সুন্দরী নারীর বোরকা আর হিযাব প্রসঙ্গ

২২ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ৯:৩৩

বোরকা আর হিযাব পরিধানের কারন শুরু হয়েছিল অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে। আরবে কোন তরবারি ধারি বীর পুরুষ যদি কোন মেয়েকে দেখে উত্তেজিত হত তৎক্ষণাৎ সে মেয়েটির সাথে মিলিত হত। মেয়েটি ওই ঘটনায় কতটা কষ্ট পেল বা উপভোগ করল সেটা কোন প্রশ্ন নয়, কারন প্রাকৃতিক কারনে গর্ভধারণ করার পর প্রমানসহ মেয়েটিকে সহজেই দোষারোপ করা যেত এবং সমাজের নারী পুরুষ সবাই সম্মতি দিয়ে তখন ধর্ষিত মেয়েটিকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলত। পুরুষদের কিছু লোক হয়তো ভালো, তারা সম্মতি দিত মেয়েটিকে ঘৃণা করে, বাকিরা নিজেদের দোষ ঢাকতে, এমনকি মহিলারাও তাদের ভাই, স্বামী, বাবার চরিত্র হারানোর ভয়ে মেয়েটির মৃত্যুই নিরাপদ মনে করতো। মেয়েটির বাবা, মার কেমন লাগতো ভাবুন। তখনি গরীব মানুষ আরবে মেয়ে হলে সাথে সাথে মেরে ফেলত, ধর্ষিত আর অপমানিত হয়ে মারা যাবার জন্য দেরী করতো না। কিন্তু কেমন লাগতো ঐ ধর্ষিত মেয়েটির গরীব বাবা মায়ের, ভাবুন। তাদের আরও মেয়ে রয়েছে, তাদের ভবিষ্যৎ কী। তখনি উদ্ভাবিত হোলো পর্দা, যা পুরুষের তাৎক্ষণিক প্রাকৃতিক উত্তেজনাকে উষ্কে দিয়ে মেয়েদের ধর্ষণের ঘটনাগুলো ঘটার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিত। আর আরবের উষ্ণ আবহাওয়ার জন্য বোরকা মানানসই ছিল, দেখবেন আরব পুরুষরাও লম্বা জোব্বা পরে, গরমের হাত থেকে বাঁচার জন্য, আর মেয়েদের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রলোভন থেকে বাঁচার জন্যও বটে। পরে সারা পৃথিবীতে এই বোরকা-হীযাব জনপ্রিয় হয় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা হ্রাসে এর অবদানের জন্য।

এখনো সেই সব ঘটনাই অন্য ভাবে ঘটে। যে মেয়েটির পরিবার সমাজে প্রতিষ্ঠিত তার ধর্ষিত হবার ভয় নাই, কিন্তু বস্তিবাসী গরীব ষোড়শীর প্রতিবেশী জওয়ান ছেলের কামবাই রুখবে কে? ভদ্র পরিবারের ছেলেরা শিক্ষা পায় রিপু দমনের, গরীব রিকশাচালকের সেই শিক্ষা নেবার সুযোগ কোথায়। আর ষোড়শীর কৌতূহল প্রাকৃতিক, দুয়ে মিলে অঘটন ঘটলে ভুক্তভোগী আবার সেই মেয়েরাই বেশী হয়, শেষে এরা হোটেলে উঠে ধনীর মনোরঞ্জন করবে। গরীবের মেয়ে বুদ্ধিমতী হলে বোরকার আড়ালে আব্রু ঢেকে সুন্দর ভবিষ্যতের চেষ্টা অন্তত করবে, আর যে মেয়ের পরিবার সচ্ছল, তার এতকিছু না ভাবলেও চলে।

কিন্তু তবু ধনীর দুলালীর নির্দোষ শৌখিন স্বল্প পোষাক জন্ম দিয়ে দেয় অঘটনের, টিএসসির বাঁধন আর বাড়ীর চাকরের হাতে খুন হওয়া গুলশানের ধনীর দুলালী নওরীনের কথা তো সবাই জানে, অশ্লীলতার শিকার আরও অনেকের কথা আপনারাও যেনে থাকবেন। তো বৈষম্যর শিকার দেশগুলোতে ষোড়শীর আব্রু বাঁচাবে কে?বোরকা-হীজাব একটি ঊপায় হতে পারে কীনা বিবেচনা করুন।

আসুন ধনী দেশগুলোর দিকে তাকাই। ওখানে সবার অধিকার আর নিরাপত্তা টাকার জোরে নিশ্চিত।টাকায় বাঘের চোখ মেলে, তৃপ্তিও যার যেমন চাহিদা কিনে নিতে পারে, ছেলে আর মেয়ে নাই। নিজে দেখেছি যুবতীর বক্ষে হাত দিয়ে গোরা যুবক হেসে বলে, IT'S CALLED AWKWARD. মেয়েটিও জানে এটা ঐ পর্যন্তই, মজা হিসেবে নিয়ে হেসে উড়িয়ে দিয়েছে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, নিশ্চিত নিরাপত্তা, মর্যাদা যে শ্বেতাঙ্গিণী্র আছে তার কাছে এইসব ব্যাপার না। কিন্তু যে মেয়ের কাছে এই সব ঢলাঢলি অশ্লীলতার শামিল, সে প্যারিসেও হী্যাব পড়ার অধিকার চাইতে পারে আর বৈষম্য, অনাচারএ জর্জরিত সমাজের মেয়েদের জন্য বোড়কা-হী্যাব অতি আবশ্যক বটে, নিজেদের ভালোর জন্য। কারণ ছোট্টো একটা স্বাভাবিক ঘটনাও এসব সমাজে মানুষের জীবনকে নর্দমায় স্হায়ী করে দিতে পারে যার থেকে হয়তো প্রস্তর নিক্ষেপের মৃত্যুও শ্রেয়।

ব্লগে যারা আসে, লিখে সবার বীচক্ষণতা সমান নয়, রাজনীতি আর ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে লিখা পোস্টগুলো যার প্রমাণ। অনেকে অনেককে অনুকরনও করে। আমি কিন্তু দুই কলম যা লিখি, ভয়ে ভয়ে লিখি, আমার কোনও ভ্রান্ত ধারণা বা নিছক রসিকতাকে আত্মস্থ করে কারো যেন ক্ষতি না হয়ে যায়।

৫ টি +২/-০