![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্ধকার রাজ্যের গন্তব্যহীন পথিক আমি...!!
পার্কের ছোট্ট বেঞ্চ টায় সেই কখন থেকে বসে আছি। নীলাদ্রীর আসার কোনো নাম গন্ধই নেই। এই মেয়েটা সবসময় এরকম দেরি করে। আর আমি এভাবে প্রতিদিন ওর জন্য অপেক্ষা করি।
_এক_
সকাল ১১ টা বাজে। ফুল স্পীডে ফ্যান চালিয়ে কাথামুরি দিয়ে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই মনে হলো যেনো ভূমিকম্প হচ্ছে। ধরফর করে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম।
কিন্তু পরক্ষণেই বুঝতে পারলাম এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি আর কোনো কিছু থেকে নয়। আমার ফোনের ভাইব্রেশন থেকে। কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে একগাদা প্রশ্ন ছুড়ে দিলো আমার দিকে নীলাদ্রী।
‘এই তুমি কোথায়? কি করো? কতক্ষণ ধরে তোমায় কল দিচ্ছি। কল রিসিভ করছিলেনা কেনো?’
‘স্যরি। আসলে ঘুমাচ্ছিলাম তো। তাই বুঝতে পারিনি।’
‘তুমি এখনো ঘুমোচ্ছিলে। এখন কয়টা বাজে আদৌ কোনো ধারণা আছে তোমার? ২০ মিনিটের মধ্যে পার্কে চলে আসো। তোমার সাথে জরুরী কিছু কথা আছে।’
বলেই আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ফোন কেটে দিলো। সাত পাঁচ না ভেবে কোনোরকম ফ্রেস হয়ে তড়িঘরি করে সুপারম্যানের মতো ২০ মিনিট এর মধ্যেই পার্কে এসে পৌছলাম। আর এরপর হতেই এই ছোট্ট বেঞ্চটায় বসে তার পথ চেয়ে আছি।
_দুই_
আরেহ! ওইতো দূর হতে নীলাদ্রীকে হেটে আসতে দেখা যাচ্ছে। আজ ও একটা নীল শাড়ি পড়েছে। মনে হচ্ছে আকাশ হতে ভুল করে কোনো নীল পরী টুপ করে নেমে পড়েছে এ ধরনীতে। ওর মাতাল করা চোখের ভাষায় অভিভূত হয়ে গেলাম আমি।
‘এই যে মিঃ! কি দেখো এমন করে? হুম?’
‘তোমাকে।’
‘কি! আমায় আবার কি দেখো? আমায় তো প্রতিদিনই দেখো তুমি।’
‘না মানে যতবারই তোমায় দেখি। ততোবারই নতুন করে তোমার প্রেমে পড়ে যাই।’
‘হয়েছে হয়েছে। তোমার ফিল্মি ডায়ালগ রাখো এবার। একটু সিরিয়াস হও। যাইহোক। যা বলার জন্য ডেকেছিলাম তোমায়।’
‘হ্যাঁ, বলো।’
‘তুমি আমায় ভালোবাসো?’
‘হুম। অনেক ভালোবাসি। কিন্তু হঠাৎ এভাবে ডেকে আনলে এটা জানার জন্য?’
‘না, আচ্ছা ভালোই যদি বাসো। তাহলে বিয়ে করছোনা কেনো আমায়?’
‘আমি তো তোমায় আগেও বলেছি আর এখনও বলছি। আমি একবার চাকরি পেয়ে যাই। এরপরেই তোমায় আমার ঘরে তুলে নিবো।’
‘দেখো। আমি এপর্যন্ত অনেক বিয়ের সম্বন্ধই বিভিন্ন অজুহাতে ভেঙ্গে দিয়েছি। কিন্তু এভাবে আর কতোদিন? বাসা থেকেও প্রচুর চাপ দিচ্ছে এই বিয়ে নিয়ে। আজকে আমায় দেখতে আসছে পাত্রপক্ষ। ছেলে ভালো জব করে। সবারই পছন্দ হয়েছে ছেলেটিকে। হয়তো এটাই ফাইনাল।’
‘এতো খুশীর খবর। অনেকদিন কোনো বিয়ের দাওয়াতে যাওয়া হয়না। আমায় বিয়ের কার্ড দিতে ভুলোনা কিন্তু।’
নীলাদ্রী আমার এই কথা শুনে আর বসলো না। দাড়িয়ে বললো,
‘তোমার জন্য আর অপেক্ষা করা সম্ভব হলোনা অভ্র। এসব জানানোর জন্যই তোমাকে ডেকেছিলাম।’
বলেই টনাবিলা চোখে টলটল পানি নিয়ে ফেরার রাস্তা ধরলো।
আমি পেছন থেকে ডাকলাম,
‘নীলাদ্রী শোনো।’
নীলাদ্রী থমকে দাড়ালো। হয়তো কিছু শোনার আশায়। আমি বললাম,
‘তোমার বিয়ে হবে ভালো কথা। আমাকে জানিয়েছো সেজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ তোমায়। কিন্তু তোমার কাছে কি ১৫ টাকা হবে?’
নীলাদ্রী বিরক্তি মুখে চোখ কুচকে জিজ্ঞেস করলো,
‘কেন?’
‘আমার কাছে যাওয়ার ভাড়া নেই। যা ছিল তা আসার সময় কোনরকম ভাড়া দিয়ে এখানে চলে এসেছি।’
নীলাদ্রীর সুন্দর মুখ টা রাগে লাল হয়ে গেল মুহূর্তেই। কোন কথা না বলে ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে টাকা বের করে আমার দিকে বাড়িয়ে ধরলো...
‘ধন্যবাদ। আর হ্যাঁ। রেগে গেলে কিন্তু তোমাকে সাক্ষাত অপ্সরীর মতো লাগে।’
নীলাদ্রী এবার আর চোখের পানি আটকাতে পারলো না। চোখ মুছতে মুছতেই দৌড়ে চলে গেল।
আর আমি কানে হেডফোন গুজে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। নীলাদ্রীকে নিয়ে আপাততো কোনো কিছু ভাবতে চাইনা। যতই ওকে নিয়ে ভাববো। ততই ওর মায়ায় পড়ে যাবো। তাই নিজেই নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম। যা হওয়ার তা তো হবেই। এসব নিয়ে ভাবা মানেই সময়ের অপচয়।
_তিন_
আজকে নীলাদ্রীর বিয়ে হয়ে গেলো পারিবারিক সম্মতিতে। বাসর রাতে নীলাদ্রী মুখে ঘোমটা দিয়ে বসে আছে। বর ঘরে ঢুকে দরজা লাগাতেই নীলাদ্রী বলে উঠলো,
‘দেখুন আপনার সাথে আমার বিয়েটা কিন্তু জাস্ট লোক দেখানো। সো, প্লিজ আমার কাছে স্বামীর অধিকার দেখাতে আসবেন না। আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি। আমার বাবা মা এক প্রকার জোর করেই আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে আপনার সাথে বিয়ে দিয়েছে।’
একনাগারে এতোগুলো কথা বলে থামলো নীলাদ্রী। প্রতুত্তরে নীলাদ্রী শুনতে পেলো,
‘তোমার ঐ দীঘল, কোমল কেশরাশি আমার হৃদয় হরণ করিয়াছে। বারে বারে ছুঁয়ে দেখিবার প্রবল ইচ্ছে মনের কোণে উঁকি মারিতেছে। আমি কি একটিবার ছুঁয়ে দেখিতে পারি?’
নীলাদ্রী বিস্ফারিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো...
‘অভ্র! ত্ত ত্ত তুমি?’
কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। কি অপূর্ব লাগছে ওকে। আসল ব্যাপার নীলাদ্রী এখনো কিচ্ছু জানে না। আমি বলা শুরু করলাম।
‘মূলত আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম। কিছুদিন আগে একটা জব এ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পাই। ইন্টারভিউ দেওয়ার পরই জবটা পেয়ে যাই। এরপর সবকিছু অনেকটা আকস্মিক ভাবেই হয়ে যায়। বাড়িতে বাবা মাকে তোমার কথা জানাই। তোমার পরিবারের সাথে কথা হয়। আমার পরিবারের তোমাকে পছন্দ হয়। আর তোমার পরিবার ও আমাকে পছন্দ করে। তোমার বাবা মা থেকে জানতে পারি তুমি আমার ছবি না দেখে ওভাবেই ফেলে রেখে দিয়েছো। ভেবেছিলাম দেখা করার দিনই তোমায় সারপ্রাইজ দিবো। কিন্তু এরপর ভাবলাম এবার শুধু সারপ্রাইজই নয়। বিশাল বড় সারপ্রাইজ দিবো। তাই সেদিন তোমায় পার্কে কিছু বুঝতে দেইনি।’
নীলাদ্রী এটুকু শুনেই রেগে লাল হয়ে বলে উঠল,
‘তোমাকে আমি খুন করবো।’
‘এইরে। পেত্নীটা আজ ক্ষেপেছে।’
‘কিইইইই! আমি পেত্নী? আজ তোমার একদিন কি আমার একদিন।’
ভালোবাসার খুনসুটিতে এগিয়ে চলছে স্বপ্ন। লাইটটা অফ হয়ে গেলো। তারপর...
ইট'স কন্টিনিউয়িং!
১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০৭
অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: পৃথিবীতে তো অপ্রত্যাশিত অনেক কিছুই ঘটে থাকে। তেমনিভাবে এমনটাও হতে পারে।
২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৪১
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আচ্ছা
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪
অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন:
৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১৭
নীল কপোট্রন বলেছেন: সবার ক্ষেত্রে এমন ভাবে হ্যাপি এন্ডিং হলে ভালোই হতো।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২৪
অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: তা ঠিক বলেছেন। পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানবেন।
৪| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০০
খায়রুল আহসান বলেছেন: কল্পনাবিলাস বলেই মনে হলো।
৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪১
অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: জ্বি। একদম ঠিক ধরেছেন। কল্পনাকে সঙ্গী করেই আমার এই লেখা।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২১
ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: আসলেই কি হয় এমন???