![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে একটি বিষয় নিয়ে খুব ই বেশি আলোচনা ও সমালোচনা চলছে।
আর তা হল-
#ভ্যাট (VAT)
এবার আসি ভ্যাট এর কথায়। তার আগে বলে নেই, আমিও একজন ছাত্র। এ বছরের বাজেটে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির উপর সরকার ৭.৫% ভ্যাট আরোপের কথা বলছে এবং তা কার্যকরও হচ্ছিল। একজন ছাত্র হিসেবে আমি কেন ভ্যাট দিবো? যেখানে শিক্ষাই হল আমাদের মৌলিক অধিকার, সেখানে আমরা কেন ভ্যাট দিব? ছাত্র আন্দোলনের এ পর্যায়ে এন আর বি ঘোষণা করল (আসলে আন্দোলনের কারণে ঢাকায় অতিরিক্ত মাত্রায় যানজট এবং এর কারণে সৃষ্ট চাপের কারণে বাধ্য হয়েই ঘোষণা করল) , ছাত্ররা নয়, বরং ভ্যাট দিবে বিশ্ববিদ্যালয়। কিছু কিছু ছাত্র শুধুমাত্র এ কথায়ই শান্ত থাকল না। তারা আবারও আন্দোলন করতে লাগল।
#কিন্তু কেন? তাদের তো আর ভ্যাট দিতে হবে না, এ কথাই বলল এন আর বি। তাহলে কেন এই আন্দোলন?
এবার আসি পরবর্তী আলোচনায়। শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ভ্যাট দিবে, কিন্তু এ ভ্যাট দেয়াটাও কি যৌক্তিক আদৌ?? আমরা সাধারণত ভ্যাট দেই কোথায়? যেটা আমরা পণ্য হিসেবে কিনি সেখানেই তো আমারা ভ্যাট দিব। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভ্যাট যেভাবেই যাক, সেটা আসলে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা ফ্যাক্টরি এবং শিক্ষার্থীদের একগুচ্ছ পণ্য হিসেবে বিবেচনা করেই ভ্যাট যাবে। এখানে কত টাকা ভ্যাট দিচ্ছি, সেটা কোনো মূখ্য ব্যাপার নয়। ভ্যাট এর নাম ছাড়া অন্য যে কোনো খাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে টাকা দিতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার, সেখান থেকেই কেন ভ্যাট যাবে? আমরা যারা ছাত্র, তারাও কিন্তু ভ্যাট দেই, তবে শিক্ষা ছাড়া সব খাতেই (যেমন, ফোনে কথা বলা থেকে শুরু করে পাঁচ টাকা দামের ঝালমুড়ি খাওয়ার সময়ও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে) আমরা ভ্যাট দিই। কই তখন তো আমরা আন্দোলন করি না!! কারণ আমরা জানি, একটা দেশের জন্য ভ্যাট কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
#সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি আসে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতো একরকম ব্যাবসাই করছে, তাহলে তাদের ভ্যাট দিতে আপত্তি কোথায়?
এখন কথা হচ্ছে, মানলাম তারা এইসব ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু তারপরও কি আমরা তাদের বলতে পারব তারা ব্যাবসা করছে?? তারা টাকা কামাচ্ছে ভাল কথা, কিন্তু পাশাপাশি শিক্ষার সু্যোগও তো করে দিচ্ছে এদেশের ছাত্রছাত্রীদের। যেখানে, সরকারের সামর্থ নাই এইচ এস সি পাশ করা সব শিক্ষার্থীকে উচ্চ শিক্ষা লাভের সুযোগ দেয়া, সেখানে তারা তো কাজ করে যাচ্ছে। টাকা কামানো আর ব্যবসা করা যে, দুইটা এ সময় ভিন্ন জিনিস, সেটাও বুঝতে হবে সরকারকে।
#এবার প্রশ্ন উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে।
এবার আসি আসল আলোচনায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তো দূরের কথা, কোন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান আছে ঠিকমত, সে প্রশ্ন আমি সরকারের কাছে রাখলাম। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়নের ছাত্র। এটা একটা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতি বছর বাংলাদেশের অন্য যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এখানে শিক্ষাখাতে সরকারের বাজেট থাকে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু তারপরও শিক্ষার মান কোথায় ঠিক?? এখনও আমি ২০বছর আগে তৈরি করা স্যারদের শীট দেখে মুখস্ত করেই পরীক্ষা দিতে যাই। এখনও স্যাররা মান্ধাতার আমলের শীট যেটা বার বার ক্লাসে এসে দেখে দেখে ব্লাকবোর্ড এ তোলার কারণে হলুদ হয়ে যাওয়া সেই পুরোনো ক্লাস লেকচারই আবারও দেখে দেখে নতুন করে তুলেন নতুন কোনো এক ব্লাকবোর্ডএ এবং আমাদেরও বলেন তুলতে। কেউ কেউ পাওয়ায় পয়েন্টে প্রজেক্টরের মাধ্যমে ইংরেজী লেখাকে অনেকটা বাংলায় অনুবাদ করার মত করেই উনার লেকচার শেষ করেন। আরও দেখানো যাবে এমন অসংখ্য উদাহরণ। তাহলে এখানে শিক্ষার মান কোথায়?? নতুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে শিক্ষকরা এখানে আলোচনা করেন কোথায়? তাহলে এখানের মান গেল কোথায়?? এখানের প্রতিটা ল্যাবের কথা তো আর বলারই অপেক্ষা রাখে না। ল্যাবের একটা পুরোনো যন্তের উপর এখনও কাজ করতে হয় ৭-৮ জন মিলে (যার জন্য কেউই কিছু শিখতে পারে না), যেখানে একটা যন্ত্রের উপর একজনেরই শুধু কাজ করার কথা। এই হল দেশের সর্বোচ্চ সরকারি বিদ্যাপীঠের অভ্যন্তরীণ কথার কিয়দংশ!!! তাহলে বাংলাদেশের অন্যান্য কম সরকারি অনুদানে চলা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কি অবস্থা তা চিন্তা করেন।
যেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকারি অনুদান আসে, সেখানেই শিক্ষার মান নেই ঠিকমত, তাহলে যেগুলাতে সরকারি অনুদান আসে না (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়), ওইগুলার অবস্থা অনুমেয়। তারপরও যে ওই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অসংখ্য ছাত্রকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার একটা সুযোগ দিচ্ছে এটাই বা কম কি?? এর জন্য সরকারের কি উচিত না, ওই বিশ্ববিদ্যালয়কে যথাযথ সম্মান দেয়া?? বাহবা দেয়া তো দূরের কথা, উলটা তাদের এই প্রয়াসকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে সরকার।
আমার মতে, সরকারের উচিত যদি দেখেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান এতই খারাপ, তাহলে ভ্যাট এর চিন্তা বাদ দিয়ে কিভাবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মান সম্মত করা যায় সেই চিন্তা করা। তার জন্য একটা তদারকির ব্যবস্থা করা। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, ছোট বেলায় বহু বার পড়েছি এ কথা বইয়ের পাতায় পাতায়। যথেষ্ট হইছে, এবার থামুন। ভ্যাট এর নাম বলে শিক্ষাকে আর পণ্য বানানোর চেষ্টা করবেন না দয়া করে, মাননীয় সরকারের কাছে আমার এই আবেদন।
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৯
Bangladeshi Moinul বলেছেন: ধন্যবাদ। ভ্যাট বিষয়ে আপাতত সুরাহা হল বলে মনে হচ্ছে। সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ শিক্ষাখাতে ভ্যাট "তুলে" নেয়ার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: চালিয়ে যান। -------------------------