![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘হামানদিস্তা’ সিরিজ- ০৭
ইফা ডিজিকে নিয়ে ঘৃণ্য ওহাবীদের জঘন্য-মিথ্যা প্রচারণা
-আবছার তৈয়বী
আমি পড়েছি এক মহা-মুশকিলে। নানা চিন্তায় আমার সাড়ে সাংঘাতিক অবস্থা। চিন্তা করতে করতে আমার ব্রেইনের তার ছিঁড়ে যাবার জোগাড়। একটা বিষয় নিয়ে চিন্তা করে কিছু লেখার আগেই আরেকটা বিষয় এসে মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়। কোন বিষয় ছেড়ে কোন বিষয়ে লিখবো কিছুই বুঝতে পারি না। আমার মাথাটা চালে-ডালে খিচুরি হয়ে যায়। আমি এমনিতেই 'আধা-পাগল'। সরি...আধা-পাগল বলছি কেন, আমি তো পুরোটাই ‘পাগল’। শুধু পাবনা যাওয়াই বাকি। এবার দেশে গেলে ওই জায়গাটাতে একবার যাবার ইচ্ছা আছে। কারণ, আমার জ্ঞাতি ভাই-বোনেরা সব ওখানেই অবস্থান করেন। পাগলদের জন্য রয়েছে আমার বিস্তর ভালোবাসা। আমার দাদার বংশে একজন না একজন ‘পাগল’ হামেশাই থাকে। আমি খবর নিয়ে জেনেছি- নাহ্, এখন সবাই ভালোই আছে- আলহামদু লিল্লাহ্! ওই ভিটায় নাকি এক মন্তবড় 'জ্বীন' আছে। ওই ‘পাগল’ জ্বীনটাই এখন ভর করেছে আমার ওপর। (ওই কাহিনী আরেকদিন বলবো)। আমার পাগলামী দেখে আমাদের প্রিয় ভাই গোলাম কিবরিয়া সাহেব আমাকে ‘বিশ্ব-পাগল কল্যাণ সংস্থার’ প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছেন। যথোপযুক্ত পদে অধিষ্ঠান- গর্ব ও আনন্দে আমার কেবল লাফাতে ইচ্ছে করে!
সম্প্রতি আমার মগজ ‘ওহাবী’ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মগজে কেবল ওহাবী আর ওহাবী চিন্তা। নেট খুললেই কেবল ওহাবীদের নানা বাস্তব কেচ্ছা-কাহিনী আমার চোখে পড়ে। যা দেখে আমি বিস্মিত হলেও এই নিরানন্দ প্রবাস জীবনে ‘ব্যাপুক বিনুদন’ লাভ করি। গত ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় নেট খুলে দেখি- আমাদের প্রসাসের সাবেক সভাপতি জনাব হারুন ভায়ের একটি পোস্ট। নাহ্, ওতে তিনি কিছুই লিখেন নি। তিনি জাস্ট লিঙ্কটি 'শেয়ার' করেছেন। কী আছে লিঙ্কটিতে? আমার একজন খুব খুব খুউব কাছের বন্ধু- যাঁকে আমি নিজেই একপ্রকার জোর করে ‘সাংবাদিকতা’ লাইনে নিয়ে এসেছি- তিনি এরকম একটা লিঙ্ক তাঁর ওয়ালে ‘শেয়ার’ করছেন দেখে আমি যুগপৎভাবে লজ্জিত ও অপমাণিত হয়েছি। লিঙ্কটি না পড়েই শুধু ছবি দেখেই সাথে সাথে আমি কমেন্ট করলাম- ‘সব ঝুট হ্যায়’। তার এই পোস্টটির ৫ টি শেয়ার হয়েছে। ১৭টি লাইক হয়েছে। যারা লাইক করেছেন- তাঁদের মধ্যে আমি কেবল একজনকেই চিনি- তিনি আমার বিশ্বস্থ বন্ধু বিশিষ্ট সাংবাদিক জনাব মোহাম্মদ আবদুল মান্নান। আরেকটা ধাক্কা খেলাম। জনাব হারুন ভাইকে ‘মেনশন্ড’ করে প্রশ্ন করলাম- “আপনি কি নিশ্চিত ‘পরীমনি’ শামীম সাহেবের মেয়ে”?
তাঁর উত্তরের অপেক্ষায় ৪ দিন কেটে গেলো। কোন সাড়া-শব্দ নাই। তার মানে তিনিও কি বুঝতে পেরেছেন ‘সব ঝুট হ্যায়’? তিনি সাংবাদিক মানুষ। অনেক ‘বড় সাংবাদিক’। তাঁর অঢেল টাকা। তিনি একটি মনোরম মাসিক পত্রিকারও মালিক। কোন শিক্ষকের ছাত্র যদি বড় মাপের কেউ হয়, তখন সবার আগে গর্বে বুকটা 'সাড়ে তিন হাত' বড় হয়- সেই বাল্যশিক্ষার শিক্ষকটির, যিনি তাকে অ আ ক খ শিখিয়েছেন। বড় পদস্থ কর্মকর্তা ছাত্রটি তা শিকার না করলেও সহজ সরল শিক্ষক মহোদয় সাড়া গাঁয়ের মানুষকে জড়ো করে বড়ো গলায় বলে- দেখ... দেখ! আমার আবদুল.. কত্তো বড় মাপের মানুষ হয়েছে। আমিও আমার এই ভাইটির চমৎকারিত্বে বরাবরই মোহিত হয়েছি। আর এই গুনাহগার বান্দাটি দু’হাত তুলে দোয়া করেছি- ‘আল্লাহ যেন ধনে-জনে ঐশ্বর্যে আমার এই ভাইটিকে দুনিয়ার সেরা ব্যক্তি বানিয়ে দেন’। কারণ, হারুন ভাই আমার একজন অকৃত্রিম বন্ধু। আমি 'প্রসাস' প্রতিষ্ঠাকালীন এবং আমিরাতের (সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্যেরও) প্রথম বাংলা পত্রিকা 'প্রবাসের আলো' প্রকাশের সময় তাঁকে যখনই ডেকেছি তিনি সহাস্যে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাই তাঁর এহেন 'কান্ডজ্ঞানহীন' কর্মে আমি সবচেয়ে বেশি ব্যথিত হয়েছি। কোন সংবাদের সত্যাসত্য যাচাই না করে তা পোস্ট করা বা 'শেয়ার' করা কোন ধরণের সাংবাদিকতা? সাংবাদিকতার কোন কেতাবে লেখা আছে? আমার যৎকিঞ্চিত সাংবাদিকতার তালিম আছে- আমি তো কোথাও এ ধরণের লেখা পাইনি। তাহলে তিনি ‘ওহাবী’ মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র হওয়াতে কি এই ঘৃণ্য কাজটি করেছেন? আর যারা এ রকম একটি ছবির ওপর মিথ্যা কল্পকাহিনী বানিয়ে সংবাদ করেছেন সিলেট ডট কমের সাংবাদিকরা কি সকলেই ‘ছাগল সাংবাদিক’? বড়ই জানতে ইচ্ছে করে।
‘পরীমণি’ নামক পর্ণো-মার্কা নায়িকাটি সম্পর্কে আমার কোন ধারণাই নেই। এমনকি তার নামটিও কখনো শুনিনি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মান্যবর ডিজি মহোদয়কে নিয়ে ঘৃণ্য ওহাবীদের জঘন্য প্রচারণায় একপ্রকার বাধ্য হয়ে ‘পরীমণি’ সম্পর্কে জানতে অন্তর্জালের আশ্রয় নিলাম। ওমা! আমার চক্ষু চরকগাছ! কোথাকার কোন পরীকে ডিজি সাহেবের মেয়ে বানিয়ে দেয়া হলো? আজিব বা-ত! কারো সাথে মতের অমিল হলে বা কাউকে পছন্দ না হলে তার নামে কি এরকম জঘণ্য মিথ্যা প্রচারণা চালাতে হবে? 'ওহাবী' চিন্তাধারার লোকগুলো কি কোন কালেই ‘মানুষ’ হবে না? এখন ডিজি মহোদয় যদি dailysylhet.com এর সাংবাদিক, সম্পাদক, প্রকাশক ও এই মিথ্যা সংবাদ শেয়ারকারী, প্রচারকারী এবং লাইকার প্রত্যেকের নামে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে 'মামলা' দায়ের করে দেন- তো 'চৌদ্দ শিকের' ঘরে আনুমানিক কয় বছর কাটাতে হবে? 'বড় ডেগের' ভাত খেতে কি খুবই মজা? আমি জানি না।
তবে আমি যেটা জানি- সেটা হলো পরীমনি নামে ডিজি মহোদয়ের কোন মেয়ে নেই। তিনি আল্লাহওয়ালা, পরহেজগার ও সুফিবাদী মানুষ। তিনি দীর্ঘদিন জেলা ও দায়রা জজ ছিলেন। একই সাথে তিনি ‘নারী ও শিশু নির্যাতন’ দমন বিশেষ ট্রাইবুনানের মাননীয় বিচারকও ছিলেন। তাঁর সাথে ‘ওহাবী’ (কওমী) মাদ্রাসার বড় বড় হুজুরদের সাথেও ভালো সম্পর্ক আছে। তাহলে নিরহঙ্কার, সাদাসিদে, মৃদুভাষী এ মানুষটির পেছনে লাগা কেন? বিরাট কোশ্চেন! মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন! কিন্তু এর উত্তর আমার জানা আছে। তা হচ্ছে- তিনি ইসলামের সঠিক রূপরেখা ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত’র আকিদার অনুসারী। মানে তিনি- ‘সুন্নী’। সরকারি পর্যায়ে খবর নিয়ে জেনেছি- তাঁর ‘পদ’ই হলো- তাঁর জন্য ‘আপদ’। তাঁর ‘পদ’ই হলো- তাঁর জন্য ‘বিপদ’। তাঁকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে সরানোর জন্য সচিব পর্যায়ে ফাইল চালা-চালি কম হয়নি। ওহাবী, মওদূদী ও সালাফী মার্কা লাল নীল সাদা দাঁড়িওয়ালা ‘ঘোমটা মৌ-লোভী’গুলোও কম তদ্বির করেনি। এমনকি ওহাবী ও মওদূদী আকিদার অনুসারী এমপি-মন্ত্রীরাও বহু চেষ্টা করেছে- তাঁকে সরিয়ে দেয়ার জন্য। তাঁর বিরুদ্ধে আবেদন, নিবেদন, স্মারকলিপি ও অভিযোগনামায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের একটি ডেস্ক পূর্ণ হয়ে গেছে বহু আগেই। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবল, বাগ্মিতা ও বুদ্ধির কাছে সব ষড়যন্ত্রই ধুলি হয়ে বাতাসের সাথে উড়ে গেছে। আখের তিনি 'শেখের বেটি'! তিনি ঘৃণ্য ওহাবী-মওদূদীদের নাড়ি-নক্ষত্র বেশ ভালো করেই চেনেন। অনন্যোপায় হয়ে ওহাবী-মওদূদীরা সংবাদ-পত্রের পাতায় তাদের জঘন্য ষড়যন্ত্রের ডালা-পালাকে কল্প-কাহিনী হিসেবে ছাপাতে থাকে। আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন- বাংলাদেশের খ্যাত-অখ্যাত কোন না কোন পত্রিকায় কিছুদিন পরপর ডিজি মহোদয়কে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা হয়। কোন 'ছাগল-সাংবাদিক'ই এ পর্যন্ত কোন অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি। মান্যবর ডিজি মুহতারাম 'শামীম মোহাম্মদ আফজল' সাহেব কোন ফেরেশতা নন, তিনি মানুষ। তাঁরও ভুল হতে পারে। তাই বলে একজন নিরপরাধ ব্যক্তির নামে এ জঘন্য মিথ্যা প্রচারণা কেন? এ দেশের জনগণের পয়সায় সরকারি খরচে ওহাবী-মওদূদীর বস্তাপঁচা আকিদার বই-পুস্তক প্রকাশ ও প্রচার বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই কি এ রকম জঘন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয়া? নাকি ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ওহাবী-মওদূদীপন্থীদের একচেটিয়া প্রভাব খর্ব হওয়াতে? ঘৃণ্য ‘ওহাবী’ আকিদার ‘ছাগল সাংবাদিক’রা জবাব দেবেন কি?
পুনশ্চ: স্ট্যাটাস এর সাথে প্রদত্ত এই ছবির বিশ্লেষণ, এক্সরে রিপোর্ট, এই ছবি নিয়ে ঘৃণ্য ওহাবীদের ষড়যন্ত্র, পরীমণির পুরো খান্দান পরিচিতি, পরিমণির পাল-পিটিশন ও পরিমণির শেষ পরিণতি নিয়ে আবছার তৈয়বীর নিজস্ব স্টাইলে লেখা- ‘হামান্দিস্তা’ সিরিজ-০৮ এ পড়ুন- ‘পরিমণির প্রতি প্রীতিনামা’! আমার সহৃদয় পাঠক-পাঠিকাদের প্রতি সম্মান রেখে একটি লেখাকে দু’ভাগে বিভক্ত করতে বাধ্য হলাম। হে মোর পাঠক! ‘মুই তোক্ ভালোবাসু’।
বি.দ্র: ‘সচেতনতাই নিরাপত্তা’। তাই প্রিয় বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় সহজ-সরল মানুষদের সতেচন করতে জনস্বার্থে এই লেখাটি সর্বোচ্চ শেয়ার করুন। দল-মত নির্বিশেষে সকলেই নিজেদের টাইমলাইনে, পেইজে ও গ্রুপে অবিকৃতভাবে কপি পেইস্ট করুন। সকলকে ধন্যবাদ।
তারিখ: ০২ নভেম্বর, ২০১৫
আবুধাবি, ইউএই।
আবছার তৈয়বী: প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়ক,‘উজ্জীবন’ সাংস্কৃৃতিক সংস্থা (উসাস)।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি- প্রবাসী সাংবাদিক সমিতি (প্রসাস), দুবাই, ইউ.এ.ই।
প্রতিষ্ঠাতা: আদর্শ লিখক ফোরাম (আলিফ), চট্টগ্রাম।
নির্বাহী সদস্য: আনজুমানে খোদ্দামুল মুসলেমীন, ইউ.এ.ই কেন্দ্রীয় পরিষদ, আবুধাবি।
©somewhere in net ltd.