নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়াশোনা করি। লেখালেখি করি। চাকরি করি। লেখালেখি করে পেয়েছি ৩টি পুরস্কার। জাতিসংঘের (ইউনিসেফ) মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১১ ও ২০১৬ প্রথম পুরস্কার। জাদুর ঘুড়ি ও আকাশ ছোঁয়ার গল্পগ্রন্থের জন্য অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬।

বিএম বরকতউল্লাহ

জানতে চাই।

বিএম বরকতউল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পিকা: তিন কন্যার মা

২৭ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৩

পিতামাতাহীন রমেলাকে চোখের জলে স্বামীর সংসার ছেড়ে ভাই ভাবীর সংসারে এসে আশ্রয় নিতে হয়েছে। রমেলার দোষ, সে বারবার কন্যা সন্তানের জন্ম দিচ্ছে। পরিবারের সবাই যেখানে পুত্রসন্তান চাইছে সেখানে বারবার কন্যা সন্তান জন্ম দেয়াটা রমেলার ধৃষ্টতাই বটে। পুত্রসন্তান জন্মদানে অক্ষম অযোগ্য বউ দিয়ে আর কাজ নেই। অতএব ওকে তাড়াও। অকথ্য জ্বালা-যন্ত্রনা আর অত্যাচারে জর্জরিত রমেলা দুর্বল শরীর নিয়ে অভাগা তিনটে কন্যাসন্তানসহ যখন ভাইয়ের সংসারে এসে উপস্থিত হলো তখন ওই পরিবারের ওপর যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।

স্বামীর সংসার থেকে বিতাড়িত হয়ে যে কন্যা বা বোন বাপ ভাইয়ের সংসারে এসে হাজির হয় - সমাজ সংসারে তারচেয়ে ভারী বোজা আর হয় না। রমেলার ভাগের পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগ করছে যে ভাই সেই ভাই ভাবীর সাথে মাস দেড়েক থেকেই রমেলা বুঝতে পেরেছে সে উত্তপ্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনূনে পড়েছে। ভাতের বদল খোটা খেয়ে আর পাড়া পড়শীর ফিসফিসানীর তান্ডবে দিশেহারা রমেলা বহুবার স্বামীর সংসারে ফিরে যাওয়ার আকুতি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু পুত্রসন্তান জন্মদানের নিশ্চয়তা না থাকায় তার স্বামীর সংসারে যাওয়াটা অনিশ্চিত হয়ে গেল। নিজের জীবন যায় কিন্তু সন্তান ছাড়ে না রমেলা।

উপায়হীন রমেলা এতে ভেঙ্গে না পড়ে এনজিও হতে ঋণ তুলে নতূন জীবনে প্রবেশ করে। প্রতিবেশী নূরীর সহযোগিতায় সে পান, সুপারি, তেল, শূঁঁটকি ও চকোলেট কিনে এনে এলাকায় ফেরি করে বিক্রি করতে থাকে। অবলা নারীর সাথে বিপুলা পৃথিবীর কঠিন বাস্তবতার দূরত্ব যতই কমতে থাকে ততই সফল হতে থাকে সে। নিজের আয়ের টাকায় সে এক কামরার ছোট একটা ঘর করে আলাদা থাকতে শুরু করে। নিজের ঘরটাকেই সে আয় উপার্জনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করে। এক কামরার একটি ঘর আত্নপ্রত্যয়ী রমেলার সামনে সম্ভাবনার নতুন দুয়াল খুলে দিল। তিন কন্যার দুর্ভাগা মা রমেলা জীবন সংগ্রামে জয়ী হয়ে এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আত্ননির্ভরশীল নারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তোলে।

এখন তার স্বামী আদরের তিন কন্যা ও ভাগ্যবতী স্ত্রীকে সংসারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য অনেক কাকুতি মিনতি করছে। রমেলা ক্ষোভে, অভিমানে স্বামীর ঘরে আর যাবে না বলে তাদের জানিয়ে দেয়। কিন্তু আপন ঘরের লক্ষ্মী পরের ঘরে থাকবে কেন? তারা রমেলাকে সসম্মানে বাড়িতে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য এলাকার মুরুব্বী ধরেছে। মুরুব্বীরা ষ্পষ্ট বলে দিয়েছে, সংগ্রামী রমেলা এখন স্বামীর ঘরে যাবে কি যাবে না এটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ব্যাপার।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:২৩

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: বাস্তব জীবনের প্রকৃত চিত্র গল্পে ফুটে উঠেছে,সুন্দর গল্প।

২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:২৯

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: স্বাগতম।
অশেষ ধন্যবাদ।

৩| ২৭ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৩

ওমেরা বলেছেন: আমাদের বাসায় একটা মেয়ে কাজ করত তার বাবা তার মাকে তালাক দিয়ে ছিল পর পর ৩ কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য ।তার মা অবশ্য গল্পের রামেলার মত আত্মনির্ভরশীল হতে পারেন নাই কষ্টকর ভাবেই জীবন যাপন করেছেন ।

ধন্যবাদ সুন্দর গল্পের জন্য ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.