নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যবাক

অাবছার তৈয়বী

আবছার তৈয়বী

অাবছার তৈয়বী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কারা হোসাইনী কারা ইয়াজিদী চিনে রাখুন

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:০২

কারা হোসাইনী কারা ইয়াজিদী চিনে রাখুন
-আবছার তৈয়বী

মুহররম মাস আসলে মু’মিনের অন্তরটা কেঁদে ওঠে। প্রতিদিন, প্রতিঘন্টা, প্রতি মুহূর্ত মু’মিন-হৃদয় শরাঘাতে ধড়পড় করতে থাকা পাখির মতো তড়পাতে থাকে। কেন? কারণ, তাঁদের অন্তরে 'ঈমান' আছে। তাঁদের দীলে নবীর (দরুদ) মুহাব্বত আছে। তাঁদের হৃদয়ে আহলে বায়তে রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়াসাল্লামের প্রেম আছে। তো- যে যাকে ভালোবাসে তার ভালোবাসার ব্যক্তির দুঃখের কথা স্মরণ হলে সে তো কাঁদবেই। এটা ন্যাচারাল কথা। এটার জন্য কোন দলিলের প্রয়োজন পড়ে না। আপনি দলিল চাইবেন কেন? আপনি আপনার পরিবারের দিকেই একবার তাকান। আপনি যাকে ভালোবাসেন, যাকে শ্রদ্ধা করেন- সেই মানুষটি অসুস্থ হলে বা তার কোন মুসিবত হলে আপনার অন্তরে কী ঝড় বয়ে যায়? কত কষ্ট আপনি অনুভব করেন? কী- করেন না? কেন এমন হয়? কারণ, আপনার অন্তরে তার জন্য প্রেম আছে, আপনার মনে তার জন্য পোড়ন আছে, আপনার দীলে তার প্রতি ভালোবাসা আছে। কেউ আপনার ভালোবাসার মানুষকে স্মরণ করলে দেখবেন- আপনার অন্তরে শান্তি মিলছে। কেউ আপনার মুহাব্বতের মানুষের আলোচনা করলে আপনার মনটা খুশিতে 'বাগ বাগ' হয়ে যায়। আমার এই কথাটি আপনি আপনার হৃদয় দিয়ে অনুভব করুন।

তো মু’মিনের সাথে হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) সম্পর্ক কী? সম্পর্ক আর কিছু নয়- সম্পর্কটা ঈমানের। হ্যাঁ, শুধু ঈমানের। তাহলে খোদ খোদার ভাষায় শুনুন- ‘ক্বুল লা আসআলুকুম আলাইহি আজরান ইল্লাল মাওয়াদ্দাতা ফিল ক্বোরবা।’ অর্থাৎ হে নবী! আপনি মুমিনদের বলেদিন, আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না, শুধুমাত্র আমার নিকটাত্মীয় (আহলে বায়ত) দের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ছাড়া’। তো রাসূলুল্লাহর (দরুদ) নিকটাত্মীয় কারা? তা খোদ আল্লাহর রসূলের (দরুদ) পবিত্র মুখ থেকে শুনুন- হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, যখন এই আয়াতটা নাযিল হলো, সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (দরুদ)! তাঁরা কারা যাঁদেরকে মুহাব্বত করা আমাদের ওপর ওয়াজিব তথা অবশ্য কর্তব্য? রাসূল (দরুদ) বললেন- আলী, ফাতেমা এবং তাঁদের দুই সন্তান। (মুসনাদে আহমদ, ফাজায়েলুস সাহাবা অধ্যায় ২/৬৬৯, তাফসীরে দুররে মনসুর- ৬/৭, মাজমাউজ যাওয়ায়িদ ৯/১৬৮)। অন্য হাদীসে ইয়ালা ইবনে মুরয়া (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: হোসাইন আমার আর আমি হোসাইনের। যে তাঁকে ভালবাসবে আল্লাহ তাকে ভালবাসবেন। হোসাইন তো আমার সন্তান-সন্ততিদের একজন। (তিরমিজি শরীফ, ৬ষ্ঠ খন্ড, হাদীস নং- ৩৭৭৫)

তাহলে দাঁড়ালটা কী? ইমাম হোসাইন ও আহলে বায়ত কে যারা ভালবাসবেন- তারাই হক পন্থী, তারাই মু'মিন । তারা ইমাম হোসাইনের আলোচনা করবেন। ইমাম হোসাইনের শানে প্রবন্ধ, কবিতা, কসিদা, বই লিখবেন। সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করবেন, তাদের সন্তানের নাম, প্রতিষ্ঠানের নাম ইমাম হোসাইন ও আহলে বায়তের নামে রাখবেন। ইমাম হোসাইনের নামের শেষে রাদ্বিআল্লাহু আনহু ও আলাইহিস সালাম বলবেন। ইমাম হুসাইনের মদদ লাভের জন্য মুহাব্বত ভরা কণ্ঠে ‘ইয়া হোসাইন (রা.) মারহাবা, মারহাবা' বলবেন।

পক্ষান্তরে যারা মলঊন ইয়াযিদের অনুসারী- তারা ইয়াযিদের নামে ধ্বনি তুলবেন, ইয়াযিদের নামের শেষে রাদ্বিআল্লাহু আনহু বলবেন, ইয়াযিদের গুণগান করবেন, ইয়াযিদের পক্ষে স্লোগান দেবেন, ইয়াযিদের নামে প্রতিষ্ঠানের নাম করণ করবেন, ইয়াজিদের পক্ষে লিখবেন, বলবেন এবং সাফাই গাইবেন। খিলাফতকে জবর দখলকারী, মুসলমানদের হত্যাকারী, ৩০০ নারীর সাথে যিনা কারী, শরাবকে বৈধতা দানকারী, পবিত্র কা’বা শরীফ, হেরমে মক্কা ও হেরমে মদীনাকে বেইজ্জতকারী, কমবখত, চির অভিশপ্ত, আল্লাহ রাসূল ও মু’মিনদের লানতপ্রাপ্ত 'ইয়াযিদের' পক্ষাবলম্বন করবেন।

তো এই দুনিয়ায় কারা হোসাইনী আর কারা ইয়াজিদী- তা বুঝতে এবার আপনার চোখ-কান খোলা রাখুন। কোন বাদানুবাদ ও ঝগড়া-ঝাঁটির দরকার নেই। আপনার চারপাশে বিচরণ করা মানুষগুলোকে দেখুন। দেখুন- আপনার মসজিদের খতিব, ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে। দেখুন- ঘেমটাওয়ালা মৌ-লোভীদের। দেখুন- কোট-টাই পড়া ইসলামী আলোচকদের। দেখুন- আপনার পাশের মাদ্রাসার ‘মোতুম’ ছাব কে। দেখুন- আপনার প্রিয় রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের। তারা কার কথা আলোচনা করে- হোসাইনের (রা) না ইয়াযিদের? নাকি অবস্থা দেখে ‘হোতুম পেঁচার মতো মুখটি বন্ধ রাখে? নাকি কারবালার এ অসম যুদ্ধকে ক্ষমতা দখলের লড়াই বলে এ ঘটনাকে, ঘটনার প্রেক্ষাপটকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করে- কারা? এরপরও কারা হোসাইনী, কারা ইয়াযিদী চিনতে ভুল করলে আমি বলবো- আপনি মানুষ না, আপনি দু’পেয়ে একটা পশু- যে চোখ থাকতে দেখে না, কান থাকতে শোনে না, যার অন্তরে আল্লাহ্ সীল মেরে দিয়েছেন। কিন্তু কোরআনের ভাষায় আপনি পশুও না- ‘বালহুম আদ্বাল্ল’ (পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট)। আপনার মুখে আর যাই হোক- ইসলামের কথা শোভা পায় না। সকল ইয়াজিদীদের ওপর আল্লাহ্-রাসূল (দরুদ), ফেরেশতা ও মু’মিনগণের লা’নত পড়ুক।

ছবি পরিচিতি: মলঊন ইয়াজিদের নামে প্রতিষ্ঠিত সৌদির একটি মাদ্রাসা। যা সৌদি শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত এবং শয়তানের শিং বের হওয়ার স্থান নজদে বর্তমান নাম ‘রিয়াদে” অবস্থিত।

তারিখ: ২২ অক্টোবর, ২০১৫
আবুধাবি, ইউএই।

আবছার তৈয়বী
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়ক,‘উজ্জীবন’ সাংস্কৃৃতিক সংস্থা (উসাস)।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি- প্রবাসী সাংবাদিক সমিতি (প্রসাস)- দুবাই, ইউ.এ.ই।
প্রতিষ্ঠাতা: আদর্শ লিখক ফোরাম (আলিফ), চট্টগ্রাম।
নির্বাহী সদস্য: আনজুমানে খোদ্দামুল মুসলেমীন, ইউ.এ.ই কেন্দ্রীয় পরিষদ, আবুধাবি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.