নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ মানেই মনের কথা খুলে বলা।

আজমাঈন মুগ্ধ

ব্লগে ব্লগে চলবে আড্ডা,খেলা হবে সামনাসামনি।

আজমাঈন মুগ্ধ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিশোধ!!!!

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৩

প্রেম: ১
স্কুল জীবনের শেষদিক থেকে তার সাথে সম্পর্ক ছিল। স্কুল পালিয়ে দেখা করা, ঘুরে বেড়ানো, তার দেয়া একই চিঠি হাজারবার পড়া, ভবিষ্যতের রঙিন স্বপ্নবোনা, সবই চলেছিল টানা ৩ বছর। তারপর HSC পরীক্ষার আগে হঠাত মেয়েদের সেই পুরাতন ডায়লগ, “বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে, ছেলে ইটালী থাকে………..”
: তুমি মেনে নিলে???????
“আমার কিছু করার ছিলনা………ও…….তাছাড়া……..”
অত:পর আমার এস.এস.সি’তে করা নজরকাড়া রেজাল্টের সাথে যোগ HSC লজ্জাকর রেজাল্ট।
তবে দেড় বছরের মধ্যে অন্ধকার জগত থেকে ফিরে আসতে পারলাম, বন্ধুদের সাহায্যে আর মা-বাবার করুন মুখের দিকে তাকিয়ে।
.
প্রেম: ২
ভার্সিটিতে প্রথম থেকেই লেগে থাকলাম ভালো রেজাল্ট করার জন্য।
বন্ধু, পড়াশোনা, সাহিত্য সব কিছু নিয়ে ভালোই চলছিল লাইফ। ৪র্থ ইয়ারে ঝড়ের বেগে জীবনে আসল ‘রূপমা’। হ্যা আমি ওকে রূপমা বলেই ডাকতাম। এত সুন্দর এবং এত সরলা মেয়ে আমি আর কখনোই দেখি নাই।তার হাসিতে ছিলো সকালের মিষ্টি রোদের মিষ্টতা ছিলো। প্রেমে পড়লাম, শুধু পড়লাম না উথাল-পাথাল অবস্থা। পড়ালেখা টেবিলে রেখে সারাদিন শুধু ঘুরে বেড়াই। এভাবে মাস্টার্স শেষের দিকে।ঠিক তখনই আবার সেই বহু-পুরাতন কথাটা শুনতে হয়, “বাবা-মা, আমার জন্য এক ফরেনার ছেলে ঠিক করে ফেলেছে, তুমি কিছু একটা কর প্লিজ….”
.
আমারতো আর ৪/৫ মাস পরেই মাস্টার্স শেষ হয়ে যাবে, তুমি যেমন করেই হোক আমাকে শুধু এইকয়টা মাস সময় দাও…. শুধু এ্টুকু বলেই বসে থাকিনি।আমি সাহস করে তার বাবার সাথে দেখা করলাম। তার শিক্ষিত বাবা চিরাচরিত একটা কথা বলেই আমাকে চরম অপমান করলেন।
“তুমি পড়ালেখা শেষ করে যতদিনে প্রতিষ্ঠিত হবে, ততদিনে আমার নাতনিই বিয়ের উপযুক্ত হবে” এবং আমার সাথে সেই ফরেনার ছেলের তুলনা করে তার সৌর্য-বীর্যর একটা ক্যারিশমা দেখিয়ে দিলেন।
.
অত:পর আমার ভালোবাসার রূপমার রূপান্তর ঘটে খুব দ্রুত এবং একসময় আমি স্পষ্ট বুঝতে পারি সে এখন আর আমার সেই সরলা রূপমা নয়।
আসল মজাটা মনে হয় তারপর:
৭/৮ মাস পরেই আমার শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে বিদেশ যাওয়ার সব কনর্ফাম হয়ে গেল। এরপরই দেখতে লাগলাম, আমার চারপাশের অনেক পরিবর্তন। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোন না কোন পাত্রীর সন্ধান নিয়ে আমার এলাকার সুহৃদয়া আন্টিরা আসতো। কারণ তাদের মতে আমার নাকি এখন ডিমান্ড ভালো !
.
প্রথমে অস্বস্তি লাগতো, পরে মাথায় বুদ্ধিটা আসে। আমিও একের পর এক পাত্রী দেখতে লাগলাম (অবশ্যই মর্ডাণ স্টাইলে রেস্টুরেন্ট বা পার্কে) এবং আমার ভালো মানুষী টাইপ চেহারা নিয়ে মেয়েগুলির সাথে আলাপ করতাম, ফোন নাম্বার রাখতাম।
এবং সবার সাথেই এমন ভাব করতাম যে, আমি তাকে ছাড়া আর কাউকেই বিয়ে করবো না। ৪টা মেয়ের ফ্যামিলিই জানতো আমি তাদের মেয়েকেই পছন্দ করি এবং আগে হোক পরে হোক এমন সুপাত্র!!!হাতছাড়া হচ্ছে না।
অতএব, লে বাবা মজাটা করে নে। আমার অতীতের সব অপমান আমি একে একে তুলে নিতে লাগলাম। ৩/৪ বছর সম্পর্ক রেখেও, শুধু পবিত্র একটা সম্পর্কের জন্য প্রেমিকার হাতধরার বেশি কোনকিছু মনে স্থান দেই নি, সেই আমি ২ সপ্তাহের রিলেশানে ফরেন পাত্র হিসেবে তেমন কোন বাধাই পাই না!!!কেবল শুনি…… “তোমাকে দেখে মনেই হয় না, এত দুষ্ট তুমি !!!….”
.
মনে মনে হাসি আর ভাবি…এইকথাটা সে কয়জনকে বলেছে!!!
আবার অনেক সময় আশ্চর্য হই, সব মেয়ে একই ডায়লগ দেয়…..যেমন “এ..ই..ই গায়ে হাত দেবে না প্লিজ, লোকে দেখবে” আমি গায়ে অবধারিত ভাবে হাত দেই এবং হাসি এই ভেবে ‘তারতো কোন আপত্তি নেই!!!শুধু লোকে না দেখলেই হলো!!!' এবং যার বাসাতেই যাই হবু জামাই এর খুব খাতির,
“এই…….তামান্না দেখে যা কে এসেছে…..তোমরা কথা বল…আমি আসছি” এই ভাবে মেয়ের মা-খালারা আমি না চাইতেই নিরিবিলিতে একটু-আধটু ইয়ে মানে আদর করার সুযোগ করে দেয়।
শেষের দিকে ৪টা মেয়েই প্রায় একই ডায়ালগ দেয়, “তুমি যদি আমাকে বিয়ে না কর, আমার সর্বনাশ হয়ে যাবে, আমি আত্মহত্যা করব” আর আমি কপট রাগ করে বলি –
“ছি! এমন কথা বলতে নেই” (আর মনে মনে বলে আমি বিয়ে না করলেও আরেকটা আরও ভালো ফরেনার পাত্র পেলে একই ভাবে তাকেও এই কথাই বলবে )।
.
আমার বিদেশ যাওয়ার ১ মাস বাকি, সব কমপ্লিট তাই শুধু খেয়ে দেয়ে ফাও ডেটিং করে বেড়াই। প্রায় প্রতিদিনই কারো না কারো সাথে ডেট থাকতো। সবচেয়ে চরম মজা পেলাম আমার একসময়ের রূপমার কাছ থেকে!!!একদিন হঠাত ফোন পেলাম- সেই চিরচেনা কন্ঠ,
“শুনলাম তুমি ক্যানাডা যাচ্ছ……
: হ্যা
“আমাকে একবারও বললে না…..” (কান্না…কান্নার দমকে সে কথাও বলতে পারতেছিলনা, পারেও বটে রূপসীরা,বেশ ভালো অভিনয় করতে!!!)
: সময় হ্য়নি…
“তাই বলে আমাকে বল্লে না…..(কান্না…)”
আমি মনে মনে বলি, তখন ফরেনার সুপাত্র পেয়ে তুমি যেভাবে পাল্টে গেলে তাতে তোমাকে আমার আপন ভাবতেই ঘৃনা হয়।
শুধু মুখে বলি : ব্যস্ত ছিলাম ।
এভাবেই আবার সে প্রতিদিন ফোন করতো, পরে নিজেই বললো তার সেই বিয়েটা হয়নি….. কারণ বলতে চেয়েছিল আমি শুনিনি।
“তুমি কি আমাকে আর ভালোবাসও না?”
এখন আমি কোন মেয়েকেই ভালোবাসি না শুধু তাদের শরীর পাবার জন্য যতটুকু ভালোবাসার ভান করতে হয় ততটুকু করি, আই থিংক দ্যাটস এণাফ।
.
তাকে এই উত্তর দিতে পেরে আমি সত্যিকারের আনন্দ পেলাম। আমার বুক থেকে মনে হয় একটা পাথর সেদিন নেমে গেলো। তারপর আর ফোন করেনি, এবং আমি খুব প্রশান্ত মনে চলে এলাম ক্যানাডা।
.
৫ বছর পর আত্ম-উপলব্ধি:
ঐগুলা ছিল আমার সাময়িক উত্তপ্ত মস্তিষ্কের চিন্তা-ভাবনা। জীবনের অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে এখন বুঝি……..প্রতিশোধ নেয়া বা নেয়ার চিন্তা করাটাই কত বোকামী। এখন অবিরত উত্তম হইবার চেষ্টা করিতেছি…কিন্তুক আমাদের বস শয়তান তো বসিয়া নাই ! tongue emoticon
.
বিদ্র-এই গল্পখানা যদিও আমার কল্পনায় লেখা তবুও বলি এইসব ঘটনা আজকাল হচ্ছেই!!!তাই আমি সেই সব রূপমাদের বলি প্রতারণা আজকে তুমি একজনের সাথে করলা!!!কিন্তু তোমার এই প্রতারণায় কয়জন "আমি" তৈরি হচ্ছে তা কি ভাবো!!!!তুমিও তো কোন ফরেন প্রতারকের পাল্লায় পড়তে পারো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.