![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শুরুর হেডিংটার উত্তর একটাই-টাকার জন্য। না হলে এতো অঢেল টাকার বিনিময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে সংক্ষিপ্ত এই আসর কেনো এতো গুরুত্ববহ! টাকায় যে কাঠের পুতুলও কথা বলে! যে কারণে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের রক্তচক্ষু এড়িয়ে না হলেও, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বিপিএলে খেলার ব্যাপারে নিজেদের সম্মতি মৌখিকভাবে জানিয়েছে ৫৫ জন পাকিস্তানী ক্রিকেটার, যারা দ্বিতীয় বিপিএল আসরে খেলার জন্য নিলামে বিক্রী হয়েছেন। অর্থই না অনর্থের মূল হয়ে যায়, এ শঙ্কা দেখা দিয়েছিল ২০১০ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের আগে। তখন এখন যারা বিপিএলের সঙ্গে বড় চুক্তিতে আটকে পড়া, তারা ছিলেন ক্লাবের অধিনায়ক থেকে শুরু করে ম্যানেজার। তাদের কাছে প্রিমিয়ার ডিভিশনে ক্রিকেট লিগে খেলার জন্য বেশি টাকা ক্রিকেটাররা অন্যায্য দাবী করছে বলে মনে হয়েছিল সে সময়। এখন তারাই কাড়িকাড়ি টাকা নিচ্ছেন এবং ক্রিকেটারদের দেয়ার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন। আসলে এতো টাকা আসে কোথা থেকে? যারা দল কিনেছেন তারা কেনো কিনেছেন? কিসের লাভে কিনেছেন? কিসের লোভে কিনেছেন এতো দাম দিয়ে দেশ-বিদেশের এতো দাম দিয়ে? একটা ফ্রেঞ্চাইজি তার দলের টি শার্টে কয়টা লোগো ব্যবহার করতে পারবেন এটা হয়তো অনেকেই জানেন না। দু হাতের কাঁধের দিকে দুটি। কিন্তু একই কোম্পানির নয়। বুকের দুটি। পিঠে একটি। এর মাঝে জায়গা করে নিতে হবে ক্রিকেটারের নাম, বিপিএলের লোগোও। যদি ট্রাউজারের দিকে তাকাই তবে সেখানে দুই থাইয়ের ওপরের দিকে দুটি লোগোর জায়গা আছে। পেছনের দিকে লাগানোর ব্যবস্থা নেই। সুতরাং হিসাব করলে একটি দলের জার্সিতে সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৫টির বেশি স্পন্সর লোগো ব্যবহার করা সম্ভব না। নিশ্চয় টি শার্ট ও ট্রাউজারের জন্য আলাদা আলাদা কোম্পানির লোগো যাবে না! তা হলে কি এমন কারণ যে কারণে যে কোনো কর্পোরেট হাউস কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়ে দলের জার্সি কিনবে? এমন কোন কোম্পানি আছে যার প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপনের চেয়ে এমন জীবন্ত বিজ্ঞাপনের জন্য ঝুঁকবেন? উদাহরণ হিসেবে বলা যায় রংপুর, বা রাজশাহীর ফ্রেঞ্জাইজরা কোন স্পন্সর নিয়ে সেটা কি কারণে বিক্রী করে লাভবান হবে? একই কথা প্রযোজ্য ঢাকার বেলাতেও? টাকা ঢাললে সেই টাকা উঠে আসতে হবে। যে জন্য ক্রিকেট ভারতে ব্যবসার পণ্য। সেই পণ্যে আইপিএল জন্ম নেয়। বিপিএল হাঁটতে শেখে। কিন্তু শুলুক সন্ধানে দেখুন তো টাকা ঢালার কোন কারণ খুঁজে পান কি না। আর ঢাললে কি কারণে টাকা উঠে আসবে? অঞ্জন যে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সকে স্পন্সর করলো, সেই জার্সি কতগুলো বিক্রী করলে লগ্নী উঠে আসবে? এমন অনেক প্রশ্ন ছিল। হাজির হয়েছিলাম দুই ফ্রেঞ্জাইজির কাছে। তাদের দাবী টাকা উঠে যায়। কিভাবে? হিসাব সহজ। বড় চুক্তিতে বড় অর্থে সেটা বিক্রী করে দেয়া হয় সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে। তারপর? তারা তাদের প্রোডাক্টের জন্য বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে নানা ভাবে সেই দলকে ব্যবহার করে। এখন আপনি যিনি এই লেখাটি পড়ছেন তিনি আমাকে বলুন, কতগুলো প্রোডাক্টের বড় বিজ্ঞাপন হিসেবে বিপিএলের বিভিন্ন ক্রিকেটারকে পর্দায় দেখেছেন? এর কোন সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। যদিও একজন দাবী করেছেন তিনি যদি এই মূহুর্তে তার দল বিক্রী করেন তবে খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হবে প্রায় ৮ কোটি টাকা। আমি বললাম কিভাবে? বললো অনেক হিসাব আছে। যারা নেবে তারা বাজার পরিস্থিতি বিচার করেই নেবে। আমি বললাম, ধরুন ফ্লোরা কম্পিউটার রংপুর কিনেছে। তাদের নিজস্ব ব্যবসায়ীক চিন্তা থেকেই ফ্লোরার বড় বিজ্ঞাপন হতে পারেন নাসিররা। সেটা প্রচারের স্বার্থে ঠিক আছে। কিন্তু অর্থের অংকে কতটা যুতসই? ওই টাকা দিয়ে তো কলকাতার চ্যানেলেও নিজেদের পণ্য বিক্রী করার বিজ্ঞাপন ঘন্টায় ঘন্টায় প্রচার করতে পারতো তারা? এর উত্তর নেই। তবে যে টাকা আসে টাকা ঢালা হয় সেগুলো কি শুভঙ্করের ফাঁকি। উত্তর আসলো না। তা নয়। কিন্তু টাকার দিকটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো একটা ক্রিকেট কালচার চালু হয়েছে। যেখানে কালো টাকার রূপান্তর চাইলে সহজেই সম্ভব। এটা একটা যুতসই উত্তর। কিন্তু যে সাতটি ফ্রেঞ্জাইজি দল কিনেছেন, তাদের প্রায় সব্বাই তো সত ব্যবসায়ী। টুকটাক হয়তো এদিক সেদিক হতে পারে। কিন্তু এ জন্য এতো ইনভেস্টমেন্ট? এবার নিশ্চুপ। তারপর একটু ক্রোধ নিয়েই বলা হলো, এটা কর্পোরেট কালচারের একটা পার্ট। এটা আমার মত গণমাধ্যম কর্মীর না জানলেও চলবে। শেষ প্রশ্ন ছিল, পাকিস্তানী ক্রিকেটাররা না আসলে তো স্পন্সর রেট কমে যাবে। না এসে উপায় নেই। ওরা তো না খেয়ে মরবে। জানেন তো আইপিএলে ওদের খেলা হয় না। টাকার অংকে তারপরই বিপিএল। টাকা,হুম টাকা..। কিভাবে আসে কিভাবে বাড়ে সেটার উত্তর জানাতে পারলাম না। দু:খিত।
©somewhere in net ltd.