![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দিন দিন হতাশা বাড়ছে। মানসিক শান্তি হারিয়ে যাচ্ছে। জোর করে হাসতে হাসতে শরীরটা বড্ড ক্লান্ত হয়ে উঠেছে। মানুষ প্রেম করে কেন? একটু মানসিক শান্তি, একটু যত্ন, একটু ভালোবাসা, এই তো! এছাড়া আর কি চায় মানুষ? ভালোবাসার মানুষটা শত ব্যস্ততার মাঝে একটু খোঁজ নিক, নিয়ম করে দুপুর বেলা একটা ছোট্ট টেক্সট করে বলুক, "সারাদিন অফিসের কাজ করলে হবে? পেটের দিকে তাকাতে হবে না? তুমি না হয় ক্লান্ত না হতে পারো। তোমার পেটটা তো ক্লান্ত হয়। তাকে অন্তত কষ্ট দিও না, সময় করে একটু দানা পানি দিও।"
এটুকু বললে কি আহামরি ক্ষতি হয়ে যায়? ভালোবাসার মানুষের অবহেলা বড্ড পোড়ায় গো, বড্ড পোড়ায়। আর কতদিন এভাবে চলবি? এবার তো একটা সমাধানে আয়। নয়তো দিন দিন যে তুই নরকের যন্ত্রণায় ভুগতে ভুগতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবি।
উপশহরের সামনে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে শ্রাবণ। আর আনমনে এসব ভেবে চলেছে। বেশ কয়েক সপ্তাহ যাবৎ মেঘার সাথে তার দেখা হয় না। ফোন কলে নিয়মিত পাওয়া যায় না। মেসেজ করলে দু-তিন দিন পর ফিরতি মেসেজে একরাশ ব্যস্ততা নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে লেখে- অনেক ব্যস্ত ছিলাম গো, কিছু মনে করো না। আমি ফ্রী হয়ে তোমাকে নক দেবো।
এভাবেই চলছে দিন। কিন্তু শ্রাবণ আজ এসবের একটা শেষ দেখে ছাড়বে। যদি মেঘা রিলেশন কন্টিনিউ করতে না চায়, তবে তাই হবে। আর রিলেশন কন্টিনিউ করতে চাইলে একটা দস্তখত করতে হবে। সেখানে আর কিছু উল্লেখ না থাকলেও এটুকু উল্লেখ থাকবে, মেঘা নিয়ম করে প্রতিদিন শ্রাবণের সাথে একবার হলেও দেখা করবে।
.
হঠাৎ মেঘার কল। শ্রাবণ কল রিসিভ করতেই মেঘা বলে উঠলো, আজ আসতে পারবো না গো। কাল দেখা করি?
শ্রাবণ আজ পণ করেই এসেছে। দেখা সে করবেই। সে বললো, কাল কাল করে তো মাস চলে গেল। আজ তোমাকে আসতেই হবে। রিলেশন রাখতে চাও না, সেটা আজ সরাসরি নিজের মুখে বলে যাবে।
- কে বলেছে রিলেশন রাখতে চাই না?
- কল রাখো। আসো দ্রুত।
.
মিনিট দশেক পর মেঘা এলো। কি উৎফুল্ল দেখাচ্ছে তাকে! জগতের যত হাসিরা আছে, সব বোধ হয় তার ঠোঁট জুড়ে লেপ্টে রয়েছে। চেহারায় উজ্জলতা খেলা করছে। আর এদিকে শ্রাবণের চেহারায় যেন ভর করেছে আকাশের ঘনকালো মেঘেরা।
মেঘা কোনো কথা না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
- কথা বলবে না?
মেঘা শুধু তাকিয়েই আছে। কোনো কথা বলছে না।
- মেঘা। এই, শুনছো? অমন করে তাকিয়ে আছো কেন? কথা বলবে না?
মেঘা কাঁপা কাঁপা গলায় বললো, হ্যাঁ... হ্যাঁ।
- তুমি ঠিক আছো?
- হ্যাঁ।
- তুমি কি চুল কেটে ছোট করেছো?
- কই না তো?
- তাহলে চুলগুলো এত ছোট হয়ে গেল কিভাবে? তোমাকে না বলেছিলাম, বড় চুল আমার ভীষণ পছন্দের!
- আসলে আমি কাটতে চাইনি। মেঘকে তো চিনো, কি দুষ্টু। আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। সে দুষ্টুমি করতে করতে কাঁচি দিয়ে চুল কেটে ফেলেছে।
- মেঘকে নিয়ে আসতে পারতে। ওকেও অনেকদিন দেখি না৷
- ও একটু নানুর বাসায় ঘুরতে গেছে।
- তুমিও কি ঘুরতে গিয়েছিলে?
- না।
- তাহলে এতদিন দেখা করোনি কেন? কোথায় ছিলে?
- আসলে...
- তুমি জানো মেঘা, তোমাকে দেখতে না পেয়ে আমি দিন দিন পাগল হয়ে যাচ্ছি? আমার দিকে খেয়াল করেছো তুমি? তোমাকে ফোনে পাওয়া যায় না, তোমার সাথে দেখা করা যায় না, তোমার কোনো খোঁজই পাওয়া যায় না।
- আসলে আমি...
- আমাকে ভালো লাগে না আর? নাকি আমার প্রতি তোমার আগ্রহ ফুরিয়ে গেছে। বলো মেঘা। মেঘা আমি তোমাকে আমার জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসি গো, আমি তো সেই কবেই এই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করতাম। তুমিই তো বাঁচিয়েছিলে আমাকে। তবে আজ কেন আমাকে তুমি মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছো? যদি আমাকে এভাবেই মারবে, তাহলে এত আশা দেখিয়েছিলে কেন? এত ভালোবেসেছিলে কেন? আমি যে এখন বেঁচে থেকে মরা রে মেঘা। আমার অসুখ বেড়েছে। তোরে দেখার অসুখ, তোর সাথে কথা বলার অসুখ। এর কোনো প্রতিষেধক আছে? বল না রে মেঘা, এর কোনো প্রতিষেধক আছে?
মেঘা অন্যপাশ ফিরে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। শ্রাবণ উন্মাদের মতো বলেই চলেছে, আমি তোকে বড্ড বেশি ভালোবাসিরে। আমাকে একটু ভালোবাস্ না মেঘা। তোর ভালোবাসা পেলে আমি সুস্থ হয়ে যাবোরে। মেঘা কথা বলিস না কেন, কথা বল।
মেঘা কোনো কথা বলছে না। মেঘার চোখে জল। শ্রাবণ তার হাত ধরতেই মেঘা যেন কেঁপে উঠলো।
- মেঘা তুই কাঁদছিস? কি হয়েছে তোর? মেঘা। তোর চোখে জল কেন?
তড়িঘড়ি করে চোখের জল আড়াল করে মেঘা বললো, আজ আমি আসি।
বলেই মেঘা হন্তদন্ত হয়ে হাঁটা ধরলো। শ্রাবণ কিছু বলার সুযোগই পেল না। কত কথা জমে ছিল তার হৃদয়ে। কিছুই বলা হলো না। মেঘা চলে গেল।
.
শ্রাবণের পা দু'টো যেন অসার হয়ে আসছে। হাঁটার শক্তিটুকুও নেই। সে একবার ভাবছে মেঘার বাসায় যাবে কিনা। মেঘার বাবা প্রচন্ড ভালো মানুষ। শ্রাবণকে তিনি অনেক ভালো ছেলে হিসেবেই জানেন। কিন্তু আজকে এই অবস্থায় তাদের বাসায় গেলে মেঘার বাবা কি ভাববেন সেই চিন্তা করে সে আর পা বাড়ালো না। নাবিলকে কল করে বললো তাকে উপশহরের সামনে থেকে নিয়ে যেতে।
নাবিল তার রুমমেট ছোট ভাই। তারা দু'জন একসাথেই থাকে।
কিছুক্ষণ পর নাবিল এসে শ্রাবণকে নিয়ে যায়। শ্রাবণের শরীরের অবস্থা বেশ খারাপ।
.
স্বার্থপর
পর্ব-১
লেখক: Srabon Ahmed (অদৃশ্য ছায়া)
১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৩:২৪
শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আসলে একটা সময় ছিল প্রেমের গল্প খুব ভালো চলতো। এখন এসব কেউ পড়ে না৷ আমি আজ বেশ কয়েকবছর পর লিখতে বসেছিলাম। যদিও গল্পটা প্রেমের আঙ্গিকে লেখা৷ তবে আমার গল্পের থিম অন্যান্য গল্প থেকে আলাদা। সাথেই থাকুন। আশাকরি ভালো লাগবে।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ২:২২
মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: প্রেম নিয়ে খুব একটা স্টাডি এখন আর হয় না। বয়স হয়ে গেছে। লেখায় প্রেমের গন্ধ পেলেই এড়িয়ে চলি। কারণ জানি না। বেশ কিছু লেখা ইম্মেচিউর মনে হয়েছে। জানিনা আপনার লেখাটা কেন পড়লাম। আপনার লেখা ভালই লাগলো। কিছুটা বৈচিত্র লেখাকে হৃদয়গ্রাহী করেছে। বুঝতে পারি চালিয়ে গেলে ভাল করবেন। সুন্দর একটা লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ!