![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক ছিল অত্যাচারী রাজা। কারণে-অকারণে মানুষ ও পশু-পাখিদের ধরে অত্যাচার করে আনন্দ পেতেন তিনি। কেউ পছন্দ করত না রাজাকে। মনে মনে সবাই ঘৃণা করত তাঁকে। এটা রাজা জানত। তবুও কমতি ছিল না তাঁর অত্যাচারের।
একদিন রাজা হাতি চড়ে শিকার করতে বের হলেন। তার সাথে রয়েছে সিপাই, পাইক-পেয়াদা আর কোতোয়াল। সবাই হাতির পিঠে চড়ে বেরিয়েছেন। তাদের কোমড়ে তলোয়ার।
পথের ধুলোবালিতে বসে খেলা করছিল একটা শিশু।
রাজাকে দেখে সবাই ভয়ে দৌড়ে পথ ছেড়ে পালিয়ে গেল। পথের শিশুটি আপনমনে খেলা করতে লাগল।
সবার সামনে রাজার হাতি। পথের মাঝে শিশুটিকে দেখে রাজার হাতি দাঁড়িয়ে গেল। আর সাথে সাথে পেছনের সব হাতিও গেল দাঁড়িয়ে।
রাজা কঠিন গলায় বললেন, দাঁড়ালে কেন?
হাতিচালক বলল, একটি শিশু পথের ঠিক মাঝখানে বসে খেলা করছে রাজামশাই। সরছে না।
সরছে না? রাজা শিশুটিকে লক্ষ করে বললেন, কে রে তুই, আমার পথ আগলে বসে আছিস? সর।
তোমরা সরে যাও। দেখছ না আমি যে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলছি। আমার পুতুল এখন যুদ্ধ করতে যাবে। পথ ছেড়ে দিলে যুদ্ধে যাবে কিভাবে? বলল শিশুটি। সে তার পুতুলসেনাকে যুদ্ধে পাঠাবার জন্য তৈরি করে দিচ্ছে। খুব ব্যস্ত সে।
রাজা শিশুর কথা শুনে আর তার ব্যস্ততা দেখে রেগে আগুন হয়ে বললেন, এই ছোকরা, জানিস কার পথ আগলে বসে আছিস আর কার সাথে কথা বলছিস তুই? এত বড় সাহস!
শিশুটি কারো দিকে না তাকিয়ে বলল, আমার পুতুল এখন যুদ্ধে যাবে। আমি তাকে রেডি করে দিচ্ছি। তলোয়ার কই খুঁজে পাচ্ছি না। সে মাথা ঘুরিয়ে এদিক-ওদিক খুঁজে তলোয়ার পেল না। শেষে একটা দুর্বাঘাসের ডগা ছিঁড়ে পুতুলের কাঁধে বসিয়ে দিয়ে বলল, এই হলো তোমার তলোয়ার। যুদ্ধ করে রাজাকে পরাজিত করবে। কোন ভয় নেই। আমি আছি তোমার সাথে। যুদ্ধ করতে করতে রাজাকে শেষ করে ফেলবে তুমি। তারপর তুমি হবে সেনাপতি আর আমি হব রাজা। যাও, যাও, হা: হা:।
অধৈর্য হয়ে উঠলেন রাজা। তিনি কঠিন গলায় বললেন, এই ছোকরা কত বড় দুঃসাহস তোর। সরবি তো সর নইলে এই তলোয়ারের আঘাতে টুকরো টুকরো করে ফেলব তোকে।
শিশুটি বলল, আমি যুদ্ধ করে রাজা মারব। তারপর আমি হব রাজা। আমি সরব কেন? তুমি ওপাশ দিয়ে চলে যাও।
রাজা উত্তেজিত হয়ে আদেশ করল, পিষ্ট করে ফেলো বেয়াদব ছোকরাকে।
হাতিকে আদেশ করা হলো। হাতি শিশুটিকে এড়িয়ে সামনে এগিয়ে গেল। রাজা পেছনে তাকিয়ে দেখে শিশুটি আগের মতোই বসে খেলা করছে। ব্যাপার কি?
আাবারও নির্দেশ করল রাজা শিশুটিকে পিষ্ট করার জন্য। হাতি ঘুরানো হলো পিছন দিকে। কিন্তু হাতি শিশুটিকে পিষ্ট না করে হেঁটে সামনে চলে গেল। আবারও হুংকার দিয়ে রাজা বলল, শিশুটিকে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে বুঝিয়ে দাও, রাজার পথ সবার পথ নয়। রাজার পথে থাকলে মরতে হয় পিষ্ট হয়ে।
পথের দুপাশে প্রজাদের বাড়িঘর। প্রজারা ভয়ে যার যার ঘরে আশ্রয় নিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে এসব। তারা এই অত্যাচারী রাজার হাত থেকে শিশুটিকে রক্ষা করার জন্য স্রষ্টার কাছে করুন মিনতি করছে।
শিশুটি পথ ছাড়ল না। আপন মনে খেলছে সে। হাতি এবারও শিশুটিকে পাশ কেটে চলে গেল।
রাজার ধমকে সবাই থমকে দাঁড়াল। রাজা রাগে কাঁপতে কাঁপতে হাতির পিঠ হতে লাফিয়ে পড়লেন পথে। খাপ থেকে সটান বের করলেন তলোয়ার। অবাধ্য হাতিকে গালমন্দ করতে করতে ছেলেটির দিকে এগিয়ে গেলেন। পথের পাশে ভয়ে লুকিয়ে থাকা শিশুটির পিতা-মাতা চোখ বন্ধ করে চিৎকার করে বলল, প্রভু এ যাত্রায় তুমি এই ভয়ংকর রাজার হাত থেকে আমার সন্তানকে রক্ষা করো। তোমাকে কথা দিলাম, আমার সন্তানটি জীবনে বেঁচে গেলে এ রাজ্য ছেড়ে চলে যাব প্রভু।
রাজা তলোয়ার উচু করে শিশুটিকে আঘাত করতে তেড়ে গেলেন এমন সময় ঘটল এক ভয়ংকর ঘটনা। রাজার হাতিটি হঠাৎ চিৎকার করে উঠল এবং শূঁড় দিয়ে প্যাঁচিয়ে ধরল রাজাকে। হাতিটি একটা হ্যাঁচকা টানে পায়ের নিচে ফেলে পিষে ফেলল অত্যাচারী রাজাকে। তারপর হাতিটি শিশুটিকে তুলে পিঠে বসিয়ে সোজা চলে গেল রাজপ্রাসাদে।
শিশুটিকে নিয়ে বসিয়ে দেওয়া হলো রাজসিংহাসনে। অত্যাচারী রাজার বদলে শিশুরাজার শাসনে রাজ্যে ফিরে এল শান্তি।
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:২৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
প্লট আপনার নিজের?
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: সব সময় মাথা শান্ত রাখতে হবে- পোষ্ট পড়ে তাই বুঝলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৪৪
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: সুন্দর গল্প। ক্রোধ,অহঙ্কার মানুষকে পশুর চেয়েও নিচে নামিয়ে দেয়।