![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একবার এক গ্রামের এক পন্ডিত মশাইয়ের কাশির সাথে খুব ছোট পালকের মত কিছু একটা বের হয়ে এসেছিলো। এটা দেখে তো পন্ডিত মশাই খুব চিন্তিত হয়ে পড়লেন। খুব ভয়ও পেয়ে গেলেন তিনি। না জানি এটা কোথা থেকে আর কেমন করে তার পেটের মধ্যে গিয়ে ঢুকলো? তিনি বেশ চিন্তায় পড়ে গেলেন।
দুপুরে বাড়িতে গিয়ে খাবার দাবার খেয়ে পন্ডিত মশাই দুশ্চিন্তার সাগরে ডুবে ডুবে পাখির পালক খুঁজতে লাগলেন, ভাবতে লাগলেন আর কাহিনী উদ্ধারের চেষ্টায় পড়ে গেলেন।
তখন তার বিবিজান মানে তেনার গিন্নী সাহেবা তেনার এইরাম মনমরা মুখ দেইখা কিছুটা অবাক হইলেন। তার সোয়ামী সাধারনত এরকম হয়ে মনমরা থাকেন না। জিজ্ঞেস করলো,
"কি গো সোয়ামি, আপনের মুখটা আইজকা অমন হুকনা ত্যানার মত হুকাইয়া রইছে ক্যান? কি হইছে, মাথা ঘুরাইতেছে? আমি তেল মালিশ করে দিই!"
বিবিজানের কথা শুইনা ত্যানা বদনে পন্ডিত সাহেব বললেন,
"না গিন্নী, মাথা ধরে নাই। আইজ একখান খারাপ ঘটনা অই গেছে গিন্নী। এখনো পর্যন্ত কাউরে কিচ্ছু কই নাই। তোমারে কইলে তুমি কাউরে কইবা না তো?"
হস্ত কচলিত করতে করতে হকচকিত হইয়া গিন্নী সাহেবা বলিলেন,
"আস্তাগফিরুল্লাহ। আপনের ইস্তিরিরে আপনে অবিশ্বাস করেন? :'( সোয়ামির গোপন কথা কি কোন বউ কোনোদিন কাউরে কয়? আল্লার কিরা কইলাম আমি কাউরে কিচ্ছু কমু না।"
তারপরে সোয়ামি পন্ডিত তার গিন্নীকে এক নিঃশ্বাসে পালক সম্পর্কিত সমস্ত কাহিনী কইয়া তারপর এক মগ পানি ডগ ডগ শব্দে পান কইরা ইয়া বড় এক ঢেকুর দিয়া হাঁফ ছাড়িলেন।
গিন্নী পালকের কাহিনী শুইনা কয়েক পলক কি ভাইবা কইল, "ঠিকাছে, আমি কাউরে একথা কক্ষনো কমুনা।"
কিন্তু কাহিনী শুনার পর থেকে তো গিন্নী সাহেবের পেটের ভিত্রে মোচরামুচরি শুরু হইয়া গেছে। কথাটা কোনোমতেই তার পেটের মধ্যে হজম হইতেছে না। কাউরে না বললে যেন তার শান্তি নাই এরকম। হয়তোবা মেয়ে জাতির পেট বলে কথা.... (এইটা কিন্তু আমি মনে মনে বলছি)
সন্ধ্যায় গিন্নী গ্রামের পুকুর থেকে পানি আনতে গেল। আর সেখানে তার ছোটকালের সখী কাকুলির সাথে তার দেখা।
এবার পন্ডিতের গিন্নী আর কাকুলির ডায়লগ লাইভ শুনেন...
গিন্নীঃ কাকুলি, তুই হইলি আমার পরানের সঁই। আমি কি তোরে আমার পরাণের হগল কথা না কইয়া কখনো থাকবার পারি? ক...?
কাকুলিঃ ক্যান, কি হইছে কমলা বু...?
গিন্নীঃ কেমতে যে তোরে আমি কইতাম, হেইতেনে তো আমারে কিরকা দিয়া কাউরে কথাডা কইতে মানা কইরা দিছে।
কাকুলিঃ আরে কি কইবা তারাতারি কও তো। আর একটা দুইটা কিরকা ভাঙলে কিচ্ছু হয় না। আমি কত কিরকা ভাঙছি তার হিসাব নাই। তুমি নিশ্চিন্তে কইতে পারো...
অতঃপর পন্ডিত সাহেবের একমাত্র বউ গিন্নী সাহেবা কাকুলীকে ঘটনাটা গোপন রাখিবার শর্তে সবিস্তারে কাহিনী খানকি ছিলো তা বর্ননা করিলেন।
কাকুলি পুরা কাহিনী শুইনা কইল....,
"ঠিকেছে বু। আমি এই কথা জিন্দেগিতেও কাউরে কমু না। এমনকি কাক পক্ষীও আমার এই কথা কোনোদিন জানবার পারব না। বিশ্বাস না হইলে আমি মা কালির দিব্যি খাইলাম।"
দিন গিয়ে রাত হলো। রাত পেরিয়ে সকাল এলো। আর পন্ডিতমশাইর ঘুম ভাঙলো। কিন্তু বাইরে শোরগোল মনে হইলো তার। লোকজনের শোরগোলের আওয়াজ শুনে পন্ডিত মশাই ঘুম থেকে উঠে তার গিন্নীকে ডাকতে লাগলেন। কিন্তু তিনি গিন্নীর কোনো সাড়া শব্দ তিনি পাইলেন না। শোরগোল কেবল বাড়তে থাকলো॥
এবার এট্টু খেয়াল কইরেন...
গোপন কথাটা প্রথমে শুধু পন্ডিত মশাই জানত। পন্ডিত তার গিন্নীকে জানালেন, আর গিন্নী থেকে কাকুলী, কাকুলী থেকে শ্যামলী, শ্যামলী থেকে নিলুফা, নিলুফা থেকে হনুফা, হনুফা থেকে তার স্বামী মফিজ, মফিজ থেকে তার ভাই রমিজ, রমিজ থেকে জব্বর, জব্বর থেকে গ্রামের মাতব্বর, মাতব্বর থেকে তার বোন শালেকা,,,
আর এভাবেই হয়ে গেলো পুরা এলাকা।
তবে সবাই কিন্তু গোপন রাখার শর্তে কথাটা শুনেছিলো।
আর সর্বশেষে কথাটার লেজ গজাতে গজাতে গ্রামবাসী জানলো যে গতকাল দুপুর থেকে নাকি পন্ডিত মশাইয়ের মুখ দিয়ে নানান রঙ বেরঙের পাখি বেরুচ্ছে আর একের পর এক পাখি আকাশে নাকি উড়াল দিয়া দিয়া চলে যাচ্ছে। এরকম দৃশ্য দেখার জন্য এই কারণে সকাল সকাল পন্ডিতের বাড়িতে মানুষের এত শোরগোল ছিল।
[গল্পটা প্রধান না, গল্পের শিক্ষাটাই প্রধান]
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭
মাসুম এইচ বিল্লাহ বলেছেন: 'গ্রাম বাংলার গল্প' নামক বইতে গল্পটা দেয়া আছে। একটা শিক্ষনীয় গ্রামীন গল্প। আমি একটু রস মিশিয়ে ব্লগে লেখার বৃথা চেষ্টা করলাম আর কি!!
মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই।
২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৮
অরন্য সামির বলেছেন:
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪২
মাসুম এইচ বিল্লাহ বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৬
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: হা হা হা... গল্পটা আগেও শুনছিলাম, তবে অনেকদিন পর এখন পড়ে মজা পাইছি আবার। গল্পটা শিক্ষণীয়ও বটে।