নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজনই!

সাকিব ইফতেখার

লেখার মাঝেই ডুবে থাকতে চাই................ facebook.com/sakib.ifteqar

সাকিব ইফতেখার › বিস্তারিত পোস্টঃ

পড়ুন....লেখাটি হয়তো আপনার জন্যই....সময় খুব কম!

১৯ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২১

প্রত্যেক মানুষের ছোটবেলায়.........
প্রত্যেক বাবাই হয়তো প্রতিদিন কিংবা হয়তো মাঝে মাঝে বাজারে বা অফিসে যাওয়ার সময় তাদের সন্তানকে জিজ্ঞাসা করে যান “বাবা,তোমার জন্য আজ কি আনবো”।
সেটা হতে পারেন আপনার বাবা,হতে পারেন আমার বাবা ।

আমাদের বয়স ৫ বছর পেরিয়ে ১০ এ গড়ায়।
১০ পেরিয়ে ২০ এ গড়ায়।
২০ পেরিয়ে ৪০ এ গড়ায় কিন্তু মানুষটা সেই পুরোনোই থাকে!

ব্যাকডেটেড বাবা যে কিনা প্রতিদিন ২ টাকার একটা চকলেট নিয়ে আসে কিন্তু দামি দামি জিনিস কিনে দেয়ার সময় কার্পণ্যতা দেখায়।
এরা কখনোই আধুনিক হতে পারেনা।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমি আমার ব্যাকডেটেড বাবার ‘২ টাকা’র ভালোবাসাও বেশিদিন দেখতে পারিনি।
এই ব্যাকডেটেড বাবাদের ২ টাকার একটা চকলেটেই যে কত ভালোবাসা মেশানো থাকে তা আমরা সন্তানরা কখনো বুঝিনা কিংবা বোঝলেও না বোঝার ভান করি।

..........মনে পড়ে আব্বু প্রতি সপ্তাহে অফিসের সাপ্তাহিক বন্ধে ঢাকা থেকে বাড়ি আসতেন।
প্রতিবারই রাতে ফিরতেন।স্বাভাবিকভাবেই ঘুমিয়ে থাকতাম তখন।
মাঝরাতে এসেই ঘুম থেকে তুলে ইয়া মোটা মোটা কলা খাওয়াতেন টেবিলের উপর বসিয়ে।
খেয়েই আবার ঘুমিয়ে পড়তাম।

হ্যাঁ..........এটা আজ থেকে ১৪ বছর আগের কোনো কোনো রাতের গল্প!
১৪ বছর হয়ে গেলো সেদিনগুলো হারিয়ে গেছে......কেউ আর ঢাকায় অফিসে যাওয়ার সময় পায়ে শ্যু গলাতে গলাতে জিজ্ঞেস করেনা “এদিকে আয়.....কি লাগবে বল।আব্বু ঢাকা থেকে আসার সময় নিয়ে আসবো?”
আব্বু ঢাকায় যাওয়ার সময় আমাকে ১০ টাকা দিয়ে যেতেন!
তখন মনে হতো “হামসে বড় কৌন হ্যায়”!

আব্বুর কাছে আমার শেষ আবদার কি ছিলো জানেন?
১৪ বছর আগে আব্বু অসুখে পড়ার কয়েক সপ্তাহ আগে উনার কাছে একটা লাইটজ্বলা কেডস চেয়েছিলাম।
তখন আমার বয়স ৭ ছিলো।
আব্বু অজানা কারণে ওই জিনিসটা আনতে ভুলে যেতেন।
আব্বুর ওই রোগটা আমার মধ্যেও বিদ্যমান!
কিন্তু ওই জুতা আর কিনে দেয়া হলোনা আব্বুর।
বিছানা থেকেই যে উঠতে পারতেন না উনি শেষের দিকে।

তারপর আর আমার উনার ভালোবাসা পাইনি।
উনি হয়তো দূর থেকে আমাদের আদর করতে চান কিন্তু পারেন না।


আমার এখন এসে কেন জানি মনে হচ্ছে উনাকে কিছু একটা গিফট দিতে পারতাম যদি।
দেখার ইচ্ছা ছিলো উনি কেমন খুশি হতেন।

সম্ভব না......
পরলোক নামক বাজে একটা শব্দের জন্য!

আফসোস লাগছে আমি পায়ে শ্যু গলিয়ে অফিসে যাওয়ার আগে বাবাকে কোনোদিন জিজ্ঞেসও করতে পারবোনা “তোমার জন্য আজকে কি আনবো আব্বু?”

আমার নেই তো কি হয়েছে........
লেখাটা যারা পড়ছেন তাদের একটা বড় অংশের সুযোগ আছে বাবাকে কিছু দেয়ার।
তাদের জন্য কিছু করার।

কে জানে কাল কে থাকবে,কে থাকবেনা!

উনার জন্য সামান্য একটা চকলেটও কি পারবেনা?

বাবা সন্ধ্যার পর বের হতে দেন না বাসা থেকে?
লুকিয়ে চলে যাও।
কিছু একটা আনো!
উনি তোমার এই পাগলামি দেখে বকা দিলেও আনন্দে গলা ধরে আসবে!

আর হ্যাঁ....এইসব বাবা দিবস,মা দিবস করে লাভ নাই।
বাবা-মায়ের জন্য ভালোবাসা প্রতিদিনই.....কথাগুলো যারা আওড়ান তাদের বলি....

সেটা তো অবশ্যই।
কেউ একজন একবার বলেছিলেন “মুসলমানদের জন্য প্রতিদিনই যদি সমান হতো তাহলে ঈদ থাকতোনা।একদিন সব মুসলমান আনন্দ করার জন্য ঈদ দেয়া হয়েছে।“
তো.......আপনি আপনার বাবকে কি প্রতিদিন গিয়ে বলবেন “আব্বা আমি তোমাকে ভালোবাসি?”
বলার জন্য একটা দিন লাগে.....সেটা ধরে নিন আজকেই!
এটা পশ্চিমা কালচার না ভেবে আজকের দিনটা আপনার বাবার ধরে নিন।
পশ্চিমা কালচার হলেও নিশ্চয় এতে অশ্লীলতা নেই।
এটা আপনিও নিশ্চিত,আমিও।


আর হ্যাঁ , আমি সবসময় আল্লাহর কাছে একটা জিনিসই চাই আব্বুর জন্য.....আমি যদি জীবনে কোনো ভালো কাজ করে থাকি তাহলে তার বিনিময়ে আমার আব্বু যেনো জান্নাতবাসি হোন।

কিছু মানুষকে ভালোবাসা প্রকাশের জন্য কোনো একটা উপলক্ষ্যের দরকার হয়।
সেটা আজ হতে পারে,কালও হতে পারে।
তাহলে কেনো অপেক্ষা..........

সব পিতারা বেঁচে থাকুন প্রতিটি সন্তানের হৃদয়ে...........
আপনাদের জন্য আমরা সব সন্তানের পক্ষ থেকে অনেক ভালোবাসা রইলো.....




মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.