নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সকল অপূর্ণতায় পূর্ণ আমি। সব অসাধারন মানুষের ভীরে আমি অতি সাধারন এক মানুষ। পেশায় ছাত্র, নেশায় মুভিখোর আর বইপড়ুয়া। নিজেকে খুঁজে পাবার জন্য হাঁটতে থাকি। স্বপ্নের সাথে হাঁটি, স্বপ্নের জন্য হাঁটি। আর মাঝে মাঝে হাবিজাবি লেখি আমার ভার্চুয়াল খাতায়।

অভ্রনীল হৃদয়

অন্ধকার রাজ্যের গন্তব্যহীন পথিক আমি...!!

অভ্রনীল হৃদয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ অসমাপ্ত ভালোবাসা

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩২

মেয়েটি ছেলেটিকে ভালোবাসে। শুধু ভালোবাসে বললে ভুল হবে। প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশীই ভালোবাসে।
মেয়েটির নাম নীলা। ভার্সিটিতে নতুন এসেছে। নীলা মেয়েটা অতিরিক্ত রকমের মায়াবতী। সব ছেলেরাই তার প্রেমে হাবুডুবু খায়। দিনকয়েক যেতে নীলা খেয়াল করলো একটি ছেলে তাকে সবসময়ই এড়িয়ে চলে। এক কথায় তাকে পাত্তা দেয়না বললেই চলে। কিন্তু শেষমেষ এই ইগনোর করা ছেলেটিরই প্রেমে পড়ে যায় নীলা।
.
ছেলেটি হলো অভ্র। অনার্স ৩য় বর্ষে পড়াশোনা করছে। ছেলেটার মাঝে অদ্ভুত কি যেনো আছে। কিসের এক আকর্ষণ যেনো বারবার তাকে টেনে নিয়ে যায় অভ্রের কাছে। অভ্রকে এক নজর দেখার জন্যে প্রতিদিন নীলা অপেক্ষা করে। কখন অভ্র তার ক্লাস শেষে ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে বসবে। আর নীলা মুগ্ধ নয়নে অভ্রের হাসিমাখা মুখের পাগলপনা দেখে হেসে কুটিকুটি হবে।
.
মাঝে মাঝে নীলার খুব ইচ্ছে হয় অভ্রকে গিয়ে বলতে। এই যে শুনছেন? আমি কি আপনার পাশে একটু বসতে পারি? কিছু মনে না করলে আপনার হাতটুকু আলতো করে ছুঁয়ে দেখতে পারি? আচ্ছা আপনি এতো মুডি কেনো? আমাকে এভাবে এভোয়েড করেন। কোথায় আপনি আমাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করবেন। তা নয়। উল্টো আমাকে দেখলেই দূরে সরে যান। আমাকে কি আপনার ভালো লাগেনা?
.
অভ্র প্রায়সময়ই দেখে মেয়েটি সবসময় তার আশেপাশেই থাকে। সে যেখানেই যাক না কেনো মেয়েটি কোথা না কোথা থেকে ঠিকই হাজির হয়ে যায়। অভ্র ভাবে নীলা মেয়েটা অনেক লাজুক ও বটে। সে যখন আড়চোখে তার দিকে তাকিয়ে থাকে। হঠাৎ চোখে চোখ পড়ে গেলে লজ্জ্বায় তার মুখ লালচে বর্ণ ধারণ করে। তখন নীলাকে সাক্ষাত অপ্সরীর মতো লাগে। এতো সুন্দর করে কেউ কিভাবে হাসে? যেন মুক্ত ঝরে তার হাসি হতে।
.
অভ্রের মাঝে কেমন যেনো পরিবর্তন এসেছে। সর্বত্র নীলার ওই মায়াবী মুখখানি ভেসে উঠছে। রাতের ওই আকাশের দিকে যখন সে তাকিয়ে থাকে। তখন মনে হয় ওই চাঁদের অবয়বের মাঝে নীলার প্রতিচ্ছবি ফুঁটে উঠেছে। অভ্রের দু চোখ যেনো সবসময় নীলাকেই খুঁজে ফেরে। সেও কি নিজের অজান্তেই নীলাকে তার মনে জায়গা দিয়ে ফেলেছে? নাহ। এমনটি তো হওয়ার কথা ছিলো না। সে তো ভেবে রেখেছিলো তার মনের এই ছোট্ট কুঠরিতে সে কাউকে ঠায় দিবেনার। কিন্তু সে তো আবার সেই একই ভুল করতে বসেছে।
.
অভ্র বুঝতে পারছে যে ধীরে ধীরে সে মেয়েটির মায়ার বাধনে জড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে চায় না তার জন্য একটি নিষ্পাপ মেয়ের জীবন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হোক। জীবনের শেষ দারপ্রান্তে এসে আজ নিজেকে বড়ই অসহায় মনে হচ্ছে অভ্রর। নিজেকে নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তা নেই অভ্রের। তার চিন্তা হচ্ছে নীলাকে নিয়ে। নীলা যে তাকে বড্ড বেশীই ভালোবাসে।
.
বেশকিছুদিন হলো অভ্রকে ক্যাম্পাসে দেখা যাচ্ছেনা। নীলার সারাটিক্ষণ অস্হিরতার মাঝেই কেটে যায়। কখনও যা নীরবে বোবা কান্না কেঁদে যায় সে। পরদিন নীলা ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখলো অভ্রের বন্ধুরা সবাই মনমরা হয়ে বসে আছে। আগের সেই প্রাণোচ্ছলতা যেন আর নেই তাদের মাঝে। তাদের কাছে গিয়ে বলে উঠল নীলা।
.
-আপনাদের সাথে যে আরেকটি ছেলে থাকতো। তাকে কিছুদিন হলো দেখছিনা। কোথায় উনি?

-তুমি কি অভ্রর কথা জানতে চাচ্ছো?

-জ্বি।

-তুমিই কি সেই নীলা? যাকে অভ্র ভালোবাসতো।
.
নীলা প্রচন্ডরকম অবাক হয় এই ভেবে যে। ছেলেটিও তাকে ভালোবাসতো। তাহলে কেনো এই লুকোচুরি।
নীলা কিছু না বলে ঠায় দারিয়ে রয়। আর নীরবতাই সম্মতির লক্ষণ। ছেলেটি নীলার হাতে একটি চিঠি ধরিয়ে দিয়ে বলে ওঠে।
.
-এই চিঠিটি তোমাকে অভ্র দিয়েছে। বাসায় গিয়ে খুলে দেখবে।

নীলা ঠিক আছে বলে চলে যায় সেখান হতে।
.
নীলা বাসায় গিয়ে দুরু দুরু মনে চিঠিটি খুলে পড়া শুরু করলো।
.
নীলা,

এই চিঠিটি যখন তোমার হাতে পৌছবে। তখন হয়তো আমি আর এই পৃথিবীতে থাকবোনা। ততক্ষণে আমি চলে গিয়েছি না ফেরার দেশে। যেখান হতে কেউ চাইলেও আর ফিরে আসতে পারেনা।
.
কোনো এক বৃষ্টিঝরা ক্ষণে তোমার ওই মায়াবি চাহনীর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। তোমার নাটাইয়ের সুতো হয়ে স্বপ্ন বুনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্বপ্ন বুনতে শুরু করার আগেই কি করে যেনো সুতোটাই ছিড়ে যায়। যেদিন তোমার কাছে আমার মনের সুপ্ত অনুভূতি প্রকাশ করতে যাবো। সেদিনই জানতে পারি আমার অজান্তেই আমার মাঝে মরণব্যাধি রোগটি যে কখন জায়গা করে নিয়েছে। বুঝেই উঠতে পারিনি। তিল তিল করে আমাকে প্রতিনিয়ত শেষ করে দিচ্ছে সে। তাই আর এই ক'টা দিনের জন্য নিজেকে তোমার মায়ার বন্ধনে জড়াতে চাইনি।
.
এই তুমি কাঁদবেনা কিন্তু। তুমি কাঁদলে যে আমারো খুব কষ্ট হবে। আমাদের মিল নাইবা হলো। তাতে কি হয়েছে। আমি সবসময় তোমার সাথেই থাকবো। কখনওবা কড়া রৌদ্রে তোমার ছায়া হয়ে। কখনওবা বা জোসনাভরা রাতের ওই জোসনা হয়ে তোমার অঙ্গে মায়া খেলিয়ে যাবো। আবার কখনও হিমেল হাওয়া হয়ে তোমায় ছুঁয়ে শিহরিত করে যাবো। এভাবেই আমি রবো চিরকাল তোমার সাথে। জানোইতো সত্যিকারের ভালোবাসা কখনও শেষ হয়না।
.
ইতি,
তোমার অভ্র
.
নীলার অজান্তেই তার চোখ হতে দু ফোঁটা অশ্রু ঝরে পড়ল। চোখ মুছে নীলা আনমনেই বলে ওঠে। আমার তো কাঁদতে নেই। আমি কাঁদলে যে সে কষ্ট পাবে। বাহিরে পুরো আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছে। হঠাৎই অঝর ধারায় বৃষ্টি শুরু হয়ে যেতে পারে। শীতল হাওয়া নীলাকে স্পর্শ করে চলে গেলো। মনে হলো তার কানে কানে চুপিসারে কে যেনো বলে উঠলো ভালোবাসি। নীলাও আস্তে করে বলে উঠল ভালোবাসি।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: ট্রাজ্যাডিময়!!

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন। :)

২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: টিপিক্যাল ট্রাজেডি।

১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৯

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: কৃতজ্ঞতা জানবেন সময় করে পড়ার জন্য, ভাল থাকুন সব সময়! :)

৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:১৮

নীল কপোট্রন বলেছেন: অন্য ধাঁচের একটা গল্প। ভাল লাগলো।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪০

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, শুভকামনা রইলো নিরন্তর ভালো থাকুন!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.