নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কাজী সায়েমুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে কিউং হি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ট্রেড পলিসি বিষয়ে মাস্টার্স। জন্ম ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম শহরের দামপাড়ায়। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের বাউফলের ঐতিহ্যবাহী জমিদার কাজী পরিবার। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখিতে হাতে খড়ি। তবে ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত হন। তিনি যুগান্তর স্বজন সমাবেশের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক। ২০০৪ সালে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। পরে ইংরেজী দৈনিক নিউ এজ এ সিনিয়র প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে ২৮ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রেক্টর (সচিব) এর একান্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপিতে লিয়েনে চাকরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামে ন্যাশনাল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। শিল্প সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷বর্তমানে সরকারের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলা ছাড়াও ইংরেজী, আরবী, উর্দ্দু ও হিন্দী ভাষা জানেন। ছোটবেলা থেকেই কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যেকোনো প্রয়োজনে ইমেইল করতে পারেন। [email protected]
চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু। লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে বলি। ১৯৮২ সাল। ম্যাককয় হিমালয়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠতে নেপাল যান। প্রথম কয়েক মাস নেপালের ছোপখাটো পাহাড়ে হাইকিং করে কঠোর প্রস্তুতি নেন। সর্বশেষ তিনি হিমালয়ের সবোর্চ্চ চূড়ায় ওঠতে শুরু করেন। তার সাথে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের স্টিফেন। আরো ছিলেন সুইজারল্যান্ড ও জাপানের আরোহীরা। তাদের সাহায্যে ছিল নেপালের গাইড আর কিছু কুলি। সেসময় হিমালয়ের চূড়ায় ওঠা যেমন ব্যয়বহুল তেমন কষ্টসাধ্য ছিল। ওই সময় ভাগ্যের জোরে পর্বতারোহীরা হিমালয়ের চূড়ায় উঠতে পারতেন। অনেকের জীবন চলে যেতো। অনেক কষ্টে কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে তারা একসময় এমন একটি স্থানে পৌঁছান যে সেখান থেকে হিমালয়ের চূড়া দেখা যাচ্ছিল। এসময় স্টিফেন একটু এগিয়ে ছিলেন। তিনি হঠাৎ একজন ভারতীয় সাধুর দেহের মুখোমুখি হলেন। সামান্য পোশাক পরা এবং তীব্র ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে সে সবে বেঁচে ছিল। স্টিফেন সাধুকে দ্রুত গরম কাপড়ে ঢেকে দেন। দেখলেন, প্রচণ্ড ঠান্ডায় সাধুর হাইকোথার্মিয়া হয়েছে। তিনি দ্রুত সাধুকে তুলে নিয়ে ম্যাককয়ের কাছে নিয়ে গেলেন। ম্যাককয় তাকে নিয়ে ডিলেমায় পড়ে গেলেন। সাধুকে বাঁচাতে হলে দ্রুত ক্যাম্পে পৌঁছাতে হবে। নিচের ক্যাম্পে যেতে হলে কম করে হলেও দুই দিন লাগবে। একবার নেমে গেলে আর ওঠা সম্ভব নয়। কারণ জীবন বাজি রেখে কঠিন পথটা তারা পাড়ি দিয়েছেন। হিমালয়ের চূড়ায় ওঠার জন্য বহু বছর ধরে তারা প্রস্তুতি নিয়েছেন। কঠোর পরিশ্রম ও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। অনেক পাহাড়ে উঠে মহাড়া দিয়েছেন। এখন একজন সাধুর জীবন রক্ষা করতে গেলে সারা জীবনের লালিত সাধ আর দেশের গর্ব বিসর্জন দিতে হবে। বিসর্জন দিতে হতে ইতিহাসে নাম লেখানোর সুযোগ। ম্যাককয় সাধুকে কিছু খাবার, পানীয় ও ওষুধ দিয়ে জাপানির কাছে দিলেন। জাপানি তাকে সেবা শুশ্রুষা করে সুইস ব্যক্তির কাছে দিলেন। সুইস ব্যক্তি সাধ্যমতো সোবযত্ন করে নেপালিদের কাছে তাকে দেন। পরে সবাই তাকে ওখানেই ফেলে রেখে চূড়ার পথ ধরেন। পরবর্তীতে কি হয়েছিলো সাধুর? সবাই সবার কাজ করেছেন। দে ডিড দেয়ার বিট। সবাই সবার অংশ যথাসাধ্য করেছে। তাতে আখেরে সাধুর জন্য মঙ্গলজনক কিছুই হয়নি। ম্যাককয় আফেসাসের সুরে পরবর্তীতে লিখেছিলেন, সাধুর এ অবস্থায় যে প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছিল তিনি কখনই সেই প্রশ্নের উত্তর শিখেননি। পরিবর্তিতে, সাধুর গল্পটি বিশ্ব বিবেককে নাড়িয়ে দেয়। বহু আলোচনা হয়। বহু মতবাদ ও দৃষ্টিভঙ্গি এ বিষয়কে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে। ফলে আরও প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। হিমালয়ের ঢালে, একদল ব্যক্তি আকস্মিক এই ঘটনার জন্য অপ্রস্তুত ছিল। তারা সকলেই 'তাদের কাজ করেছে', কিন্তু একটি জীবনের জন্য চূড়ান্ত দায়িত্ব নেওয়ার জন্য দলটি যথেষ্ট সংগঠিত ছিল না। ম্যাককয় জিজ্ঞাসা করেছেন, কিভাবে, একটি বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে, আমরা কি আমাদের সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রস্তুত করি যাতে তারা নৈতিক সংকটে যথাযথভাবে সম্মিলিতভাবে সাড়া দেয়? নাকি যে যার কাজটাই করে যায়!
যারা এ লেখা পড়ছেন, তাদের কাছে আমার প্রশ্নটা হলো- আপনি যদি ভ্রমণকারীদের অবস্থানে থাকতেন তবে আপনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতেন? হিমালয়ের চূড়া আরোহন বাদ দিয়ে সাধুকে নিয়ে ফেরার চেষ্টা করতেন? আপনার সাথে কেউ কী সঙ্গী হতো? তারা কী ফিরে যেতে রাজি হতো! সঙ্গী না হলে সাধুর সাথে আপনারও জীবন অবসান হতো। এ পরিস্থিতিতে কী করতেন?
দুই.
দ্বিতীয় সমস্যাটা কলেবরে বাড়াবোনা। খুব সংক্ষেপে বলছি।
কল্পনা করুন যে, আপনি একটি জাহাজডুবির পরিস্থিতিতে পড়েছেন। জাহাজটিতে আপনি আরোহী আর সমুদ্রের মাঝখানে সেটি ডুবতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে একটি লাইফ বোট দেখে ঝাপ দিলেন। আপনার দেখাদেখি আরো দশজন ওই লাইফবোটে ঝাপ দিয়েছে। সব মিলিয়ে ১১ জন মৃত্যূভয়ে কম্পমান বিপন্ন মানুষ নৌকায় ওঠেছে। তবে নৌকাটি কেবল সর্বোচ্চ দশজনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এগারো জন ওঠায় লাইফ বোটটিও ডুবতে শুরু করেছে। প্রশ্ন হলো- যাত্রীদের কি করা উচিত? একজনকে লাইফ বোট থেকে ফেলে দশজনের জীবন বাঁচাবেন? নাকি "মারবেন না" নীতিতে লেগে থাকবেন, যার মানে সবাই ডুবে মরবেন?
তিন.
দুটি ঘটনাই নৈতিকতার প্রশ্ন। একজনকে মারতে হবে। নয়তো নিজে মারা পড়বেন। আরেকজনকে মেরে নিজে যদি বেঁচে যান, তাহলে পরবর্তীতে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। বহু দিন আগে এক মানসিক রোগে আক্রান্ত বৃদ্ধের কথা বলেছিলাম। যিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালি উপজেলায় ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে নিজের শিশু সন্তানকে শরীরের সাথে বেঁধে একটি নারিকেল গাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে গাছটি পানির মধ্যে হারিয়ে যেতে থাকে আবার জেগে ওঠে। এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে লড়ে যাচ্ছিলেন পিতা ও পূত্র। পুত্রকে আগেই বলে রেখেছিলেন, যাই হোকনা কেন, সে যেন বাবাকে কোনমতে না ছেড়ে দেয়। একপর্যায়ে বাবার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। তিনি পুত্রকে শরীরের সাথে বেঁধে রাখা গামছাটা খুলে দিলেন। ভারমুক্ত হতে চাইলেন। তবে পুত্র দু হাত দিয়ে শক্ত করে বাবাকে চেপে ধরে। বাবা সংকটের মুহূর্তে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে নিজেই নিজের পুত্রের হাতে জোরে কামড় বসিয়ে দেন। পুত্র হাত ছেড়ে দিয়ে জলের স্রোতে ভেসে যায়। আর তাকে কখনোই পাওয়া যায়নি। পরে বাবা বেঁচে গেলেও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। সংকটে নিজেকে বাঁচালেই যে বেঁচে গেলেন তা ঠিক নয়। চলুন এধরণের সংকটকে মতবাদগুলো কী ব্যখা করছে তা জেনে আসি।
এ বিষয়ে উপযোগিতাবাদ (Utilitarianism) কী বলে! উপযোগবাদী দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, উত্তরটি সহজ: দশটি জীবন বাঁচানো সবচেয়ে সামাজিক উপযোগিতা তৈরি করবে, এবং সেজন্য – উপযোগিতাবাদ অনুসারে – একজনকে হত্যা করা নৈতিক। ইংরেজ দার্শনিক জেরেমি বেন্থামকে আধুনিক উপযোগবাদের জনক ধরা হয়। তিনি এটাকে মৌলিক স্বতঃসিদ্ধ সত্য বলেছেন। তার মতে, এটা হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট সংখ্যার সর্বোৎকৃষ্ট সুখ যেটা হচ্ছে সঠিক অথবা ভুলের পরিমাপদণ্ড। তার শিষ্য জন স্টুয়ার্ট মিলও একই চিন্তা ধারণ করেছেন। তিনি গ্রেটার গুড দর্শন দিয়ে গেছেন। বেশির ভাগ মানুষ যাতে সুখ পায় ভালো থাকে সেটাই নৈতিকতা। এর অর্থ সাধুকে হিমালয়ের ঢালে ফেলে রাখা বা লাইফ বোট থেকে একজন মৃত্যূভয়ে কম্পমান মানুষকে ধরে সাগরে ছুড়ে ফেলে দেয়া। তবে এর পরিণতি যে কী হতে পারে তার প্রমাণ আমি নিজে! একজন বৃদ্ধ মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে আমারই তো সাক্ষাত হয়েছিল। বেনথেম বা জন স্টুয়ার্ট মিল সম্ভবত এমন লোকের দেখা পাননি। আমেরিকা এই গ্রেটার গুড নীতিতে চলছে। নিজেদের ভালো থাকার জন্য অন্যকে ধ্বংস করতে দ্বিধা করছেনা। তাদের নীতি হলো-বেশিরভাগ ভালো থাকতে গেলে অন্যকে হত্যা করা বৈধ। এজন্য তারা বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ ছড়িয়ে দিয়েছে।
নীতি শাস্ত্র (Deontology) কী বলে! জাহাজডুবির উদাহরণে কাউকে হত্যা করাকে সমর্থন করা সম্ভব নয়। কারণ সার্বজনীন নীতি হল: হত্যা করবেন না। হত্যা করা যায়না। অতএব, পরিণতি যাই হোক না কেন, নৈতিকভাবে সঠিক উত্তর হবে লাইফ বোটে কাউকে হত্যা না করা। দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট এ মতবাদ ধারণ করেন। কান্ট বিশ্বাস করতেন যে নৈতিক কাজ সার্বজনীন নৈতিক আইন অনুসরণ করে, যেমন "মিথ্যা বলবে না। চুরি করো না। প্রতারণা করো না।"
পূণ্য নীতিশাস্ত্র (Virtue ethic) বলে ভিন্ন কথা। নিজেকে প্রশ্ন করা দরকার। আমার কী করা উচিত? নিজের আত্মা বলবে আমাকে পূণ্যবান হওয়া দরকার। একজন পূণ্যবান যেটা বলবেন সেটাই নৈতিকতা। তবে জন স্টুয়ার্ট মিল ব্যাখ্যা করেন, "যখন আমি জিজ্ঞাসা করি, আমার কী করা উচিত, তখন পূণ্য নীতিশাস্ত্র আমাকে বলে যে আমার পূণ্যবান হওয়া উচিত। এটি কোনো সাহায্য নয় যদি না আমি জানি যে কোনটি পূণ্য এবং কোনটি আমার পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করতে হবে। আমি কিভাবে এই সাহায্য পেতে পারি? আমাকে বলা হয়েছে যে একজন পূণ্য ব্যক্তি আমাকে উপদেশ দিতে সক্ষম হবেন। কিন্তু আমি যদি কোনো পূণ্যবান ব্যক্তিকে না চিনি? ব্যাপারটা তিনি গোলেমেলে করে দিয়েছেন। তবে ঘুষ দুর্নীতি করার ক্ষেত্রে কখনোই নিজের আত্মা বা পূণ্যবান কেউ বলবেনা- এটা সঠিক। এ ধরণের পূণ্যবান মানুষ পাওয়া কঠিন নয়।
চার.
সবশেষে একটি উদাহরণ দিয়ে লেখায় ইতি টানবো। নীতিশাস্ত্র ও পূণ্য নীতিশাস্ত্রের মধ্যে পার্থক্য কী! ধরুন, একটি শিশু গভীর সমুদ্রে পড়ে যায়। একজন ব্যক্তি উচ্চ ঢেউয়ের বিপদ উপেক্ষা করে তাকে বাঁচাতে লাফ দেয়। অন্য ব্যক্তি লাফ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ এতে তার মারা যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ডিওন্টোলজিস্ট বা নীতিশাস্ত্রবিদ এবং পূণ্য নীতিবিদ উভয়ই নৈতিকভাবে সঠিক কাজ করার জন্য প্রথম ব্যক্তির প্রশংসা করবেন। উপরন্তু তাকে সাহসী হিসাবেও দেখা হবে। যাই হোক, দ্বিতীয় ব্যক্তির অবস্থান অবশ্যই ভুল। সে শুধু পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছিল। সেটা ছিল তার কাপুরুষতা। এটি তার পূণ্যের দাবিকে দুর্বল করে।
অনুরূপ পরিস্থিতিতে, ধরুন শিশুটি বিল গেটসের সন্তান। তাকে রক্ষা করলে এক মিলিয়ন ডলার পুরস্কার পাওয়া যাবে। তাহলে আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি যে দ্বিতীয় ব্যক্তি সম্ভবত সেই শিশু সন্তানকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। কারণ পুরস্কারটি ঝুঁকির চেয়ে অনেক বেশি। ডিওন্টোলজিস্ট বা নীতিশাস্ত্রের বইতে, তিনি একা এই কাজের মাধ্যমে পূণ্যের কাজটি করেন। বিপরীতে, একজন পূণ্য নীতিবিদ বলবেন যে তিনি একজন পূণ্যবান বা সৎ ব্যক্তি তা নির্ধারণ করার জন্য একটি কাজই যথেষ্ট নয়। মোটকথা, তিনি পুরস্কারের লোভে সমূদ্রে ঝাঁপ দিলেও তার ভিতরে কাপুরুষতা বাস করে।
তাহলে বিষয়টা কী দাড়ালো! আইন কানুন আছে বলে কেউ ঘুষ খায়না। তিনি নীতিবান হতে পারেন। এরপরেও একটি ধাপ থেকে যায়। কারণ তিনি পুরস্কারের লোভে বা সবাই ভালো বলবে সেজন্য সৎ হয়েছেন। এরপরেও একটি উচ্চ ধাপ রয়েছে। সেটি হলো- ভার্চু এথিকস। আইন নয়, নিজেকে জিজ্ঞাসা করা- এটা সঠিক কীনা! আমার সাথে এটা যায় কী না? নিজের কাছে বাঁচতে হয়। আর এই বাঁচাটাই এই নশ্বর জীবনে সর্বোত্তম।
পছন্দটা আপনার হাতে।
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
সার্কিট হাউজ, খুলনা।
১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৯
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: মেডিটেশনের শক্তিতে। সাধুরা কঠোর সাধনা করে থাকে। পাহাড়ে বা বিরূপ পরিবেশে এখনো সাধুদের দেখা মেলে।
২| ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৮
নতুন বলেছেন: এই কারনেই আমি বলি, যতক্ষন মানুষের নিজেস্ব একটা জীবন দর্শন তৌরি না হয় ততদিন সে মানুষ হয় না। এই এনলাইটেন্টমেন্ট না হলে মানুষ অন্য দশটা প্রানীর মতনই।
১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৫
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: অনেক কথা এককথায় সুন্দর বলেছেন। মানুষের ভেতরটা আলোকিত না হলে তার কর্মকান্ড আঁধারে ঢেকে থাকে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৩| ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩০
রবিন.হুড বলেছেন: শিক্ষামূলক লেখার জন্য ধন্যবাদ। সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।
১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৯
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: মানুষের ভেতরটা আলোকিত হলে তা তার কর্মকান্ডে ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ আসলে আকৃতির বিষয় নয়। ভেতর থেকে মানুষ হলেই সে প্রকৃত মানুষ। সে নিজের কাছেই বেঁচে থাকে।
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
৪| ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চমৎকার একটা আর্টিকেল। বিভিন্ন বিষয়ে আপনার লেখার দক্ষতা খুবই প্রশংসনীয়।
'লাইফ অব পাই' ছবির পেছনে একটা গল্পের ছায়া আছে বলে পড়েছিলাম। একবার সমুদ্রে একটা বোট পথহারা হয়ে যায়। বোটে ছিল ৪ ব্যক্তি। দীর্ঘদিন তারা সমুদের ভেসে বেড়ায়। না খেতে পেয়ে শুকিয়ে যায়। তিনজনে মিলে ৪র্থ ব্যক্তির মাংস খাওয়া শুরু করে। গল্পটা আমার সঠিক মনে নেই, ৪র্থ ব্যক্তি হয় মারা গিয়েছিল, অথবা নড়াচড়া করতে একেবারেই অক্ষম হয়েছিল, আর বাকি ৩জন তাকে খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এটা সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট থিওরি হতে পারে। এ অবস্থায় কোনো নীতিবাক্য স্মরণে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। আমি নিজের উদাহরণ দিই। একবার আমি বাস অ্যাক্সিডেন্টে পড়লাম। বাস গড়িয়ে গড়িয়ে পাশের খাদে পড়ে গেল। আমি বাসের ভেতরে পানির নীচে। সিটের মধ্যে নড়াচড়া করছি না, ভাবছি, নড়াচড়া করলে দ্রুত টায়ার্ড হয়ে যাব, দম বের হয়ে যাবে। আরো ভাবছি, হয়ত ৫/৭ মিনিট পর্যন্ত প্রাণ থাকবে দেহে। এর মধ্যেই হয়ত লোকজন এসে বাস উদ্ধার করবে। আমি হয়ত অচেতন থাকবো, তবে প্রাণ থাকবে ঠিকই। কিন্তু এভাবে আমি বেশিক্ষণ থাকতে পারি নি। একটা সময়ে পানি খাওয়া শুরু করি। এরপর দম যখন শেষের দিকে, তখন আমার বডি নেচারালি (আমার ইচ্ছেতে নয়) 'ইয়া আল্লাহ' বলে একটা জার্ক দিয়ে ওঠে, সিটের মধ্যে আমার বডি আটকে গিয়ে ছিল। প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে বাসের সিট খুলে যায়, আমার বডি মুক্ত হয়ে গেলে আমি দাঁড়িয়ে যাই, দেখি আমার গলা/বুক পর্যন্ত পানি, বাসটা কাত হয়ে আছে, আর বাসের খোলা দরজা আমার মাথার উপরে। আমি বেরিয়ে আসি। বাইরে তখন হিউ অ্যান্ড ক্রাই। বাস গড়িয়ে পড়ার সময় ৭ বা ৮ জন বাসের চাপায় স্পট ডেড। আমি সম্ভবত বেঁচে ওঠার লাস্ট পারসন ছিলাম।
আমার উপরের অভিজ্ঞতা বললাম ৯১ এর ঝড়ে পিতাপুত্রের কাহিনির প্রেক্ষিতে। প্রচণ্ড ঝড়ের সময় যতক্ষণ পিতার জ্ঞান ছিল, ততক্ষণ সে ছেলেকে ধরে রেখেছিল। কিন্তু যে-সময়ে সে ছেলের হাতে কামড় দেয়, ঐসময়ে সে অবশ্যই সজ্ঞানে এটা করে নি। দম বের হবার আগের মুহূর্তে আপনার কোনো নীতিশাস্ত্র বা পুণ্যশাস্ত্রের কথা মনে পড়বে না। মূল কথা, আপনার কিছুই মনে পড়বে না। বাঁচার জন্য যা করার আপনি তাই করবেন। আরেকটা উদাহরণ, খুবই কমন, হয়ত আপনিও শুনেছেন। এক বাবা ছেলেকে নিয়ে নদীর কোনো এক চরে আটকা পড়লো। প্রচণ্ড ঝড় ও বৃষ্টি। চর ডুবে যাচ্ছে। বুক পর্যন্ত পানি, গলা পর্যন্ত পানি। বাবা তার ছেলেকে হাতে তুলে মাথার উপর ধরলো। একসময় বাবার মাথাও ডুবে গেল। দম আটকে রাখা যাচ্ছে না। নির্মম ঘটনাটা তখনই ঘটলো। বাবা তার ছেলেকে মাথা থেকে নামিয়ে পায়ের তলায় রাখলো। এরপর বাবাও মারা গিয়েছিল কিনা, সেসব আর জানার প্রয়োজন নেই। জীবনের এসব অভিজ্ঞতা বা গল্প থেকে আমরা অনেক শিক্ষা পাই। সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য নীতির প্রয়োজন আছে। কিন্তু নীতি কোন পর্যন্ত মানা যাবে, তার একটা টাইমলাইন আছে, যা পেরিয়ে গেলে কোনো নীতিই কাজ করবে না।
প্রথম উদাহরণে ১০/১১ জনের বোটে কী ঘটবে তা নির্ভর করবে যাত্রীদের বৈশিষ্ট্যের উপর। তারা নীতিবাক্য মানা, অভিজাত শ্রেণির হলে তারা কেউ কাউকে মারবে না, বোট থেকে ফেলবে না। ধীরে ধীরে তাদের অবস্থার অবনতি হতে থাকবে। অটোমেটিক্যালি ২/১ জন মারা যাবে (কেউ কাউকে মারবে না), বোটের স্পেস বাড়বে, তারাও বেঁচে থাকবে। যাত্রীদের মধ্যে অভিজাত ও উগ্র বৈশিষ্ট্যের মিশেল থাকলে মারামারি হবে। শুধু উগ্র শ্রেণি থাকলে মারামারি আরো বেশি হবে। এ কথাগুলো বললাম, দেশের জন্য অনেক আইন আছে। কোন শ্রেণি কোন আইন কতখানি মানবে, তা নির্ভর করবে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, আভিজাত্য, আর্থিক সচ্ছলতা, ইত্যাদির উপর। নীতিবাক্য বা পুণ্যবাক্যের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
শুধু ইতিহাসে নাম লেখানোর উদ্দেশ্যে সাধুকে ফেলে হিমালয় চূড়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত অবশ্যই অমানবিক। আমার মতে সবার তার নিজ নিজ কাজটি করে নি। শুধু এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বা একজন থেকে আরেকজনের কাছে হস্তান্তর করাই নিজের দায়িত্ব শেষ করা বোঝায় না। একজন বিপন্ন মানুষকে সম্পূর্ণ নিরাপদ জায়গায় পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়া, তা যদি একজনও করতো, ছিল মানবিকতা। তারা শেষ পর্যন্ত সেটা পারতো কিনা সেটা পরের বিষয়। শেষ পর্যন্ত আমি বাঁচবো তো, এটাই যদি মটো হয়, তাহলে তো কেউ যুদ্ধে যাবে না, কোনো মানবিক কাজেও এগিয়ে আসবে না।
খুব তৃপ্তি পেয়েছি আপনার লেখাটা পড়ে। 'হাইয়েস্ট গুড' বা 'গ্রেটার গুড' অর্জনের সকল চেষ্টাই আমাদের করা উচিত, যতক্ষণ সজ্ঞানে বেঁচে আছি। জ্ঞান হারিয়ে গেলে বা মুমূর্ষ অবস্থায় কী হবে, তা কারো নিয়ন্ত্রণে নেই, যেমন কেউ ইনটক্সিকেটেড হয়ে গেলেও তার নিয়ন্ত্রণে থাকে না কিছুই।
এরপর একটা টপিক নিয়ে লিখতে পারেন - আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকে গেছে, এর কারণ ও প্রতিকার।
শুভেচ্ছা রইল আপনাকে।
১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমার লেখাটি পড়েছেন। শতভাগ বুঝেন। নিজের জীবনের সাথে জুড়ে দিয়েছেন। আমার চেয়েও সুন্দর ও প্রাঞ্জল ব্যাখ্যা করেছেন। আপনার মন্তব্য একটি ইউনিক লেখা হয়ে গেছে।
ভালো থাকবেন।
৫| ১৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯
তাইজুল ইসলাম রিপন বলেছেন: ধন্যবাদ! এমন সুন্দর লেখনীর জন্য।
আমি প্রথম গল্পটি পড়ে দ্বিতীয় গল্পে যাওয়ার আগে আবারো প্রথম গল্পে ফিরে গেছি এবং ভাবছিলাম ইতিহাসে নাম লেখানোর জন্যে মানুষের কতো সেক্রিফাইস! এমনও হয় নিজের জীবনটাই সংকটে পরে যায়।
এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আরোহীদের আচরন অমানবিক মনে হলেও যৌক্তিকই মনে হয়েছে। কারন সাধু এবং অন্যান্য আরোহীরা নিজ নিজ উদ্দ্যেশ্য সাধনেই পর্বতারোহনে গেছে এবং সম্ভাব্য ঝুকি নিশ্চয়ই বিবেচনায় ছিল।
ব্লগার সোনাবীজ যথার্তই বলেছেন, "শেষ পর্যন্ত আমি বাঁচবো তো, এটাই যদি মটো হয়, তাহলে তো কেউ যুদ্ধে যাবে না, কোনো মানবিক কাজেও এগিয়ে আসবে না।"
এরকম সুন্দর লেখা এবং গঠনমূলক মন্তব্য চলতে থাকুক
১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: হিমালয়ের চূড়ায় ওঠার ইতিহাস দেখলে অবাক হতে হয়! মানুষের তার কর্মের মাঝে বেঁচে থাকার কী আপ্রাণ চেষ্টা! তবে নৈতিকতার প্রশ্ন এসে যখন সামনে দাড়ায় তখন মানুষ তার উত্তর জানেনা। সে কোনো দিন এই উত্তর শিখেনি।
অনেক ধন্যবাদ। ব্লগার সোনাবিজের গঠনমূলক মন্তব্য আপনি খেয়াল করেছেন- এটা প্রশংসনীয়। সবাই সবার ভালো লেখা মন্তব্যের প্রশংসা করলে ব্লগিং আনন্দময় হয়ে উঠবে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২০
করুণাধারা বলেছেন: বরাবরের মতো চমৎকার লেখা। কিছু নিয়ে ভাবতে পারলাম। অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
প্রথম গল্পের পর আপনি যে প্রশ্ন করেছেন সেটার উত্তর অনেক ভেবে মনে হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা তা করেছেন আমিও তাই করতাম।
১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৩
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: অর্জনের পথে যখন নৈতিকতার প্রশ্ন এসে দাড়ায় তার উত্তর মানুষের জানা থাকেনা। কোনটা গ্রেটার গুড। সেটা নির্ধারণই কষ্টকর হয়ে যায়।
ধন্যবাদ আপনাকে। মতামতের জন্য।
৭| ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬
কামাল১৮ বলেছেন: বৃহত স্বার্থে ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিতে হবে।নৈতিকতার ধারনা যুগে যুগে পাল্টায়।আজকে যা নৈতিক কালকে তা নৈতিক নাও হতে পারে।ধর্মে ধর্মেও নৈতিকতা আলাদা।ইসলামে চার বিয়ে করা অনৈতিক কিছু না।সভ্য সমাজে চরম অনৈতিক।
১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: নৈতিকতা ও অনৈতিকতার এ বিষয়টি পারসপেকটিভ ডিফারেন্সের কারণে হয়ে থাকে।
ভালো থাকবেন। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৮| ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪২
ঢাবিয়ান বলেছেন: পোস্টে +++ । নীতি নৈ্তিকতার আলোকে বলতে গেলে আমি বলব হিমালয়ের চুড়ায় কোন আরোহীকেই অনৈ্তিক বলা যায় না । তারা সবাই তাদের সাধ্যমতই করেছে। বরং রাস্তায় একজনকে মরতে দেখেও অনেক সময়ে আমরা ঝামেলার হাত থেকে বাচঁতে না দেখার ভান করে চলে যাই। এটা অনৈ্তিকতা।
দ্বীতিয় গল্পের বিষয়ে বলা যায় মৃত্যূর মুখোমুখি অবস্থায় মানুষ কি করবে তা মনে হয় নিজেও জানে না। একমাত্র ব্যতিক্রম মনে হয় মা।
১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৩
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: সুন্দর বলেছেন। রাস্তায় কাউরে মরতে দেখে ফেলে যাওয়া চরম অনৈতিকতা। তবে যুদ্ধের পেছনে যে দর্শন গ্রেটার গুড তা যে অনৈতিক তা অগনিত মানুষের মৃত্যুই বলে দেয়।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
৯| ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩৭
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বাঁচতে হয় নিজের কাছে!
চমৎকার শিরোনামে খুব ভালো একটি লেখা।
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:১৯
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: আপনার সুন্দর মন্তব্য আমাকে আরো লেখার প্রেরণা যোগাবে।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভালো থাকবেন।
১০| ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩২
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: সম্পুর্ন পোস্ট ও সবার কমেন্টস পড়লাম, সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই যা বলেছেন আমার অভিমতও তাই।
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২৫
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: তবে সোনাবীজের মন্তব্যের যদি সারমর্ম করি- তাহলে যা দাড়ায় তা আমেরিকানদের গ্রেটার গুডেরই প্রতিফলন। নিজে বাঁচলে বাজির নাম। এ কারণেই তো আমেরিকা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়েছে। নিজেকে ভালো রাখতে হলে আমার শত্রুদের ভালো থাকতে দেয়া যাবেনা। একসময় সাদারা মনে করতো কালোরা নোংরা। ওরা না থাকলে আমরা ভালো থাকবো। সে কারণে তারা কালোদের বিতাড়ন চাইতো।
আপতত সফলতায় মানুষের জীবনের যোগফলের হিসাব করে লাভ নেই। সবমিলিয়ে দিনশেষে স্বস্তির ঘুম দেয়াটাই অনেক বড় সফলতা। সেটা নৈতিকতার উ
ত্তম প্রদর্শন থেকেই আসে।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভালো থাকবেন।
১১| ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩২
আহমেদ জী এস বলেছেন: সায়েমুজজ্জামান,
সুন্দর পোস্ট।
ঠিকই বলেছেন - অর্জনের পথে যখন নৈতিকতার প্রশ্ন এসে দাড়ায় তার উত্তর মানুষের জানা থাকেনা। কোনটা গ্রেটার গুড।
সে কারনেই মনে হয় এই কথাটি প্রচলিত --- "আপনি বাঁচলে বাপের নাম"
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই এর মন্তব্যটি চমৎকার, তাই ভালো লেগেছে।
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩১
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই- এর মন্তব্য লা জওয়াব। এর বাইরেও কথা থাকে। আপনি বেঁচে গেলেও আখেরে সফল নাও হতে পারে। নৈতিকতার প্রশ্ন অনেক জটিল। সবাই সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা। ধরুন, কারো বোন কারো সামনে ধর্ষিত হচ্ছেন। আর ওই ব্যক্তির ভালো ক্যারিয়ারের কারণে নিজের জীবন বিপন্ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে চুপ থাকলেন। পরবর্তীতে অনেক সফল হলেন! তবে তিনি কী আসলেই সফল হয়েছেন! কারণে যতদিন তিনি বেঁচে থাকবেন বোনের ধর্ষণের বিষয়টা মাথা থেকে ঝেগে ফেলতে পারবেননা। নৈতিকতার প্রশ্নে তিনি অসহায় হয়ে থাকবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভালো থাকবেন।
১২| ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৪০
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: তবে আপনজনদের রক্ষায় নিজের জীবন বিসর্জন দেয়ার ঘটনা পৃথিবীতে অনেক আছে, আমাদের বাংলাদেশেই এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে। এধরণের মৃত্যুকে আমি বীরোচিত মৃত্যু বলে মনে করি।
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৪
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: এটাও নৈতিকতার একটা দিক। কেউ নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করে বিখ্যাত হন। কেউ প্রত্যাখ্যান করে বীর হন। নৈতিকতার প্রশ্নে ম্যাখয় যে প্রশ্নটি করেছেন তা ধ্রুক সত্য! কোনো বিদ্যালয়ে এ প্রশ্নের উত্তর শেখানো হয়না!
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভালো থাকবেন।
১৩| ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৭
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অনেক উচ্চুমাপের লিখনী। যেখানের কর্মের মানডন্ড নিরুপনে কাজ করা হয় সব শেষে স্বার্থটাই প্রতীয়মান হয়ে যায়। তবে স্বার্থহীন কাজগুলোও কম সমাদৃত নয়। করার আগে কর্তা মোটেও রিওয়ার্ডের চিন্তা করেনি এমন কর্মও যথেষ্ট রয়েছে।
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৬
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: ঠিকই ধরেছেন। নৈতিকতার দুইটি দিক রয়েছে। কাজটি করাটাও নৈতিকতা হতে পারে। কাজটি থেকে বিরত থাকাটাও নৈতিকতা হতে পারে! সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন। তবে সবাই স্বার্থ দেখলে আমরা কী স্বাধীন দেশ পেতাম!
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভালো থাকবেন।
১৪| ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭
মুসাফির নামা বলেছেন: চমৎকার বলেছেন
১৭ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:৫৪
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৫১
ধুলো মেঘ বলেছেন: মাথাটা আউলা হইয়া গেল। পোস্ট পড়ে না। চিন্তা করে যে ভারতীয় সাধু এভারেস্টের চূড়ায় গেল কিভাবে?