![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের ইতিহাসে পর পর বেশ কিছু হূদয়বিদারক ও রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সবচেয়ে হূদয়বিদারক ছিল ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা। এ ঘটনার পর দেশ চরম নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে। যাঁরা ওই শূন্যতা পূরণ করতে পারতেন, তাঁদের জেলে পাঠানো হয়। ওই দিন বঙ্গবন্ধুর জীবন রক্ষার প্রচেষ্টায় দুজন জীবন দিয়েছিলেন। একজন পুলিশের ডিএমপি, যিনি সেদিন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে দায়িত্বরত ছিলেন। অপরজন বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল (পরে ব্রিগেডিয়ার) জামিল আহমেদ। কয়েক বছর আগে তাঁকে মরণোত্তর বীর উত্তম উপাধি দেওয়া হয়।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বঙ্গভবনে খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভা থাকলেও দেশ পরিচালিত হচ্ছিল ছয়জন মেজরের ইচ্ছায়। পরে কয়েকজন অটো প্রমোশনও নেন। সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। তাঁর দর্শন ছিল ওয়েট অ্যান্ড সি। আমি ওই সময় বহু সিনিয়র অফিসারকে মেজরদের কৃপা পেতে বহুবিধ কসরত করতে দেখেছি। এদিকে সেনাবাহিনীতে যে ব্যক্তিটি ১৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকেই মেজরদের সরাসরি বিরোধী হয়ে ওঠেন, তিনি ৪৬ ব্রিগেডের তৎকালীন কমান্ডার প্রয়াত কর্নেল শাফায়াত জামিল।
তখন সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে চলছিল ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। তৎকালীন সিজিএস ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম বঙ্গভবনে ও আর্মি হেডকোয়ার্টার্সে মেজরদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহার মেনে নিতে পারেননি। এরই প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয় ৩ নভেম্বরের পাল্টা অভ্যুত্থান। তাঁর বড় সহায়ক শক্তি ছিল শাফায়াত জামিলের নেতৃত্বাধীন ঢাকার ৪৬ ব্রিগেড এবং পরে জানা গিয়েছিল, উত্তরবঙ্গের ৭২ ব্রিগেড তাঁকে সমর্থন করেছিল, তখন যশোর ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন ব্রিগেডিয়ার মীর শওকত বীর উত্তম, যিনি খালেদ মোশাররফের ব্যাচ-ম্যাট ছিলেন। কুমিল্লা আর চট্টগ্রামে ছিলেন যথাক্রমে কর্নেল আমজাদ আহমেদ চৌধুরী (বর্তমানে প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান) এবং চট্টগ্রামে কর্নেল আতিকুর রহমান (পরে সেনাপ্রধান)।
২-৩ নভেম্বর রাতে খালেদ মোশাররফ পাল্টা অভ্যুত্থানের সূচনা করেন। বঙ্গভবন ঘেরাও করা হলো—ট্যাংকের আওতার বাইরে থেকে। যখন খালেদ-শাফায়াত জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী করে রেডিও স্টেশন, বাংলাদেশ টেলিভিশন দখল করে নিতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই কর্নেল রশিদ ও ফারুক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেন। এ হত্যার ঘটনা বঙ্গভবন, জেল কর্তৃপক্ষ ও মেজরদের কয়েকজন ছাড়া কেউ জানতেন না। ওই দিন ভোর থেকেই দুই পক্ষ মুখোমুখি।
ঢাকা সেনানিবাসের খবর বাইরে যাচ্ছিল না। বঙ্গভবনের খবর সেনানিবাসে আসছিল না। দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতার জন্য মেজর ডালিম আর মেজর নূর কয়েকবার বিভিন্ন শর্ত নিয়ে আসা-যাওয়া করছিলেন। বঙ্গভবনে মোশতাক আর রশিদের সঙ্গেই খালেদের আলোচনা চলছিল। অবশেষে দুপুরের পর খালেদ মোশাররফ জানালেন, মেজররা বঙ্গভবন ছাড়তে রাজি, যদি তাঁদের বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। ওই সময় খালেদের সামনে উপস্থিত ছিলেন কর্নেল শাফায়াত জামিল, রক্ষীবাহিনীর ডিজি ব্রিগেডিয়ার এ এন এম নূরুজ্জামান, তৎকালীন বিমানবাহিনীর প্রধান তোয়াব এবং তৎকালীন নৌপ্রধান কমোডর এম এইচ খান। ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় কর্নেল/মেজর/ ক্যাপ্টেনরা দেশ ত্যাগ করলেন। পরদিন সকালে মোশতাক ও তাঁর মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন সকালেই খালেদ-শাফায়াত প্রথমে জানলেন, আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। কর্নেল/মেজররা খালেদ-শাফায়াতকে বঙ্গবন্ধুর নিকটজন মনে করতেন। ওই মাসের প্রথম সপ্তাহেই ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফকে চাকরিচ্যুত করার গুজবও শোনা গিয়েছিল। ৩-৬/৭ রাত পর্যন্ত বিস্তারিত বিবরণ আমার রচিত বাংলাদেশ রক্তাক্ত অধ্যায় ১৯৭৫-৮১ এ আছে। ৩ নভেম্বরের অভ্যুত্থানের পর গোপনে প্রচার করা হলো খালেদ-শাফায়াত আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় চর। প্রমাণ হিসেবে প্রচারিত হলো ৪ নভেম্বর ১৯৭৫-এ খালেদের মায়ের নেতৃত্বে মহিলা আওয়ামী লীগের মিছিলের ছবি আর ভারতীয় দূতাবাসের তৎকালীন সামরিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার ভোড়ার খালেদ মোশাররফের সঙ্গে দেখা করার প্রয়াস, যা খালেদের নির্দেশেই জাহাঙ্গীর গেটেই বন্ধ করা হয়েছিল।
সাবেক সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান তখন অবসর নিয়ে নিজ বাড়িতেই বন্দী। তাঁর রুমের ফোন বিচ্ছিন্ন করলেও খালেদা জিয়ার রুমের ফোন চালু ছিল। খালেদা জিয়া প্রথম যোগাযোগ করেন জেনারেল ওসমানীর সঙ্গে। অপর দিকে কর্নেল তাহের বীর উত্তম (অব.) তখন জাসদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গণবাহিনী তৈরি করেছিলেন। তিনি আগস্ট ১৯৭৫ সালের আগে থেকেই সেনাবাহিনীতে তাঁর অনুরক্তদের মধ্যে যোগাযোগ ও সেল গঠন করেছিলেন। সেনানিবাসের ভেতরে-বাইরে গুজব আর হ্যান্ডবিল ছড়ানো হচ্ছিল যে দেশ ভারতের দখলে চলে যাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৬-৭ নভেম্বর গণবাহিনীর সহায়তায় সংঘটিত হয় সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান। এ সময় খালেদ-শাফায়াত কর্নেল কে এন হুদা বি বি এবং লে. কর্নেল হায়দার বীর উত্তম ছিলেন বঙ্গভবনে।
এরই মধ্যে খন্দকার রশিদের আর্টিলারি ইউনিট দ্বিতীয় গোলন্দাজ বাহিনী জিয়াকে উদ্ধার করে তাদের ইউনিট লাইনে নিয়ে যায়। উদ্ধার করার পরিকল্পনা ছিল কর্নেল তাহেরের গণবাহিনীর। কিন্তু সেই সুযোগ তারা পায়নি। ওই দিন শুধু ব্রিগেড কমান্ডার শাফায়াত জামিল ছাড়া বাকি তিনজনকেই হত্যা করা হয়। শাফায়াত জামিল বঙ্গভবনের দেয়াল টপকে পালিয়ে যান। সেনানিবাস তখন গণবাহিনী আর গণবাহিনী-সমর্থিত সেনাদের দখলে। অপর দিকে জিয়ার অনুগতরা জিয়াকে ঘিরে রেখেছিল ইউনিট লাইনে। আমি সকালে যখন জেনারেল জিয়ার কাছে হাজিরা দিই, তখন সেনাবাহিনীর ৪০-৫০ জন অফিসার ঢাকা সেনানিবাসে ছিলেন।
৭ নভেম্বর সকালের দিকে কর্নেল তাহের কিছুসংখ্যক গণবাহিনীর সদস্যকে নিয়ে দ্বিতীয় গোলন্দাজ বাহিনীর অফিসে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে অনেক সময় ধরে বাদানুবাদে লিপ্ত হয়েছিলেন। আমি পাশের রুমে অন্য অফিসারদের কাছ থেকে ব্রিগেডের অবস্থান জানার চেষ্টা করছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর কর্নেল তাহের উত্তেজিত অবস্থায় ওই স্থান ত্যাগ করেন। ওই সময় তিনি সেনাদের তরফ থেকে ২১ দফার দাবি রেডিওতে গিয়ে ঘোষণা করার জন্যই চাপ দিতে এসেছিলেন। জিয়া রাজি হননি। তিনি তাহেরের আগমনের আগেই রেডিও-টিভিতে ভাষণ প্রচার করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তাহের যা চেয়েছিলেন, জিয়ার অনুগত সেনারা তা নস্যাৎ করে দিয়েছিলেন।
নভেম্বর ৩-৬/৭ জিয়ার অসহায়ত্ব সেনাদের মধ্যে মমত্ববোধ তৈরি করে। খালেদ-শাফায়াতের প্রয়াসকে ভারত ও আওয়ামীপন্থী ক্যুর প্রচারণায় গণবাহিনী সফল ছিল, যা সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে জিয়ার প্রতি আনুগত্য বাড়াচ্ছিল। খালেদের ক্ষমতা দখলের পর জিয়া অবসরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে দুটি আবেদন করেছিলেন। তিনি তাঁর পেনশন এবং পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই চেয়েছিলেন। বিষয়টি এতই মানবিক ছিল, যা সাধারণ সৈনিকদের নাড়া দিয়েছিল। তা ছাড়া তাঁর সততা ও স্বাধীনতাযুদ্ধের শুরুর ভূমিকা সবারই জানা ছিল। তিনি তাঁর এই ইমেজকে কাজে লাগিয়ে তাহেরকে পরাজিত করেন। গণবাহিনী-সমর্থিত সিপাহিদের হাতে সেনা অফিসারদের নিধনও জিয়ার প্রতি সমর্থনের আরেক কারণ। ওই ক্ষমতার দ্বন্দ্বে দুজনের একজনকে বেঁচে থাকতে হয়েছিল। স্মরণযোগ্য, ওই সময় নেতৃত্বশূন্য দেশে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বই ছিল ভরসা। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় চার নেতাকে হত্যার পর দেশ নেতৃত্বশূন্যতায় ভুগছিল। ওই সময় হাতেগোনা কয়েকজন তরুণ আওয়ামী লীগের নেতা মেজরদের সঙ্গে সহযোগিতা না করায় জেলে ছিলেন, তবে বাদবাকি বাইরেই ছিলেন। আগস্ট ১৫/১৬/১৭ তারিখের মধ্যে ঢাকার ৪৬ ব্রিগেডে ৪০ থেকে ৫০ জন সাংসদ নিজেদের আনুগত্য প্রকাশ করার অনুরোধ করেছিলেন। এসব শুনে তৎকালীন কমান্ডার কর্নেল শাফায়াত জামিল আফসোস করেছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ৭ নভেম্বরের ঘটনা আমাদের দেশের রাজনীতিকে দুই ধারায় বিভক্ত করেছে। ৩ নভেম্বরের ঘটনার প্রভাব রাজনীতিতে তেমন না থাকলেও তিনটিরই যোগসূত্র রয়েছে।
১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সকাল ১০টায় তৎকালীন ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল শাফায়াত জামিল আমাকে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির গেট থেকে ফিল্ম রোল আনতে বললে আমি তাঁর নির্দেশ পালন করতে ড্রাইভার নিয়ে বের হয়েছিলাম। আমি শঙ্কিত ছিলাম যে, হয়তো তৎকালীন আওয়ামী লীগের বিশাল সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগের ইটপাটকেলের মুখে পড়তে হবে। কিন্তু দেখলাম পুরো রাস্তা জনশূন্য। আমি ভেবেছিলাম, যাঁরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য ছিলেন, তাঁদের কেউ নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করে বিশ্ববাসীর সামনে এ হত্যার প্রতিবাদ করবেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধে এমনই হয়েছিল। অথবা মিছিল হবে, ককটেল ইত্যাদি ফুটবে। কোনো কিছুই সেদিন হয়নি। একমাত্র কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম তাঁর অনুসারীদের নিয়ে এ হত্যার প্রতিবাদ করতে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছিলেন। ঢাকায় রক্ষীবাহিনীর প্রায় পাঁচ হাজার সদস্য একটি গুলিও ছোড়েননি।
একইভাবে ৩ নভেম্বরের কাউন্টার-ক্যু, যা সামরিক ক্যুর প্রায় স্বাভাবিক প্রসেস, তাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করে কিছু মুক্তিযোদ্ধাকে বিভিন্ন পন্থী বলে চিহ্নিত করছেন। এর অন্যতম উদাহরণ প্রয়াত কর্নেল শাফায়াত জামিল। রাষ্ট্র কখনোই তাঁর তেমন খোঁজ নিয়েছিল কি না জানি না। তিনি নিজেকে আমৃত্যু সবার কাছ থেকে দূরে রেখেছেন। এমন একজন সৎ, দেশপ্রেমিক ও সাধারণ জীবনযাপনকারী অফিসারের সান্নিধ্য আমি আগেও পাইনি, পরেও পাইনি। এ ব্যাপারে তাঁর আদর্শ ছিলেন জিয়া। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ১৯৭১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে তাঁর কোম্পানি জিয়াউর রহমানের ঘোষণা শুনেই সীমান্ত পাড়ি দিয়েছিল। এখন ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ নিয়ে প্রায় ত্রিমুখী বিশ্লেষণ আলোচনা-সমালোচনা হতে দেখি।
কর্নেল আবু তাহের অত্যন্ত সাহসী অকুতোভয় যোদ্ধা ছিলেন। তিনি প্রথম বাঙালি, যিনি ফোর্ট ব্র্যাগ ইউএসএ থেকে স্পেশাল কমান্ডো ও রেঞ্জার কোর্স করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে একটি পা হারান। তাঁর নিজস্ব ভাবধারায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ভাবধারার জন্য দেশ প্রস্তুত ছিল কি? তিনি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে সহযোগিতা করতে গিয়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পিছিয়ে পড়েন। অথচ এসব বিশ্লেষণ কখনোই কেউ করতে চান না।
আমি জানি, আমার লেখায় অনেকে নারাজ হবেন। যেমন অনেকে আমার বই পড়ে হয়েছেন। কটূক্তিও করেছেন। তাতে ইতিহাস বদলাবে না। হয়তো বা আমার বিশ্লেষণ ভুল হতে পারে। কিন্তু আমি অনেক বিষয় কাছ থেকে দেখেছি বলে লিখেছি। কাউকেই ছোট করার উদ্দেশ্যে নয়। যেসব ব্যক্তির কথা বলেছি, সবাই এ দেশের মহানায়ক ও নায়ক। আমার অনুরোধ, নিজেকে জাহির করার জন্য নয়, ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ করলে আগামী প্রজন্ম ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেবে।
বঙ্গবন্ধু ও তাঁর চার সহযোগীকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশ যে নেতৃত্বশূন্য হয়েছিল, তার জের এখন হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়। তেমনি ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ জিয়াউর রহমান যদি সেনাবাহিনীকে শৃঙ্খলার মধ্যে না আনতেন, তবে দেশ, দেশের শাসনকাঠামো যে আরও সংকটময় হতো, তা-ও অস্বীকার করার উপায় নেই।
আমরা এ ধরনের পরিস্থিতি আর দেখতে চাই না। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানার হত্যাকাণ্ডের পরও আমি শিহরিত হয়েছিলাম। অল্পের জন্য স্থিতিশীলতা রক্ষা পেয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন: কলাম লেখক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার।
প্রথম আলোর ৮/১১/২০১২ তারিখের আর্কাইভ থেকে সংগৃহীত।
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩২
Bangladeshi Moinul বলেছেন: Click This Link
আপু আপনি উপরের লিংক এ দেয়া এই কয়েকটা বই পড়তে পারেন। এখান থেকে অন্তত ৩-৪ টা বই পড়লে আশাকরি আপনি নিজেই ব্যাপারগুলো অত্যন্ত পরিষ্কার হয়ে যাবেন।
২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:২৩
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: সত্যি ইতিহাসে অনেকেরই গাত্রদাহ হয়।
ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।
৩| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২
কামরুননাহার কলি বলেছেন: ধন্যবাদ বই গুলো দেওয়ার জন্য #মাইনুল ভাইয়া
৪| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০৯
রুহুল আমিন খান বলেছেন: ব্যাপারটা হচ্ছে তিন মুক্তিযোদ্ধা অফিসারের গেম অব থ্রোন যেখানে জেনারেল জিয়া নিজ বিচক্ষনতা ও লীডারশিপ ও সুযোগের যথাযথ ব্যাবহার ঘটিয়ে সার্ভাইব করে আয়রন থ্রোনে বসতে পারে। ৭ই নভেম্বরের পরে জিয়া যেমন অনেক সৈনিক অফিসার হত্যা করেছিলো তেমনি এটাও সত্য যে ৭ই নভেম্বরে কর্নেল তাহের ও সৈনিক সৈনিক ভাই ভাই অফিসারের রক্ত চাই স্লোগানে বেশ কিছু অফিসার হত্যা করেছিলো। তাহের এর উৎপাদনশীল সেনাবাহিনী থিওরিটা বেশ ইউনিক ছিলো তবে দীর্ঘদিন কলোনিয়াল সিস্টেমে থাকা একটা সেনা বাহিনীর উপর রাতারাতি প্রয়োগ করার মত ছিলো না। সেনা বাহিনীতে জিয়ার একটা জনপ্রিয়তা ছিলো ৩ নভেম্বরে খালেদ মোশারফ জিয়াকে এরেস্ট করলে সেই জনপ্রিয়তার সাথে সৈনিকদের সহনুভুতি যোগ হয়ে হু হু করে বাড়তে থাকে যা কে কাজে লাগিয়ে জিয়াকে সামনে রেখে তাহের ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিলো কিন্তু জিয়া চোরের উপর বাটপারি করে বসে।
সব চেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল আওয়ামিলীগ বলে থাকে যে খালেদ এর ৩ নভেম্বরের ক্যু ছিলো আওয়ামিলীগ এর পক্ষে কিন্তু বাস্তবে খালেদ ক্যু এর পর বঙ্গবন্ধু পন্থিদের ক্ষমতায় আনার বদলে বঙ্গভবনে ক্ষমতার চেয়ার মাপজোক করায় সময়ক্ষেপন ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সেফ প্যাসেজ দেওয়ার নেগসিয়েশন এ ব্যাস্ত ছিলো, জাতীয় চার নেতার খুন হওয়া সেই নেগসিয়েশনের ফসল কিনা আল্লাহ মালুম। আর এই তাহের এর ক্যু ও আওয়ামিলীগের পক্ষে ছিলো না এবং তাহের এর সাপোটারাই খালেদ কে খুন করে। কিন্তু ৭ ই নভেম্বের পটপরিবর্তনে জিয়ার ক্ষমতা লাভ আওয়ামিলীগের জন্য এত বেশি গাত্রদাহ তৈরি করেছে যে আওয়ামলীগ এখন খালেদ মোশারফের কবরে ফুল দেয় আর কাঁদে আবার তাহের এর কবরেও ফুল দেয় আরো বেশি কাঁদে। তাহের বা খালেদের যায়গায় জিয়া থাকলে হয়তো আওয়ামিলীগ জিয়ার কবরে ফুল দিয়ে বিলাপ করতো আর তাহের বা খালেদ কে ভিলেন বানাতো
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৫
Bangladeshi Moinul বলেছেন: অত্যন্ত যুক্তি নির্ভর কথা। আপনার লেখনি দেখে মনে হল, খুব সম্ভবত এ বেপারে ভালো জানেন। আর তাই আমার মনের একটি প্রশ্ন, খালেদ মোশারফ সেদিন সেনা প্রধান হওয়ার পরে, সাধারণ সৈনিক এবং অফিসারদের অনেকেই তাকে বলেছিল, জাতির উদ্দেশ্যে বেতারে যেয়ে ভাষণ দিতে। কিন্তু খালেদ নাকি বলেছিল, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ কেবল রাষ্ট্রপতিই দিতে পারে, এজন্য উনি দিবেন না। অথচ খালেদ সেদিন ভাষণ দিলে, আজকের বিএনপি না হয়ে খালেদেরই এরকম একটা দল থাকতে পারত। তাহলে খালেদের এরকম আচরণকে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন??
৫| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০০
চাঁদগাজী বলেছেন:
কর্ণেল তাহের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশ প্রেমিক ছিলেন; ক্ষমতা দখলের ব্যাপারে ইডিয়ট ছিলেন; ইডিয়টের কারনে অনেক অফিসারকে অকারণে প্রাণ দিতে হয়েছে, শেষ সেই ঝুলেছে।
জিয়া, তাহের, খালেদ মোশারফদের ভুলের মাসুল গুণছে দরিদ্র দেশবাসী, আজকে দেশ ছেড়ে আরবদের দাস হয়েছে।
৬| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫৪
রুহুল আমিন খান বলেছেন: Bangladeshi Moinul ভাই,
খালেদ এর ক্ষমতা দখলের প্রসেসটা ছিলো হাস্যকর, খালেদ চেয়েছিলো একেবারে সাংবিধানিক ভাবে আইনে যথাযথ প্রয়োগ করে ক্যু করতে যাতে কেউ তাকে অবৈধ ক্ষমতা দখলদার না বলতে না পারে যার জন্য দেন দরবার নেগসিয়েশন করতে করতে অযথা সময় ক্ষেপন করেছে খালেদের উচিত ছিলো আগে ক্ষমতা পোক্ত করা দেশবাসির কাছে সুস্পস্ট জানান দেওয়া বিরোধীদের সাইজ করা তার পর ক্ষমতার সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে ভাবা যেমনটা জিয়া করেছিলো। অভ্যুত্থান বা ক্যু তে তাপা গরম থাকতে থাকতে রুটি শেকতে হয় তা না হলে জীবন দিয়ে মূল্য দিতে হয়
৭| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:২৬
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: জিয়াউর রহমানকে ছোট করার যতই চেষ্টা করা হোক, যতই আদালতের রায় দিয়ে খুনী বানানো হোক, ইতিহাস জিয়াউর রহমানকে মর্যাদা দিবে। একদিন সবাই সত্য জানবে...
৮| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ২:০৭
জগতারন বলেছেন:
কর্ণেল তাহের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশ প্রেমিক ছিলেন; ক্ষমতা দখলের ব্যাপারে ইডিয়ট ছিলেন; ইডিয়টের কারনে অনেক অফিসারকে অকারণে প্রাণ দিতে হয়েছে, শেষ সেই ঝুলেছে।
১৯৭২ থেকে মধ্য ১৯৭৫ বাংলাদেশে হত্যা 'জাসদ'এর কান্ডগুলো, সে এক নির্মম ও কলঙ্ক অধ্যায়।
কর্ণেল তাহের এক দানব !
তাকে নিরমভাবে বিদায় করা!
এই একটা কাজের জন্যই আমি জিয়া সমরথন।
৯| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:২৭
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: প্রথম আলোতে পড়েছিলাম।
১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৯
Bangladeshi Moinul বলেছেন: প্রথম আলোর আর্কাইভ থেকেই নেয়া। পোস্টের নিচে লিংকও দেয়া আছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০৪
কামরুননাহার কলি বলেছেন: এখন সত্যি ইতিহাস জানা আমাদের প্রজন্মের কাছে বেশ কঠিন হয়ে গেছে । কোন বই রেখে কোন বই পড়বো বুজতে পারিনা। একেক বইয়ের মধ্যে একেক ঘটনা লেখা, কারো পক্ষে আবার কারোটা আছে বিপক্ষে। এখন আপনেরাই বলেন কার বই রেখে কারটা পড়বো। আর কেনোই বা ইতিহাসের ঘটানা এক হচ্ছেনা? এই প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারেনা কেনো? বলতে পারেন ভাইয়া।