নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাজমেন্টাল? প্রিজুডিসড? ফ্রিকস? হাইপোথেসিস

২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৪

স্বামী প্রতিদিনকার মতো বাড়ি এসে বউকে ডেকে বলল, মায়া বড়ি দাও। স্ত্রী শুনে অবাক হলেও তাকে এনে দিল আর স্বামী দিব্যি অভ্যাসমতো সেই বড়ি খেয়ে নিল। তারপর বাকিটা ইতিহাস। কী ভাবছেন, ১৮+ রাস্তা ধরেছি সেলেব্রিটি হতে? এইযে, এটার নামই জাজমেন্টাল। লোকটার স্ত্রীর নাম মায়া আর স্বামী খেয়েছিল গ্যাসের বড়ি।
একজন ধর্মীয় বুজুর্গ (প্রকৃত পরিচয় মনে করতে পারছি না) বলেছিলেন, ”তোমাকে যদি কেউ এসে বলে অমুক আমার একটি চোখ গেলে দিয়েছে, সাথে সাথে তার কথার উপর ভর করে রিএ্যাক্ট করো না। হতে পারে, সে নিজে হয়তো ওই লোকের দুটি চোখই আগে গেলে দিয়েছিল।” একজন মানুষ কথা কম বলেন। চুপচাপ নিজের কাজ করেন। অফিসে তার নাম হয়ে গেল ভাবিষ্ট। আসলে কি তাই? কাউকে সালাম দেন, তিনি মৃদু হেসে মাথাটা নিচু করেন। কোনো শব্দ করেন না। ভাবলেন ব্যাটা বেয়াদব। আসলে লোকটা বোবা। আপনি কাউকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালেন তিনি একসেপ্ট করছেন না। ভাবছেন, বেশি দেমাগী। অথচ হয়তো লোকটার নির্দিষ্ট কোনো ছক আছে ফ্রেন্ডলীষ্ট মেইনটেইন করার। অনেকেই আছেন নির্দিষ্ট প্যাটার্ন মেনে চলার। আমারও একটা আছে। কীরকম সেটা, সেটা বলছি না।
দেশ বন্যায় ভেসে যাচ্ছে। অনেকে প্রচুর ডোনেট করছেন বন্যার্তদের সাহায্যার্থে। কেউ কেউ বড় বড় ছবি পোষ্ট করে দিলেন ত্রাণ বিতরণের। ব্যাস একদল নিজেদের এ্যাজাম্পশন ঠিক করে নিলেন। ব্যাটা নাম ফুটাতে চায়। তাই ঢাকঢোল পিটাচ্ছে (অনন্ত জলীলকে নিয়ে এই জাজমেন্টাল কাজটি বেশি হয়।) আসলে হয়তো লোকটার উদ্দেশ্য হল, তাকে দেখে অন্যরাও উৎসাহ পাক। আবার একজন মানুষ কোথাও কোনো ডোনেশন দেয়ার কথা বলেনি। কোনো ছবি নেই। ডোনেশনের আলোচনায় নেই। ব্যাস, লোকেরা তার দুর্নাম শুরু করল, ব্যাটা কিপটা, হৃদয়হীন, কপোট, ভন্ড, দেশদ্রোহী। এমন বন্যায়ও একটা টাকা কোথাও দান করেনি। অথচ হয়তো লোকটি প্রচারবিমুখ। গোপনে হয়তো তিনি এক লাখ টাকা দান করে বসে আছেন।
এক মহল্লায় এক তাহাজ্জুদ গুজার বুজুর্গ আর এক সিঁদেল চোর থাকত। একদিন ফজরের ওয়াক্তে তাহাজ্জুদ গুজার লোকটা পুকুরঘাটে ওজু করতে বসল। একই সময় সিঁদেল চোর সারারাত চুরি করে হাতমুখ ধোয়ার জন্য পুকুরের অপর পাড়ের ঘাটে নামল। বুজুর্গ লোকটা চোরকে দেখে ভাবল, আহা, ওই লোকটাও মনে হয় আমার মতো সারারাত তাহাজ্জুদ পড়ে এখন ফজর পড়তে মসজিদে এসেছে। আর চোর তাহাজ্জুদ পড়া বুজুর্গকে দেখে ভাবল, বেটা নিশ্চই আমার মতো চোর। সারারাত চুরি করে এখন বাসায় যাচ্ছে। এই দৃষ্টিভঙ্গির নাম হল মার্জিনালাইজেশন ও জাজমেন্টাল এটিচুড। আমরা বাঙালীরা প্রচন্ড রকম জাজমেন্টাল। চোখের দেখাতেই কাউকে রাজা উজির বানিয়ে ফেলি। কোনো বিষয়ের তলানীতে যাবার প্রবণতা খুব কম। আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থে একটি কথা আছে, “নিশ্চই অনুমান সবচেয়ে বড় মিথ্যা।” সবচেয়ে ভাল হয়, অন্য একজন কী করছেন বা করছেন না, কেমন করছেন-ভাল না মন্দ-এই ভাবনাটাই না ভাবা। নিজের কাজ ও তার ভাল-মন্দ নিয়ে ভাবুন।
এবার আসুন ইশারার প্রশ্নে। আমি আপনাদের ইশারা সংক্রান্ত দু’টি গল্প বলছি। এরপরও যদি মনে হয় আকলমান্দকে লিয়ে ইশারাই কাফি তো গুড। বলা বাহুল্য গল্প দু’টি সংগৃহিত। গল্প-১: এক বাইকার রাস্তায় বাইক চালিয়ে যাচ্ছেন। হঠাৎ সার্জেন্টের সমন। থামালেন। সার্জেন্ট তন্নতন্ন করে খুঁজে অবশেষে আবিষ্কার করলেন হেলমেটের কাঁচ ঘোলা। ব্যাস, বিশাল অঙ্ক জরিমানা। বাইকার তাকে চোখের ইশারা করলেন। সার্জেন্ট বললেন,”ওইযে দূরে পান দোকানদার আছে ওর কাছে ৫০০ টাকা রেখে চলে যান। বাইকার তো টাউট দ্যা গ্রেট। সে দোকানদারের কাছে গিয়ে বলল, মামা, ওইযে সার্জেন্ট দেখছেন দাড়িয়ে আছে, উনি বলছেন আমাকে ৫০০ টাকা দিতে। তাড়াতাড়ি করেন। দোকানদারতো এমন লেনদেনে অভ্যস্ত। তবুও একটু দোনোমোনো করে তিনি দূর হতে সার্জেন্টকে ডাক দিয়ে হাত তুলে পাঁচ আঙুল দেখিয়ে ইশারা করলেন, “স্যার উঁ উঁ” মানে ৫০০ দেব? সার্জেন্ট তাড়াতাড়ি হাত তুলে ইশারা করল, “উঁ উঁ। বাইকার ৫০০ নিয়ে চম্পট। কিছুক্ষণ পর সুবিধামতো সময়ে সার্জেন্ট দোকানদারের কাছে এলেন টাকা নিতে।অতঃপর কি হল বুঝতেই পারছেন?
গল্প-২: জনৈক রাজা রাতে এক স্বপ্ন দেখে সকালে উঠে ঘোষনা করলেন, যে আমার স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে পারবে তাকে অর্ধেক রাজত্ব ও রাজকন্যার সাথে বিয়ে দেব। ভুল বললে গর্দান কচ করে কেটে নেয়া হবে। তো নানা দেশ হতে লোভে পড়ে লোক আসে, স্বপ্নের তাবির বলে, ভুল হয় আর গর্দান কাটা যায়। এমনি করে একদিন এক পাগল এলো সে দেশে। সে দেখে দলে দলে লোক রাজার দরবারে যায়, আর একটু পর তারা মুন্ডুহীন হয়ে বিয়ারিং চিঠির মতো বের হয়। সে লোকজনকে জিজ্ঞেস করে সত্যিটা জানল। সেও ভাবল ভাগ্য পরীক্ষা করবে। সে রাজাকে প্রস্তাব করল। তবে শর্ত হল কথাবার্তা হবে ইশারাতে। রাজা রাজি হলেন। রাজা তাকে প্রথমে এক আঙুল দেখালেন। পাগল মাথা নেড়ে তাকে দুই আঙুল দেখাল। রাজার মুখ একটু উজ্জল হল। তিনি এবার তিন আঙুল দেখালেন। পাগল প্রবলবেগে না সূচকভাবে মাথা দু’পাশে নেড়ে তার বুড়ো আঙুল রাজাকে দেখাল। রাজাতো খুশিতে ডগোমগো হয়ে ঘোষণা করলেন পাগল পেড়েছে তার সপ্নের তাবির করতে। ব্যাস, রাজত্ব, রাজকন্যা জিতে নিল পাগল। সে চলে গেল। রাজার সভাসদরা রাজাকে জিজ্ঞেস করল ইশারায় তাদের মধ্যে কি কথা হল। রাজা বললেন, আমি তাকে এক আঙুল দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এক ইশ্বর সত্যি, বাকি সব মিথ্যা। সে দু আঙুল দেখাল। তার মানে হল, না, আরো একদল সত্যি আছে-দেবতা। আমি এরপর তিন আঙুল তুলে জিজ্ঞেস করলাম তৃতীয় কেউ আছে? সে বুড়ো আঙুল নাচিয়ে বলল যে, না, আর কেউ নেই। ব্যাস মিলে গেল আমার স্বপ্ন।সভাসদরা এত সামান্য একটা বিষয় ধরতে না পেরে রাজত্ব, রাজকন্যা হাতে পেয়েও হারিয়ে ফেলল ভেবে বেহুশ হয়ে গেল। এরপর সভাসদরা পাগলের বাড়ি গেল। তাকে জিজ্ঞেস করল, রাজা তাকে কি ইশারা করল আর সে কী উত্তর ইশারায় দিল। পাগল বলল, আমার কোর্তার এক পকেটে একটা বিড়ি ছিল। রাজা যখন এক আঙুল দেখাল ভাবলাম তিনি আমার বিড়িটা নিতে চান। আমি ভাবলাম বিড়ি যদি দিয়ে দিই তাহলে অন্য পকেটে তো একটা ম্যাচও আছে। সেটা আর রেখে কী করব? তাই দুই আঙুল দেখালাম মানে হল, না, একটা না, বিড়ি ও ম্যাচ-দুটো জিনিসই দেব। রাজা এরপর তিন আঙুল দেখালে আমি ভাবলাম, ব্যাটা লোভী। আমার হাতের তিন আইক্কাওয়ালা কঞ্চির লাঠিটাও নিতে চায়। আমি ভাবলাম, আমার লাঠিটা দিয়া দিলে আমি মানুষকে ধাওয়া দেব কী দিয়ে? নাহ, ওটা দেয়া যাবে না। তাই বুড়ো আঙুল নাচিয়ে রাজাকে কাঁচকলা দেখালাম। সভাসদরা এবার হার্টফেল হয়ে গেলেন। গল্প শেষ।
এখনও আপনার মনে হচ্ছে আকলমান্দ কি লিয়ে ইশারাই কাফি?

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


এতকিছু টাইপ করার কোন উদ্দেশ্য, বিধেয় আছে?

২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:৪৩

বেচারা বলেছেন: আছে। উদ্দেশ্য ছাড়া কাজ কেউ করে না। আমারও আছে। আমার যেকোনো লেখার প্রধানতম উদ্দেশ্য নিজে যা ভাবি সেটাকে লিখে রাখা। একসময় নিজের ডায়রীতে লিখতাম। এখন নিজের ব্লগে লিখে রাখি। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হল, যদি কোনো পাঠক পড়েন এবং তার কাজে আসে সেই চেষ্টা করা।

২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:৪৮

বেচারা বলেছেন: গাজী ভাই: বেশিরভাগ সময়ই আপনার মন্তব্য বুঝি না। মাথার উপর দিয়ে যায়। মন্তব্যে পঁচালেন নাকি উঠালেন বোঝা ভার হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় ভেংচি দিলেন, মাঝে মাঝে মনে হয় কানমলা। আমার মতো সোজা বান্দাদের জন্য একটু ভাষার বহরটা সরল করবেন প্লিজ।

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এভাবেই চলছে দেশ, রাজনীতি, সুশিল চচ্র্চা, মায় বিশ্ব !

২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:৪৪

বেচারা বলেছেন: এমন করে চিরকাল চলবে না। যখন চলবে না, তখন কী হবে সেটাই ভাবি।

৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৩

নতুন বলেছেন: হুম বেচারা ওয়ালিদ !!

২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:৪৫

বেচারা বলেছেন: কে গো ভায়া আপনি? ডাকিলেন আমারে পুরোনো পরিচয়ে, সেই পুরোনো সুরে। ভুলে যাওয়া পথের ধারে?

৪| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমাদের দেশের মানুষ দেশে ও বিদেশে প্রথমেই বাড়ির কথা জিজ্ঞেস করে তার সম্পর্কে ৯৯% সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। পেইন...

২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:৪৬

বেচারা বলেছেন: বড় অদ্ভূৎ আমরা। আমাদের সাকিব অহঙ্কার দেখালো কি দেখালো না, আমরা ওকে দেমাগী উপাধি দিয়ে দিই। আবার আমরাই মুহুর্তে নিজেদের নিজের মতো করে জ্ঞানী বানিয়ে ফেলি। কী যে আজব দেশ আমাদের।

৫| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:১৪

নতুন বলেছেন: কী ভাবছেন, ওয়ালিদও ১৮+ রাস্তা ধরেছে সেলেব্রিটি হতে? এইযে, এটার নামই জাজমেন্টাল।

লেখায় আপনি দিয়েছেন আপনার নাম.. :)

২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১

বেচারা বলেছেন: হুম। খেয়াল করিনি। তবে নিক বাদ দেব শীঘ্রই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.