![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ ১৭ রমজান। দ্বিতীয় হিজরির এ তারিখেই সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ। ওই বছরই প্রথম রমজানের রোজা ফরজ হয়েছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নেতৃত্বে ওই যুদ্ধে রোজা রেখে সাহাবায়ে কেরাম জীবন-মরণ সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। এটি ছিল ইসলামের ইতিহাসে প্রথ্ম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ। পবিত্র কোরআনে বদর যুদ্ধকে সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী লড়াই হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বদর যুদ্ধে উভয়পক্ষের জনসংখ্যা ও অস্ত্রবলের চিত্রটি ছিল একেবারে অসম। সে যুদ্ধে হজরত নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নেতৃত্বে যোদ্ধা সাহাবির সংখ্যা ছিল ৩১৩। তাদের সঙ্গে ছিল দুটি ঘোড়া, ৭০টি উট আর অল্পকয়েকটি ঢাল তরবারি। অন্যদিকে মক্কার কাফের মোশরিক শক্তির পক্ষে যোদ্ধার সংখ্যা ছিল প্রায় ১ হাজার। তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল ১০০ ঘোড়া, ৭০০ উট আর বহু অস্ত্রশস্ত্র। যুদ্ধ অসম হলেও ইসলাম ও ইসলামে বিশ্বাসী মুসলিমদের জন্য এ ছিল অস্তিত্ব রক্ষার এক মহাসংগ্রাম। যুদ্ধের আগে আল্লাহর দরবারে মন উজাড় করা প্রার্থনায় রাসুল (সা.) বদরের একপ্রান্তে বসে কাদেন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহতায়ালার সাহায্যে মুসলিম শক্তি বিজয়ী হয়। ১২ কিংবা ১৪ জন সাহাবির শাহাদাতের বিপরীতে বদর যুদ্ধে প্রভাবশালী কাফের সর্দারসহ ৭০ জনের মতো নিহত হয়। বন্দি হয় আরও ৭০ জন। রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশায় বদরের যুদ্ধই একমাত্র যুদ্ধ নয়, যা রমজানে সংঘটিত হয়েছে। বরং হিজরতের মাত্র সাত মাস পর হজরত হামজা (রা.)-এর নেতৃত্বে প্রথম সারিয়া (যে সেনাদলে নবীজী (সা.) উপস্থিত ছিলেন না) সংঘটিত হয়েছিল রমজান মাসেই। একইভাবে হিজরতের অষ্টম বছর মক্কা বিজয়ের যে অভিযান রচিত হয়েছিল তাও হয়েছিল রমজান মাসেই। এ জন্য ঐতিহাসিক ও তাত্ত্বিকদের অনেকেই রমজানকে মুজাহাদার মাসের (আত্মশুদ্ধির মাস) পাশাপাশি জিহাদের মাস (লড়াইয়ের মাস) হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকেন। এ থেকে অনুধাবন করা যায় যে, তাকওয়া, শুদ্ধি, আল্লাহর নৈকট্য, সাধনা আর সত্য রক্ষা ও প্রতিষ্ঠায় জীবন বিলানো সংগ্রামের চেতনা ও প্রেরণার উত্সমূল অভিন্ন। রহমত, মাগফিরাত, নাজাতের রমজানে আল্লাহর হুকুমের সামনে আত্মসমর্পণ এবং আল্লাহতায়ালার রাস্তায় আত্মনিবেদনের শিক্ষা আমাদের উদ্দীপ্ত করুক—বদর যুদ্ধের এ প্রেরণা।
©somewhere in net ltd.