![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষের স্বভাব হচ্ছে পিছন দিয়ে টেনে ধরা ।সে চায়না তার সামনে দিয়ে কেউ এগিয়ে যাক ।খুব অল্প সংখ্যক মানুষ এই স্বভাবের বাইরে থাকতে পারে ।যুগে যুগে তারাই মহাপুরুষ হয়েছে,হচ্ছে,হয়ে যাবে ।।(প্রথম লাইনটা আমার স্কুল জীবনের প্রিয় শিক্ষক জাবেদ স্যারের ।পরের লাইনগুলি আমার লেখা)
আজ ৭ নভেম্বর ।
দিনটিকে ঐতিহাসিক বলবো
নাকি কলংকের শুরু বলবো
সেটা বুঝতে পারছিনা ।
১৯৭৫ সালের আজকের
এই দিনে দেশে একটি
অস্থিতিশীল পরিস্তিতি
হয়েছিল ।
আমি এ প্রজন্মের ছেলে ।
ঐ ঘটনা আমার জন্মের
দুই যুগ আগে ঘটেছে ।
তবে কিছু জানিনা তা নয় ।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের
চেতনা আমি বুকে ধারণ
করছি ।
যতোটুকু জানি বা আমার
চেতনায় ঐ দিনটি সম্পর্কে
যা আসছে সেটাই তুলে
ধরছি-
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর
ব্রিগেডিয়ার খালেদ
মোশাররফের নেতৃত্ব মেজর
জিয়াকে আঁটক করা হয় ।
মেজর জিয়া ছিলেন সিপাহী
জনতার কাছে খুবই জনপ্রিয় ।
উল্লেখ্য,
মেজর জিয়া তত্কালীন
সেনাবাহিনী প্রধান ছিলেন ।
ঐ সময়ের আরেক নায়ক
কর্নেল তাহের (জাসদ এর প্রতিষ্ঠাতা) তখন চট্টগ্রাম
ছিলেন ।
কর্নেল তাহের ছিলেন
বীর মুক্তিযুদ্ধা এবং তিনি
১১ নং সেক্টরের কমান্ডার
ছিলে ।
স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তাকে
"বীর উত্তম" উপাধীতে
ভূষিত করা হয় ।
১৯৭২ সালে চাকুরী
জীবন থেকে অবসরে গিয়ে
তিনি পুরোদম রাজনীতিতে
জড়িয়ে পড়েন ।
তিনি ছিলেন মার্কসবাদী
ও লেনিনবাদী অর্থাত্ তিনি
চেয়েছিলেন বাংলাদেশকে
কমিউনিস্ট শাসিত রাষ্ট্রে
পরিণত করতে ।
নিঃসন্দেহে বলা যায়,
যদি কর্নেল তাহের সফল
হতেন তাহলে আজকে
আমাদের পথশিশুদের দেখতে
হতোনা ডাস্টবিনে খাবার
খুঁজতে ।
যাহোক,
ফিরে আসি মূল প্রসঙ্গ ।
কর্নেল তাহের মেজর জিয়াকে
মুক্ত করতে ৬ নভেম্বর
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা চলে
আসেন ।
উল্লেখ্য যে,
সিপাহীদের ভিতর কর্নেল
তাহেরেরও যথেষ্ট জনপ্রিয়তা
ছিল ।
তিনি ঢাকা এসে জাসদের
নেতৃবৃন্দ ও সিপাহী সৈন্যদের
নিয়ে মেজর জিয়াকে মুক্ত
করেন ।
এখানেও উল্লেখ্য যে,
মেজর জিয়া আর কর্নেল
তাহের ছিলেন বন্ধু ।
কর্নেল তাহের বিশ্বাস
করতেন,
মেজর জিয়াও তার
মতাদর্শের অনুসারী ।
কিন্তু ঘটনা ঘটেছিল উল্টো ।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর
মেজর জিয়া মুক্ত হওয়ার
পর ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত
মেজর জিয়া উত্থান চলে ।
মেজর জিয়া এইসময়
রাষ্ট্রক্ষমতার প্রধান হন
এবং তারই নির্দেশে ২৪
নভেম্বর কর্নেল তাহেরকে
গ্রেফতার করা হয় ।
কর্নেল তাহেরের বিরুদ্ধে
মামলা করা হয় এই বলে
যে-
৭ নভেম্বর তিনি বিপ্লবের
নামে দেশদ্রোহীতায় জড়িয়েছে ।
হায় সেল্যুকাস !
যে মেজর জিয়াকে মুক্ত
করা হলো সেই মেজর
জিয়াই কর্নেল তাহেরের দিকে
দেশদ্রোহীতার আঙুল
তুললো !!!
এইটিই হচ্ছে বাংলাদেশের
৪৫ বছরের ইতিহাসের
গুটিকয়েক মিরজাফরী
কর্মের ভিতর অন্যতম
একটি ।
মেজর জিয়া কর্নেল
তাহেরকে সাংঘাতিকরকম
ভয় পেতেন কারন কর্নেল
তাহের ছিলেন
মার্কসবাদ-লেনিনবাদ
সমার্থনকারী ।
বস্তুত,
মেজর জিয়া ছিলেন পাপী ।
সে তার পাপকর্মের শুরু
করতে গিয়ে দেখেন কর্নেল
তাহের একটি বড় বাঁধা ।
তাই তিনি তার ক্ষমতার
শুরুতেই ১৯৭৫ সালের
২৪ নভেম্বর আরো কয়েকজন
জাসদ নেতাসহ কর্নেল
তাহেরকে গ্রেফতার করা
হয় ।
এর মধ্যে,
আমাদের বর্তমান তথ্যমন্ত্রী
হাসানুল হক ইনুও ছিলেন ।
কর্নেল তাহেরকে মিথ্যা
মামলায় দোষী করে
১৯৭৬ সালের ২১
জুলাই ফাঁসিতে ঝুলানো
হয় ।
থু মেজর জিয়ার আত্মার
প্রতি ওয়াক থু ।
ফাঁসির একটু আগে
কর্নেল তাহেরকে তওবা
করাতে একজন মাওলানাক
পাঠানো হয়েছিল ।
কর্নেল তাহের দৃঢ়তার
সাথে বলেছিলেন-
আমি কোনো পাপ করিনি
কখনো,তওবা করার
প্রয়োজন নেই ।
এরপর তিনি দুই রাকায়াত
নফল নামায পড়েছিলেন
এবং একসময় বাংলাদেশের
ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ একজন
বীরকে হত্যা করা হয়
ঠান্ডা মাথায় !!!
তাকে হত্যা করার সাথে
সাথে বাঙ্গালী ইতিহাসের
কালো অধ্যায় শুরু হয় ।
তখন জিয়ার সামনে
বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোর কেউ
ছিলনা ।
তিনি বাঁধাহীনভাবে ও
নির্ভয়ে,
শেখ মুজিব হত্যাকারীদের
ক্ষমা করে দেন,
রাজাকারদের রাজনীতিকে
যুক্ত করেন এবং তাদের
গাড়িতে লাল সবুজ পতাকা
তুলে দেন,
তিনি সমস্ত রাজাকারদের
ক্ষমা করে দেন ।
বাহ ! কি চমত্কার !!
তবে পাপ বাপকেও ছাড়েনা ।
মেজর জিয়াকে চট্টগ্রাম
সার্কিট হাউসে হত্যা করা
হয় অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে ।
তবে এ কথা সত্য যে,
মেজর জিয়া একটি
যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গঠনে
যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন
কিন্তু তার কিছু বিশ্বাসঘাতকতা
ও ইতিহাসকে কালো কালি
দিয়ে ঢেকে দেওয়া তার
অবদানকে মলিন করেছে ।
আর কি লিখবো ?
ও হ্যা আরেকটা কথা,
বিএনপি আজকের দিনটিকে
"জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি"
দিবস হিসেবে পালন করে ।
হাহাহা ।কি হাস্যকর ।
ঐ ঘটনার সময় বিএনপির
তো অস্তিত্বই ছিলনা ।
বিপ্লব করলো জাসদ আর
পালন করে বিএনপি !
এরই নাম বাঙ্গালী ।
বাঙ্গালী জনগন দলকানা ।
দল যদি পাদ মারে তাহলে
তারা পাদের গন্ধকেও
ফুলের গন্ধ বলে বিশ্বাস
করে ।
দেশের জনগনের কাছে
৭ নভেম্বর একটি ধোঁয়াসা ।
অত্যন্ত সুনিপুণভাবে,
এই দেশের ইতিহাস থেকে
কর্নেল তাহেরকে বাদ
দেওয়া হয়েছে ।
আজ টিভি,মিডিয়া সবখানেই
মেজর জিয়া বন্দোনা গাওয়া
হবে কিন্তু ঐদিনের নায়ক
কর্নেল তাহেরের নাম বিএনপি
ভুলেও উচ্চারণ করবেনা !
শেষ করবো ফাঁসির
দঁড়ি পরার আগে কর্নেল
তাহেরের শেষ বাণী দিয়ে-
"বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক"
কর্নেল তাহের আপনাকে
বলছি-
আপনার স্বপ্নের বাংলাদেশ
একদিন ঠিকই গড়া হবে ।
মার্কসবাদ-লেনিনবাদ
ছড়িয়ে যাবে চতুর্দিকে ।
কিন্তু আফসোস,
আপনার হাতে গড়া
জাসদের নীরবতা দেখে !
আপনি যেখানে আছেন
জানি ভাল আছেন ।।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২
Md. Mahbubur Rahman বলেছেন: সত্যি।