নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সকল অপূর্ণতায় পূর্ণ আমি। সব অসাধারন মানুষের ভীরে আমি অতি সাধারন এক মানুষ। পেশায় ছাত্র, নেশায় মুভিখোর আর বইপড়ুয়া। নিজেকে খুঁজে পাবার জন্য হাঁটতে থাকি। স্বপ্নের সাথে হাঁটি, স্বপ্নের জন্য হাঁটি। আর মাঝে মাঝে হাবিজাবি লেখি আমার ভার্চুয়াল খাতায়।

অভ্রনীল হৃদয়

অন্ধকার রাজ্যের গন্তব্যহীন পথিক আমি...!!

অভ্রনীল হৃদয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

অণুগল্পঃ সাইকো-কিলার

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩১

নাক-মুখ থেকে এক গাদা রক্ত ছিটকে পড়ল। ভীষণভাবে কেঁপে উঠল ফারিয়া। এভাবে কেউ কখনও মারেনি ওকে আগে। ছিটকে মেঝেতে পড়ে গেছে। মুখ থেকে অস্ফূট গোঙানি বের হয়ে আসছে। ওড়না চেপে ধরে আবার দাঁড় করিয়ে দিল নীল।
ব্লাড হান্টার ছুরিটা পেছন হতে বের করল নীল। প্রথমে পেটে তারপর অনবরত ফারিয়ার বুককে ছুরি দিয়ে ফালা ফালা করতে থাকে সে। ফারিয়ার পেট ও বুক থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। রক্তে ভিজে যায় নীলের পড়নের জিন্স ও টি-শার্ট। গোঁ-গোঁ করতে করতে ছিটকে বিছানাতে ঢলে পড়লো সে মৃত্যু শয্যায়ে।
.
ঘরটা আবছা অন্ধকার। বদ্ধ বাতাস আর্দ্রতায় ভরা। জানালার সমস্ত খড়খড়ি নামিয়ে দেয়া। ঘরের বাতাসে পুরনো চামড়ার গন্ধ। খড়খড়ির চারপাশে ঢুড়ে মরছে যেন বিজলিলোক, ঘরে ঢোকার পথ খোজার জন্য যেন মরিয়া। বিচিত্র একধরনের আলো সৃষ্টি করেছে ঘরের মধ্যে। ধুলো উড়ছে ক্রমাগত। সব জিনিসে পুরু ধুলার আস্তরণ, ফলে নাড়া লাগলেই লাফিয়ে উঠছে।
খড়খড়ি দিয়ে আসা বিচিত্র আলোতে ঝিকমিক করছে। যেন কয়েক হাজার তারা হঠাৎ করে বিস্ফোরিত হওয়ার পর দুলে দুলে নিচে নামছে ওদের অসংখ্য কণিকা, বিজলির আভায় জ্বলছে হীরার কণার মত। এই আলো আধারি চোখে সইতে না পেরে জানালাটা খুলে দিল নীল।
.
নিকশ কালো আধারের এই রাতে বিজলির আলোয় কিছুক্ষণ পর পর ই বিশাল ঘরটি আলোকিত হয়ে উঠছে। আবার পরক্ষণেই আগের মতো আধারে ঢাকা দিচ্ছে পুরো ঘরটি। একসময় তার প্রিয় রঙ ছিলো নীল।
কিন্তু মানুষ বড়ই বৈচিত্রময় একটি প্রাণী। কাল এর বিবর্তনে তার প্রিয় রঙ আজ নীল হতে কালো রঙ এ ধারণ করেছে। নীল এখন এই অন্ধকার জগতকেই খুব ভালোবাসে। রাতের এই আধারই যেনো তার একমাত্র সঙ্গী।
.
দক্ষিণের জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালো নীল। অঝর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। দূর হতে পুলিশের গাড়ির সাইরেন ভেসে আসছে। হাত মুখে রক্ত লেগে একাকার। অস্বস্তিকর এক অবস্থা।
প্রকৃতির এই অপরূপ বৃষ্টিকেই আজ তার কাজে লাগাতে হবে। যেই নীল কিনা একসময় তার প্রেয়সীকে নিয়ে এই বৃষ্টিতে ভেজার আহবান জানাতো। সেই নীল আজ নিজেকে শুদ্ধ করার আশায় বৃষ্টিকে আহবান জানাচ্ছে। বৃষ্টির ঐ জলের স্পর্শে তার সারা শরীর ধুয়ে মুছে যাবে। রক্তের কোনো ছিটেফোটা ও থাকবেনা তখন।
.
না থাক। এসব নিয়ে ভাবার মত সময় এখন আর নেই নীলের। এমনিতেই অনেক দেরী করে ফেলেছে সে। গাড়ির সাইরেন ও এখন খুব স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। কখন না যেনো চলে আসে।
উঠে পড়ল নীল। শেষবারের মতো ফারিয়াকে দেখার জন্য ঘুরে দাড়ালো নীল। ঘুমন্ত অবস্থায় মেয়েটাকে খুব নিষ্পাপ লাগছে। স্মৃতির জানালার কুয়াশা ভেদ করে আবছা আবছা হয়ে ভাসছে। অমনটা না করলেও পারতো মেয়েটা। তাহলে আজ আর তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত হতে হতো না।
.
হঠাৎ দরজায় কড়া দেওয়াল শব্দে নীলের ভাবনায় ছেদ পড়ল। নীল নির্ভয়ে ক্রুর হেসে দরজার দিকে ঠায় তাকিয়ে রইল। দরজার নব আস্তে আস্তে পুরোপুরি ঘুরে গেলো।
দরজার পেছন হতে রিভলবার তাক করা চার জন পুলিশ আধারে আবিষ্ট এ ঘরে প্রবেশ করলো। যেন এই বুঝি কেউ তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়বে। কারণ কিছুক্ষণ আগেই এ ঘর হতে কিছু অদ্ভুত শব্দ ভেসে আসতে শুনেছে তারা। তবে নাহ। এমন কিছুই ঘটলো না তাদের সাথে।
.
খুন হওয়ার খবরটি কে যেন ফোন করে জানিয়েছিল তাদের। তৎক্ষণাতই তারা এই বৃষ্টি ভেজা রাতে বেড়িয়ে পড়ে। একজন পুলিশ কনস্টেবল তার মুঠোফোনের টর্চ-লাইটটি অন করে পুরোঘরে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো। ঘরে একটি লাশ ছাড়া আর কেউ নেই।
লাশের পাশে পড়ে রয়েছে একটি চিরকুট। পুলিশ কনস্টেবল চিরকুটটি খুলে তার উপর টর্চের আলো ধরলো। চিরকুটটিতে লেখা রয়েছেঃ

“আমি আবার ফিরে আসব। নতুন ভাবে, নতুন শিকার নিয়ে। কিন্তু তোমরা আমায় ধরতে পারবেনা।"

-সাইকো কিলার
.
গত কয়েক মাসে ঠিক এভাবেই আরোও তিনটি খুন হয়েছে। প্রত্যেকবারই ভিন্ন ভিন্ন নম্বর থেকে কল দিয়ে পুলিশদের খুনের ঘটনাস্থল জানিয়ে দেওয়া হয়। এবং সেখানে যাওয়ার পর লাশের পাশে এমনি একটি চিরকুট পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ তাদের তদন্ত জারি রাখা সত্বেও এখন পর্যন্ত এই রহস্যময় খুনীর কোনো কূল-কিনারা করতে পারেনি।
.
পরিশেষে নীল এই প্রচন্ড বৃষ্টির মাঝে নিঃসঙ্গ রাস্তায় রাস্তায় একাকি হেঁটে চলছে। বৃষ্টির ঝমঝম শব্দে তার অবচেতন মনে আনন্দবাজনা বাজার পরিবর্তে শুধুই খুঁজে বেড়াচ্ছে তার পরবর্তী শিকার।
ক্রমশ ভাবনার জগতে হারিয়ে যাচ্ছে নীল। কে হতে পারে তার পরবর্তী শিকার। হঠাৎই নীলের মুখে আবার সেই ক্রুর হাসি ফুটে উঠল। হ্যাঁ। নীল খুঁজে পেয়েছে তার পরবর্তী শিকার। নীলের ঠোঁট কেমন যেনো নড়ে উঠল। মনে হলো সে কিছু বলল। কিন্তু বৃষ্টির শব্দে ধামাচাপা পড়ে গেলো নীলের কথাটি।
কে যেনো দূর হতে শুনতে পেলো।
আমি আসছি!

--- ০ ---

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৬

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: সাইকো কিলারের ঘটনা ছোট হয়ে গেল। থ্রিলিং ভাবটাও তেমন পাইনি।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৯

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: এটা আমার লেখা প্রথম দিকের গল্পগুলোর মাঝে একটি। আজ পুরোনো লেখা গুলো চেক করতে গিয়ে এটা সামনে পড়ে গেলো। তাই কি মনে করে ব্লগে দিয়ে গেলাম। এজন্যই বোধহয় থ্রিল বলতে গেলে আসেনি গল্পটায়। :( পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: ছোটগল্প হিসেবে ভালো না। অণুগল্প হিসেবে চলনসই।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৫

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৩

ডাঃ মারজান বলেছেন: ভাই লেখাটিকে সিরিজ করে ফেলুন। 'নীল' কে নিয়ে লিখে ফেলুন। অনেক ভালো লাগলো।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩০

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য, ডাঃ মারজান। বিষয়টা মাথায় থাকবে। শুভেচ্ছা জানবেন।

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩১

সুমন কর বলেছেন: কমন প্লটে সাইকো গল্প, মোটামুটি লাগল !

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২০

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।

৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫১

প্রামানিক বলেছেন: গল্প ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৬

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে। শুভেচ্ছা।

৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: খুব একটা ভাল হয়নি| পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল এরকম অনেক পড়েছি :) :)

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩১

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: কৃতজ্ঞতা জানবেন সময় করে পড়ার জন্য, ভাল থাকুন সব সময়! :)

৭| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০০

নীল কপোট্রন বলেছেন: কমন প্লট লাগলো। আস্তে আস্তে জমে উঠছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই যেনো শেষ হয়ে গেলো।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৬

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: সহমত আপনার সাথে। তাড়াহুরোর মধ্যে লিখেছিলাম। তাই হয়তো এমনটা হয়েছে।
:(

৮| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৯

নীল কপোট্রন বলেছেন: গল্পটা পর্ব আকারে করতে পারেন। সামনের পর্বে আরো টুইস্ট চলে আসবে আশা করি তাতে।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৪

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য। আমিও এই ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করেছি। দেখা যাক কি হয়। ততোদিনের জন্য ভালো থাকুন। :)

৯| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আরও ডিটেইল হলে পড়তে ভালো লাগতো

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: আমিও আপনার সাথে একমত। অনেক তাড়াহুরোর মধ্যে কোনোরকম শেষ করেছিলাম। তাই এই দশা। :( পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। :)

১০| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৪৮

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আলসেমিটার জন্যই লেখাসমুহ পাঠকপ্রিয়তা পায় কম। আমার মনে হয় যথেষ্ট যত্ন নেন নি। আপনার আইডিয়াগুলো দারুণ হয় কিন্তু।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৬

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: উৎসাহিত হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে। :) আর হ্যাঁ। ঠিক বলেছেন। এই গল্পটা লেখার সময় প্রচন্ড রকম আলসেমি লাগছিলো। তাই কোনোরকমে গল্পটার ইতি টানি। আরো বিস্তারিত লেখা উচিৎ ছিলো। :(

১১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১২

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: সাইকো গল্পের কমন পটভূমি, কিন্তু গল্প কোথায়? সাইকো কিলার নাকি সিরিয়াল কিলার? গল্পে সাইকো আছে, সিরিয়াল কিলিং আছে, কিন্তু গল্পটাই নেই। :(

ভালো থাকুন সবসময়, শুভকামনা।

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৬

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: ভ্রাতা, এটা বছরখানেক আগের লেখা। আর আমার লেখা প্রথম গল্প ছিলো এটা। তখন প্রথম চেষ্টা হিসেবে এটুকুতেই ইতি টেনেছিলাম। তাই গল্পে কোনো ধরনের টুইস্ট আনতে পারিনি। :( সময় করে পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.