নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়াশোনা করি। লেখালেখি করি। চাকরি করি। লেখালেখি করে পেয়েছি ৩টি পুরস্কার। জাতিসংঘের (ইউনিসেফ) মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১১ ও ২০১৬ প্রথম পুরস্কার। জাদুর ঘুড়ি ও আকাশ ছোঁয়ার গল্পগ্রন্থের জন্য অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬।

বিএম বরকতউল্লাহ

জানতে চাই।

বিএম বরকতউল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তির বিয়ে

৩১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩৮


পিতা-মাতার অসম্ভব আদরের একমাত্র কন্যা মুক্তি।
মুক্তি সপ্তম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণিতে উঠতেই তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্যে ব্যস্ত হয়ে ওঠে তার মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনেরা। গোলগাল চেহারার দোহারা বানের সুন্দরী মুক্তি। মুক্তিকে নিয়ে প্রায়ই এখানে-সেখানে ফিসফিস কথা-বার্তা চলে।
সন্ধ্যার পরে মুক্তির পড়ার টেবিলে নানান অজুহাতে প্রতিবেশী ভাবি, দাদিরা এসে নানান ছলে ইনিয়ে বিনিয়ে তার বিয়ের কথাটা বলে ফেলে। ভাল পাত্র, বংশ-মর্যাদা আর ভবিষ্যৎ কাল্পনিক সুখ-শান্তি বিশ্লেষণ করে বিয়ের জন্য চাপাচাপি শুরু করে দেয়। মুক্তি একটা জবাব করলে দশ মুখের বিশটা কথা ছুটে আসে। মুক্তির কোনো যুক্তিই কেউ কানে তোলে না। মুক্তি শত চেষ্টা করেও মুরব্বিদের আদেশ অনুরোধ উপেক্ষা করতে না পেরে ভবিষ্যৎ সংসার জীবনের কথা মনে করে ফুঁপিয়ে কাঁদে।

অতপর মুক্তি তার মা ও বাবার কাছে গিয়ে এখন বিয়ে না করার কথাটি জানিয়ে ভাল উত্তরের অপেক্ষায় বসে রইল। কিন্তু তাঁরা যে জবাব দিলেন, একমাত্র সন্তান হয়ে পিতা-মাতার জীবনের সবচাইতে বড় শখ ও শেষ ইচ্ছে মেটানোর মতো মর্মভেদী আবদারের কথা শুনে মুক্তি একেবারে চুপ হয়ে যায়।
যন্ত্রণাকাতর মুক্তির নীরবতাকেই স¤মতি মনে করে মুরব্বিরা বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে ফেলে। মুক্তিকে আর ইস্কুলে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

বিয়ের আগের দিন তার দুই সহপাঠী তাকে দেখতে এলে সে তাদের কানে কানে পূর্বাপর সকল বৃত্তান্ত বলে দেয়। পিতা মাতার মুখের দিকে তাকিয়ে মুক্তি কোনো সিন ক্রিয়েট করতে চায়নি।

দুই.
বিয়ে বাড়ি। আনন্দ-কোলাহলের মধ্যে বর এসে হাজির। ছাব্বিশ বছর বয়সী অর্ধ শিক্ষিত বর। কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন।
পুলিশ! পুলিশ! বলে আওতা-বেড়া ভেঙে দৌড়ে পালাতে লাগল বিয়েবাড়ির মানুষেরা। । পুলিশ দেখে বিয়ের আনন্দ-হাসি মূহুর্তেই আতংকে পরিনত হল। মুক্তির সহপাঠীরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশ নিয়ে এসে বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত। চেয়ারম্যান অভয় দিয়ে সবাইকে ডেকে নিয়ে বসলেন। পুলিশ কর্মকর্তা বাল্যবিয়ের নানাবিধ মারাতœক অপকারিতা ও আইনে এর কঠোর শাস্তির বিধানের কথা শোনালেন। উপস্থিত লোকেরা বাল্যবিয়ের ভয়ানক পরিনতির কথা বুঝতে পেরে মুক্তির বিয়ের বিষয়ে আফসোস করতে লাগল।

মুক্তি তার আত্মবিশ্বাস, বুদ্ধিমত্তা ও ধৈর্য শক্তির বলে বাল্যবিয়ের অভিশাপ থেকে সে নিজেকে মুক্তি দিয়ে এলাকার অসংখ্য মেয়েকে মুক্তির পথ দেখিয়ে দিল।

ছবি: নেট থেকে সংগৃহীত

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:২৯

ব্লগার মুহাম্মদ রাসেল বলেছেন: ঘঠনাটা আরেকটু বিশদ বললে মনেহয় আরেকটু ভাল হতো। তবে সচেতনতাটুকু পাঠক মাত্রই অনুধাবন করতে পারবেন।

তবে তথ্য আরেকটু চেঞ্জ করা যেত, কারন চেয়ারম্যান গুলো নিজের ভোট নষ্ট হবে বলে পুলিশ নিয়ে নিশ্চয় হাজির হবে না। তবে ইউএনও সাহেব কে দিয়ে কাজটা করানো সহজ।

আফটার অল চমৎকার লিখেছেন ❤

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:২০

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: স্বাগত।
মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ।প্রথমত আমি বড় আকারের লেখা এখন আর সহজে লিখছি না। মানুষের হাতে সময় নেই- ধৈর্যও কম। বড় লেখার পাঠকও কম।
তবে সকল চেয়ারম্যানই খারাপ বা ভোটের চিন্তা করে ভাল কাজ করেন না এটা ঠিক নয়।
এরকম উদাহরণ আছে। সেটা হয়তো খুব কম।
জনসচেতনতাই আসল উদেদেশ্য। যেটি আপনি বলেছন।
ভাল থাকবেন।

২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সুন্দর গল্প।

৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনবদ্য প্রকাশ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.