নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সকল অপূর্ণতায় পূর্ণ আমি। সব অসাধারন মানুষের ভীরে আমি অতি সাধারন এক মানুষ। পেশায় ছাত্র, নেশায় মুভিখোর আর বইপড়ুয়া। নিজেকে খুঁজে পাবার জন্য হাঁটতে থাকি। স্বপ্নের সাথে হাঁটি, স্বপ্নের জন্য হাঁটি। আর মাঝে মাঝে হাবিজাবি লেখি আমার ভার্চুয়াল খাতায়।

অভ্রনীল হৃদয়

অন্ধকার রাজ্যের গন্তব্যহীন পথিক আমি...!!

অভ্রনীল হৃদয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ ভালোবাসা শিরোনামহীন

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৮

_এক_
পাড়ার মোড়ে চায়ের দোকানে বসে প্রতিদিনের মতো আড্ডা দিচ্ছিলাম বন্ধুদের সাথে। হঠাৎই সামনের চার তালার বিল্ডিং এ কিছু একটা দেখে বিষম খেলাম। চোখ কচলিয়ে আবার ওই বিল্ডিং এ চার তালার বারান্দায় তাকালাম। নাহ। এখন তো আর কাউকে দেখতে পাচ্ছিনা। আমি কি তাহলে ভুল দেখেছিলাম? ক্ষণিকের জন্য তাকে দেখেছিলাম। যেনো স্বর্গ হতে নেমে আসা কোনো লাল অপ্সরি দাড়িয়ে ছিলো সেখানটায়। লাল অপ্সরি বললাম কারণ মেয়েটির পড়নে ছিলো লাল রঙের শাড়ি।
সত্যিই কি আমি ওমন কাউকে দেখেছিলাম নাকি সেটা ছিলো নিতান্তই আমার কল্পনা। ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। এরপরে সেদিন আরো অনেকক্ষণ বসে ছিলাম তাকে একটিবার দেখার জন্য। কিন্তু ওরকম কাউকে আর দেখলাম না সেদিন। আমি লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইটে বিশ্বাস করতামনা। কিন্তু আজ কেনো যেনো খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করছে। সত্যি বলতে কি আমি প্রথম দেখাতেই মেয়েটির প্রেমে পড়েছিলাম।
এরপরে মাঝে মাঝেই সেখানে এসে বসে থাকতাম মেয়েটিকে দেখার জন্য। কিন্তু তাকে আর কখনও দেখতে পাইনি। ধরেই নিয়েছিলাম ওটা আমার চোখের ভুল ছিলো। একসময় মেয়েটির কথা প্রায় ভুলেও যাই। যদিওবা মেয়েটির সেই মায়াবি মুখের প্রতিচ্ছবি আমার হৃদয়ের মাঝেই আবদ্ধ ছিলো। কিন্তু দ্বিতীয়বার তাকে দেখার পর আমি বুঝতে পারি সে শুধু আমার কল্পনাই নয়। সে বাস্তবেও অবস্থান করছে।
_দুই_
এই ঘটনার বেশ কিছুদিন পর কলোনী থেকে কক্সবাজারে পিকনিকের আয়োজন করা হয়। মানুষজন বেশী হওয়ায় দুইটি বাসের ব্যাবস্থা করা হয়। আমি প্রথম বাসটাতেই উঠি। সারারাস্তা অনেক হৈ হুল্লোর, আনন্দ করেই কাটালাম। সমুদ্র সৈকতে বন্ধুদের সাথে মজা করছিলাম। বিশালাকার সমুদ্রের বিশাল বিশাল ঢেউ কিনারায় এসে আছড়িয়ে পড়ছিলো। আর আমি মনোমুগ্ধ হয়ে তা দেখছিলাম। হঠাৎই দূরে আমার চোখ আটকে গেলো।
সেই লাল অপ্সরি আজ এখানে অন্যরুপে আবির্ভূত হয়েছে। আজ তার পড়নে রয়েছে গোলাপি রঙের একটি শাড়ি। সমুদ্রের কিনারায় পানি নিয়ে যেনো সে খেলছে। আর আমি মুগ্ধ হয়ে মেয়েটিকে দেখছিলাম। মেয়েটির মাতাল করা চোখের ভাষায় অভিভূত হয়েছিলাম আমি। আচ্ছা এতো সুন্দর করে কেউ কিভাবে হাসে? যেনো মুক্ত ঝরে পড়ছিলো ওর হাসিতে। হঠাৎই বিশাল বড় এক ঢেউ আমার উপর আছড়ে পড়ে। পরক্ষণেই মেয়েটি যেখানে ছিলো সেদিকে তাকিয়ে দেখি। মেয়েটি সেখানে আর নেই। আমি পাগলের মতো তাকে খুঁজতে লাগলাম এখানে সেখানে। কিন্তু মেয়েটিকে আর খুঁজে পেলাম না। অবশেষে ফিরে যাওয়ার সময় বিষণ্ণ মুখেই বাসে চড়ে বসলাম। সারারাস্তা শুধু মেয়েটির কথাই ভেবে যাচ্ছিলাম। মেয়েটিকে আরো একবার পেয়েও হারিয়ে ফেললাম আমি।
_তিন_
কক্সবাজার হতে এসে আজ প্রায় একমাস পেরিয়ে গেছে। বাসায় সারাক্ষণ মনমরা হয়ে ঘরের মধ্যে পড়ে থাকি। উঠতে-বসতে, ঘুমাতে গিয়ে সবসময়ই মেয়েটির ছবি আমার মনের ক্যানভাসে ভেসে উঠে। ছোট বোন আমার হঠাৎ এই আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করে একদিন বলেই বসল।
‘ভাইয়া! তোর মন কি খারাপ?’
‘কেনো বলতো?’
‘নাআআ। যেভাবে মনমরা হয়ে পড়ে থাকিস। মনে তো হয় পাক্কা ছ্যাকা খাইছিস। বলেই পিত্তি জ্বালানো হাসি দিলো।’
এমনিতেই মন ভালো ছিলো না। তার উপর বোনের মুখে ওমন কথা শোনার পর ওকে ধরার জন্য ওর পিছু দৌড়াতে থাকলাম। কিন্তু ধরতে পারলাম না। মন খারাপ করে গিটারটা নিয়ে ছাদে চলে আসলাম। এক কোনায় বসে গিটারের টুং টাং আওয়াজ তুলে গেয়ে উঠলাম।
‘প্রেম তুমি, আসবে এভাবে...
আবার হারিয়ে যাবে ভাবিনি...
গাইতে গাইতে চোখের কোণ বেয়ে নিজের অজান্তেই অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।’
পেছন হতে হৃদয়কারা মিষ্টি কন্ঠে বলে উঠলো।
‘এই যে মিঃ নীল শার্ট! গান তো ভালোই গাইতে পারেন দেখছি। কিন্তু এভাবে মেয়েদের মতো কাঁদেন কেনো? হুমম?’
শেষ কথাটা শুনে আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। কিছু একটা বলবো ভেবে যেই না পেছন ফিরে চাইলাম। ওমনি আমার মাঝে যেনো ৪৪০ ভোল্টেজের বিদ্যুত খেলে গেলো। আমি কি স্বপ্ন দেখছি নাকি এটা সত্যি। হাতে একটা চিমটি দিয়েই শব্দ করে উঠলাম। নাহ। আমি কোনো স্বপ্ন দেখছিনা। এসবকিছু বাস্তবেই ঘটছে।
.
মেয়েটি আজ হলুদ রঙের একটি শাড়ি পড়ে ঠিক আমার সামনেই দাড়িয়ে আছে। আমি আবার নতুন করে মেয়েটির প্রেমে পড়ে গেলাম। মনে মনে বলে উঠলাম, ‘এবার আর আমি তোমায় আমার কাছ হতে হারিয়ে যেতে দিবোনা মেয়ে।’ মুখ ফসকে বলেই ফেললাম।
‘ভালোবাসি তোমায় অপ্সরি।’
বলেই লজ্জ্বায় মাথা নিচু করে ফেললাম। এখন কি হবে। সাংঘাতিক কিছু হওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুণে যাচ্ছি আমি। বুকের মাঝে যেনো কেউ হাতুরি দিয়ে আঘাত করছে।
কিন্তু এমন কিছুই ঘটলো না। আমাকে অবাক করে দিয়ে মেয়েটি বলে উঠল,
‘আমার নাম অপ্সরি নয় কিন্তু। আমার একটা নাম আছে। আমার নাম মিতু। হুহ!’
আমিও একটু সাহস করে বলে উঠলাম,
‘আমিও কিন্তু মিঃ নীল শার্ট নই। আমি হলাম অভ্র।’
‘আমি জানি যে আপনার নাম অভ্র।’
‘তুমি আমার নাম জানো! কিন্তু কিভাবে?’
হঠাৎ কে যেনো পাশ হতে এহেম এহেম করে উঠল। সেদিক ফিরেই মনে মনে বলে উঠলাম। বদের হাড্ডিটা আসার আর সময় পেলো না। বিজ্ঞের মতো ভাব ধরে আমার বোন বলে উঠল,
‘মিতু আমার বান্ধবী। ও অনেক আগে থেকেই তোকে পছন্দ করতো। কিন্তু লজ্জ্বার কারণে কিছু বলতে পারতো না। আর আমাকেও কিছু বলতে দিতোনা। সেদিন তোর রুমে তোর পারসোনাল ডায়েরিটা দেখে পড়ার লোভটা আর সামলাতে পারিনি। সেখানে তোর মেয়েটিকে নিয়ে লেখা ঘটনা আর বিবরণ দেখে বুঝতে পারি যে তুই আর কারো না। মিতুর প্রেমেই পড়ে গিয়েছিস। কনগ্রাচুলেশন ভাইয়া!’ বলেই হি হি করে হেসে চলে গেলো।
আমি ফ্যাল ফ্যাল করে মিতুর দিকে তাকিয়ে রইলাম। বেশ কিছুক্ষণ লাগলো সবকিছু বুঝে উঠতে। পশ্চিমাকাশে সূর্য ঢলে পড়ছে। আমরা দুজন পাশাপাশি দাড়িয়ে তা দেখছি। আস্তে আস্তে আমার হাত মিতুর হাতের উপর আলতো করে রাখলাম। মিতু লজ্জায় একদম লাল হয়ে গেলে। ওকে এখন আরো বেশি সুন্দর লাগছে। আচ্ছা পরের বার দেখা হওয়ার সময় মিতু কি রঙের শাড়ি পড়বে? ওকে কি জিজ্ঞেস করবো? উফফ! এখন এসব প্রশ্ন করার সময় নয়। এখন ওর মায়াবি মুখের দিকে নিষ্পলক ভাবে তাকিয়ে হারিয়ে যাওয়ার সময়। পৃথিবীর বুকে বোধহয় আরো একটি ভালোবাসার সৃষ্টি হয়েই গেলো।

--- ০ ---

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৩

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: ইদানিং ফেবুতে এ ধরনের অতি কাল্পনিক গল্পের বিচরণ দেখতে দেখতে অনেকেই হয়তো বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। |-) /:) তাদের বিরক্তির পরিমাণ আরেকটু বাড়িয়ে দেওয়ার জন্যই আমার এই লেখা। :P আশা করি সবাই ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন বিষয়টি। 8-|

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সত্যি কথা ভাই, গল্প পড়ে বিরক্ত হয়েছি

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৮

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: হা হা হা। তাহলে আমার এই লেখা সার্থক হয়েছে। বিরক্ত করার জন্যই এটা লিখেছিলাম। কষ্ট করে পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানবেন। ভালো থাকুন।

৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৭

নীল কপোট্রন বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। :)

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫১

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন! ভাল থাকবেন প্রতিটি মুহূর্ত!

৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১১

নীল কপোট্রন বলেছেন: আপনিও ভালো থাকবেন।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৭

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: :)

৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:২৮

কিরমানী লিটন বলেছেন: অনবদ্য ভালোলাগা...

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৬

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ জানাই ভাই!

৬| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগে নাই।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৭

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: সত্যি কথা বলতে গল্পটা আমার নিজের ও ভালো লাগেনি। অহেতুক সময় কাটানোর ছলে লিখেছিলাম। কষ্ট করে পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৭| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫০

প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৪

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে। শুভেচ্ছা। :)

৮| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫২

আরজু পনি বলেছেন:

বোনের বান্ধবীকে আগে দেখেননি ব্যাপারটা একটু গোলমেলে...সাথে আরেকটি ব্যাপার...আজকালকার মেয়ে সবসময়ই শাড়ি পরে থাকে !
তবে আপনার লেখাটা নাটক হলে বেশি মানাতো ।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৭

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য। প্রথমত বোনের বান্ধবীকে না চেনার ব্যাপারটা যুক্তিসঙ্গত। দ্বিতীয়ত আমার শাড়ি পড়া মেয়েদেরকেই বেশি ভালো লাগে। সেই ভিত্তিতে গল্পে এমন চরিত্র এনেছি। তৃতীয়ত একদম ঠিক বলেছেন। গল্পটি নাটক হলে বেশ মানাতো। ভালো থাকবেন সবসময়। শুভেচ্ছা রইলো। :)

৯| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৪২

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আপনার লেখাটা অনেক ভাল লাগলো। প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম। অন্য একটা আইডিয়া এসেছে। ;)

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২২

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে গেম চেন্ঞ্জার। তবে কি আইডিয়া আসছে তাত্তারি বলে ফেলেন। নাহলে কৌতুহলে আমার আর ঘুম আসবেনা দেখা যাবে। =p~

১০| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৮

গেম চেঞ্জার বলেছেন: মাঝে মাঝে না ঘুমানোই ভালো.. #:-S

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫০

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: এইটা একটা কথা বললেন! আমার মত ঘুমপ্রিয় একজন মানুষকে এভাবে সাজা দিলেন! :((

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.