নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুধু গল্প বলবো বলে......

বিনয় দত্ত (গল্পের ফেরিওয়ালা)

আমি একজন সহজ গল্পের ফেরিওয়ালা। গল্প বলাই আমার কাজ।

বিনয় দত্ত (গল্পের ফেরিওয়ালা) › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভূ-কম্পের ছত্রছায়া

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫২

ভূ-কম্পের ছত্রছায়ায় জেগে উঠা শহরের নতুন সকালে ছিল ভয়ের আশঙ্কা,
ছিল উদ্বেল, ছিল আর্তনাদ, ছিল নতুন করে বেঁচে উঠার আশা।
কিছু মানুষ নিজেকে বাঁচানোর তাগিদে ছুটেছে,
কিছু মানুষ শীতের সিক্ত ছায়ায় লেপের নিচে রাত কাটিয়েছে,
কিছু মানুষ অধিক আতঙ্কে লাফিয়ে-ঝাঁপ দিয়েছে,
কিছু দুর্বলচিত্তের মানুষ অত্যধিক চাপে ইহলীলা সংবরণ করেছে,
কিছু মানুষ আপন সৃষ্টিকর্তাকে ডেকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে।
এতো রোমাঞ্চকর ঘটনার নতুন আবরণের ভিতরে, কিছু নতুন প্রাণ সকালে বাবা-মা’র মুখ আলোকিত করেছে,
কিছু প্রাণের বিনিময়ে, কিছু সদ্য ভূমিষ্ঠ প্রাণ পৃথিবীতে আলোর মুখের সন্ধান পেয়েছে,
প্রকৃতি জীর্ণ প্রাণ সরিয়ে, তাজা প্রাণকে স্বাগত জানিয়ে নিজের আখের সাজিয়েছে।
নব্য, অর্বাচিন কবিরা নিজেদের কাব্যের ছন্দে নতুন শব্দ খুঁজে বেড়িয়েছে,
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা, অবহেলিত পশুরা ভূ-কম্পনের আগাম আভাস হয়তো জানান দিয়েছে,
দূরদর্শী আবহাওয়াবিদ ভূ-কম্পনের পূর্ববর্তী সংবাদ হয়তো বলতে ভুলে গিয়েছে।
ভূ-কম্পনে সমগ্র মনুষ্যজাতির মধ্যে স্রষ্টাকে ডেকে তোলার প্রচন্ড আকুলতা প্রকাশ পেয়েছে,
স্রষ্টা হয়তো তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে, হয়তো নিজের সৃষ্টিতে মত্ত রয়েছে,
ভোরের আযানের সুমধুর ধ্বনি, মন্দিরের কাঁসর ঘন্টা-শঙ্খধ্বনি স্রষ্টাকে আহবান করছে,
সফেদ পাঞ্জাবী পরিহিত বয়োজ্যেষ্ঠ লোকটি কোরান শরীফে সুর তুলছে,
শাঁখা-সিঁদুরে আবৃত রমণীরা উলুধ্বনিতে মেতে উঠেছে,
এই ভূ-কম্পনের সময় সর্বোচ্চ ঈশ্বর বা আল্লাহ বা গডকে স্মরণ করা হয়েছে।
এই ভূ-কম্পনের সময়ে মানুষ নিজের জীবন বাজি রেখে আপন প্রাণধনের কথা সবচে বেশি মনে করেছে,
এই সময়ে মানুষের মধ্যে কোনো বিভেদ লক্ষ্য করা যায়নি,
এই ভূ-কম্পনের সময়ে মানুষ জাত-পাত-কুল-বংশ ভুলে প্রাণের মায়ায় নিরাপদ জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে,
এই সময়ে বিবস্ত্র নারীদের দেখে কেউ নারী শ্লীলতাহানীর কথা চিন্তা করেনি,
এই সময় দোদুল্যমান ভূমিকে দেখে কেউ দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার কথা ভাবেনি,
এই অস্তিতিশীল সময়ে অন্য ধর্মের প্রার্থনালয়ে আঘাত হানার কথা কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি,
ভূ-কম্পন আমাদের ভাবায়নি আমি হিন্দু, কি মুসলিম, কি বৌদ্ধ, কি খ্রিস্টান!
ভূ-কম্পন আমাদের মধ্যে হৃদ্যতা গড়তে সহায়তা করেছে,
এই পরিস্থিতি আমাদের দুর্যোগপূর্ণ সময়ে বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে,
জুগিয়েছে ধর্মন্ধতার বাইরে, ধর্মীয় কলুষতার বাইরে গিয়ে মানুষ হিসেবে আলাদা ভাবে পরিচিত হওয়ার।
আমি কোনো প্রাণহানীর পক্ষে নয়, কোনো সংঘাতের পক্ষের লোক নই,
নই কোনো বুক ফাঁটা আর্তনাদের পক্ষে, নই কোনো অন্ধকার কলুষতার পক্ষে,
আমি মানবতার পক্ষে, মুক্তচিন্তার পক্ষের একজন সাধারণ মানুষ। যে, মানুষের শান্তি কামনায়
গোটা মানবজাতির পক্ষে শ্বেত-শুভ্র পতাকা বহনকারী একজন।।



ভূ-কম্পনে বেঁচে থাকা জীবিত মানুষের জন্যে শুভকামনা......

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৩

ইফতেখার রাজু বলেছেন: নিম্মোক্ত চরণটিতে সাম্যবাদের জয়োগান ধ্বনিত হয়েছে..এই সময়ে মানুষের মধ্যে কোনো বিভেদ লক্ষ্য করা যায়নি,
এই ভূ-কম্পনের সময়ে মানুষ জাত-পাত-কুল-বংশ ভুলে প্রাণের মায়ায় নিরাপদ জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে,

২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫১

বিনয় দত্ত (গল্পের ফেরিওয়ালা) বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্যে। ভালো থাকবেন ইফতেখার রাজু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.