বিয়ের পরোটা

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৪৬

জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে এ তিন বিষয়ের টাইম-টেবল নিয়ে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাও সরব হননি। আমরা এ বিষয়ে কি ব্যখ্যা দাড় করাতে পারি। তবে এই তিনের মধ্যে বিয়ে বিষয়টা
বেশ জমজমাট বিনোদন, কেমন যেন একটা সুড়সুড়ি ভাব আছে। তাই ”বিয়ে হবে কবে বা
কেন করছি না” এ বিষয়ে আগ্রহের বা প্রশ্নের অন্ত নাই। আমার বেশ কিছু
অকালপক্ক, বিয়ে বিষয়ে পন্ডিতমন্য, জীবনন্মৃত বন্ধু রয়েছে যারা তাদের
পান্ডিত্য জাহির করার উদ্দেশ্যেই হোক বা সুড়সুড়ির পুলক লাভের প্রত্যাশাতেই
হোক এ ব্যপারটা নিয়ে বেশ জমিয়ে ফেলে।

বিয়ের বিষয়টা সম্পূর্ন সৃষ্টিকর্তার হাতে থাকলেও মানুষ যুগে যুগে কালে কালে
এর বিষয়ে চর্চা করে চলেছে। বিয়েটা আসলে কি বা করতে কি যোগ্যতার প্রয়োজন?
এর সম্বন্ধে Mignon McLaughlin বলেছেন, “A successful marriage requires
falling in love many times, always with the same person” অথাৎ একজনকেই
সারাজীবন ভালবাসতে পারাটাই সফল বিয়ে হিসেবে ধরা যায়। আমার বিঞ্জ বন্ধুরা কি
তা করতে পারছে, ভালবাসা আবার আঙ্গুলের ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিযে যাচ্ছে
নাতো।
“তোমরা যে বল, দিবস রজনী ভালবাসা ভালবাসা
সখী ভালবাসা কারে কয়, সে কি কেবলি যাতনাময়”

বোধকরি এ চরনগুলো কবি ঊনবিংশ শতকের শুরুতে লিখেছিলেন। এ থেকে বোঝা যায় ভালবাসার নোনতা স্বাদ বহু আগে থেকেই বিদ্যমান। যুগে যুগে কালে কালে কবি, সাহিত্যিকরা এর স্বাদের কথা বলেছেন আপন ঢঙ্গে রং মিশিয়ে তাই এটি ক্রমশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এটাও সত্য ভালবাসার মন্ত্র জানে সকলেই কিন্তু সবাই তা প্রয়োগ করতে জানে না। এই মন্ত্রের প্রয়োগ শিখিয়ে পড়িয়ে হয় না, যার উদয় আপনা হতেই আসে। আর বিঞ্জ জনেরা মনে করেন সার্থক ভালবাসার সফল পরিনতি হচ্ছে বিয়ে।

প্রবাদে আছে,
মেয়েরা কাঁদে বিয়ের আগে, আর ছেলেরা বিয়ের পরে। কেন ? তা করলে বুঝব। অনেকে আবার বিয়েকে বলেছেন “দিল্লিকা লাড্ডু” যা খাইলেও পস্তায় না খাইলেও পস্তায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে একমাত্র তসলিমা ছাড়া কোন নারী এ বিষয়ে মুখ খুলেননি। নচিকেতা আবার গানে পুরুষ মানুষকে দু প্রকারে বেধে ফেলেছেন ”জীবিত” - “বিবাহিত”।

বিবাহিতদের এই ভালবাসার স্বাদটা কেমন? যারা ভালবাসাসহ অথবা ভালবাসা ছাড়া বিয়ে করেছেন তাদের বিয়ের পর কখনও মনে হয়েছে কি, বিয়ের আগেই ভালছিলেন! দুঃখিত, আমি আমার মনের জিঞ্জাসাকে শান্ত করতে পারিনি। আসলে বউ এমন একটা মাল যে মালে পিাটাক অথবা আদরকরুক, কোন অবস্থাতেই কেউ মুখ খুলে না। ভাবে বুঝে নিতে হয়। আমার মতে, বিয়ে হচ্ছে দুটি আত্মার পবিত্র মিলন, যার মধ্যে দুজন দু জনের প্রতি প্রেম, সততা, একনিষ্টতা, ত্যাগ ও অপরিসীম দায়িত্ববোধ জড়িত এবং একটি মহৎ প্রক্রিয়া যার মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের বৈধ ভবিষৎ প্রজন্মকে আমন্ত্রন জানাতে পারি। তাই যে সব মহাপুরুষরা তার পুরুষত্বের প্রমান স্বরুপ বিয়ে করে ফেলেছেন, কোন অবস্থাতেই মন খারাপ না করে, মন্ত্র প্রয়োগের আপ্রান প্রচেষ্ঠা করুন, শুভ কামনা রইল।


“পিরিত রতন, পিরিত যতন, পিরিত গলার হার, পিরিত কাঞ্চন পাইল যে জন সকল জনম তারও রে ভাই, সকল জনম তার” বর্তমানে এই পিরেতের বাজার ভাল যচ্ছেনা না, নায়িকার খালি দেও দেও, নায়কের খালি নাই নাই। এভাবেই চলছে, আনেকেই আবার নাই নাই করতে করতে হায় হায় ও করছেন, পুড়ছে মন। এ দিকে “দিল্লিকা লাড্ডুর” বাজারও গরম, স্বামীর আয়ের সাথে মিল রেখে ব্যায় করতে পারেন এমন বউ পাচ্ছেন না স্বামীর বাবারা আবার বউয়ের খরচের কথা মাথায় রেখে আয় করতে পারে এমন স্বামীও পাচ্ছেন না বউয়ের বাবারা । চারিদিকে সংকট। এই সংকটের কারনে তৈরী হয়েছে Friend, Friend মহামারি বা সাঁপ লুডু খেলা সংস্কৃতি। সাঁপ লুডু খেলায় যারা বিশ্বাসী বা পারদর্শি নয় তারা পড়েছেন বিপাকে ডুব দিতেও পারছে না আবার কুলে যেতেও পারছে না। আমার এক বন্ধু অনেক দিন হতে বিয়েটা প্রয়োজন মনে করেও তার আয়োজন করতে পারছে না। হয়ত সাঁপ লুডু খেলা ভালই লাগছে অথবা বাবাদের আয়-ব্যায় হিসাব মিলছে না । আবার অনেকে চুপিচুপি লাড্ডু খেয়ে বসে আছেন, ব্যায়ের কারনে মুখ খুলছেন না। তাহলে ধরনী হয়ত আরও কিছু মহাপুরুষ পেত !

০ টি +০/-০