![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কোন তারিখে রাসূলে আকরাম সা. জন্ম গ্রহণ করেছেন তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে। অনেকের মতে তার জন্ম দিন হল ১২ই রবিউল আউয়াল। আবার অনেকের মতে ৯ ই রবিউল আউয়াল। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে গবেষণা করে প্রমান করা সম্ভব হয়েছে যে রাসূলুল্লাহ সা. এর জন্মদিন আসলে ছিল ৯ই রবিউল আউয়াল সোমবার। বর্তমান বিশ্বে সকলের নিকট সমাদৃত, সহীহ হাদীস নির্ভর বিশুদ্ধতম সীরাতগ্রন্থ হল ‘আর-রাহীক আল-মাখতূম’। নবী করীম সা. এর জন্ম দিবস সম্পর্কে এ গ্রন্থে বলা হয়েছে ‘রাসূল্ল্লুাহ সা. ৫৭১ খৃস্টাব্দে ৯ই রবিউল আউয়াল মোতাবেক ২০ এপ্রিল সোমবার প্রত্যুষে জন্ম গ্রহণ করেন। এটা গবেষণার মাধ্যমে প্রমান করেছেন যুগের প্রখ্যাত আলেম মুহাম্মাদ সুলাইমান আল-মানসূর ও মিশরের প্রখ্যাত জোতির্বিজ্ঞানী মাহমূদ পাশা।
আল্লামা শিবলী নোমানী ও সাইয়েদ সুলাইমান নদভী রহঃ প্রণীত সাড়া-জাগানো সীরাত-গ্রন্থ হল ‘সীরাতুন্নবী’। এ গ্রন্থে বলা হয়েছে নবী কারীম সা এর জন্ম দিবস সম্পর্কে মিশরের প্রখ্যাত জোতির্বিজ্ঞানী মাহমূদ পাশা এক পুস্তিকা রচনা করেছেন। এতে তিনি প্রমাণ করেছেন যে রাসূলুল্লাহ সা এর পবিত্র বেলাদত (জন্ম) ৯ই রবিউল আউয়াল রোজ সোমবার মোতাবেক ২০ এপ্রিল ৫৭১ খৃস্টাব্দ। মাহমূদ পাশা যে প্রমাণ-পত্র দিয়েছেন তা কয়েক পৃষ্ঠাব্যাপী বি¯তৃত।
তাদের গবেষণা বিষয়ের একটি দিক হল যে আল্লাহর রাসূল সা. সহীহ হাদীসে নিজেই বলেছেন তার জন্ম সোমবার দিন হয়েছে। মাহমূদ পাশা গবেষণা ও হিসাব করে দেখিয়েছেন যে, সে বছর ১২ রবিউল আউয়াল তারিখের দিনটা সোমবার ছিল না ছিল বৃহস্পতিবার। আর সোমবার ছিল ৯ই রবিউল আউয়াল।
তাই বলা যায় জন্ম তারিখ নিয়ে অতীতে যে অস্পষ্টতা ছিল বর্তমানে তা নেই। মাহমূদ পাশার গবেষণার এ ফল প্রকাশিত হওয়ার পর সকল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই তা গ্রহণ করেছেন এবং কেউ তার প্রমাণ খণ্ডন করতে পারেননি। অতএব নবী কারীম সা এর জন্ম দিবস হল ৯ই রবিউল আউয়াল। ১২ই রবিউল আউয়াল নয়। আর সর্বসম্মতভাবে তার ইন্তেকাল দিবস হল ১২ই রবিউল আউয়াল। যে দিনটিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মোৎসব পালন করা হয় সে দিনটি মূলত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইটি ওয়াসাল্লামের মিলাদ (জন্ম) দিবস বরং তা ছিল তাঁর ওয়াত (মৃত্যু) দিবস। তাই দিনটি ঈদ হিসেবে পালন করার আদৌ কোন যৌক্তিকতা নেই।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে। তবে তার জন্মের সুনির্দিষ্ট তারিখ কোনটি সে সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। ঐতিহাসিক ও হাদিস বর্ণনাকারীদের সিংহভাগের মতে, তিনি রবিউল আউয়াল মাসে জন্মগ্রহণ করেন। এ মাসের কোন তারিখে মহানবীর (সা.) জন্ম তা নিয়ে ইসলামের দুটি প্রধান সম্প্রদায় সুনি্ন ও শিয়াদের মত ভিন্নতা লক্ষণীয়। সুনি্ন মতাবলম্বীদের সিংহভাগ ১২ রবিউল আউয়াল সোমবারকে মহানবীর জন্মদিন বলে ভাবেন। অন্যদিকে সিংহভাগ শিয়া ইতিহাসবিদ ও জীবনীকারের মতে, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ১৭ রবিউল আউয়াল শুক্রবার। শিয়া জীবনীকারদের মধ্যে একমাত্র আল কুলাইনী মনে করেন, ১২ রবিউল আউয়ালেই মহানবী (সা.)-এর জন্ম। মহানবী (সা.)-এর জন্মদিন সম্পর্কে মতভিন্নতার কারণ হলো তিনি যে সময় জন্ম নেন সে সময় আরবদের মধ্যে দিন ও পঞ্জিকা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা ছিল না। মহানবী (সা.)-এর জীবনীকার তের শতকের ইতিহাসবিদ আল-ইরবিলি এ ধারণাই দিয়েছেন। স্মর্তব্য, শুধু মহানবী (সা.) নয়, খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক হজরত ঈশা (আ.) বা যিশুখ্রিস্টের জন্ম তারিখ নিয়েও রয়েছে একই ধরনের বিভ্রান্তি। ২৫ ডিসেম্বরকে যিশুর জন্মদিন হিসেবে পালন করা হলেও এর পক্ষে কোনো গ্রহণযোগ্য দলিল নেই। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম তারিখ সম্পর্কে ঐতিহাসিক এবং সীরাতকারগণের মধ্যে যদিও মতভেদ রয়েছে, তথাপি তারা এ বিষয়ে একমত যে, মহানবী (সা.) রবিউল আউয়াল মাসের প্রথম পক্ষে সোমবার জন্মগ্রহণ করেছেন এবং তা ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যকার কোনো একদিন ছিল।
মিলাদুন্নবী রসুল পাক হযরত মোহাম্মদ (সা.) জন্মদিন। অর্থাৎ খুশির দিন। তবে এদিন তো তাঁর ওফাত দিবসও যা শোকের বা দুঃখের। শোকের দিবসে খুশি আমার কাছে ঠিক পরিস্কার নয়। তাছাড়া হযরত মোহাম্মদ (সা.) তার জিবদ্দশায় তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন এমন কোন ঐতিহাসিক দলিল নেই বলে শুনেছি এমনকি তাঁর সাহাবারাও তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। সম্ভবতঃ হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর ওফাতের ৬০০ বছর পরে তাঁর জন্মদিন পালনের প্রচলন হয়। সুতরাং ১২ই রবিউল আউয়াল তারিকে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন শরিয়ত মতে কতটুকু গ্রহণযোগ্য সে প্রশ্ন আমারও।
তবে বিশ্বমানবতার আশীর্বাদ হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মও মৃত্যু দিবসকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে আমরা সিরাতুন্নবী হিসেবে এই দিনকে অথবা বছরের যে কোন একটি দিনকে পালন করতে পারি। কারণ হজরত মোহাম্মদ (সা.) এর জীবনে একটি দিবসে গন্ডিতে না থেকে তার ৬২ বছরের জীবনের আলোচনা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া তাঁর জন্মদিনের আদর্শ বাস্তবায়ন না করে তার সমগ্র জীবনের আদর্শ বাস্তবায়ন করা বা করার চেষ্টা করা বা করতে উদ্বুদ্ধ করা হজরত মোহাম্মদ (সা.) এর উম্মত হিসেবে আমাদের নৈতিক দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য। বিশেষ করে এই পবিত্র দিনে আমরা মহানবী (সা.)-এর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও সালাম জানাই। হানাহানি ও অশান্তিতে ভরা এই বিশ্বে শান্তি স্থাপনে তার রেখে যাওয়া আদর্শ মানব জাতিকে সঠিক পথ দেখাতে পারে। মানব জাতির জন্য যার প্রয়োজন আজ সবচেয়ে বেশি।