![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক টুকরো মেঘ পথভুলে একা একা ভেসে বেড়ায় আকাশে।
সে ভাসতে ভাসতে চলে আসে একটা বিরাণ ভূমির উপর। সেখানে একটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে। মেঘটি ভাবল, বোধ হয় ওই গাছটি আমার মতোই একা। আমি যাই না কেন তার কাছে?
একটি পাতাও নেই গাছটির গায়ে, শুকিয়ে গেছে তার শরীর ।
মেঘটি বলে, গাছভাই, তুমি কি আমার মতোই একা? তোমার শরীর-স্বাস্থ্যের এ অবস্থা কেন?
ভীষণ কষ্টের মধ্যে আছি ভাই। আমি একদম একা। আমার কষ্টের কথা কাউকে বলতে পারি না। তুমি কি আমার সাথে থেকে গল্প করবে মেঘভাই? মায়া করে বলল গাছটি।
মেঘটি বলল, অবশ্যই।
গাছটি খুশি হয়ে বলল, আচ্ছা, তাহলে এখন থেকে আমরা দুজন বন্ধু হয়ে গেলাম। কেউ কাউকে কখনও ছেড়ে যাব না। কথা দাও মেঘভাই।
কথা দিলাম, বলে মেঘটি এসে গাছের ডালে বসল। ওমনি মেঘের ছোঁয়ায় গাছটি তরতাজা হয়ে উঠল। কচি কচি পাতা গজাতে শুরু করল। দেখতে দেখতে সবুজ পাতায় আর ফুলে-ফলে ভরে গেল গাছটি। কী সুন্দর গাছ!
পোকা মাকড় ও পাখিরা এসে আশ্রয় নিলো গাছে। তারা মনের সুখে বাসা তৈরি করে সংসার পাতছে। এসব কারণে নিজেকে খুব বড় কিছু মনে করতে লাগল গাছটি। সে নিজেকে রাজা ভাবতে শুরু করল।
গাছটি মেঘের সাথে আর গল্প করে না-খবরও নেয় না। খুব কষ্ট পেল মেঘটা।
মেঘটি বলল, গাছভাই, আমি এমন কী অন্যায় করেছি যে তুমি কথা বলছ না আমার সাথে?
গাছটি তেজ দেখিয়ে বলল, দেখছ না কত ব্যস্ত আমি। কত পশুপাখি আমার ছায়ায় এসে প্রাণ জুড়ায়, এরা আমার ফুল-ফল খেয়ে আমার আশ্রয়ে বেঁচে আছে। তাদের সুখ-দুখ আমাকে দেখতে হয়। শাসন করতে হয়। কারণ ওরা আমার প্রজা। কথা বলার সময় নেই আমার। এখন আমি খুবই ব্যস্ত। বরং তুমি অন্য কোথাও চলে যেতে পারো।
মেঘটি মন খারাপ করে চলে গেল।
একি! মেঘটি চলে যাওয়ার পর গাছটি শুকিয়ে যেতে লাগল। তার পাতাগুলো ঝরে পড়ে গেছে। গাছের পাতা নেই, ছায়া নেই। ধীরে ধীরে তার কাছ থেকে সরে গেল পশুপাখি, পোকামাকড় সব। আগের মত একা ও দুখী হয়ে গেল গাছটি।
এখন আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে দুখী গাছটি। একিদন মেঘটি আরেকটি মেঘের সাথে কথা বলতে বলতে হাসতে হাসেত উড়ে যাচ্ছে। গাছটি মেঘবন্ধুকে অনেক করে ডাকল কিন্তু মেঘটি তার দিকে ফিরেও তাকালো না।
©somewhere in net ltd.