নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুনার যখন মন খারাপ হয় তখন সে মুখে বালিশ চেপে অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করে। একসময় ঘুমিয়ে পরে আর ঘুম থেকে উঠার পর মন একদম ভালো হয়ে যায়। অনেকক্ষণ থেকে তাই সে কান্নার চেষ্টা করছে। কিন্তু কান্না আসছে না। চোখে পানি জমে ঝাপসা হয়ে আছে চারপাশ, অথচ পানি পড়ছে না! কি অদ্ভুত! সে তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের সময়গুলোর কথা ভাবলো । ছোটবেলায় একবার লিফটের ভেতরে আটকা পড়ার কথা ভাবল, কান্না আসলো না। বাবার মৃত মুখটা মনে করার চেষ্টা করতেই মনে পড়ল একবার দরজার আড়ালে লুকিয়ে থেকে বুউউ বলে বাবাকে কেমন করে চমকে দিয়েছিলো সে! হু হু করে হেসে উঠল মুনা! জীবনের প্রথম ও শেষ লিখা প্রেমপত্রটার কথা ভাবল। সারারাত ধরে কাটাকুটি করে মাত্র একটা লাইন লিখেছিল। " প্রিয় ম, তুমি একটা আজব বুড়ো !" মেঘের পুরো নামটা লিখতে তার কেমন জানি লজ্জা লজ্জা লাগছিলো। শেষপর্যন্ত সেই চিঠিটা দেওয়াই হলো না। মেঘের সাথে তুলির কাপল ছবি তুলে দেওয়ার সময়টার কথা ভাবল মুনা। সেদিন কি সে সারারাত বালিশ ভেজায় নি? অথচ এখন সেসব কথা ভেবেও তার গাল বেয়ে একফোঁটা পানি পড়লো না ।
সে জাফর ইকবালের তপুর কথা মনে করলো, অ্যানা ফ্রাংকের সেই ক্ষুধার্ত মুখটা ভাবার চেষ্টা করল, মার্কেজের দুঃসহ দিনগুলো কিংবা ব্রুনোর গ্যাস চেম্বারে চিৎকারটা ...। নাহ, এখনো কান্না আসে নি । তাহলে কি অনিকের কথাগুলোই ঠিক? সে একটা দুশ্চরিত্র, নির্লজ্জ, নিষ্ঠুর আর ধোঁকাবাজ মেয়ে?
দুই মাসের বর অনিকের এই কথাগুলার জন্যই আসলে তার মন খারাপ । অনিকের তো কোন দোষ নেই । কেউ যদি নববধূর গোপন ডায়রি খুঁজে পায় আর সেখানে পাতা ভর্তি কেবল একটা নাম থাকে, তাও আবার অন্য পুরুষের , তারপর মেজাজ খারাপ না করে তাহলে ত সে মানুষ না; ফেরেস্তা!
মুনা অবশ্য চেষ্টা করেছিল বিয়ে না করতে। কিন্তু বিধবা মায়ের করুণ চোখের দিকে তাকিয়ে রাজি হতে হয়। বিয়ের পর মেঘের কথা না ভাবার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারে নি! ডায়রিটা এমনভাবে লিখা যেন মেঘের সাথে তার রোজ কথা হয়! অনিককে এখন কে বুঝাবে এইসবই কাল্পনিক! ভার্সিটির পরে মেঘের সাথে একটা বারও কথা হয় নি! কথা হওয়ার কথা ও তো না!
কান্নার চেষ্টা বাদ দিয়ে মুনা ঘুমের ওষুধ খুঁজে । একটা সেডিল বা ডরমিকাম । হঠাত করে একটা বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনে মুনা । তাদের বাসায় বাচ্চা আসবে কোথা থেকে! অথচ স্পষ্ট শুনা যাচ্ছে কান্নার শব্দ। বিছানা, বাথরুম, রান্নাঘর - নাহ কোথাও কোন বাচ্চা নেই। ভালো করে কান পাতে মুনা । শব্দটা মনে হচ্ছে , মনে হচ্ছে, তার পেটের ভেতর থেকে আসছে! মুহূর্তের ভিতর শব্দটা জোরালো হয়ে যায়। বাচ্চাটা প্রচণ্ড চিৎকার করে কাঁদতে থাকে! জলজ্যান্ত একটা বাচ্চা পেটের ভেতরে ঢুকে কিভাবে! মুনার মাথা কাজ করে না। বের করতে না পারলে বাচ্চাটা মনে হয় মরেই যাবে। রান্নাঘরে গিয়ে ফল কাটার চাকুটা হাতে নেয় মুনা। যেভাবেই হোক বাচ্চাটাকে বের করতে হবে্্,
পুনশ্চঃ খবর- রাজধানীতে গৃহবধূর বীভৎস লাশ উদ্ধার; স্বামী আটক ; আত্মহত্যার কথা বললেও পরকীয়ার জেরে হত্যা করা হতে পারে- বললেন তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা।
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:২৬
আয়নিত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৩৯
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: ক্লাসিক হয়েছে
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:২৭
আয়নিত বলেছেন: ধন্যবাদ!
৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:২৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
বিশ্রী ছবি, হতাশ আমি
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:২৮
আয়নিত বলেছেন: হতাশ করার জন্য দুঃখিত
৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৩৯
জীবন সাগর বলেছেন: একটা মৃত আত্মার কথাগুলো এত সুন্দর করে সাজিয়েছেন, পড়তে পড়তে মনে হলো কোনো উপন্যাস পড়ছি। অসাধারণ লিখেছে। কল্পনা আর বাস্তবিকতার মিশ্রণ জীবন্ত কোন কাব্য!
লেখককে অসংখ্য শুভেচ্ছা
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:২৯
আয়নিত বলেছেন: ধন্যবাদ!
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৪৯
আয়নিত বলেছেন: যদিও আপনি মৃত আত্মার কথা ভেবেছেন, কিন্তু আমি অন্যকিছু ভেবেই লিখেছি! যাইহোক, ধন্যবাদ!
৫| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৬
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ আয়নিত।
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২২
আয়নিত বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
৬| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১১
সুমন কর বলেছেন: শেষটা দারুণ। +।
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৫০
আয়নিত বলেছেন: ধন্যবাদ!
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:৫৬
কালীদাস বলেছেন: চমৎকার লেখা বেশ লাগল