![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্মরণের আবরণে মোড়া
হিজরী নববর্ষ- ‘মোবারক হো’!
-আবছার তৈয়বী
বছর শেষে আবারও ঘুরে এলো পবিত্র আশুরা ও কারবালার স্মৃতি জাগানিয়া মাস- মাহে মুহররম। আমার এই আইডির সাথে যুক্ত ও বিযুক্ত সকল বন্ধু, ভাই-বোন এবং সমগ্র মানবমন্ডলির প্রতি জানাই- 'শুভ হিজরী নববর্ষ-১৪৩৭।- সত্যের পথে, ন্যায়ের রথে, হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও পবিত্র আহলে বায়তে রাসূলের (দরুদ) মুহাব্বতে আমার আপনার জীবন পরিচালিত হোক- এ কামনা করছি।
প্রকৃতপক্ষে এ মাসে মু’মিন মুসলমানের অন্তরে বয়ে যায় এক প্রচন্ড ঝড়। মু’মিনের হৃদয়ে বয়ে যায় রক্তের নদী, মু’মিনের চোখে ডাকে অশ্রুবান। মু’মিনের অতুল হৃদয়খানি ভেঙে হয় খান খান। নববর্ষ আসে, নববর্ষ যায়। কিন্তু মু’মিনের হৃদয়ে আনন্দ নাই। চোখে-মুখে খুশি নাই। অথচ এই মাস ছিল যুগে যুগে, কালে কালে বিজয় আর প্রাপ্তির আনন্দে ভরপুর। কিন্তু ৬১ হিজরীর সেই ১০ ই মুহররম মু’মিনের হৃদয়টাকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)সহ ৭২ জন পূতঃপবিত্র আহলে বায়তে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়াসাল্লামের রক্তে রঞ্জিত করে।
সেই দিন থেকে মুহররম আসলে মু’মিনের হৃদয়ে শুরু হয়- এক অব্যক্ত চিনচিনে ব্যাথা। এ মাসে মু’মিনের হৃদয়ে শান্তি মেলে না, মু’মিন মনে স্বস্তি মেলে না। তীরবিদ্ধ পাখির মতো মু’মিন অব্যক্ত এক বেদনায় শুধু ছটফট করতে থাকে। দুনিয়ার সব কাজ সে বরাবরের মতো করলেও হৃদয়ে চলে- বেদনার তোলপাড়। মু’মিন মাত্রই অনুভব করে- ৯২টি তলেয়ারের কোপ, ৩৪টি বর্শার আঘাত ইমামকে নয়- তাকেই করা হয়েছে। ক্লান্ত-শ্রান্ত অবসন্ন হয়ে কারবালার তপ্ত জমিতে পড়ে আছে ইমামের দেহ নয়- তার দেহ। যে দেহের প্রতি লোমকূপে নবী মুস্তাফার পবিত্র ঠোঁট মুবারকের চুম্বন স্মৃতি লেগে আছে, নরাধমরা সে পবিত্র দেহখানি ঘোড়ার পদতলে পিষ্ট করেনি- পিষ্ট করেছে যেন মু'মিনের নিজের দেহটাকে। সৃষ্টির নরাধম পিশাচগুলো বর্শার অগ্রভাগে গেঁথে যে শির মোবারকটি নিয়ে দামেস্ক অভিমুখে রওনা হয়েছে- সে শির ইমাম হোসাইনের (রা.) নয়, সে শির মু'মিনের নিজের। যে পুণ্যাত্মা রমনীদের কোনদিন চন্দ্র-সূর্য পর্যন্ত দেখেনি, কূফার বাজারের অলি-গলিতে তাঁদের বেইজ্জতি নয়, মু’মিন অনুভব করে তার মা-বোনকেই বেইজ্জত করা হয়েছে। মু’মিন হৃদয়ের আহাজারি ভোলার নয়, দেখার নয়- অনুভব করার, হ্যাঁ শুধু অনুভব করার।
তাই মু’মিন হৃদয় লোক দেখানো মাতম করতে পারে না। নিজে নিজে আঘাত করে আপন শরীর থেকে রক্ত ঝরাতে পারে না। কারবালার স্মরণে আগুনের ওপর হাঁটার কসরত করতে পারে না। এ মাসে পারে না কোন অনৈতিক আনন্দোল্লাস করতে। তো আমরা কি করবো? হিজরী নববর্ষ পালন করবো না? আলবত করবো। অবশ্যই করবো।
তবে....
তবে কী?
আমাদের নববর্ষ উদযাপন হবে- ‘স্মরণের আবরণে মোড়া’। আমরা এদিন শুধু নয়, সারাটা মাস ইমাম হোসাইন (রা.)সহ আহলে বায়তে রাসূল (দরুদ) কে স্মরণ করবো। আর সারা বছর ইমাম হোসাইনের (রা.) আদর্শে চলার জন্য প্রাণিত হবো। আমরা এদিন শপথ নেবো- আল্লাহর দীন ও রাসূলের (দরুদ) আদর্শ প্রতিষ্ঠায়- সত্যের জন্য, ন্যায়ের জন্য, জুলুম-অত্যাচার অবিচারের বিরুদ্ধে নিজের সর্বস্ব দিয়ে যুগের ইয়াজিদদের রুখে দাঁড়াবো। আমরা হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) এর জন্য শোকের মাতম করবো না। আমরা করবো- ‘স্মরণের উৎসব আর ত্যাগের প্রদর্শন'। আমাদের চোখে থাকবে অশ্রু, মুখে থাকবে হাসি। আমাদের হৃদয়, তনু-মন উজাড় করে দরাজ গলায় বলবো- ‘হে ইমাম! আমি তোমায় ভালোবাসি’।
তারিখ: পহেলা মুহাররম, ১৪৩৭ হি.
মোতাবেক: ১৪ অক্টোবর, ২০১৫ খ্রী.
আবুধাবি, ইউ.এ.ই।
আবছার তৈয়বী: প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি- প্রবাসী সাংবাদিক সমিতি (প্রসাস)- দুবাই, ইউ.এ.ই।
প্রতিষ্ঠাতা: আদর্শ লিখক ফোরাম (আলিফ), চট্টগ্রাম।
নির্বাহী সদস্য: আনজুমানে খোদ্দামুল মুসলেমীন, ইউ.এ.ই কেন্দ্রীয় পরিষদ, আবুধাবি।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৩২
শরীফ মহিউদ্দীন বলেছেন: আপনার লেখণী শক্তি দূর্দান্ত