঘোষণা দিয়েছে। এর বহু আগেই এদেশের সন্তানদের সেই ঘৃণিত তাওহীদের দীক্ষা দেওয়া শুরু হয়ে গেছে। ঘোমটা মৌ-লোভীরা আদাজল খেয়ে নেমেছে। ফারুকী ছিলো ওদের সার্থক ‘কাউন্টার পার্ট’। ফারুকীকে খতম করা হয়েছে। ওরা কখনো পিস টিভি পুরোটা দিয়ে, কখনো অন্য ঢিভির ‘পিক আওয়ার’ এর পুরো চাঙ্ক ভাড়া করে ‘আইএসআইএস’ এর সৈনিক বানাচ্ছে আমার সরলপ্রাণ ভাইটিকে, আমার ইসলাম প্রিয় বোনটিকে। ওরাই পৃথিবীতে একমাত্র তাওহীদবাদী মুসলিম! খবরদার! ওদেরকে কিছু বলবেন না! ওদের কিছু করবেন না!

আমি বলি- ওহে তাওহীদবাদী মুসলমান নামধারী ইহুদীদের খরিদা গোলাম! ওরে পৃথিবীর সমস্ত মুসলমানদেরকে মুশরিক বানানোর ফ্যাক্টরির জালিম কারিগর! ওরে দয়া-মায়াহীন চেঙ্গীস আর হালাকু খানের প্রেতাত্মা! ওরে ঘৃণিত খারিজি মতবাদের নব্য সৈনিক! ওরে ইহুদী-খৃষ্টান দুষ্টচক্রের ক্রীড়নক! ‘তোমরা মুসলমান পরে হও। আল্লাহর দোহাই লাগে- আগে তোমরা মানুষ হও’। দুনিয়ার মানুষের সামনে ইসলাম ও মুসলমানদের এভাবে আর বে-ইজ্জত করো না। প্লীজ! মানবতার ওপর দয়া করো!

আবছার তৈয়বী: প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি- প্রবাসী সাংবাদিক সমিতি (প্রসাস)- দুবাই, ইউ.এ.ই।
প্রতিষ্ঠাতা: আদর্শ লিখক ফোরাম (আলিফ), চট্টগ্রাম।
নির্বাহী সদস্য: আনজুমানে খোদ্দামুল মুসলেমীন, ইউ.এ.ই কেন্দ্রীয় পরিষদ, আবুধাবি।

তারিখ: ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
আবুধাবি, ইউ.এ.ই।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন: ওরা একের পর এক শহর দখল করছে। বাসিন্দাদের হত্যা বা বন্দি করে দাশ বানাচ্ছে। আর মহিলা -শিশুদের গনিমতের মাল বানাচ্ছে গনিমতের মাল হিসেবে ভোগ করছে। গনিমতের মাল বেশী হয়েগেলে বিক্রি করছে হাজার ডলারে।
মুলত গনিমতের মাল অবাধভোগ লোভেই বেশীরভাগ ইউরোপীয় যেহাদে যাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.